a
ফাইল ছবি
করোনার ভিতরেও আয়োজিত আইপিএলে অংশগ্রহণ করে দেশে ফিরে বিশাল দুঃসংবাদ পেলেন একাধিক ব্রিটিশ ক্রিকেটার আসন্ন নিউজিল্যান্ড সিরিজের টেস্ট দলে স্থান পাননি ২০২১ আইপিলে অংশ নেয়া বাটলার, বেয়ারস্টো ও স্যাম কারানরা। আইপিএল স্থগিত হওয়ায় আগেইভাগেই দেশে ফিরে কোরাইন্টাইন পর্ব শেষ করেও নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ২টি টেস্টের স্কোয়াডে জায়গা হয়নি তাদের।
বর্তমান ইংল্যান্ড ক্রিকেটের প্রায় পরিচিতমুখ হয়ে সব ফরম্যাটেই খেলতে দেখা যায় জনি বোয়ারস্টো, মঈন আলি, জস বাটলার, স্যাম কারান, ক্রিস ওকসদের। তবে ইসিবি ভিন্ন সুরে কথা বলেছে ইসিবি থেকে বলা হয়েছে তাদেরকে কিছুটা স্বস্তি দেওয়ার জন্য নিউজিল্যান্ড সিরিজে বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে।
ইঞ্জুরির কারনে আসন্ন টেস্ট দলে জায়গা হয়নি তারকা পেসার জোফ্রা আর্চার ও অলরাউন্ডার বেন স্টোকসের।
টেস্ট স্কোয়াডে নতুন মুখ হিসেবে সুযোগ পেয়েছেন গ্লস্টারশায়ারের উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান জেমস ব্রেসি এবং সাসেক্সের পেসার ওলি রবিনসন। ব্রেসি ও রবিনসনের সুযোগ পাওয়া নিয়ে ইংল্যান্ড কোচ সিলভারউড বলেন, জেমস ব্রেসি ও ওলি রবিনসন যোগ্য হিসেবেই টেস্ট স্কোয়াডে যায়গা করে নিয়েছে। তারা এবছর কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশিপে তারা অত্যন্ত ধারাবাহিক এবং গত ১৮ মাসে লায়ন্সের হয়ে মাঠে ও ক্যাম্পগুলোতে দারুণ পারফরম্যান্স করেছে।
উল্লেখ্য, ব্রেসি কাউন্টিতে ৫৩ গড়ে ৪৭৮ রান করেছেন এবং রবিনসন ২৯টি উইকেট নিয়েছেন। যদিও লর্ডসের প্রথম টেস্টে উইকেট কিপিংয়ের গ্লাভস হাতে উঠতে পারে আরেক উইকেট কিপার বেন ফোকসের হাতে।
ইংল্যান্ডের টেস্ট স্কোয়াড: জো রুট (ক্যাপ্টেন), জেমস অ্যান্ডারসন, জেমস ব্রেসি, স্টুয়ার্ট ব্রড, ররি বার্নস, জ্যাক ক্রাউলি, বেন ফোকস, ড্যান লরেন্স, জ্যাক লিচ, ক্রেগ ওভার্টন, ওলি পোপ, ওলি রবিনসন, ডমিনিক সিবলি, ওলি স্টোন ও মার্ক উড।
ফাইল ছবি। রাহুল দ্রাবিড়
আইপিএলের দল ও ভারতের অনূর্ধ্ব-১৯ দলের প্রধান কোচ হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছেন দেশটির 'দ্য ওয়াল'খ্যাত সাবেক ক্রিকেটের রাহুল দ্রাবিড়। তবে অনেক সময় গড়ালেও অপেক্ষার অবসান হতে যাচ্ছে, অর্থাৎ আবারও ভারতের জাতীয় দলের কোচ হতে যাচ্ছেন এই কিংবদন্তি ব্যাটসম্যান রাহুল দ্রাবিড়।
ইএসপিএন ক্রিকইনফোর এক প্রতিবেদনে প্রকাশ– আসন্ন শ্রীলংকা সফরে ভারত দলের হেড কোচের দায়িত্ব পেতে চলেছেন দ্রাবিড়। ভারত আগামী জুলাইয়ের ১৩ থেকে ২৭ তারিখ পর্যন্ত শ্রীলংকার মাটিতে তিনটি করে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলবে। এ নিয়ে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের পক্ষ থেকে এখনও কোনো বিবৃতি আসেনি।
জানা গেছে, জুলাইয়ে পাঁচ ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলতে ইংল্যান্ডে ব্যস্ত থাকবে বিরাট কোহলির দল। দলের সঙ্গে সেখানে থাকবেন হেড কোচ রবি শাস্ত্রী। একই সময়ে শ্রীলংকায় পাঠানো ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি দলকে পরিচালনায় দ্রাবিড়কে কোচ হিসেবে পাঠানো হচ্ছে সেখানে।
আগামী ১৩, ১৬ ও ১৯ জুলাই হবে ওয়ানডে সিরিজের তিনটি ম্যাচ। টি-টোয়েন্টি সিরিজের ম্যাচ তিনটি হবে ২২, ২৪ ও ২৭ জুলাই। আগামী ৫ জুলাই এ দুই সিরিজে খেলার জন্য শ্রীলংকার উদ্দেশে দল নিয়ে রওনা দেবেন রাহুল দ্রাবিড়।
ছবি সংগৃহীত
নিউজ ডেস্ক: ইতিহাসের মোড়ঘোরানো মুহূর্তসমূহ একটি জাতির রূপ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে এবং তা নির্ভর করে সংশ্লিষ্ট এলাকা বা দেশের জনগণের আকাঙ্ক্ষার উপর।দক্ষিণ এশিয়ার জনগণ ইতিহাসের এমন কিছু গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত প্রত্যক্ষ করার অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে, যা তাদের জীবনে গভীর প্রভাব ফেলেছে। উদাহরণস্বরূপ, দ্বাদশ শতকের শেষ দিকে মুসলমানদের বিজয়ী হিসেবে আগমন এবং পরবর্তীকালে শাসক হিসেবে এই ভূখণ্ডে বসবাস শুরু, যা চলতে থাকে ১৭৫৭ সালে পলাশীর তথাকথিত যুদ্ধে ব্রিটিশদের দ্বারা বাংলা দখল পর্যন্ত। এই ১৭৫৭ সালকে ভারতীয় উপমহাদেশের মুসলমানদের ইতিহাসে একটি মোড়ঘোরানো বছর হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
ব্রিটিশ শাসনামলে মুসলমানরা তাদের ক্ষমতা হারায় এবং সবচেয়ে বেশি ভুক্তভোগীতে পরিণত হয়।১৮৫৭ সালের সিপাহী বিদ্রোহের প্রতিক্রিয়ায় তারা চরম নিপীড়নের শিকার হয়, যদিও হিন্দুরাও ব্যাপকভাবে অংশগ্রহণ করেছিল। এই ১৮৫৭ সালও ভারতের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় হিসেবে বিবেচিত। ১৮৮৫ সালে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস ব্রিটিশ সরকারের প্রত্যক্ষ পৃষ্ঠপোষকতায় প্রতিষ্ঠিত হলে মুসলমানদের সরাসরি রাজনীতিতে অংশগ্রহণে উৎসাহিত করা হয়নি। কিন্তু বিশ শতকের শুরুতে পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটে, যখন ১৯০৬ সালে মুসলিম লীগ গঠিত হয়। এই ১৯০৬ সালকেও ভারতের মুসলমানদের ইতিহাসে একটি মোড়ঘোরানো বছর হিসেবে দেখা হয়। ঢাকার নবাব স্যার সলিমুল্লাহ ভারতের মুসলমানদের রাজনৈতিক নেতা হিসেবে আবির্ভূত হন।
১৯১৩ সালে মুসলিম লীগ মোহাম্মদ আলী জিন্নাহকে নেতা হিসেবে পেয়ে সৌভাগ্য অর্জন করে, যদিও ১৯১৫ সালের জানুয়ারিতে সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত হন। আলীগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের বহু গ্র্যাজুয়েট মুসলিম লীগে যোগ দিয়ে জিন্নাহর হাত শক্তিশালী করেন। অল্প সময়েই জিন্নাহ ভারতের মুসলমানদের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতায় পরিণত হন। এক সময় তিনি হিন্দু-মুসলিম ঐক্যের অগ্রদূত হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন, কিন্তু কংগ্রেস নেতাদের মনোভাব তাকে বুঝতে বাধ্য করে যে, হিন্দু মহাসভার অধীনে ভারতের মুসলমানদের অধিকার নিরাপদ নয়। ১৯২৩ সালের শুরুতে মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ তাঁর বিখ্যাত দ্বিজাতি তত্ত্ব ঘোষণা করেন এবং বলেন, ধর্ম, সংস্কৃতি, ইতিহাস, ঐতিহ্য ও দৈনন্দিন জীবনে মুসলমানরা হিন্দুদের থেকে আলাদা। এই তত্ত্ব ভারতের মুসলিম জনগণের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়।
১৯৩৭ সালের নির্বাচনের পর কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন প্রথম ভারতীয় সরকার গঠিত হয়, যা জিন্নাহকে স্পষ্ট করে দেয় যে, মুসলমানদের জন্য পৃথক মাতৃভূমির কথা ভাবা ছাড়া উপায় নেই। ফলে ১৯৪০ সালে শেরে বাংলা একে ফজলুল হক ঐতিহাসিক লাহোর প্রস্তাব উত্থাপন করেন, যেখানে মুসলিম রাষ্ট্রের দাবি তোলা হয়। এটিও ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড়।
পাকিস্তানের জন্মকে ভারতীয় মুসলমানদের প্রায় দুই শত বছরের সংগ্রামের ফলাফল হিসেবে দেখা হয় এবং ১৯৪৭ সালকে দক্ষিণ এশিয়ার মুসলমানদের ইতিহাসে একটি মোড়ঘোরানো বছর হিসেবে ধরা হয়। কিন্তু পাকিস্তান শুরুর থেকেই অভ্যন্তরীণ ও বহিঃশত্রুতার ষড়যন্ত্রের শিকার হয়। ভারত প্রথম থেকেই পাকিস্তানের বিরোধী হয়ে ওঠে এবং তা ভাঙার জন্য বদ্ধপরিকর ছিল।
ইয়াহিয়া খানের সামরিক সরকার পূর্ব পাকিস্তানে সাধারণ মানুষের ওপর সেনা অভিযান চালিয়ে ভারতের জন্য এক ‘সুবর্ণ সুযোগ’ তৈরি করে এবং ভারত এই সুযোগকে পুরোপুরি কাজে লাগায়, যার জন্য তারা বহুদিন অপেক্ষায় ছিল। বাংলাদেশের জন্ম ঘটে ভারতের সামরিক সহায়তা ও কূটনৈতিক উদ্যোগের মাধ্যমে। আওয়ামী লীগের নেতারা নিজেদের স্বার্থে ভারতের সাথে একটি সাত দফা চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন, যা বাংলাদেশের জন্মকে ত্বরান্বিত করে কিন্তু তাকে চিরস্থায়ী দাসত্বের দিকে ঠেলে দেয়। এভাবেই ১৯৭১ সাল বাংলাদেশের ইতিহাসে আরেকটি মোড়ঘোরানো বছর হয়ে ওঠে।
জনগণ দ্রুতই বুঝে যায় যে তারা নিজেদের নেতাদের এবং ভারতের আধিপত্যবাদী রাজনীতির দ্বারা প্রতারিত হয়েছে। যে নেতা গণতন্ত্রের জন্য লড়েছিলেন, তিনিই নিজের হাতে তা ধ্বংস করেন এবং এর জন্য চরম মূল্যও দেন। ভারতের আধিপত্যবাদী রাজনীতির গতি স্তব্ধ হয় ১৯৭৫ সালের আগস্টে শেখ মুজিবের পতনের মাধ্যমে। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ মোড়।
নভেম্বর ১৯৭৫-এ সিপাহী-জনতার নেতৃত্বে একটি বিপ্লবের মাধ্যমে জিয়াউর রহমানের উত্থান ঘটে, যার মাধ্যমে বাংলাদেশ একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্রে পরিণত হয় এবং নিজের পায়ে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে। দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ জিয়াউর রহমানের আনা পরিবর্তনে সন্তুষ্ট হন। কিন্তু তার মর্মান্তিক মৃত্যু আবারো ভারতকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে হস্তক্ষেপের সুযোগ এনে দেয়।
১৯৯০ সালের ডিসেম্বর মাসে এরশাদের পতন রোধ করা যায়নি এবং খালেদা জিয়ার ক্ষমতায় আরোহন ঘটে। এসময় ভারত সাময়িকভাবে ব্যাহত হলেও ১৯৯৬ থেকে ২০০১ পর্যন্ত শেখ হাসিনার প্রথম সরকারে আবারও সাফল্য পায়।
মঈনউদ্দিন-ফখরুদ্দিন নেতৃত্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমেরিকার সহযোগিতায় ভারতকে আবারো বাংলাদেশে প্রকাশ্য রাজনৈতিক খেলা খেলার সুযোগ দেয়। আমরা বাঙালি মুসলমানরা পুনরায় শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদী শাসন এবং ভারতের রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের শিকার হই। ভারত বাংলাদেশকে নিজের উপনিবেশ মনে করতে শুরু করে।
কয়েক শত প্রাণের ত্যাগ ও কয়েক হাজার মানুষের অজানা দুঃখ-কষ্ট জুলাই বিপ্লব ২০২৪-এর মাধ্যমে একটি ঐতিহাসিক পরিবর্তন এনে দেয়। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা আমাদের এই পরিবর্তনের সুযোগ দিয়েছেন, এবং তা পুরোপুরি নির্ভর করছে আমাদের আন্তরিকতার উপর। আমরা যদি এই ট্রেন মিস করি, তবে তা চিরতরে হারিয়ে যাবে। জুলাই বিপ্লব ২০২৪ বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি মোড়ঘোরানো মুহূর্ত হিসেবে চিরস্থায়ী হয়ে থাকবে।
জনগণ, রাজনৈতিক দল এবং সরকারকে এটি উপলব্ধি করতে হবে এবং জুলাই বিপ্লবকে জাতির সর্বশেষ রাজনৈতিক মোড়ঘোরানো ঘটনা হিসেবে বিবেচনা করতে হবে। জাতিকে দলীয় ও ব্যক্তিস্বার্থ ভুলে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে এবং সরকারের উদ্যোগকে সর্বোচ্চ আন্তরিকতা দিয়ে সহযোগিতা করতে হবে।