ঢাকা মঙ্গলবার, ১৬ মার্চ, ২০২১, ২ চৈত্র ১৪২৭

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
Janata Bank
Rupalibank

তথ্য গোপনের অভিযোগে পৌরমেয়রের বিরুদ্ধে মামলা


Ekushey Sangbad
স্টাফ রিপোর্টার
০৩:২২ পিএম, ১২ মার্চ, ২০২১
তথ্য গোপনের অভিযোগে পৌরমেয়রের বিরুদ্ধে মামলা

ময়মনসিংহের গৌরীপুর পৌরসভা নির্বাচনে টানা ৩বারের হ্যাট্টিক বিজয়ী মেয়র সৈয়দ রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে হলফনামায় তথ্য গোপনের অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেছেন পরাজিত মেয়র প্রার্থী (আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী) শফিকুল ইসলাম হবি। মামলায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন কমিশনের সচিবসহ ১১জনকে মোকাবিলা প্রতিপক্ষ করা হয়েছে।

বাদীপক্ষে আইনজীবী অ্যাডভোকেট গোলাম মোস্তফা জানান, ময়মনসিংহের বিজ্ঞ যুগ্ম জেলা জজ ১ম আদালত ও নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে এ মামলা বৃহস্পতিবার (৪মার্চ/২০২১) দায়ের করেন। বিজ্ঞ বিচারক কারণ দর্শানো জন্য সকলের প্রতি নোটিশ দিয়েছেন।

এ প্রসঙ্গে গৌরীপুর পৌরসভার নবনির্বাচিত মেয়র সৈয়দ রফিকুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের আয়োজন করেছে, জনগণ ভোট দিয়েছে, আমি বিজয়ী হয়েছি। ব্যাংকে আমার কোন ঋণ নেই, খেলাপীও হইনি। বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্লিয়ারেন্স ও সোনালী ব্যাংকের প্রত্যয়ন রয়েছে। হলফনামায় তথ্য গোপনের অভিযোগও সঠিক নয় বরং আমাকে নির্বাচন থেকে সরিয়ে রাখার জন্য ষড়যন্ত্র হয়েছিলো।

তিনি আরো বলেন, আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আইনের বিষয়টি আইনীভাবেই মোকাবেলা করা হবে। আর এ মামলা তো শুধু আমার নয়, প্রধান নির্বাচন কমিশনারও লড়বেন। নির্বাচন কমিশনের আইন মেনে নির্বাচন করেছি। মানুষ বিপুল ভোটে নির্বাচিত করেছেন। বিজয়ী ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশিত হয়েছে, শপথও নিয়েছি। পৌরবাসীকে সঙ্গে নিয়ে পৌরসভার উন্নয়নমূলক কার্যক্রমও চালিয়ে যাচ্ছি।

মামলায় গৌরীপুর পৌরসভার ৩০জানুয়ারি নির্বাচনী বিজয়ী মেয়র সৈয়দ রফিকুল ইসলামকে মূল প্রতিপক্ষ করা হয়েছে। মোকাবেলা প্রতিপক্ষ করা হয়েছে প্রধান নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সচিব, আপীল কর্তৃপক্ষ গৌরীপুর পৌরসভা নির্বাচন ২০২১ ও ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক মো. মিজানুর রহমান, রিটার্নিং অফিসার ও অতিরিক্ত আঞ্চলিক নির্বাচন অফিসার মো. আবদুর রহিম, সহকারি রিটার্নিং অফিসার ও উপজেলা নির্বাচন অফিসার সজল চন্দ্র সরকার, প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী মো. আতাউর রহমান (ধানের শীষ), ফারুকুজ্জামান ফারুখ (কুঁড়েঘর), মো. আব্দুল কাদির (মোবাইল ফোন), আবু কাউছার চৌধুরী রন্টি (চামচ), তাহরিমা আক্তার চুমকী (জগ), গৌরীপুর সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপক।

মামলায় বলা হয়েছে, সৈয়দ রফিকুল ইসলামের ছোট ভাই সৈয়দ মাজহারুল ইসলামের পরিচালক সৈয়দ ফার্নিচার মার্টের শেয়ারের মালিক। ব্যবসা বৃদ্ধির জন্য সৈয়দ ফার্ণিচার মাঠের নামে যৌথ মালিকানাধীন সম্পত্তি বন্ধক রেখে সোনালী ব্যাংক লিমিটেড গৌরীপুর ব্রাঞ্চ থেকে সৈয়দ মাজহারুল ইসলাম ঋণ নেন। এ ঋণে সৈয়দ রফিকুল ইসলাম জামিনদার ছিলেন। ৩০ ডিসেম্বর দাখিলকৃত হলফনামায় ঋণখেলাপি উল্লেখ নেই। ২ জানুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংকের যুগ্ম পরিচালক নুরজাহান আখতার কর্তৃক স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে সৈয়দ রফিকুল ইসলামকে ঋণ খেলাপি হিসেবে পত্র দেন।

এ পত্রের ভিত্তিতে ৩ জানুয়ারি গৌরীপুর পৌরসভা নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. আব্দুর রহিম সৈয়দ রফিকুল ইসলামের মনোনয়নপত্র বাতিল করেন। পরে ৪ জানুয়ারি সৈয়দ রফিকুল ইসলাম ময়মনসিংহের তৎকালীন জেলা প্রশাসক ও গৌরীপুর পৌরসভা নির্বাচনের আপিল কর্তৃপক্ষ মো. মিজানুর রহমানের নিকট (০৭/২১) আপিল দাখিল করেন। মনোনয়নপত্র দাখিলের দিন অনাদায়ী ঋণের জন্য সৈয়দ রফিকুল ইসলামের অনাদায়ী ঋণের বিষয়ে জেলা আপিল কর্তৃপক্ষ ও জেলা প্রশাসককে তথ্য গোপন ও প্রভাবিত করে নিজেকে ঋণখেলাপি নয় বলে দেখাতে সমর্থ হন। নচেৎ সৈয়দ রফিকুল ইসলাম মেয়র পদে থাকার যোগ্য প্রার্থী ছিলেন না। অর্থাৎ সৈয়দ রফিকুল ইসলাম মনোনয়নপত্র জমাদানের তারিখে ঋণখেলাপি ছিলেন এবং তার মনোনয়নপত্র বৈধ ছিল না।

ফলে অবৈধ মনোনয়নপত্র মূলে সৈয়দ রফিকুল ইসলামের গৌরীপুর পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে নির্বাচন, অর্জিত ফলাফল বেআইনি দাবি করা হয়েছে এবং সেই নির্বাচনি ফলাফল বাতিল করে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী অপর বৈধ মেয়র পদ প্রার্থীদের মধ্যে বেশি ভোট পাওয়া শফিকুল ইসলাম হবিকে মেয়র নির্বাচিত ঘোষণার দাবি করা হয়েছে।


একুশে সংবাদ/হু.ক/আ