a
ফাইল ছবি । ড. হাছান মাহমুদ
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ৭দিনের মধ্যে অনিবন্ধিত সবগুলো অনলাইন নিউজ পোর্টাল বন্ধ করে দেওয়া সমীচীন হবে না। এ বিষয়ে আদালতকে অবহিত করা হবে। বুধবার দুপুরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এসব কথা বলেন তিনি।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, আদালতকে আমরা জানাবো সাতদিনের মধ্যে সবগুলো বন্ধ করে দেওয়া সমীচীন হবে না। অনেকগুলো বন্ধ করবো, আদালতকে জানাবো, আসলে কি প্রক্রিয়ায় রেজিস্ট্রেশন দেওয়া হয়েছে।
কিছু গণমাধ্যমকে নিবন্ধনের আওতায় আনা হয়েছে। বাকিগুলোর বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে-জানতে তিনি বলেন, আবেদনের পর যাচাই-বাছাই করার জন্য আমরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠাই। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এগুলো তদন্তকারী সংস্থাকে দেয়। সেটি শেষ করে না আসা পর্যন্ত আমরা দিতে পারি না। এ কারণেই সময় লাগছে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, এখন যেগুলো রেজিস্ট্রেশনপ্রাপ্ত, সেগুলো ছাড়া আর কোনো অনলাইন ভবিষ্যতে বের হবে না, তেমন নিয়মতো নেই। যেসব অনলাইন সত্যিকার অর্থে গণমাধ্যম হিসেবে কাজ করে না বরং নিজস্ব বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়ে কাজ করে এবং ব্যাঙের ছাতার মতো এত অনলাইন দেশে প্রয়োজন নেই।
তিনি বলেন, যার যেমন ইচ্ছে একটি অনলাইন খুলে বসবে এবং সেটি নিয়ে যেমন ইচ্ছে তেমন সংবাদ পরিবেশন করবে, মিথ্যা সংবাদ পরিবেশন করবে, গুজব রটানোর কাজে ব্যস্ত হবে, অন্যের চরিত্র হনন করবে, ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে পরিচালিত হবে, কোন ব্যবসায়িক স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য সেখানে লেখালেখি হবে, এটি কখনোই সমীচীন নয়। সেক্ষেত্রে এ আদেশ অবশ্যই একটি সহায়ক আদেশ।
হাছান মাহমুদ বলেন, আমরা আদালতের লিখিত কপি পাওয়ার পর যে সময়সীমা নির্ধারণ করে দিয়েছে, সে সময়সীমার মধ্যে অবশ্যই কিছু অনলাইন বন্ধ করবো। তবে ভবিষ্যতেও অনলাইন রেজিস্ট্রেশন দিতে হবে। একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নিবন্ধন দেওয়া হচ্ছে। আমরা আদালতের কাছে সে বিষয়টি উপস্থাপন করবো। কিছু অনলাইন আমরা বন্ধ করবো।
ইতিমধ্যে কিছু বন্ধও করা হয়েছে। সেই সঙ্গে আমরা আদালতের নজরে এটিও আনবো, এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া এবং যাচাই-বাছাই ছাড়া সবগুলোকে একসঙ্গে বন্ধ করে দেওয়া হয়, সেটিও কতটুকুক সমীচীন, সেটিও ভাবার বিষয়। সেজন্য আমরা আদালতের নজরে আনবো। সূত্র: বিডি প্রতিদিন
বাংলা নববর্ষ ১৪২৮ উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
বাংলা নববর্ষ-১৪২৮ উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তিনি এই ভাষণ দেন। শেখ হাসিনার পূর্ণাঙ্গ ভাষণটি নিচে তুলে ধরা হলো-
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম। প্রিয় দেশবাসী, আসসালামু আলাইকুম। দেশ-বিদেশে যে যেখানেই আছেন সবাইকে জানাই ১৪২৮ বঙ্গাব্দের আন্তরিক শুভেচ্ছা। শুভ নববর্ষ। আজ আবাহনের দিন। ‘‘এসো হে বৈশাখ, এসো এসো/মুছে যাক গ্লানি, ঘুচে যাক জরা/অগ্নিস্নানে শুচি হোক ধরা” - কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কালজয়ী এই গান গেয়ে আজ আমরা আবাহন করবো নতুন বছরকে। একইসঙ্গে শুরু হয়েছে মুসলমানদের পবিত্র সিয়াম সাধনার মাস - মাহে রমজান। আমি সকল ধর্মপ্রাণ মুসলমানকে পবিত্র মাহে রমজানের মোবারকবাদ জানাচ্ছি।
নতুন বছরের শুভক্ষণে আমি গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। শ্রদ্ধা জানাচ্ছি জাতীয় চার নেতার প্রতি। স্মরণ করছি মুক্তিযুদ্ধের ৩০ লাখ শহিদ এবং ২ লাখ নির্যাতিত মা-বোনকে। শ্রদ্ধা জানাচ্ছি সকল বীর মুক্তিযোদ্ধাকে।
আমি স্মরণ করছি ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্টের কালরাতে ঘাতকদের হাতে নিহত আমার মা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব, তিন ভাই- মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন শেখ কামাল, মুক্তিযোদ্ধা লেফটেন্যান্ট শেখ জামাল ও দশ বছরের ছোট্ট শেখ রাসেলকে- কামাল ও জামালের নবপরিণীতা বধূ- সুলতানা কামাল ও রোজী জামাল, আমার চাচা মুক্তিযোদ্ধা শেখ আবু নাসেরসহ সেই রাতের সকল শহিদকে।
প্রিয় দেশবাসী, সৃষ্টির অমোঘ নিয়মে সময় চলে যায়। করোনাভাইরাসের মহামারির মধ্যেই আমরা এক বছরের অধিক সময় পার করলাম। গত বছর মার্চের প্রথম সপ্তাহের দিকে আমাদের দেশে করোনাভাইরাস প্রথম শনাক্ত হয়েছিল। নানা আশঙ্কা আর আতঙ্ক গ্রাস করেছিল আমাদের। সেসব মোকাবিলা করেই আমাদের টিকে থাকতে হয়েছে। এরই মধ্যে করোনাভাইরাসের থাবায় আমরা হারিয়েছি আমাদের অনেক প্রিয়জনকে, আপনজনকে। আমি সকলের রুহের মাগরিফরাত এবং আত্মার শান্তি কামনা করছি। স্বজনহারা পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।
প্রিয় দেশবাসী, পয়লা বৈশাখের বর্ষবরণ বাঙালির সর্বজনীন উৎসব। আবহমানকাল ধরে বাংলার গ্রাম-গঞ্জে, আনাচে-কানাচে এই উৎসব পালিত হয়ে আসছে। গ্রামীণ মেলা, হালখাতা, বিভিন্ন ধরনের খেলাধুলার আয়োজন ছিল বর্ষবরণের মূল অনুসঙ্গ।
ব্যবসায়ীরা আগের বছরের দেনা-পাওনা আদায়ের জন্য আয়োজন করতেন হালখাতা উৎসবের। গ্রামীণ পরিবারগুলো মেলা থেকে সারা বছরের জন্য প্রয়োজনীয় তৈজষপত্র কিনে রাখতেন। গৃহস্থ বাড়িতে রান্না হতো সাধ্যমত উন্নতমানের খাবারের।
১৯৬০’র দশকের শেষভাগে ঢাকায় নাগরিক পর্যায়ে ছায়ানটের উদ্যোগে সীমিত আকারে বর্ষবরণ শুরু হয়। আমাদের মহান স্বাধীনতার পর ধীরে ধীরে এই উৎসব নাগরিক জীবনে প্রভাব বিস্তার করতে শুরু করে। ১৯৮০’র দশকে পয়লা বৈশাখের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে বাঙালির অসাম্প্রদায়িক এবং গণতান্ত্রিক চেতনার বহিঃপ্রকাশ ঘটতে থাকে। মূলত আওয়ামী লীগসহ অন্যান্য ধর্মনিরপেক্ষ রাজনৈতিক দল এবং সংগঠনসমূহের কর্মী-সমর্থকদের অব্যাহত প্রচেষ্টার ফলেই আজকের এই অবস্থান। কালক্রমে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান এখন শুধু আনন্দ-উল্লাসের উৎসব নয়, এটি বাঙালি সংস্কৃতির একটি শক্তিশালী ধারক-বাহক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
পয়লা বৈশাখ আমাদের সকল সঙ্কীর্ণতা, কুপমণ্ডুকতা পরিহার করে উদারনৈতিক জীবন-ব্যবস্থা গড়তে উদ্বুদ্ধ করে। আমাদের মনের ভিতরের সকল ক্লেদ, জীর্ণতা দূর করে আমাদের নতুন উদ্যোমে বাঁচার অনুপ্রেরণা দেয়। আমরা যে বাঙালি, বিশ্বের বুকে এক গর্বিত জাতি, পয়লা বৈশাখের বর্ষবরণে আমাদের মধ্যে এই স্বাজাত্যবোধ এবং বাঙালিয়ানা নতুন করে প্রাণ পায়, উজ্জীবিত হয়।
আজ শুধু বাংলাদেশে নয়, বিশ্বের যে প্রান্তেই বাঙালি জনগোষ্ঠি বসবাস করেন, সেখানেই বাঙালি’র হাজার বছরের লোক-সংস্কৃতির বিস্তার ঘটছে বর্ষবরণসহ নানা অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে। আর পৃথিবী জুড়ে তৈরি হচ্ছে বাঙালি সংস্কৃতির সঙ্গে অন্য সংস্কৃতির সেতুবন্ধ।
গত বছরের মতো এ বছরও আমরা বাইরে কোনো অনুষ্ঠান করতে পারছিনে। কারণ, করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ নতুন করে আঘাত হেনেছে সারা দেশে। দ্বিতীয় ঢেউয়ের করোনাভাইরাস আরও মরণঘাতী হয়ে আভির্ভূত হয়েছে। পয়লা বৈশাখের আনন্দ তাই গত বছরের মতো এবারও ঘরে বসেই উপভোগ করবো আমরা। টেলিভিশন চ্যানেলসহ নানা ডিজিটাল মাধ্যমে অনুষ্ঠানমালা প্রচারিত হবে। সে সব অনুষ্ঠান উপভোগ ছাড়াও আমরা নিজেরাও পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ঘরোয়া পরিবেশে আনন্দ উপভোগ করতে পারি।
অতীতের সকল জঞ্জাল-গ্লানি ধুয়ে-মুছে আমরা নিজেদের পরিশুদ্ধ করবো। দৃপ্ত পায়ে এগিয়ে যাবো সামনের দিকে। গড়বো আলোকোজ্জ্বল ভবিষ্যত- এই হোক এবারের নতুন বছরের শপথ। কবিগুরুর ভাষায় আবারও বলতে চাই:
নিশি অবসান, ওই পুরাতন
বর্ষ হলো গত
আমি আজ ধূলিতলে এ জীর্ণ জীবন
করিলাম নত।
বন্ধু হও, শত্রু হও, যেখানে যে কেহ রও
ক্ষমা করা আজিকার মতো
পুরাতনের বছরের সাথে
পুরাতন অপরাধ যতো।
প্রিয় দেশবাসী, গত বছর করোনাভাইরাস আঘাত হানার পর আমাদের নানাবিধ বিরূপ পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে হয়েছে। এই মহামারি প্রতিরোধে যেহেতু মানুষের সঙ্গ-নিরোধ অন্যতম উপায়, সে জন্য আমাদের এমন কিছু পদক্ষেপ করতে হয়েছে যারফলে মানুষের জীবন-জীবিকার ওপর প্রভাব পড়েছে।
গত সপ্তাহে দ্বিতীয় ঢেউ প্রবল আকার ধারণ করলে মানুষের চলাচলের উপর আমাদের কিছু কিছু নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে হয়। আপনারা দেখেছেন, কোনোভাবেই সংক্রমণ ঠেকানো যাচ্ছে না। জনস্থাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে তাই আমাদের আরও কিছু কঠোর ব্যবস্থা নিতে হচ্ছে। আমি জানি এরফলে অনেকেরই জীবন-জীবিকায় অসুবিধা হবে। কিন্তু আমাদের সকলকেই মনে রাখতে হবে - মানুষের জীবন সর্বাগ্রে। বেঁচে থাকলে আবার সব কিছু গুছিয়ে নিতে পারবো।
গত বছর আমরা একটানা ৬২ দিন সাধারণ ছুটি বলবৎ করেছিলাম। আমরা এখনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দিতে পারিনি। বিদেশের সঙ্গে চলাচল স্বাভাবিক হয়নি। এই অবস্থা শুধু আমাদের দেশে নয়, বিশ্বের যেখানেই এই মরণঘাতী ভাইরাসের প্রকোপ বাড়ছে, সেখানেই এ ধরনের ব্যবস্থা নিতে হচ্ছে।
মানুষের জীবন রক্ষার পাশাপাশি আমাদের অর্থনীতি, মানুষের জীবন-জীবিকা যাতে সম্পূর্ণরূপে ভেঙে না পড়ে সেদিকে আমরা কঠোর দৃষ্টি রাখছি। সকলের সহযোগিতায় আমরা বেশ কিছু কার্যক্রম হাতে নিয়েছিলাম যারফলে গত বছর করোনাভাইরাস মহামারিজনিত প্রভাব আমরা সফলভাবে মোকাবিলা করতে সক্ষম হয়েছি।
করোনাভাইরাসের কারণে অর্থনীতির উপর সম্ভাব্য বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় গত বছর আমরা চারটি মূল কার্যক্রম নির্ধারণ করেছিলাম। চারটি কার্যক্রম হচ্ছে:
(১) সরকারি ব্যয় বৃদ্ধি করা: সরকরি ব্যয়ের ক্ষেত্রে ‘কর্মসৃজনকেই’ প্রাধান্য দেওয়া;
(২) আর্থিক সহায়তার প্যাকেজ প্রণয়ন: অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড পুনরুজ্জীবিত করা, শ্রমিক-কর্মচারীদের কাজে বহাল রাখা এবং উদ্যোক্তাদের প্রতিযোগিতার সক্ষমতা অক্ষুণ্ন রাখা;
(৩) সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রমের আওতা বৃদ্ধি: দারিদ্র্যসীমার নীচে বসবাসকারী জনগণ, দিনমজুর এবং অপ্রাতিষ্ঠানিক কর্মকাণ্ডে নিয়োজিত জনসাধারণের মৌলিক চাহিদা পূরণে বিদ্যমান সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রমের আওতা বৃদ্ধি;
(৪) মুদ্রা সরবরাহ বৃদ্ধি করা: অর্থনীতির বিরূপ প্রভাব উত্তরণে মুদ্রা সরবরাহ এমনভাবে বৃদ্ধি করা যেন মুদ্রাস্ফীতি না ঘটে।
এই চার মূলনীতির ভিত্তিতে আমাদের কার্যক্রম এখনও অব্যাহত রয়েছে। আমরা ইতোমধ্যে প্রায় ১ লাখ ২৪ হাজার ৫৩ কোটি টাকার ২৩টি প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছি। কলকারখানায় যাতে উৎপাদন ব্যাহত না হয় সে ব্যবস্থা আমরা নিয়েছি। কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির উদ্যোগ নিয়েছি। আমরা দিন মজুর, পরিবহন শ্রমিক, হকার, রিক্সাওয়ালা, দোকান কর্মচারী, স্কুল শিক্ষক, মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থী, মসজিদের ইমাম-মোয়াজ্জিন, অন্যান্য ধর্মের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের সেবাদানকারী, সাংবাদিকসহ নিম্নআয়ের নানা পেশার মানুষকে সহায়তা দিয়েছি। প্রায় আড়াই কোটি মানুষকে বিভিন্ন সরকারি সহায়তার আওতায় আনা হয়েছে।
আপনাদের শঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। সরকার সব সময় আপনাদের পাশে রয়েছে। দ্বিতীয় ঢেউ আঘাত হানার পর আমি দরিদ্র-নিম্নবিত্ত মানুষদের সহায়তার জন্য কার্যক্রম গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছি। আমরা ইতোমধ্যে পল্লী অঞ্চলে কর্মসৃজনের জন্য ৮০৭ কোটি ৬৫ লাখ টাকা এবং পবিত্র রমজান ও আসছে ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ৬৭২ কোটিরও বেশি টাকা বরাদ্দ দিয়েছি। এর দ্বারা দেশের প্রায় ১ কোটি ২৪ লাখ ৪২ হাজার নি¤œবিত্ত পরিবার উপকৃত হবেন। গত বছর করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর থেকে ভিজিএফ, টেস্ট রিলিফসহ বিভিন্ন সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রমের আওতা বৃদ্ধি করা হয়েছে।
প্রিয় দেশবাসী, করোনাভাইরাস মোকাবিলায় ইতোমধ্যেই বিজ্ঞানীরা বেশ কয়েকটি ভ্যাকসিন আবিষ্কার করেছেন। অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন সেগুলোর মধ্যে অন্যতম। আমাদের সৌভাগ্য টিকা উৎপাদনের শুরুতেই উল্লেখযোগ্য পরিমাণ টিকার ডোজ আমরা নিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছি। ইতোমধ্যেই ৫৬ লাখের বেশি মানুষকে প্রথম ডোজ টিকা দেওয়া সম্পন্ন হয়েছে। যারা প্রথম ডোজ গ্রহণ করেছেন তাদের দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া শুরু হয়েছে। আমরা পর্যায়ক্রমে দেশের সকলকে টিকার আওতায় নিয়ে আসবো। আমাদের সে প্রস্তুতি রয়েছে। তবে টিকা দিলেই একজন সম্পূর্ণভাবে সুরক্ষিত হবেন এমন নিশ্চয়তা নেই বলে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন। কাজেই টিকা নেওয়ার পরও আমাদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।
ঢাকাসহ সারা দেশের প্রতিটি জেলায় করোনাভাইরাস রোগীর চিকিৎসা সুবিধার আওতা আরও বৃদ্ধি করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে করোনাভাইরাস রোগীদের চিকিৎসার জন্য বিশেষায়িত সরকারি হাসপাতাগুলোতে নিরবচ্ছিন্ন অক্সিজেন সরবরাহের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বিদ্যমান আই.সি.ইউ. সুবিধা আরও বৃদ্ধি করা হচ্ছে।
তবে আমাদের সবাইকে সাবধান হতে হবে। আমাদের প্রত্যেকের দায়িত্ব আমাদের নিজের, পরিবারের সদস্যদের এবং প্রতিবেশির সুরক্ষা প্রদানের। কাজেই ভিড় এড়িয়ে চলুন। বাইরে বের হলে মাস্ক ব্যবহার করুন। ঘরে ফিরে পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন হয়ে গরম পানির ভাপ নিন। করোনাভাইরাস মোকাবিলায় সরকার ইতোমধ্যে ১৮-দফা নির্দেশনা জারি করেছে। আমরা যদি সকলে করোনাভাইরাস মোকাবিলার স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলি, অবশ্যই এই মহামারিকে আমরা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হবো, ইনশাআল্লাহ।
প্রিয় দেশবাসী, যুগে যুগে মহামারি আসে, আসে নানা ঝড়-ঝঞ্ঝা, দুর্যোগ-দুর্বিপাক। এসব মোকাবিলা করেই মানবজাতিকে টিকে থাকতে হয়। জীবনের চলার পথ মসৃণ নয়। তবে পথ যত কঠিনই হোক, আমাদের তা জয় করে এগিয়ে যেতে হবে। আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ভাষায় তাই বলতে চাই:
আমরা চলিব পশ্চাতে ফেলি’ পচা অতীত
গিরি গুহা ছাড়ি’ খোলা প্রান্তরে গাহিব গীত।
সৃজিব জগৎ বিচিত্রতর বীর্যবান
তাজা জীবন্ত সে নব সৃষ্টি শ্রম-মহান।
বাঙালি বীরের জাতি। নানা প্রতিকূলতা জয় করেই আমরা টিকে আছি। করোনাভাইরাসের এই মহামারিও আমরা ইনশাআল্লাহ মোকাবিলা করবো। নতুন বছরে মহান আল্লাহর দরবারে তাই প্রার্থনা, বিশ্বকে এই মহামারির হাত থেকে রক্ষা করুন।
আপনারা সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। সবাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন। সবাইকে আবারও নতুন বছরের শুভেচ্ছা। সর্বশক্তিমান মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদের সকলের সহায় হোন। খোদা হাফেজ। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।
ছবিঃ মুক্তসংবাদ প্রতিদিন
নিজস্ব প্রতিনিধি, মুক্তসংবাদ প্রতিদিনঃ বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ পরিষদ (বাসকপ)-এর নতুন কার্যনির্বাহী কমিটি গঠন করা হয়েছে। সিনিয়র সাংবাদিক এটিএম মমতাজুল করিম সভাপতি, কবির আহম্মেদ কার্যকরী সভাপতি, ছালেহ আহম্মেদ সাধারণ সম্পাদক ও সুজন দে কে সিনিয়র যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক করে করে ৩৫ সদস্যের নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়। ৩ নভেম্বর রবিবার রাজধানীর পুরানা পল্টনে সংগঠনের এক সভায় সর্বসম্মতিক্রমে এ কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়।
কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হলেন, সহ-সভাপতি, অধ্যাপক খোরশেদ আলম, মো: নজরুল ইসলাম বাঙ্গালী, মো: দেলোয়ার হোসেন ও ইব্রাহীম খলিল। যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক, কে এম নেয়ামুল আহসান, জামিল উদ্দিন, ছানা উল্লা, মোহাম্মদ উল্ল্যাহ শামীম।
সংগঠনিক সম্পাদক,মলয় নাথ, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক, মো: মনসুর রহমান পাশা ও জাহাঙ্গীর আলম, প্রচার সম্পাদক মো: আমজাদ হোসেন সজল, সহ প্রচার সম্পাদক মো: ফেরদৌস, অর্থ সম্পাদক ঝর্ণা বিশ্বাস, দপ্তর সম্পাদক, মো: শামীম হোসেন, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক, সাইফুল আলম, শ্রমিক কল্যান সম্পাদক, রবিউল আলম রবি, আইন সম্পাদক, এডভোকেট আ. হক চাষী, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক, আনোয়ার হোসেন মিলন, আর্ন্তজাতিক বিষয়ক সম্পাদক, আবুল হোসেন ভুইয়া, সমাজকল্যান সম্পাদক, মো: দোলোয়ার হোসেন, ত্রাণ ও পূর্ণবাসন সম্পাদক মমতা পারভীন, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক, জহিরুল ইসলাম সিরাজ, কার্যকরী সদস্য, রফিক চৌধুরী, শরিফ উদ্দিন, শহিদুল ইসলাম, আলী আকবর, মো: আরাফাত মিঞা, শাহীন আলম, লাভলী বেগম নুপুর ও মো: রাজু মিয়া।
নবনির্বাচিত সভাপতি এটিএম মমতাজুল করিম বলেন, সাংবাদিকদের কল্যাণ, নিরাপত্তা ও পেশাগত মর্যাদা রক্ষায় বাসকপ সবসময় কাজ করে যাবে । সাধারণ সম্পাদক ছালেহ আহম্মেদ বলেন, নতুন কমিটি ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে, যেন সাংবাদিক সমাজের ন্যায্য দাবি বাস্তবায়িত হয়।