a
ফাইল ছবি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক
দেশে আবারও আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা। এরই মধ্যে সংক্রমণ ঠেকাতে প্রস্তাবনাও দিয়েছে এই সংক্রান্ত কারিগরি কমিটি। সে অনুযায়ী দু’একদিনের মধ্যেই কঠোর বিধিনিষেধ আরোপের বিষয়টি ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
শনিবার দুপুরে মানিকগঞ্জের গড়পাড়ায় শুভ্র সেন্টারে শীতবস্ত্র বিতরণকালে তিনি এ কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা আগের চেয়ে ৪০০ গুণ বেশি। তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের মতো পরিস্থিত এখনেও সৃষ্টি হয়নি। আক্রান্তের হার অতিরিক্ত বৃদ্ধি পেলে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, চলমান ইউপি নির্বাচনসহ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও যানবাহনে স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না। এটা খুবই উদ্বেগজনক। নিয়ম না মানলে দেশকে হুমকির মুখে ঠেলে দেওয়া হবে বলে মন্তব্য করেন।
ছবি সংগৃহীত: প্রধান উপদেষ্টার সহকারী মো: শফিকুল আলম
নিউজ ডেস্ক: লন্ডন বৈঠকের ঘোষণা অনুযায়ী রোজার আগেই (ফেব্রুয়ারি) নির্বাচন হতে পারে বলে আভাস পাওয়া গেছে। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
গতকাল আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিষয়ে এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে এ নির্দেশ দেন। নির্বাচন আয়োজন সংশ্লিষ্টদের সব ধরনের প্রশিক্ষণ ও প্রস্তুতির নির্দেশ দেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টার সহকারী জনাব শফিকুল আলম বলেন, বৈঠকের মূল বিষয় ছিল আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রস্তুতি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে। নির্বাচনের ২টা সম্ভাব্য সময় আগেই জানানো হয়েছে। ১টা হলো- প্রধান উপদেষ্টা জাতির উদ্দেশে ভাষণে এপ্রিলের প্রথমার্ধে নির্বাচনের কথা বলেছিলেন। পরবর্তীতে জানানো হয় যদি প্রস্তুতি সম্পন্ন হয় এবং গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারগুলো হয়ে যায়, তাহলে রমজানের আগেই ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হতে পারে।
নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে গতকাল প্রায় দুই ঘণ্টা আলোচনা হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা কিছু জরুরি নির্দেশনা দিয়েছেন। প্রথম নির্দেশনা ছিল নির্বাচন ঘিরে আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক যত প্রস্তুতি, সব আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ করতে হবে। এর মধ্যে অনেক বিষয় আছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীতে ১৭ হাজার নতুন রিক্রুটমেন্ট করা হচ্ছে নির্বাচনকে সামনে ঘিরে। তাদের নিয়োগ ও প্রশিক্ষণ যাতে এ সময়ের মধ্যে সম্পন্ন হয় সেই নির্দেশ দিয়েছেন। নির্বাচন সামনে রেখে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি খারাপ করার অনেক পাঁয়তারা চলছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আগামী মাসগুলোতে কঠোরভাবে আইন প্রয়োগ করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
বৈঠকে জানানো হয়েছে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর আট লাখের মতো সদস্য নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করবে। প্রধান উপদেষ্টা নির্দেশ দিয়েছেন শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন সম্পন্ন করতে পুরো আট লাখ সদস্যকেই প্রশিক্ষণ দিতে হবে এবং তা ডিসেম্বরের মধ্যে।
এবার অনেক নতুন ভোটার ভোট দেবেন। বিগত কয়েকটি নির্বাচনে তরুণ ভোটাররা ভোট দিতে পারেননি। প্রধান উপদেষ্টা নির্দেশ দিয়েছেন ১৮ থেকে ৩৩ বছর বয়সিদের একটা পৃথক ভোটার তালিকা করা যায় কিনা তা খতিয়ে দেখতে। তাদের জন্য কেন্দ্রগুলোতে আলাদা ভোটিং বুথ রাখার বিষয়টা দেখতে বলেছেন।
প্রেস সচিব বলেন, নির্বাচনকালীন সময়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের নিয়োজিত করা একটা ইস্যু। কোথায় কোথায় নিয়োজিত করা হবে, ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে কীভাবে নিয়োজিত করা হবে, কতজন আনসার থাকবে, কতজন পুলিশ থাকবে, বিজিবি বা সেনাবাহিনী কীভাবে থাকবে সেগুলো নিয়ে মিটিংয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। নির্বাচনের আগে ডিসি, এসপি, ওসি, টিএনও- এসব পদে রদবদল করতে বলা হয়েছে।
নির্বাচনকালীন প্রশাসনে রদবদল প্রসঙ্গে ডেপুটি প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বলেন, লটারির মাধ্যমে রদবদল করা যায় কিনা তা দেখতে বলা হয়েছে। গত সরকারের আমলে একটা উপনির্বাচনে নির্বাচন কমিশন সিসি টিভি ক্যামেরায় পর্যবেক্ষণ করে পুরো একটা আসনে নির্বাচন বাতিল করে দিয়েছিল।
পরবর্তীতে আইন সংশোধন করে নির্বাচন কমিশনের এ ক্ষমতাটা খর্ব করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের এ ক্ষমতা ফিরিয়ে দেওয়া যায় কিনা তা খতিয়ে দেখতে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।
এবার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের তো প্রশিক্ষণ দেওয়া হবেই, ভোটারদেরও প্রশিক্ষণ দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। নারী ভোটাররা যাতে নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারেন তা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। বিগত তিনটি জাতীয় নির্বাচনে যেসব পোলিং অফিসার ও প্রিসাইডিং অফিসার দায়িত্ব পালন করেছেন, তাদের বাদ দিয়ে এবার নির্বাচনি কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া যায় কিনা সে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে। সূত্র: বিডি প্রতিদিন
ফাইল ছবি
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার ঋণের বিপরীতে দেওয়া শর্ত পরিপালনে নতুন পদ্ধতিতে রিজার্ভ গণনা শুরু করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এজন্য রপ্তানি উন্নয়ন তহবিলের অর্থ রিজার্ভে আর দেখাতে পারছে না বাংলাদেশ ব্যাংক। ফলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এক ধাক্কায় ৩০ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে। অবশ্য ডলারের চাপ সামলাতে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের সঙ্গে রুপিতে লেনদেন শুরু করেছে উভয় দেশ। তবুও আমদানি-রপ্তানির এলসি খুলতে হিমশিম খাচ্ছে ব্যাংকগুলো।
বিশেষ করে আজ থেকে প্রায় দুই বছর আগে আমদানির ক্ষেত্রে যে নিয়ন্ত্রারোপ করা হয়েছিল তা এখনো বহাল রয়েছে। তবুও ডলারের বাজার নিয়ন্ত্রণে আসেনি। এখনো খোলাবাজারে প্রতি ডলার ১১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ব্যাংকিং চ্যানেলেও প্রতি ডলার বিক্রি হচ্ছে ১০৯ টাকায়। এতে অবমূল্যায়িত হচ্ছে টাকা।
এদিকে আইএমএফের ঋণের প্রথম কিস্তির ৪৭৬ মিলিয়ন ডলার ফেব্রুয়ারিতে পাওয়া গেলেও তার তেমন কোনো প্রভাব পড়েনি ডলারের বাজারে। ফলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভেও ইতিবাচক কোনো প্রভাব দেখা যায়নি। দ্বিতীয় কিস্তির অর্থ ছাড়ের আলোচনা শুরু হচ্ছে আগামী সেপ্টেম্বরে। তার আগে সংস্থাটির দেওয়া ৩৮ ধরনের শর্ত পরিপালন করতে হচ্ছে সরকারকে। এর মধ্যে গ্যাস-বিদ্যুৎ, জ্বালানির দাম বাড়াতে হয়েছে বার বার। যার প্রভাবে জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে অস্বাভাবিক হারে। এতে মূল্যস্ফীতির চাপ দুই অঙ্কের ঘর ছুঁই ছুঁই করছে। এ ছাড়া নতুন নিয়ম রিজার্ভ গণনা শুরু করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। রাজস্ব আদায় বাড়াতে নতুন করে পরিকল্পনা করেছে এনবিআর।
অন্যদিকে মার্কিন ডলারের অভাবে নিয়মিত গ্যাসের দাম পরিশোধ করতে পারছে না সরকারি সংস্থা বাংলাদেশ তেল, গ্যাস, খনিজ সম্পদ করপোরেশন-পেট্রোবাংলা। বিল বকেয়া রাখায় জরিমানাও গুনতে হচ্ছে। রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয় কিছুটা বাড়তে শুরু করলেও রিজার্ভ সে হারে বাড়ছে না।
২৬ জুলাই পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংকে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২৯ দশমিক ৬৮ বিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুসারে, চলতি জুনের প্রথম ২৫ দিনে প্রবাসীরা ২ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার পাঠিয়েছেন। যা গত বছরের একই মাসের প্রথম ২৩ দিনে পাওয়া ১ দশমিক ২৮ বিলিয়ন ডলারের তুলনায় ৫৭ শতাংশ বেশি। এতে চাপে থাকা দেশের সামষ্টিক অর্থনীতিতে কিছুটা স্বস্তি ফিরছে।
এদিকে নতুন অর্থবছরে পণ্য ও সেবা রপ্তানি করে ৭২ বিলিয়ন ডলার আয়ের লক্ষ্য ঠিক করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, যা আগের অর্থবছরের লক্ষ্যের চেয়ে ১১ দশমিক ৫২ শতাংশ বেশি। এ ছাড়া সদ্য সমাপ্ত ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৫৮ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করে ৫ হাজার ৫৫৫ কোটি ৮৭ লাখ ডলারের রপ্তানি সম্ভব হয়েছিল। সে হিসাবে ৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হলেও লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় রপ্তানি আয় আড়াই বিলিয়ন ডলার কম হয়। অন্যদিকে দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে চলে আসা ডলার সংকট নিয়ন্ত্রণে আনতে বিলাসী ও অপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানিতে নিয়ন্ত্রণারোপ করে সরকার। এতে সদ্য বিদায়ী অর্থবছরের আমদানির পরিসংখ্যানেও তার প্রভাব দেখা যায়। ২০২২-২৩ অর্থবছর শেষে পণ্য আমদানি ব্যয় আগের অর্থবছরের চেয়ে ১০ শতাংশ কমেছে। আর আমদানি হওয়া পণ্যের পরিমাণ কমেছে ৪ শতাংশের কাছাকাছি। এরপরও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে তেমন কোনো প্রভাব পড়েনি। ফলে আমদানির সংকটও কাটছে না। ব্যবসায়ীরা প্রয়োজনীয় অনেক পণ্যই আমদানি করতে পারছেন না। এলসি খুলতে ব্যাংকের শাখায় শাখায় ঘুরলেও অনেকে তা খুলতে পারছেন না।
এপ্রসঙ্গে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. হোসেন জিল্লুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, ডলার সংকট খুব কম সময়ে কেটে যাবে বলে আশা করেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। কিন্তু সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে পারেনি। ফলে আমরা আমদানিতে নিয়ন্ত্রণারোপ করেও আমদানি কমাতে পারিনি। আবার রপ্তানিও আশানুরূপ বাড়াতে পারিনি। ফলে আমরা ডলার সংকট কাটাতে পারিনি বলে তিনি মনে করেন। সূত্র: বিডি প্রতিদিন