a
ফাইল ছবি । মমতা
উন্নয়ন একটি বহুমাত্রিক গতিশীলময় ইতিবাচক পরিবর্তন, পরিমার্জন, পরিবর্ধন বিষয়ক ভাবনা ও চিন্তাধারা। তথাকথিত, গতানুগতিক চিন্তাধারা থেকে আরো বেশি উদ্যোগী হওয়া, উন্নত পরিকল্পনা, কাজে উদ্যোমতা বাড়ানো, সঠিক সময় নির্ধারণ।
সঠিক শ্রম, দক্ষ জনশক্তি নিয়োগ, যাচাইকৃত কাচামাল, সুদক্ষ ব্যবস্থাপনা, স্বচ্ছতা জবাবদিহিতামুলক ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন জনবলের সমষ্ঠিগত ভাবনার বহিঃপ্রকাশ হল উন্নয়নের মুল ধারা। তবে ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠান বিশেষে উন্নয়ন ভাবনা কিছুটা ভিন্ন ভিন্নরূপে প্রকাশ পেতে পারে। যেমন- সামাজিক উন্নয়ন, রাজনৈতিক উন্নয়ন, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, স্বাংস্কৃতিক উন্নয়ন, ভৌগলিক উন্নয়ন, যোগাযোগ ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন প্রভৃতি।
আমার বিষয় হচ্ছে ক্ষুদ্র শিল্প/ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা বিষয়ক উন্নয়ন ভাবনা। তবে কাঙ্খিত উন্নয়নের ক্ষেত্রে রয়েছে কিছু বাধা বা প্রতিবন্ধকতা। যেমন উপযুক্ত খাত নির্বাচন না করা, সুবিধাজনক স্হান না পাওয়া, অদক্ষ ব্যবস্থাপনা, বাজার তৈরী করতে না পারা,পরশ্রী/ পরপুরুষ কাতরতা, ব্যাংক ঋণের জটিলতা প্রভৃতি।
তবে একথা সত্য যে যদি আপনার সাহসিকতা, উদ্যোমতা ও উদ্যোগ নেয়ার ক্ষেত্রে আপনার সিদ্ধান্ত গ্রহণ সঠিক থাকে, তবে আপনি নিজেই স্বস্হান থেকে স্হানীয় বাজারভিত্তিক স্বল্প মুলধনে একজন ছোটখাট উদ্যোক্তা হতেই পারেন।
বেকারত্ব দূর করতে পারেন সমাজের কিছু মানুষের, হাসি ফোটাতে পারেন কিছু পারিবারের, অংশীদার হতে পারেন দেশ বিনির্মাণে। কেননা শুণ্য থেকেই পুন্য সংখ্যার সৃষ্টি হয়। আমি শুরু করেছি ব্লক,বাটিক, নকশী-কাথা, পাথর পুঁতি ও পাট দিয়ে- আপনিও এগিয়ে আসুন আপনার সামাজিক দায়বদ্ধতা ও দেশপ্রেমের টানে।
পরিকল্পিত সঠিক শ্রম সততা সাহসিকতার এ উদ্যোগ ইনশাআল্লাহ আপনার আমার আমাদের সফলতা এনে দেবেই। বাবুই পাখির কথা ভাবুন কিভাবে বুদ্ধি আর শ্রম দিয়ে অন্যের গাছের পাতা দিয়ে সুদক্ষ কারিগরি জ্ঞানের সহায়তায় নিজের শিল্প কর্মের পরিচয় দিয়েছেন। তবে আমি আপনি তো মানুষ, পাখি পারলে আমরা কেন পারবোনা? এই আত্মবিশ্বাসে অগ্রসর করুন নিজেকে, নতুনভাবে তুলে ধরতে কথা দিলাম আপনিও হবেন একজন সফল উদ্যোক্তা। লোভ, আত্ন-অহমিকা, অতীত ইতিহাস, সফলতার মুল প্রতিবন্ধকতা এগুলো বর্জন করে চলুন এগিয়ে যাই কর্মক্ষেত্রে নতুন ধ্যাণ-ধারণায়। তবেই হতে পারি আপনি, আমি, আমরা সফল একজন সেলেব্রেটি।
লেখক: মমতা- মানবাধিকার কর্মী ও নারী উদ্যোক্তা
ফাইল ছবি
একটি সাবমেরিন ঘাঁটি, ৫০০ কোটি ডলার সহায়তা, ভারতের শিলিগুড়ির কাছে অবকাঠামো প্রকল্প, বাংলাদেশের সঙ্গে অস্ত্র বাণিজ্য ও সামরিক এক্সারসাইজের মাধ্যমে বেইজিং ভারতকে খুব পরিষ্কার করে তার উদ্দেশ্য সম্পর্কে জানিয়ে দিচ্ছে। তা হলো এ অঞ্চলে ক্ষমতার কাঠামো বদলে যাচ্ছে। বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক আধিপত্য বিস্তারের অংশ হিসেবে দক্ষিণ এশিয়াসহ বিশ্বের বেশ কিছু অঞ্চলে চীন তার এ অভিযান পরিচালনা করছে। সর্বাবস্থায় বন্ধু পাকিস্তান ছাড়াও শ্রীলঙ্কা, আফগানিস্তান, নেপাল, মালদ্বীপ এবং ভুটানের দিকে সমন্বিত পদক্ষেপ নিয়েছে। তারা এখন বাংলাদেশের ওপর আধিপত্য বিস্তার ও তা শক্তিশালী করছে।
শিলিগুড়ি করিডোর কন্টিনজেন্সি দিয়ে তার প্রস্তুতি শুরু করেছে চীন। তারা তখনকার বাংলাদেশি প্রেসিডেন্ট জেনারেল এরশাদকে দিয়ে ১৯৮৭ সালে বেইজিংয়ে একটি বিবৃতি দিতে বাধ্য করেছে যে, তিনি বাংলাদেশ ভূখণ্ডের ভিতর দিয়ে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ভারতীয় সেনা পরিবহনে অনুমতি দেবেন না। এক্ষেত্রে স্যামডুরোং চু ঘটনার উল্লেখ করা হয়। তখন সেখানে ২০০ সেনাকে মোবিলাইজ করেছে চীন। তারা ‘নির্ভরযোগ্য বন্ধু’ এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সঙ্গে ২০০২ সালের ডিসেম্বরে একটি প্রতিরক্ষা সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষর করে। বাংলাদেশের কাছে চীন কমপক্ষে ৫০০ কোটি ডলারের অস্ত্র বিক্রি করে।
বিশ্বব্যাপী যে অস্ত্র বিক্রি করে বেইজিং তার মধ্যে বাংলাদেশে বিক্রি করা হয় শতকরা প্রায় ১০ ভাগ। শিলিগুড়ি করিডোর নেপাল এবং বাংলাদেশকে পৃথক করেছে। এই করিডোর ভারতের বাকি অংশের সঙ্গে উত্তর পূর্বাঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ সংযোগ রক্ষা করেছে। এই শিলিগুড়ি করিডোরের খুব কাছে তিস্তা নদীতে ১০০ কোটি ডলারের ড্রেজিং প্রকল্পে চীন ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করছে। ২০১৭ সালে ভারতের সঙ্গে দোকলামে অচলাবস্থার পর চীন জামফেরি রিজে একটি সড়ক নির্মাণে অগ্রসর হয় এবং নির্মাণ করে। এটা শিলিগুড়ি করিডোর থেকে খুব বেশি দূরে নয়। বাংলাদেশে বেল্ট এন্ড রোড ইনিশিয়েটিভ প্রকল্পে বেইজিং খরচ করেছে ৪০০ কোটি ডলার। সামনের বছরগুলোতে তাদের কমপক্ষে মোট ৫০০০ কোটি ডলার খরচের পরিকল্পনা আছে। দুই দেশের মধ্যে ২০ বছর আগে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ছিল ১২০ কোটি ডলার। তা গত বছরে বেড়ে হয়েছে ২২০০ কোটি ডলার। এর মধ্য দিয়ে ভারতকে সরিয়ে দিয়ে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক অংশীদার হয়ে উঠেছে চীন। চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্যিক ঘাটতি প্রায় ২১০০ কোটি ডলার এবং তা বৃদ্ধি পাচ্ছেই।
বস্ত্র, পাট ও অন্যান্য পণ্য সহ বাংলাদেশি পণ্যের জন্য বাজার উন্মুক্ত করে দেয়ার জন্য চীনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ঢাকা। কিন্তু এক্ষেত্রে বেইজিং কর্ণপাত করছে না।
বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমছেই। মে মাসে তা ১৯ বিলিয়ন ডলারের নিচে ছিল। এ অবস্থায় চীনের কাছে ৫০০ কোটি ডলার ঋণ পাওয়ার চেষ্টা করছে ঢাকা। তাদের উদ্দেশ্য এই অর্থ দিয়ে কাঁচামাল কেনা এবং বাজেটে সাপোর্ট দেয়া। পছন্দের শতকরা এক ভাগ সুদে ঢাকা যখন দীর্ঘ মেয়াদী ঋণ চাইছে, তখন বেইজিং সুদের হার বাড়াতে চায়, আরও শর্ত দিতে চায়- যা তারা অন্য দেশগুলোর সঙ্গে করেছে। বিআরআইভুক্ত কমপক্ষে ১৬টি দেশের উচ্চ পর্যায়ে ঋণ আছে। পাকিস্তান এবং শ্রীলঙ্কার আর্থিক পতন থেকে শিক্ষা নিতে পারে ঢাকা। বাংলাদেশকে এরই মধ্যে ৩০০ কোটি ডলার ঋণ দিয়েছে চীন। মোট যে ঋণ আছে বাংলাদেশের তার মধ্যে এই ঋণ শতকরা ১০ ভাগ।
চীনের আরেকটি দুঃসাহসী প্রকল্প হলো কক্সবাজারের পেকুয়ায় বিএনএস শেখ হাসিনা সাবমেরিন ঘাঁটি। এটি এ বছর মার্চে উদ্বোধন করা হয়েছে। এটি নির্মাণে চীনের ১২১ কোটি ডলার তহবিল ব্যবহার করা হয়েছে। এখানে একসঙ্গে ৬টি সাবমেরিন এবং আটটি যুদ্ধজাহাজ নোঙর করতে পারে। ২০১৬ সালের শুরুর দিকে চীনের কাছ থেকে ২০ কোটি ৫০ লাখ ডলারে দুটি মিং-শ্রেণির সাবমেরিন কেনে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের এই চয়েস ছিল বিস্ময়কর। কারণ, মিং শ্রেণির সাবমেরিন ২০০৩ সালের এপ্রিলে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ভয়াবহ এক দুর্ঘটনার শিকার হয়। এতে থাকা ৭০ নৌসেনার সবাই নিহত হন।
অন্য দেশের আভ্যন্তরীণ বিষয়ে তারা হস্তক্ষেপ করে না- এটা বলা সত্ত্বেও, যেসব দেশ তাদের কাছ থেকে ঋণ নিয়েছে তাদেরকে বাধ্য করা চীনের একটি আর্টে পরিণত হয়েছে। এর আগে তাইওয়ান, তিব্বত ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে দক্ষিণ চীন সাগর নিয়ে বিরোধে এক চীন নীতিতে অন্য দেশগুলোকে শ্রদ্ধাশীল হতে বলে চীন। বেইজিং শেষের দিকে অন্য দেশগুলোর তাদের নিরাপত্তা নীতি প্রসারিত করার দাবি করেছে। ২০২১ সালের মে মাসে বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং ঢাকাকে সতর্ক করে দেন যুক্তরাষ্ট্র-ভারত-জাপান-অস্ট্রেলিয়ার সমন্বয়ে কোয়াডে যোগ দেয়ার বিষয়ে। কারণ, এতে তাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে জানান তিনি। উপরন্তু বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতকে ২০২২ সালের জুনে বেইজিংয়ে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা লিউ জিনসং ‘শীতল যুদ্ধের মানসিকতা’ প্রত্যাখ্যান করতে এবং ওই ‘ব্লক রাজনীতিতে’ যুক্ত না হতে বলেন। এসব দাবি পূরণের ক্রমবর্ধমান চায়না রাডারের অধীনে এখন ঢাকা। ঢাকাকে আরও গভীরে টেনে নিতে বেইজিংয়ের প্রচেষ্টাকে নয়া দিল্লি কিভাবে প্রতিহত করে সেটাই এখন দেখার বিষয়। সূত্র: মানবজমিন
লেখক: শ্রীকান্ত কোন্দাপাল্লি
ফাইল ছবি
রাজধানীর মুগদা হাসপাতালের ঠিকাদার গোলাম কিবরিয়া খান রাজার বিরুদ্ধে এক নারী কর্মীর বেতনের টাকা আত্মসাত্ ও শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে পালটা সংবাদ সম্মেলন করেছে হাসপাতালটির আউটসোর্সিং কর্মীদের
অপর আরেকটি অংশ।
তাদের অভিযোগ, মুগদা হাসপাতালের সাবেক ঠিকাদার মুগদা ৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর বি এম সিরাজুল ইসলাম ঐ নারীকে দিয়ে এ ধরনের মিথ্যা অভিযোগ করিয়েছেন। তবে এ ধরনের অভিযোগ নাকচ করে দিয়েছেন কাউন্সিলর সিরাজুল ইসলাম।
গতকাল রবিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে মুগদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আউটসোর্সিং ‘কর্মীদের পক্ষে’ লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন হাসপাতালের ওয়ার্ডবয় ফয়সাল আহমেদ। তিনি বলেন, এক আউটসোর্সিং নারী কর্মী উদ্দেশ্যমূলকভাবে কিছুদিন আগে প্রেসক্লাবের সামনে গোলাম কিবরিয়া খান রাজার বিরুদ্ধে ১৫ মাসের বেতন আত্মসাত্সহ সন্তান নষ্ট করার অভিযোগ আনেন, যা মিথ্যা এবং বানোয়াট।
তিনি বলেন, ঠিকাদার কর্তৃক ২০১৯ সালে জুলাইয়ে আমরা মোট ১৩৯ জন নিয়োগপ্রাপ্ত হই। আমাদের এই নিয়োগের মেয়াদ ছিল ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত। এটি চলমান প্রক্রিয়া হিসেবে নতুন দরপত্রের মাধ্যমে ২০২১ সাল পর্যন্ত বহাল থাকার কথা ছিল। কিন্তু করোনাকালীন দুর্যোগের জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে অনুমতি না পাওয়ায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নতুন দরপত্র আহ্বান করতে পারেনি। কিন্তু করোনা রোগীদের সেবা করার মানবিক বিষয়টি বিবেচনার পাশাপাশি দরপত্রের মাধ্যমে আবার নিয়োগ হলে যেন অগ্রাধিকার পাই—সেজন্য আমরা হাসপাতালের পরিচালকের নিকট অনুরোধ করি, যাতে বিনা বেতনে হলেও আমরা দায়িত্বে বহাল থাকতে পারি। পরে দরপত্রের অনুমোদনটি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে আনা সম্ভব না হলে, আমরা ১২ মাসের স্বেচ্ছাপ্রণোদিত সেবার বিনিময়ে কোনো বেতন পাইনি। এই বিষয়টি ঐ নারী কর্মী অন্য খাতে প্রভাবিত করার চেষ্টা করেছে।
তবে অভিযোগের বিষয়ে কাউন্সিলর সিরাজুল ইসলাম বলেন, আমি ৫ বছর আগেই হাসপাতালের যাবতীয় দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নিয়েছি। একজন কাউন্সিলর হিসেবে আমার দায়িত্ব এলাকায় কেউ কোনো সমস্যায় পড়লে তার প্রতি সমর্থন জানানো। কাউকে চাকরি থেকে বের করে দেওয়ার পূর্বে তার যাবতীয় বকেয়া বেতন পরিশোধ করা অবশ্যক। গোলাম কিবরিয়া খান আউটসোর্সিংয়ের কর্মীদের চাকরির অগ্রাধিকার দেওয়ার ভরসা দিয়ে আগের বেতন দেয়নি বরং নতুনভাবে কর্মী নিবন্ধন করেছেন।