a
সংগৃহীত ছবি
করোনার টিকা পাওয়া নিয়ে যে অনিশ্চয়তা ছিল, তা কিছুটা দূর হয়েছে। এর আগে যে পরিমাণ টিকা পাওয়া গেছে এবং যে পরিমাণ টিকা আসার পথে আছে, তা প্রয়োজনের তুলনায় কম হলেও পরিস্থিতি এখন অপেক্ষাকৃত স্বস্তিদায়ক। বিশেষ করে জাপান থেকে অক্সফোর্ড–অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা আসার পর প্রথম ডোজ নিয়ে যেসব মানুষ অপেক্ষা করেছিলেন, তাঁরা এখন দ্বিতীয় ডোজ নিতে পারছেন।
অন্যদিকে টিকা দেওয়া নিয়ে শুরুতে অনেকের মধ্যে যে সংশয় ও দ্বিধাদ্বন্দ্ব ছিল, তা-ও অনেকটা কেটে গেছে। টিকাকেন্দ্রগুলোয় বিপুলসংখ্যক মানুষের ভিড় প্রমাণ করে, তাঁরা টিকা নিতে আগ্রহী। কিন্তু সাধ আর সাধ্যের মধ্যে বিরাট ফারাক রয়ে গেছে। সরকার এখন পর্যন্ত যে পরিমাণ টিকাকেন্দ্র করেছে, সেটি প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম। এ কারণে বিভিন্ন টিকাকেন্দ্রে উপচে পড়া ভিড় লক্ষ করা যাচ্ছে। গতকাল একটি পত্রিকার পাতায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন হাসপাতালের ফটকে টিকাপ্রার্থী মানুষের দীর্ঘ সারির ছবি ছাপিয়েছে। এ ধরনের ভিড়ে কারও পক্ষে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা সম্ভব নয়। অনেকেরই টিকা নিতে এসে ফিরে যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এর প্রতিকার কী? প্রতিকার হলো অধিকসংখ্যক টিকাকেন্দ্র স্থাপন। অধিকসংখ্যক টিকাকেন্দ্র পরিচালনার জন্য অধিক লোকবলেরও প্রয়োজন হবে। কিন্তু সরকারের স্বাস্থ্য বিভাগ অজ্ঞাত কারণে ‘ধীরে চলা নীতি’ অনুসরণ করে চলেছে। সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির আওতায় সারা দেশের শহরে ও গ্রামে ১ লাখ ২০ হাজার স্থায়ী টিকাকেন্দ্র আছে। হাম-রুবেলা বা অন্য কোনো টিকার বিশেষ প্রচারণার সময় এসব কেন্দ্র থেকে এক দিনে প্রায় দুই কোটি শিশুকে টিকা দেওয়া হয়।
স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, এ পর্যন্ত দেশে টিকা এসেছে ২ কোটি ১৫ লাখ ৪৫ হাজার ডোজ। ২৫ জুলাই পর্যন্ত নিবন্ধন করেছেন ১ কোটি ২১ লাখ ৭০ হাজার ৪৪৫ জন। টিকার প্রথম ডোজ পেয়েছেন ৭৫ লাখ ৬০ হাজার ৩৭২ জন। টিকার দ্বিতীয় ডোজ পেয়েছেন ৪৩ লাখ ৫ হাজার ৯৬৫ জন। সে ক্ষেত্রে সরকারের প্রথম কর্তব্য হওয়া উচিত, প্রথম ডোজ পাওয়া ব্যক্তিদের দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া। তাহলে করোনার টিকা কেন দিনে তিন লাখ ডোজ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলো? ভারতসহ যেসব দেশ অধিকসংখ্যক টিকা দিয়েছে, সেসব দেশে সংক্রমণের হার দ্রুত কমিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে। অতএব, টিকা প্রদানে ধীরগতির কোনো যুক্তি আছে বলে মনে করি না।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর দিনে ৩ লাখ ৬০ হাজার মানুষকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে, যা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম। দেশের ৮০ শতাংশ মানুষকে টিকা কর্মসূচির আওতায় আনতে হলে এই লক্ষ্যমাত্রা কমপক্ষে ১০ গুণ বাড়াতে হবে। দিনে কমপক্ষে ৩৫ লাখ মানুষকে টিকা দিতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত সোমবার ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকে যোগ দিয়ে ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে টিকাদান কর্মসূচি নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর এই নির্দেশনা যত দ্রুত কার্যকর করা যাবে, ততই মঙ্গল।
বিধিনিষেধের মধ্যেও করোনার সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার ঊর্ধ্বমুখী, মৃত্যু ও সংক্রমণের রেকর্ড হচ্ছে। এই অবস্থায় টিকা কর্মসূচি জোরদার করার বিকল্প নেই। সূত্র: প্রথম আলো
ফাইল ছবি
আজ বিশ্ব শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস। ‘প্রজন্মের জন্য নিরাপত্তা ও সুস্বাস্থ্য’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও আজ পালিত হচ্ছে ‘বিশ্ব শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস’।
বাংলাদেশে ১৮ বছরের কম বয়সী ছেলে মেয়েদের শিশু বলা হয়। শিশু শ্রম বাংলাদেশের আইনে যেমন গর্হিতকাজ তেমনি বিশ্বের অন্যান্য দেশের কাছে শিশুশ্রম নিষিদ্ধ। প্রতিবছর ১২ জুন বাংলাদেশসহ বিশ্বের ৮০টি দেশে আন্তর্জাতিক শিশু শ্রম দিবস পালিত হয়।
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং আইএলও, সেইভ দ্যা চিলড্রেন, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরাম এবং ওয়ার্ল্ড ভিশন-এর সহযোগিতায় শিশুশ্রম প্রতিরোধে গণসচেতনতা বৃদ্ধিমূলক আলোচনাসভা, সারা দেশে পোস্টারিং এবং লিফলেট বিতরণসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হয় এই দিবসকে ঘিরে । এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এ দেশে প্রায় ৩৪ লাখের ও বেশি শিশু কাজে জড়িত তাদের ভিতর প্রায় ১৭ লাখই শিশু বাকিরা অনুমোদনযোগ্য।
১৯৫৯ সালে জাতিসংঘে শিশু অধিকার সনদ ঘোষণা করা হয়। বাংলাদেশ এই সনদে স্বাক্ষর করে। বর্তমান আইনে ১৮ বছর বয়স পর্যন্ত শিশু হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে। শিশু অধিকার সনদে ৫৪টি ধারা এবং ১৩৭টি উপ-ধারা আছে। এই উপ-ধারাগুলোতে বলা হয়েছে, শিশুদের ক্ষেত্রে কোন ধরনের বৈষম্য করা যাবে না। ২০০৬ সালের বাংলাদেশ শ্রম আইনের ১ থেকে ১৪ এবং ১৯৭৫ সালের শিশু আইনে বলা হয়েছে, শূন্য থেকে ১৬ বছরের শিশুদের ভারী কাজ করানো যাবে না।
আজকের শিশু আগামীদিনের কর্ণধার, তাই শিশুদেরকে যোগ্য করে গড়ে তুলতে হলে শিশু শ্রমপ্রতিরোধ করতে হবে এ জন্য এগিয়ে আসতে হবে সমাজের সচেতন নাগরিকদের। যেখানে শিশুদের হাতে থাকার কথা খাতা কলম সেখানে শিশুদের হাতে ভারীযন্ত্রপাতির ভার কখনো কাম্য নয় আমাদের সমাজ থেকে।
শিশুশ্রম নিরসনে নিরলস ভাবে যারা কাজ করে যাচ্ছেন তাদের প্রচেষ্টা সফল করতে আমাদের সকলের এগিয়ে আসা একান্ত কর্তব্য। শিশুরা হলো নিস্পাপ ফুলের মতন তাদেরকে দিয়ে ইটভাটা, ইটভাঙা, হোটেলে কাজ করানো, বাসের হেল্পার, লেগুনার হেল্পার হিসেবে কাজ করানোর মত ঝুকি বন্ধ করতে হবে তাহলে অতি শীগ্রই আমরা পাবো একটি সুন্দর সমাজ।
ফাইল ছবি
আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহার পরেই দীর্ঘ দিন পর আফগানিস্তানের ক্ষমতায় এসেছে তালেবানরা। গত ১৫ আগস্ট কাবুল দখলের মাধ্যমে পুরো আফগানিস্তান নিজেদের নিয়ন্ত্রণে এসেছে বলে দাবি করে তারা। কিন্তু দেশটির পাঞ্জশির উপত্যকা এখনও নিয়ন্ত্রণে নিতে পারেনি তালেবান। ওই এলাকা দখল করতে গিয়ে গত কয়েক দিনে বাধার মুখে পড়তে হয়েছে তাদের।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাঞ্জশির দখলের জন্য সর্বশক্তি দিয়ে নামার ঘোষণা দিয়েছে তালেবান। জানা গেছে, পাঞ্জশির দখল করতে ইতোমধ্যে রওনা হয়েছেন শতাধিক তালেবান যোদ্ধারা।
আফগানিস্তানে একের পর এক প্রদেশ বিনাযুদ্ধে আত্মসমর্পণ করলেও সে পথে হাঁটেনি হিন্দুকুশ পর্বতের পাদদেশে অবস্থিত পাঞ্জশির উপত্যকা। ১৫ আগস্টের পরও তালেবানের দখলের বাইরে ছিল এই এলাকার বেশ কয়েকটি প্রদেশ। আহমদ মাসউদের নেতৃত্বে তালেবানের বিরুদ্ধে লড়াই হচ্ছে সেখানে।
আশরাফ গনির শাসনামলের ভাইস প্রেসিডেন্ট আমরুল্লাহ সালেহও রয়েছেন তার সঙ্গে। আফগান বাহিনীর একটি অংশও যোগ দিয়েছে তাদের সঙ্গে। এই বাহিনীর সামনে পড়ে গত কয়েকদিনে বেশ কয়েকবার পিছু হটেছে তালেবান। সেই পাঞ্জশির দখলে এবার সর্বশক্তি দিয়ে নামতে চাইছেন তারা। সম্প্রতি তালেবানের পক্ষে এক টুইটার অ্যাকাউন্টে লেখা হয়েছে-স্থানীয় প্রশাসন শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে রাজি হয়নি। তাই ইসলামিক আমির শাহির শতাধিক মুজাহিদীন পাঞ্জশির দখলের জন্য যাচ্ছে। এদিকে তালেবানের বিরুদ্ধে লড়াই করতে বিরোধী জোটরা দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পাঞ্জশিরে জড়ো হচ্ছেন বলে জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা এএফপি।
মাসউদও এক সংবাদমাধ্যমকে গত রবিবার বলেছেন, আফগানিস্তানের বিভিন্ন প্রদেশ থেকে সাবেক আফগান সরকারের বহু সেনা পাঞ্জশিরে এসেছেন। ফলে তালেবান বাহিনীকে রুখতে প্রস্তুত পাঞ্জশির। সেই প্রতিরোধ ভাঙতে এগোচ্ছেন তালেবান যোদ্ধারাও। এক সপ্তাহ আগে তালেবান কাবুল দখল করার পর দেশটির সাবেক সরকারি বাহিনীর সেনারা জড়ো হন কাবুলের উত্তরে অবস্থিত পাঞ্জশির উপত্যকায়। সেখান থেকেই তালেবানকে প্রতিরোধের সুর ওঠে। তবে ঐতিহ্যগতভাবেই ওই এলাকাটি তালেবান-বিরোধী হিসেবে পরিচিত।
কাবুলের উত্তর-পশ্চিমে পার্বত্য পাঞ্জশির উপত্যকায় মাসউদের শক্ত ঘাঁটি। এর আগে আফগানিস্তানের তালেবান বিরোধী প্রতিরোধের প্রধান আউটপোস্টের নেতা আহমাদ মাসউদ জানিয়েছিলেন, তিনি আশা করছেন এক সপ্তাহ আগে কাবুলে ক্ষমতা দখলকারীদের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ আলোচনা হবে। তবে, তার বাহিনী লড়াই করতে প্রস্তুত। সূত্র : আলজাজিরা