a
ফাইল ছবি
করোনাভাইরাসের এক কোটি ২০ লাখের বেশি ভ্যাকসিন বাতিল করেছে ব্রাজিল, দেশটির স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রক সংস্থা আনভিসা এ সিদ্ধান্ত জানিয়েছে। বাতিলকৃত সব টিকাই চীনের সিনোভ্যাক বায়োএনটেকের তৈরি। টিকাগুলো বাতিল হওয়ার পেছনে যৌক্তিক কারণ হিসেবে আনভিসার এক বিবৃতিতে জানায়।
ব্রাজিল সরকারের অনুমোদিত কারখানা থেকে টিকাগুলো উৎপাদন করা হয়েছিল। শুক্রবার (৩ সেপ্টেম্বর) আনভিসা সিনোভ্যাকের টিকা নিয়ে সতর্কতা জারি করে।
দেশটির সাও পাওলোর বুটানটানের একটি বায়োমেডিকেল সেন্টার সিনোফার্মের সঙ্গে চুক্তি করে টিকা উৎপাদন করছিল। ব্রাজিল স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রক সংস্থা সেটির উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়। উৎপাদিত ওই কারখানা থেকে এক কোটি ২০ লাখের বেশি টিকা বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। কারখানাটি আনভিসা কর্তৃক অনুমোদিত ছিল না।
জনগণের সম্ভাব্য স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়াতে পূর্ব সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এছাড়া কারখানাটির উৎপাদন প্রক্রিয়া ও নিরাপত্তাজনিত বিভিন্ন বিষয় খতিয়ে দেখবে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
ফাইল ছবি
ঋতু পরিবর্তনে জ্বর সর্দি কাশি সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ছে এবং শিশু, গর্ভবতী মাসহ সব বয়সিকে কাবু করছে ভাইরাল ইনফ্লুয়েঞ্জা। রাজধানী থেকে প্রত্যন্ত গ্রামে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা কমলেও চিন্তা বাড়াচ্ছে মৌসুমি রোগটি।
চিকিৎসা কেন্দ্রগুলোতে জ্বর, সর্দি, কাশি, গায়ে-হাতে ব্যথা নিয়ে রোগীরা আসছেন। পরীক্ষা-নিরীক্ষায় কিছু মানুষের করোনা ও ডেঙ্গি ধরা পড়লেও অধিকাংশই ভাইরাল ইনফ্লুয়েঞ্জায় আক্রান্ত।
কিছুতেই ছন্দে ফিরছে না আবহাওয়া। এই রোদ এই বৃষ্টি। খেয়ালি আবহাওয়ার সঙ্গে ঋতু ফাঁদে বাড়ছে সর্দি-কাশির সঙ্গে জ্বরের মতো মৌসুমি রোগ। ঘরে-বাইরে অনেকেই খুকখুক করে কাশছে। কেউবা নাক টানছে। দিনের তাপমাত্রা বাড়ছে-কমছে।
কিন্তু গভীর রাত কিংবা ভোরে ঠান্ডা বাড়ছে। সাধারণত সন্ধ্যার পর থেকে গরম-গরম ভাব দেখে অনেকেই ঘরে ফ্যান বা এসি চালিয়ে রাখছেন। রাতে ঘুমানোর সময়েও তা বন্ধ করা হয় না। ফলে গভীর রাত থেকে ভোর পর্যন্ত তাপমাত্রা আরও কমলে চট করে সর্দি-কাশিতে আক্রান্ত হচ্ছেন সব বয়সি। অনেকে ঠান্ডা পানি কিংবা ফ্রিজে রাখা কোমল পানীয় খেয়েও সর্দিজ্বর ডেকে আনছেন।
এ প্রসঙ্গে একাধিক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জ্বর-সর্দি-কাশির তীব্রতা থাকছে চার থেকে ১০ দিন। জ্বর সেরে গেলেও শুকনো কাশি, দুর্বলতা ভোগাচ্ছে অনেককে। অন্যান্য ইনফ্লুয়েঞ্জার মতোই এ ক্ষেত্রেও একসঙ্গে পরিবারের একাধিক সদস্য জ্বর-সর্দি-কাশিতে ভুগছেন। অনেকের গলাব্যথাও হচ্ছে। তাই রোগটি না কমা পর্যন্ত নিজেকে আলাদা করে অন্তত ৬ ফুট দূরত্ব বজায় রাখার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। একই সঙ্গে ঘরে ও বাইরে অবশ্যই মাস্ক পরার ব্যাপারে গুরুত্বারোপ করেন তারা।
প্রিভেন্টিভ মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. লেলিন চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেন, প্রায় এক মাস ধরে জ্বর-সর্দি-কাশির উপসর্গ নিয়ে প্রচুর রোগী চিকিৎসা নিতে আসছেন। কেউ আবার বাসায় বসে ঘরোয়া চিকিৎসা নিচ্ছেন। ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে এ উপসর্গগুলো ব্যাপক হারে দেখা দিচ্ছে। শুধু শিশু নয়, গর্ভবতী মাসহ সব বয়সিরাই এতে কাবু হচ্ছেন। ভাইরাল ইনফ্লুয়েঞ্জার কারণে করোনা-ডেঙ্গি ও ফুসফুসের রোগীদের অবস্থা জটিল হতে পারে।
এইসব রোগীর বুকের এক্সরে-সিটি স্ক্যান দেখে করোনার মতো মনে হলেও পরে দেখা যাচ্ছে তারা ভাইরাল ইনফ্লুয়েঞ্জায় আক্রান্ত। এখন হাসপাতালের আউটডোরে বেশির ভাগ শিশুই জ্বর-সর্দি-কাশি নিয়ে আসছে। হাঁচি-কাশির সঙ্গে শরীরে তীব্র ব্যথাও হচ্ছে। এক্ষেত্রে যাথযথ চিকিৎসার সঙ্গে পর্যাপ্ত পানি, ফলমূল, শাকসবজি খেতে হবে। নিজে থেকে কোনো ওষুধ বা অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়া একেবারেই ঠিক হবে না। এতে সমস্যা বাড়তে পারে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল নবজাতক ইউনিটের সাবেক বিভাগীয় প্রধান শিশু বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ডা. আবিদ হোসেন মোল্লা গণমাধ্যমকে জানান, শিশুদের জ্বর-কাশি, হাঁচি-সর্দি বেশি হচ্ছে। তবে সব বয়সিদের মধ্যেই এ উপসর্গগুলো দেখা যাচ্ছে। এ ধরনের উপসর্গ নিয়ে আসা অনেক শিশুর ডেঙ্গি শনাক্ত হচ্ছে। এছাড়া অনেক রোগী ভাইরাল ইনফ্লুয়েঞ্জা নিয়ে আসছেন। এ ধরনের ইনফ্লুয়েঞ্জারও মহামারি ঘটানোর ক্ষমতা রাখে।
তিনি বলেন, লক্ষণগুলো দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। বাসায় পর্যাপ্ত তরল খাবার নিশ্চিত করতে হবে রোগী দুর্বল হলে পরিস্থিতি কঠিন হয়ে উঠতে পারে। এক-দুই দিন হলেই পরীক্ষার ব্যবস্থা করা উচিত। তবে ভাইরাল ইনফ্লুয়েঞ্জা বর্ষায় বাড়ে একইসঙ্গে ঋতু পরিবর্তনের কারণেও এমনটা হয়। এটা নিয়ে ভয়ের তেমন কোনো কারণ নেই।
ডা. আবিদ হোসেন মোল্লা বলেন, এ সময়ে বিশেষ করে শূন্য থেকে দেড়-দুই বছর বয়সি শিশুদের মধ্যে উপসর্গগুলো বেশি দেখা দিচ্ছে। তবে যেসব শিশু মায়ের দুধ খায় তাদের খুব বেশি কাবু করতে পারে না।
তিনি বলেন, অনেক শিশু চার-পাঁচ দিনের মধ্যে সুস্থ হয়ে ওঠে। তবে মনে রাখতে হবে, উপসর্গগুলো থাকলেও অনেক শিশু প্রাণচাঞ্চল্য থাকে। কিন্তু নাক দিয়ে পাতলা সর্দি পড়ে। বুকের ভেতর এক ধরনের আওয়াজ হয়। অক্সিজেন কমে যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। অক্সিজেন কমে গেলে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করাতে হবে। অভিভাবকদের ভয় পাওয়ার কারণ নেই। তিনি বলেন, শিশুর প্রতি যত্ন নিতে হবে, অবহেলা নয়। শিশুকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাজমুল হক গণমাধ্যমকে জানান, উপসর্গগুলো নিয়ে অনেক রোগী ঢামেক হাসপাতাল আউটডোরে আসছেন। নতুন ভবনের ১০ তলা পর্যন্ত করোনা রোগীর চিকিৎসা হচ্ছে। ফলে এমন উপসর্গ নিয়ে আসার পরও অনেক রোগী ভর্তি করানো যাচ্ছে না। আউটডোরে রোগীর সংখ্যা বাড়ছেই।
কার্ডিওলজি বিশেষজ্ঞ ডা. মো. তৌফিকুর রহমান জানান, জ্বর-সর্দি-কাশির উপসর্গগুলো হৃদরোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদেরও কাবু করে। বিশেষ করে যাদের ডায়াবেটিস-উচ্চ রক্তচাপ থাকে তাদের ক্ষেত্রে অবস্থা কঠিন হয়। প্রচণ্ড কাশি-হাঁচির কারণে হৃদযন্ত্র বিকলও হওয়ার শঙ্কা থাকে। এজন্য সতর্ক থাকতে হবে।
গর্ভবতী মায়েদের ক্ষেত্রে জ্বর, সর্দি-কাশি বিপদ ডেকে আনতে পারে বলে জানিয়েছেন হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রসূতি ও স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. তাহমিনা। তিনি জানান, ইদানীং গর্ভবতী অনেক মা জ্বর-সর্দির উপসর্গগুলো নিয়ে হাসপাতালে ও বিভিন্ন ডাক্তার চেম্বারে আসছেন। উপসর্গ ঘিরে করোনা-ডেঙ্গি হলে রোগীর জন্য চিকিৎসা দেওয়া কঠিন হয়ে ওঠে। গরমে মায়ের সঙ্গে বাচ্চাদের যত সম্ভব আরামে রাখতে হবে, বিশ্রাম নিতে হবে ঠান্ডা খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। তার মতে এসবই সুস্থ থাকার চাবিকাঠি।
চিকিৎসকরা জানান, গলাব্যথা, খুসখুস ভাব, নাক বন্ধ বা অনবরত হাঁচি, মাথাব্যথা, মাংসপেশিতে ব্যথা, শরীর ম্যাজম্যাজ, দুর্বল লাগা ও ক্ষুধামন্দা দেখা দিলে চিকিৎসা করাতে হবে। উপসর্গে সাইনাস, টনসিলে প্রদাহ হতে পারে। সতেজ ও পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ এবং পর্যাপ্ত পানি পানের পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। একই সঙ্গে আদা-লং-এলাচ-লেবু চা, তুলসী পাতা, মধু ও লেবুর রসসহ দেশীয় ফলের রস পান করার জন্যও বলা হয়েছে। সূত্র: যুগান্তর
ফাইল ছবি
ভারত জাতিসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্যপদ ও ভেটো ক্ষমতা লাভের যে চেষ্টা করছে তার বিরোধিতা করেছে ওয়াশিংটন। কোনো মার্কিন কর্মকর্তার নাম উল্লেখ না করে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসনের এই বিরোধিতার কথা জানিয়েছে রুশ বার্তা সংস্থা স্পুৎনিক।
বার্তা সংস্থাটি জানিয়েছে, ২০১৪ সালে প্রথমবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই নরেন্দ্র মোদি জাতিসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্যপদ লাভের জোর চেষ্টা চালিয়ে আসছেন।
বার্তা সংস্থা স্পুৎনিক জানিয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক তিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ, বারাক ওবামা ও ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতের এই আকাঙ্ক্ষার ব্যাপারে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করলেও বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এর বিরোধী।
চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে জাতিসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদে দুই বছরের জন্য ভারতের পর্যায়ক্রমিক অস্থায়ী সদস্যপদের মেয়াদ শুরু হয়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির শাসনামলে ভারত এই প্রথম নিরাপত্তা পরিষদের অস্থায়ী সদস্যপদ লাভ করলো।
এ ছাড়া জাতিসঙ্ঘ প্রতিষ্ঠার পর থেকে এই নিয়ে ভারত অষ্টমবারের মতো নিরাপত্তা পরিষদের অস্থায়ী সদস্যপদের অধিকারী হলো। সূত্র: পার্সটুডে