a বাংলাদেশে কিডনি রোগের প্রাদুর্ভাব উদ্বেগজনক, প্রতিরোধই হবে সবচেয়ে বড় বাঁচার আশা
ঢাকা সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩২, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৫
https://www.msprotidin.com website logo

বাংলাদেশে কিডনি রোগের প্রাদুর্ভাব উদ্বেগজনক, প্রতিরোধই হবে সবচেয়ে বড় বাঁচার আশা


সাইফুল আলম, বিশেষ প্রতিনিধি, মুক্তসংবাদ প্রতিদিন
মঙ্গলবার, ১১ মার্চ, ২০২৫, ১১:০০
বাংলাদেশে কিডনি রোগের প্রাদুর্ভাব উদ্বেগজনক, প্রতিরোধই হবে সবচেয়ে বড় বাঁচার আশা

ছবি: মুক্তসংবাদ প্রতিদিন

 

সাইফুল আলম, ঢাকা:  কিডনি রোগ বিশ্বজুড়ে ক্রমাগত বেড়েই চলছে। বাংলাদেশেও এই রোগের প্রাদুর্ভাব উদ্বেগজনক হারে উর্ধ্বমুখী। কিডনি রোগের কারণে শুধু ব্যক্তিগত জীবনই বিপর্যয় হয় না বরং এই রোগাক্রান্ত পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের উপরও বিশাল অর্থনৈতিক চাপ সৃষ্টি করে। রোগের মারাত্মক পরিণতি, অতিরিক্ত চিকিৎসা খরচ এবং চিকিৎসা ব্যায় সাধ্যাতীত হওয়ায় সিংহভাগ রোগী বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুর করুন চিত্র তুলে ধরেন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ক্যাম্পাস আয়োজিত "কিডনি স্বাস্থ্য সুরক্ষায় প্রতিবন্ধকতা ও উত্তরণ: প্রেক্ষাপট বাংলাদেশ” শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকের আলোচকবৃন্দ। 

বক্তাগণ সরকারী কোরকারী ও সেচ্ছাসেবী সংস্থা কিংবা প্রতিষ্ঠান গুলোর সমন্বিত পরিকল্পিত প্রয়াসের প্রতি গুরুত্ব আরোপ করেন। "বিশ্ব কিডনি দিবস-২০১৫” উদযাপন উপলক্ষ্যে আয়োজিত কর্মসূচীর অংশ হিসেবে দেশের শীর্ষস্থানীয় কিডনি বিষয়ক বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা কিডনি এওয়ারনেস মনিটরিং এন্ড প্রিদেশন সোসাইটি (ক্যাম্প), ১১ মার্চ (মঙ্গলবার) জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে এই গোলটেবিল ঝৈকের আয়োজন করে। সহযোগী সংগঠন হিসেবে ছিলো বাংলাদেশ রেনাল এসোসিয়েশন। 

গোলটেবিল বৈঠকে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ক্যাম্পাস এর প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি অধ্যাপক ডা এম এ সামাদ। তিনি তার মূল প্রবন্ধে বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) এর তথ্য অনুযায়ী, কিডনি রোগ বিশ্বব্যাপী মৃত্যুর অন্যতম কারণ গুলোর মধ্যে একটি। উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলিতে কিডনি রোগের প্রকোপ বাড়ছে, বিশেষ করে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ এবং স্থূলতার মতো অসংক্রামক রোগের কারণে। বিশ্বব্যাপী প্রায় ৮৫ কোটি মানুষ শুধু দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগে আক্রান্ত। এই সংখ্যা ডায়াবেটিস রোগীদের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ এবং ক্যান্সার রোগীদের চেয়ে প্রায় বিশ গুন। মৃত্যুর কারণ হিসেবে কিডনি রোগ ১৯৯০ সালে ছিল ১৯তম স্থানে, বর্তমানে দাঁড়িয়েছে ৭ম স্থানে, এভাবে চলতে থাকলে ২০৪০ সালে দখল করে নেবে ৫ম স্থান। আবার উন্নয়নশীল বা স্বল্লোন্নত দেশে কিডনি রোগের হার সবচেয়ে বেশি। তিনি বলেন, বাংলাদেশেও কিডনি রোগের প্রাদুর্ভাব উদ্বেগজনক। তথ্য মতে, প্রায় ৩ কোটি ৮০ লাখ লোক কোন না কোন কিডনি রোগে আক্রান্ত। এর মধ্যে প্রতি বছর প্রায় ৪০ হাজার কিডনি রোগী ডায়ালাইসিসের উপর নির্ভরশীল হয়। শহর ও আমাঞ্চলে সমানভাবে এই রোগ ছড়িয়ে পড়ছে। দারিদ্র্য, অসচেতনতা, চিকিৎসা সেবার অপ্রতুলতা এবং অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন এই সমস্যাকে আরও বাড়িয়ে তুলছে। আরো ২৪ থেকে ৩০ হাজার রোগী হঠাৎ কিডনি বিকল হয়ে সাময়িক ডায়ালাইসিস প্রয়োজন হয়। এই রোগ আমাদের দেশের জন্য একটি বড় অর্থনৈতিক ও স্বাস্থ্যগত সমস্যা। পক্ষান্তরে, সবাই যদি কিডনি রোগের ব্যাপকতা, ভয়াবহতা, পরিণতি ও ক সম্পর্কে সচেতন থাকে এবং স্বাস্থ্য সম্মত জীবনযাপন করে তা হলে ৬০-৭০ ভাগ ক্ষেত্রে এই মরণঘাতী কিডনি বিকল প্রতিরোধ করা।

কিডনি রোগের সাধারণ কারণ গুলো হল- অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপ, স্থূলতা, নেফ্রাইটিস, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, ধূমপান, ব্যাথানাশক ঔষধের অতিরিক্ত ব্যবহার, জন্মগত ও বংশগত কিডনি রোগ, মূত্রতন্ত্রের প্রদাহ ও পাথরে রোগী। আমরা একটু লক্ষ্য করলেই বুঝতে পারবো যে, প্রায় সবগুলো কারণই আমাদের অস্বাস্থ্যকর জীবন ধারার সাথে জড়িত, একটু সচেতন হলে প্রতিরোধ যোগ্য। তাছাড়া যারা ঝুঁকিতে আছেন যেমন যাদের ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, ওজন বেশী, বংশে কিডনি রোগ আছে, যারা ধূমপায়ী, যারা তীব্র মাত্রার ব্যাথার ঔষধ খেয়েছেন, যাদের পূর্বে কোন কিডনি রোগের ঝুঁকি আছে তাদের বছরে অন্তত ২ বার প্রেসার ও রক্তের ক্রিয়েটিনিন পরীক্ষা করে নেয়া উচিৎ। কেননা প্রাথমিক অবস্থায় কিডনি রোগ সনাক্ত করতে পারলে চিকিৎসার মাধ্যমে তা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।

ডাঃ সামাদ বলেন, কিডনি বিকলের চিকিৎসা সর্বাধিক ব্যয়বহুল। ফলে চিকিৎসা করতে গিয়ে পুরো পরিবার নিঃস্ব হয়ে যায়। তাই ক্যাম্পস এর স্লোগান “কিডনি রোগ জীবননাশা-প্রতিরোধই বাঁচার আশা" ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে চাই। অর্থাৎ কিডনি রোগ প্রাথমিক অবস্থায় সনাক্ত করে চিকিৎসার মাধ্যমে মরণব্যাধি কিডনি বিকল প্রতিরোধ করা যায়। এর জন্য প্রয়োজন গণসচেতনতা।

কিডনি ফাউন্ডেশন এর সভাপতি অধ্যাপক ডাঃ হারুন-উর-রশিদ কিডনি রোগকে 'নীরব দুর্যোগ" এ আখ্যায়িত করে বলেন এ রোগের জটিলতা ও চিকিৎসা ব্যয়ের আধিক্য বিবেচনায় প্রতিরোধকেই একমাত্র অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করতে হবে ।অধ্যাপক ডাঃ মোহাম্মদ রফিকুল আলম বলেন, কিডনি রোগ প্রতিরোধে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা নিতে হবে। এ জন্য একটি সুষ্ঠু কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করতে হবে। তিনি বলেন, বিশেষ করে বাচ্চাদের এবং যুব সমাজের মাঝে যাতে কিডনি রোগ প্রবেশ করতে না পারে সে জন্য এখনই ব্যবস্থা নিতে হবে।গাজী আশরাফ হোসেন বলেন, বিশেষ করে বাচ্চাদের এবং যুব সমাজের মাঝে যাতে কিডনি রোগ প্রবেশ করতে না পারে সে জন্য নিয়মিত খেলাধুলা, নিয়মিত হাঁটা ও ব্যায়াম করার ব্যবস্থা নিতে হবে। কঠিন ভাবে তাদের ফাষ্টফুড, জাঙ্কফুড, অলসতার প্রবণতা থেকে মুক্ত করতে হবে।গোলটেবিল বৈঠকে বিজ্ঞ প্যানেল আলোচক হিসেবে আরো উপস্থিত ছিলেন শাহ সানাউল হক, বিশিষ্ট লেখক, গবেষক ও সাবেক অতিরিক্ত সচিব, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। মাহবুব মোর্শেদ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান সম্পাদক, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস)। ডাঃ সৈয়েদ জাকির হেসেন, লাইন ডাইরেক্টর, নন কমিউনিকেবল ডিজিজ কন্ট্রোল (এনসিডিসি), স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ডাঃ মোঃ হালিমুর রশিদ, লাইন ডাইরেক্টর (সিডিসি), স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। অধ্যাপক ডাঃ নজরুল ইসলাম, সভাপতি, বাংলাদেশ রেনাল এসোসিয়েশন। অধ্যাপক ডাঃ আফরোজা বেগম, সভাপতি, পেডিয়াট্রিক নেফ্রোলজি সোসাইটি অব বাংলাদেশ। মিজ রোকেয়া ইসলাম, কবি ও কথাসাহিত্যিক, চেয়ারম্যান, প্রশিকা মানবিক উন্নয়ন কেন্দ্র। সিরাজুল ইসলাম, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, প্রশিকা মানবিক উন্নয়ন কেন্দ্র। হাসান হাফিজ, সম্পাদক, দৈনিক কালের কন্ঠ। সহকারী অধ্যাপক ডাঃ ফারহাদ হাসান চৌধুরী, সদস্য সচিব, বাংলাদেশ রেনাল এসোসিয়েশন। ক্যাম্পস এর নির্বাহী পরিচালক রেজওয়ান সালেহীন বলেন, ক্যাম্পস কিডনি রোগ প্রতিরোধের জন্য নিয়মিত সচেতনতার বাণী প্রচার করে যাচ্ছে। আমরা যদি কিছু নিয়ম কানুন মেনে চলি তা হলে কিডনি রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব। তাই সরকারী ও বেসরকারী পর্যায় থেকে যদি সকলে এগিয়ে আসেন তা হলে এই রোগ নিরাময় করা অনেকটাই সহজ হবে। গোলটেবিল বৈঠকে উপস্থিত সকল আলোচকদের তাদের মূল্যবান সময় দেওয়ার জন্য ক্যাম্পস এর পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।

এ গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা অভিমত ব্যাক্ত করেন যে, চিকিৎসা করে নয় বরং প্রতিরোধ করেই এ রোগের প্রাদূর্ভাব প্রশমন করতে হবে আর এ জন্য সচেতনতাই একমাত্র উপায়। কিডনি রোগ প্রতিরোধে গণসচেতনতা বৃদ্ধি করতে ক্যাম্পস এর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার প্রশংসা করেন এবং বিত্তবানদের এমন মহৎ কাজে সহযোগীতার আহবান জানান। এ ছাড়াও গোলটেবিল বৈঠকে দেশের সরকারী পর্যায়ের নীতি নির্ধারক, চিকিৎসক, সাংবাদিক, শিল্পী, শিক্ষাবিদ, ক্রীড়াবিদসহ বরেণ্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

মুক্তসংবাদ প্রতিদিন / কে. আলম

৪৮তম বিসিএস চিকিৎসকদেরকে নিয়োগের দাবিতে প্রেসক্লাবে রাস্তা অবরোধ এবং অবস্থান কর্মসূচি 


সাইফুল আলম, ঢাকা প্রতিনিধি, মুক্তসংবাদ প্রতিদিন
বুধবার, ২৯ অক্টোবর, ২০২৫, ১০:১০
৪৮তম বিসিএস চিকিৎসকদেরকে নিয়োগের দাবিতে প্রেসক্লাবে রাস্তা অবরোধ এবং অবস্থান কর্মসূচি 

ছবি: মুক্তসংবাদ প্রতিদিন

 

সাইফুল আলম, ঢাকা: দেশের প্রান্তিক পর্যায়ে সরকারি হাসপাতালগুলোতে চলমান চিকিৎসক সংকট নিরসন এবং ৪৪, ৪৫, ৪৬, ৪৭ তম বিসিএস পরীক্ষায় স্বাস্থ্য ক্যাডারের ওভারলিপিং নিলরোসনে ৪৮ তম বিসিএস থেকে ৩১২০ জন এর অতিরিক্ত লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ অপেক্ষমান চিকিৎসকদের নিয়োগ দেওয়ার দাবিতে রাজধানী ঢাকার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে ৪৮তম বিসিএস নিয়োগপ্রত্যাশী সাধারণ চিকিৎসক ফোরাম। দুপুরের পর রাস্তা ব্লক করে দেয় পরীক্ষায় উত্তীর্ণ অপেক্ষমান চিকিৎসকরা। 

তৃণমূল জনগোষ্ঠীর সরকারি স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আজ ২৮/১০/২০২৫ইং সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত রাজধানী ঢাকার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এই কর্মসূচি পালন হয়। ডা: শরিফ, ডা: সাদমান সাকিব রাফি, ডা: গোলাম সামদানী, ডা: আল মুনতাসির এবং ডা: সেজানা খানের নেতৃত্বে এই বিক্ষোভ সমাবেশে তারা বলেন, উপজেলায় পদ খালি স্বাস্থ্য সেবায় জোড়াতলী, ডাক্তার বঞ্চিত জাতি লজ্জিত, উপজেলা ডাক্তারদের সংকট নিরসন চাই, সরকারি হাসপাতালে ডাক্তার শূন্য ৪৮ থেকে নিতে আপত্তি কেন, উপজেলায় রোগী মরে ইন্টারিম কি করে?, ইফতারি সহ আরো অনেক স্লোগান দিয়ে মুখরিত করে তারা। 

৪৮তম বিসিএস নিয়োগপ্রত্যাশী সাধারণ চিকিৎসকদেরকে শুন্য পদে নিয়োগ দেবার আহ্বান জানান বারবার। ডা: গোলাম সামদানী বলেন, ৪৮তম (বিশেষ) বিসিএস লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ সকলকে নিয়োগ প্রদান করুন। কারন ১২,৯৮০টি চিকিৎসক পদ ফাঁকা রেখে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা অত্যন্ত দুরূহ। তাই সরকারের নিকট আমাদের আহ্বান, তৃণমূল জনগোষ্ঠীর সরকারি স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে শুন্য পদে আমাদের নিয়োগ দিন এবং জনগণের সেবা করার সুযোগ দিন। 

এর আগে তারা জাতীয় প্রেসক্লাবের সমাবেশ এবং সংবাদ সম্মেলন করেন। সেখানে সকল ডাক্তাররা বলেন, সমাজের বিত্তশীলেরা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে চিকিৎসা নিতে পারেন এবং ক্ষেত্র বিশেষে বিদেশে গিয়ে চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করতে পারেন। তবে তৃণমূলের অধিকাংশ জনগোষ্ঠীর একমাত্র অবলম্বন সরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানসমূহ। প্রায় ১২,৯৮০টি চিকিৎসক পদ ফাঁকা রেখে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা অত্যন্ত দুরূহ। 

উপস্থিত সকল সাংবাদিকদের সামনে ডা: সাদমান সাকিব রাফি বলেন, আমরা ৪৮তম (বিশেষ) বিসিএস –এ লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ সকলকে নিয়োগ প্রদান প্রসঙ্গে আমরা ৪৮তম (বিশেষ) বিসিএস-এ নিয়োগবঞ্চিত চিকিৎসকবৃন্দ। বর্তমানে স্বাস্থ্য সংস্কার কমিশন ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রদত্ত তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশে সরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে প্রায় ১২,৯৮০টি চিকিৎসক পদ শূন্য রয়েছে। ফলশ্রুতিতে সাধারণ জনগণ পর্যাপ্ত সরকারি চিকিৎসা সেবা পাচ্ছে না। বর্তমান সরকার প্রান্তিক পর্যায়ে সরকারি স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করছেন। চিকিৎসক ও নার্স নিয়োগ তার মধ্যে অন্যতম।

৪৮তম (বিশেষ) বিসিএস-এর মাধ্যমে দ্রুততম সময়ে চিকিৎসক নিয়োগ চলমান রয়েছে, যা বর্তমান সরকারের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সফলতা। ইতোমধ্যে ৪৮তম (বিশেষ) বিসিএস-এর মাধ্যমে ৩১২০ জনকে সহকারী সার্জন পদে চূড়ান্তভাবে সুপারিশ করা হয়েছে। তবে ৪৪তম, ৪৫তম ও ৪৬তম বিসিএস-এর নিয়োগ প্রক্রিয়া অসমাপ্ত থাকায় ওই বিসিএসগুলোর নিয়োগের বিভিন্ন পর্যায়ে অপেক্ষমান চিকিৎসকরাও ৪৮তমতে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন। ৪৮তম (বিশেষ) বিসিএস-এ প্রায় ১৫০০ জন প্রার্থী ৪৪তম-৪৬তম বিসিএসের নিয়োগের বিভিন্ন পর্যায়ে অপেক্ষমান রয়েছেন। ৪৭তম বিসিএস-এর প্রিলিমিনারি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের পর এ সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পাবে।
৪৪তম-৪৮তম বিসিএসে সর্বমোট ৭৩৪৬টি পদ থাকলেও পূর্ববর্তী বিসিএসগুলোর নিয়োগ সম্পন্ন হওয়ার পূর্বে ৪৮তম থেকে নিয়োগ প্রদান করা হলে আনুমানিক ২২০০ রিপিট প্রার্থী থাকবে। রিপিট প্রার্থীরা সিনিয়রিটিসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার কারণে ৪৪তম, ৪৫তম, ৪৬তম ও ৪৭তম বিসিএসে যোগদান করবে। 

অর্থাৎ, ৪৮তম বিশেষ বিসিএসের সহকারী সার্জন পদগুলো পুনরায় ফাঁকা হয়ে যাবে এবং চিকিৎসক সংকট নিরসন হবে না; যা রাষ্ট্রের সময়, অর্থ ও শ্রমের অপূরণীয় ক্ষতি। একই সাথে বিশেষ বিসিএস নেওয়ার মাধ্যমে তৃণমূল জনগোষ্ঠীকে সরকারি স্বাস্থ্যসেবা জোরদারের উদ্দেশ্যও ব্যর্থ হবে।
এছাড়াও, মাননীয় স্বাস্থ্য উপদেষ্টা মহোদয়ের দেওয়া তথ্যমতে, আরও ৩,০০০ শূন্যপদে চিকিৎসক নিয়োগের জন্য চাহিদাপত্র স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে স্বাক্ষরিত হয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে বলে জানা গেছে। ৪৮তম (বিশেষ) বিসিএস-এর বিজ্ঞপ্তির বিশেষ নির্দেশনায় বলা আছে – নতুন পদ সৃষ্টি, পদ বিলুপ্তি, পদোন্নতি, অবসর গ্রহণ, মৃত্যু, পদত্যাগ অথবা অপসারণ ইত্যাদি কারণে বিজ্ঞাপিত শূন্যপদের সংখ্যা পরিবর্তন হতে পারে।

যেহেতু ৪৮তম বিশেষ বিসিএস-এর নিয়োগ প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে এবং চূড়ান্ত গেজেট হবার আগেই ৩,০০০ শূন্যপদে চিকিৎসক নিয়োগের জন্য চাহিদাপত্র প্রেরণ করা হয়েছে, সেহেতু অবিলম্বে ৪৮তম বিশেষ বিসিএস-এর মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের মেধাক্রমের ভিত্তিতে শূন্যপদে নিয়োগের সুপারিশ করার আবেদন জানানো যাচ্ছে। উল্লেখ্য, এখনও ৪৪তম বিসিএস-এর নিয়োগের চূড়ান্ত প্রজ্ঞাপন প্রকাশ সম্ভব হয়নি। তাই ৫০তম বিসিএস-এর চূড়ান্ত নিয়োগও নিকট ভবিষ্যতে সম্পন্ন করা সম্ভব নয়।

এমতাবস্থায়, সহকারী সার্জন পদে পর্যাপ্ত শূন্যপদ থাকায় রিপিট প্রার্থীর সংখ্যা ও সাধারণ বিসিএস-এর দীর্ঘ সূত্রিতার বিষয়গুলো আমলে নিয়ে, ৪৮তম (বিশেষ) বিসিএস-এ লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ সকলকে সহকারী সার্জন পদে নিয়োগ প্রদানের জন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জোর আবেদন জানানো যাচ্ছে।

 

 


বিভিন্ন বিসিএস পরীক্ষার (ক্যাডার পদে) অংশগ্রহণকারী চিকিৎসকদের তথ্য সমুহ-
বাংলাদেশের নবম গ্রেডে ক্যাডার পদে চিকিৎসক পদ ফাঁকা আছে- ১২৯৮০ জন। 
বর্তমানে চলমান বিসিএস ৪৫, ৪৬, ৪৭, ৪৮ তম অবস্থা এবং পদ সংখ্যা নিম্নরূপ : 
৪৫ তম ( সহকারি সার্জন-৪৫০ সহকারি ডেন্টাল সার্জন- ৮৯ ফ্যামিলি প্ল্যানিং- ৪৪১। মোট পদ সংখ্যা- ৯৮০। এছাড়া সর্বশেষ ধাপে উত্তীর্ণ ভাইবা প্রার্থীর সংখ্যা - ৪৪১ জন (রিপিট প্রার্থী প্রায় ৩০০ জন)। 
৪৬ তম ( সহকারি সার্জন-১৬৮২ সহকারি ডেন্টাল সার্জন- ১৬ ফ্যামিলি প্ল্যানিং-৪৯ মোট পদ সংখ্যা- ১৭৪৭।) এছাড়া সর্বশেষ ধাপে উত্তীর্ণ লিখিত প্রার্থীর সংখ্যা - ১৬০০ জন (রিপিট প্রার্থী প্রায় ১২০০ জন)।
৪৭ তম ( সহকারি সার্জন-১৩৩১ সহকারি ডেন্টাল সার্জন- ৩০ ফ্যামিলি প্ল্যানিং- ১৩৮, মোট পদ সংখ্যা-১৪৯৯। এছাড়া ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ প্রিলিমিনারি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। 
৪৮ তম ( সহকারি সার্জন-২৮২০ সহকারি ডেন্টাল সার্জন- ৩০০ মোট পদ সংখ্যা- ৩১২০। এছাড়া সুপারিশকৃত সংখ্যা - ৩১২০ জন (রিপিট প্রার্থী প্রায়- ১৫০০ জন)।
সর্বমোট সংখ্যা = ৭৩৪৬ জন।

মুক্তসংবাদ প্রতিদিন / কে. আলম

আরও পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে ২৪০ কিলোমিটার বেগে আঘাত হেনেছে ‘আইডার’


আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
সোমবার, ৩০ আগষ্ট, ২০২১, ০৯:৩০
যুক্তরাষ্ট্রে ২৪০ কিলোমিটার বেগে আঘাত হেনেছে ‘আইডার’

ফাইল ছবি

মেক্সিকো উপসাগরে সৃষ্ট শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ‘আইডা‘ যুক্তরাষ্ট্রের লুইজিয়ানা অঙ্গরাজ্যে ঘণ্টায় ১৫০ মাইল বেগে আঘাত হেনেছে। স্থানীয় সময় রোববার উপকূলীয় অঞ্চলে আঘাত হানে ‘আইডা‘। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল হারিকেন সেন্টার (এনএইচএস) বলছে, ঘূর্ণিঝড়ের কারণে সেখানকার লোকজনকে ব্যাপক বিপর্যয়ের সম্মুখীন হতে হবে।

বিবিসির এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য দেওয়া হয়েছে। মেক্সিকো উপত্যকা দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের দিকে ধেয়ে আসে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় আইডা। ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কায় আগেই উপকূলীয় এলাকা থেকে লোকজনকে নিরাপদে আশ্রয় নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে সংশ্লিষ্ট বিভাগ। এরই মধ্যে ওই অঞ্চলের হাজার হাজার বাসিন্দা নিরাপদ আশ্রয়ে সরে গেছে।

যারা এখনো সেখানে রয়ে গেছে তাদের নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার অনুরোধ করেছেন লুইজিয়ানা মেয়র। এদিকে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ঘূর্ণিঝড় আইডাকে খুবই বিপজ্জনক বলে আখ্যা দিয়েছেন। এরই মধ্যে লুইজিয়ানার প্রায় তিন লাখ মানুষ অন্ধকারে রয়েছে।

বাইডেন হুঁশিয়ার করেছেন যে, বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করতে সপ্তাহের বেশি সময় লেগে যেতে পারে। এর আগে ২০০৫ সালে এই দিনে লুইজিয়ানাসহ আশপাশের এলাকায় আঘাত করেছিল ক্যাটরিনা। যা ছিল ঐতিহাসিকভাবে বিধ্বংসী এক ঘূর্ণিঝড়।

এতে মারা গিয়েছিল ১ হাজার ৮০০ মানুষ। ক্যাটরিনা ছিল ক্যাটাগরি তিন ঘূর্ণিঝড়। কিন্তু এবার আঘাত হানতে যাওয়া ‘আইডা‘ চার ক্যাটাগরি ঘূর্ণিঝড়। আশঙ্কা করা হচ্ছে আইডায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ওই রকমই হবে।

এদিকে পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য চার হাজারের বেশি ন্যাশনাল গার্ড সদস্যকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এছাড়া বাসিন্দাদের সহায়তার জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে ১৯৫টি জলযান, ৭৩টি নৌকা ও ৩৪টি হেলিকপ্টার।

শুধু লুইজিয়ানা নয়, মিসিসিপিসহ আলাবামা-ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের সীমান্ত পর্যন্ত ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব দেখা যাওয়ার পূর্বাভাসে দিয়েছে আবহাওয়া অফিস। ঝড়ের পাশাপাশি এসব অঞ্চলে হতে পারে ভারী বৃষ্টিপাতও। মিসিসিপিতে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয় আগেই।

মুক্তসংবাদ প্রতিদিন / khurshedalm@msprotidin.com
Share on Facebook

মুক্তসংবাদ প্রতিদিন এর সর্বশেষ

সর্বশেষ - স্বাস্থ্য