a
ফাইল ছবি
বর্তমান সময়ে যোগাযোগের অন্যতম জনপ্রিয় মাধ্যম হোয়াটসঅ্যাপ। সম্প্রতি হোয়াটসঅ্যাপে তিনটি চমৎকার ফিচার যুক্ত করা হয়েছে। সেগুলো হলো ভিউ ওয়ান্স, জয়েনেবল কলস ও অ্যান্ড্রয়েড থেকে আইওএস এবং তার উল্টো পথে চ্যাট ট্রান্সফার। এই তিন ফিচার আপনার হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারের অভিজ্ঞতা আরও অসাধারণ করবে।
প্রযুক্তি বিশ্ব টিকে থাকতে প্রায় প্রতি মাসেই নতুন নতুন ফিচার যোগ করা হয়। বিগত কয়েক বছর ধরেই হোয়াটসঅ্যাপের আইওএস ও অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপে একের পর এক নতুন ফিচার যোগ হয়েছে। গ্রাহকরাও এমন সুবিধার জন্য মুখিয়ে ছিলেন এত দিন জেনে নেওয়া যাক কি কি ফিচার এবং তাদের কাজ কি।
ভিউ ওয়ান্স:
স্ন্যাপচ্যাটের জনপ্রিয় একটি ফিচার সম্প্রতি যুক্ত হয়েছে হোয়াটসঅ্যাপে। নতুন এই ফিচারের সাহায্যে গ্রাহক কোনও ছবি বা ভিডিও পাঠালে তা একবারই দেখা যাবে। আর একবার দেখার পরে তা অদৃশ্যও হয়ে যাবে। যদিও, অপর প্রান্তের মানুষটি স্ক্রিনশটের মাধ্যমে ছবি অথবা ভিডিও সেভ করে রাখতে পারবেন।
স্ন্যাপচ্যাটে স্ক্রিনশট ফিচার ব্লক থাকলেও হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটের স্ক্রিনশট নিতে কোনও সমস্যা নেই। তাই, হোয়াটসঅ্যাপের এই নতুন ফিচারের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন সুরক্ষা বিশেষজ্ঞরা।
জয়েনেবল কল:
জুলাই মাসে হোয়াটসঅ্যাপে যুক্ত হয়েছে এই ফিচার। এই ফিচারের সাহায্যে কোনও কল থেকে বেরিয়ে গিয়ে ফের সেই কলে ফিরে আসা যাবে। যতক্ষণ সেই কল চলবে ততক্ষণ যুক্ত হওয়ার সুযোগ থাকবে। এছাড়াও, কোনও কল মিস করলে এই ফিচারের মাধ্যমে পরে সেই কলে যুক্ত হওয়ার সুযোগ পাওয়া যাবে।
জুম ও গুগল মিটকে টেক্কা দিতেই এই চমৎকার ফিচার নিয়ে হাজির হয়েছে জনপ্রিয় ম্যাসেজিং কোম্পানিটি। এই ফিচার আসার আগে কোনও ব্যক্তি কল থেকে বেরিয়ে গেলে, সেই ব্যক্তিকে ফের কলে ঢোকানোর জন্য কল হ্যাং আপ করে নতুন করে কল করতে হতো।
অ্যান্ড্রয়েড থেকে আইওএস চ্যাট ব্যাকআপ ট্রান্সফার:
আগে অ্যান্ড্রয়েড থেকে আইওএস অথবা আইওএস থেকে অ্যান্ড্রয়েড প্ল্যাটফর্মে সুইচ করলে হোয়াটসঅ্যাপের সব তথ্য হারিয়ে যেত। যদিও, সময় বদলাচ্ছে। ব্যাক আপে স্মার্ট সুইচের মাধ্যমে চ্যাট হিস্ট্রি ও ব্যাক আপ নতুন ফোনে নেওয়া যাবে।
এই সব ফিচার ইতোমধ্যেই আইওএস ও অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসে পৌঁছে গেছে। তাই, আপনারা চাইলে এখনই ব্যবহার করতে পারবেন এসব সুবিধা। এছাড়াও, ওয়েব প্ল্যাটফর্মের জন্য শীঘ্রই হোয়াটসঅ্যাপে যুক্ত হচ্ছে মাল্টি ডিভাইস সাপোর্ট।
সংগৃহীত ছবি
বছরের প্রথম সূর্যগ্রহণ হতে যাচ্ছে আজ বৃহস্পতিবার (১০ জুন)। এ গ্রহণ শুরু হবে বাংলাদেশ সময় দুপুর ১টা ৭ মিনিটে। গ্রহণের পর এটি সর্বোচ্চ অবস্থায় পৌঁছবে বিকেল ৪টা ৩৬ মিনিটে। যা শেষ হবে সন্ধ্যা ৭টা ৬ মিনিটে।
জানা গেছে, বাংলাদেশ থেকে এ সূর্যগ্রহণ তিন মিনিট ৫১ সেকেন্ড ধরে দেখা যাবে। এ সময় সূর্যের প্রায় ৯৪.৩ শতাংশ অন্ধকারে ঢাকা পড়বে। কেবল একটি বলয় দৃশ্যমান থাকবে গ্রহণের সময়। যাকে বলে 'রিং অব ফায়ার'ও বলা হয়।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন সূর্যগ্রহণের ফলে আকাশের কোলে সৌন্দর্য বিচ্ছুরিত হবে।
রাশিয়া, কানাডা, গ্রিনল্যান্ড ও উত্তর মেরু থেকে এ আগুনের বলয় দেখা যাবে। তবে গ্রহণের চূড়ান্ত অবস্থা প্রত্যক্ষ করা যাবে গ্রিনল্যান্ড থেকে। এছাড়া ইউরোপ ও এশিয়ার উত্তরাংশ থেকেও সূর্যগ্রহণ দেখা যাবে।
এ সূর্যগ্রহণের বিষয়ে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা জানিয়েছে, আজকের সূর্যগ্রহণ দেখা যাবে কানাডা, গ্রিনল্যান্ড ও রাশিয়া থেকে। গ্রহণের কক্ষপথ কানাডার উত্তর অন্টারিও এবং সুপিরিয়র হ্রদের উত্তর দিয়ে পার করবে। কানাডায় এই গ্রহণ তিন মিনিট স্থায়ী হবে। তবে ভারতে সূর্যাস্তের আগে অরুণাচল প্রদেশ ও লাদাখের কিছু অংশে মাত্র কয়েক মিনিটের জন্য এই গ্রহণ দেখা যাবে।
নাসা আরো জানায়, বিকেল ৫টা ৫২ মিনিট নাগাদ অরুণাচলের দিবাং অভয়ারণ্য অঞ্চল এলাকা থেকে এই সূর্যগ্রহণের সামান্য একটা অংশ দেখতে পাওয়া যাবে। পাশাপাশি, লাদাখে সূর্যগ্রহণ দেখা যাবে ৬টা ১৫ মিনিট নাগাদ। এছাড়া ভারতের আর কোনো জায়গা থেকেই দেখা যাবে না এই গ্রহণ।
নিউজ ডেস্ক: ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এবং এই সম্পর্ক সঠিক কূটনৈতিকভাবে পরিচালনা করা প্রয়োজন। তবে এই দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক কখনোই স্বাভাবিক ছিল না, এবং এর পেছনে কিছু সুস্পষ্ট কারণ রয়েছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর থেকে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক একটি ভিন্ন ধারায় বিকশিত হয়েছে, যা সাধারণ কূটনীতির রীতিনীতির সাথে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।
স্বাধীনতার পর থেকে যে ধরণের সম্পর্ক এই দুই দেশের মধ্যে গড়ে উঠেছে, তা অনন্য। এটি সাধারণত ভারত সরকারের সাথে বাংলাদেশের আওয়ামী লীগের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। যেখানে সাধারণভাবে রাষ্ট্রের সঙ্গে রাষ্ট্রের সম্পর্ক গড়ে ওঠার কথা, সেখানে এই সম্পর্ক মূলত একটি দলের সাথে কেন্দ্রীভূত হয়েছে। গত পাঁচ দশকে ভারত কখনোই প্রকৃত কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনে আগ্রহ দেখায়নি। বরং, তারা সবসময় বাংলাদেশের প্রতি বড় ভাইয়ের মতো আচরণ করেছে।
বর্তমান সম্পর্কের শিকড় ইতিহাসে নিহিত। ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক প্রায় এক হাজার বছরের পুরনো। আমরা, মুসলমানরা, গর্ব ও সফলতার সঙ্গে সাতশ বছরের বেশি সময় ধরে ভারত শাসন করেছি। আজকের ভারতীয় ঐতিহ্যের অনেকটাই মুসলিম শাসকদের অবদান। কিন্তু ভারতীয় নেতৃত্ব কখনো মুসলমানদের এই গৌরবময় ইতিহাস মেনে নিতে পারেনি। তারা মুসলমানদের বহিরাগত হিসেবে বিবেচনা করেছে এবং ভারতের সমাজ থেকে মুসলিম সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য মুছে ফেলার চেষ্টা করেছে। বাবরি মসজিদ ধ্বংস তার একটি উজ্জ্বল উদাহরণ।
ব্রিটিশ শাসনকে হিন্দু সম্প্রদায় শুধু শাসকের পরিবর্তন হিসেবে দেখেছে এবং শুরু থেকেই ব্রিটিশদের পক্ষ নিয়েছিল। তারা মুসলিম জনগোষ্ঠীকে নির্মূল করার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিল। তবে মুসলিম লীগ ও তার নেতৃত্বের কারণে তারা তাদের উদ্দেশ্যে সফল হতে পারেনি।
১৯৪৭ সালে ভারতের বিভক্তি নিয়ে তৎকালীন হিন্দু নেতৃত্ব, বিশেষত জওহরলাল নেহেরু, সন্তুষ্ট ছিলেন না। পাকিস্তানের জন্মের দিন থেকেই তারা এর বিরুদ্ধে কাজ শুরু করেন।
১৯৭১ সালে আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধ তাদের সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের সুযোগ করে দেয়। তারা সময় নষ্ট না করে পাকিস্তানকে ভাঙার পরিকল্পনায় সফল হয়।
আমাদের বহু ত্যাগের বিনিময়ে স্বাধীনতা অর্জিত হয় এবং ভারত একটি ভালো বন্ধুর মুখোশে হাজির হয়। কিন্তু স্বাধীনতার পরপরই তাদের প্রকৃত রূপ প্রকাশ পায়, যা ছিল লুটেরার মতো।
ভারত কখনোই প্রকৃত বন্ধু হয়ে উঠতে পারেনি; তারা সবসময় বন্ধুত্বের ভান করে কূটনৈতিক সম্পর্ককে একতরফাভাবে পরিচালনা করেছে। ১৯৭১ সাল থেকে ভারত কৌশলে বাংলাদেশকে ব্ল্যাকমেইল করেছে এবং বড় ভাইয়ের মতো প্রভাব বিস্তার করেছে।
তবে এটা অস্বীকার করার উপায় নেই যে ভারত আমাদের চিরস্থায়ী প্রতিবেশী। আমাদের তাদের সঙ্গে ভালো কূটনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে, তবে সেটি হওয়া উচিত ভারসাম্যপূর্ণ এবং উভয়ের সার্বভৌমত্বের প্রতি সম্মানজনক।
২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের পর দৃশ্যপট পরিবর্তন হয়েছে। আমরা এখন ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য সঠিক পথে ফিরে এসেছি। নতুন সম্পর্কটি পেশাদারিত্বের ভিত্তিতে গড়ে উঠবে এবং উভয় দেশের মধ্যে ভালো প্রতিবেশীর সম্পর্কের নতুন অধ্যায় সূচিত করবে।
প্রফেসর ড. শেখ আকরাম আলী
সম্পাদক, সামরিক ইতিহাস জার্নাল ও আইনের অধ্যাপক।