a
ছবি: মুক্তসংবাদ প্রতিদিন
সাইফুল আলম, ঢাকা: বাংলাদেশ ফ্রিল্যান্সার ও আইটি প্রফেশনাল কমিউনিটির উদ্যোগে আজ ২৯ এপ্রিল ২০২৫ জাতীয় প্রেসক্লাব, ঢাকায় একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রেস কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই কনফারেন্সের মাধ্যমে আরো জোরালো হয়ে উঠলো আন্তর্জাতিক পেমেন্ট গেটওয়ে চালুর দাবি।
জাতীয় প্রেসক্লাবে "বাংলাদেশ ফ্রিল্যান্সার ও আইটি প্রফেশনাল কমিউনিটি' এর উদ্যোগে এ প্রেস কনফারেন্সের মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সার ও আইটি পেশাজীবীদের দীর্ঘদিনের একটি যৌক্তিক দাবি PayPal, Wise 3 Stripe এর মতো আন্তর্জাতিক পেমেন্ট গেটওয়ে বাংলাদেশে চালুর প্রযোজনীয়তা সবার সামনে তুলে ধরা হয়।
বাংলাদেশে বর্তমানে প্রায় ১০ লাখেরও বেশি সক্রিয় ফ্রিল্যান্সার ও আইটি উদ্যোক্তা রয়েছেন, যারা প্রতি বছর একটি বড় অংকের বৈদেশিক মুদ্রা রেমিটেন্সে যুক্ত করে দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন। কিন্তু এখনও বাংলাদেশে PayPal, Wise, 3 Stripe-এর মতো জনপ্রিয় পেমেন্ট সেবাগুলো চালু হয়নি, যার ফলে দেশের তরুণ উদ্যোক্তা ও ফ্রিল্যান্সাররা আন্তর্জাতিক ক্লায়েন্টের সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে বড় ধরণের সীমাবদ্ধতায় পড়ছেন।
এই দাবিকে সমর্থন জানিয়ে আযোজকগণ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরে একটি স্মারকলিপি পেশ করেছেন। এই স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয় যে, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সম্ভাবনা ও আইটি খাতের অগ্রগতির জন্য আন্তর্জাতিক পেমেন্ট সিস্টেমের সহজলভ্যতা এখন সময়ের দাবি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন দেশের আইটি কমিউনিটির পরিচিত প্রতিনিধি এমরাজিনা ইসলাম, আব্দুল্লাহ আল মামুন, এইচ এম ওসমান শাকিল, গোলাম কামরুজ্জামান, আতিকুর রহমান, সুমন সাহা, মিনহাজুল আসিফ, রাসেল খন্দকার, সাজিদ ইসলাম প্রাপ্তসহ দেড় শতাধিক আইটি ও ফ্রিল্যান্স পেশাজীবী। প্রেস কনফারেন্সে বক্তারা বলেন, “বিশ্বজুড়ে যখন রিমোট কাজের মাধ্যমে আয় বাড়ছে, তখন বাংলাদেশে পেমেন্ট সমস্যার কারণে আমরা পিছিয়ে যাচ্ছি।”
তাদের একটিই দাবি বর্তমান সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যেন অবিলম্বে PayPal, Wise, Stripe এর মতো আন্তর্জাতিক পেমেন্ট গেটওয়ের আনয়নে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেন।
জাহিদ সবুর
২০০৬ সালে স্বপ্ন পুরণের সাক্ষী হয়ে ধরা দেয় বিশ্বের বহুল ব্যবহৃত সার্চইঞ্জিন হিসেবে পরিচিত গুগল। কিন্তু সে স্বপ্ন বাস্তব হয় ২০০৭ সালে যখন গুগলের সাথে প্রথম কাজ শুরু।২০০৭ সালে গুগলের ব্যাক অ্যান্ড সিস্টেম ডেভেলপমেন্ট প্রকল্পে ভারতের বেঙ্গালুরু অফিসে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেছিলেন এক বাঙালি যুবক, হ্যা নিশ্চয়ই ধরতে পেরেছেন কার কথা বলা হচ্ছে তিনি হলেন পটুয়াখালীর সন্তান জাহিদ সবুর।
বিশ্বে গুগলের লক্ষাধিক কর্মীর মধ্যে ২৫০ জন প্রিন্সিপাল ইঞ্জিনিয়ার কর্মরত রয়েছেন। যাদের মধ্যে জাহিদ সবুর একজন গর্বিত বাঙালি। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করে মেধা আর পরিশ্রমের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মে সেরাদের তালিকায় নাম লিখিয়েছেন জাহিদ সবুর। যোগ্যতা থাকলে বাঙালিরা যে বহুদূর যেতে পারে তার উজ্জ্বল প্রমাণ জাহিদ সবুর। জাহিদ সবুরের পিতা পটুয়াখালীর বাসিন্দা ড. মো. শাহজাহান সৌদি আরবে কিং ফয়সাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ছিলেন। যার ফলে জাহিদের শৈশব কাটে সৌদি আরবে। মা লুৎফুন্নেসা বেগম দেশে থাকার সময় পটুয়াখালী সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ পদে কর্মরত ছিলেন।
সৌদি আরব থেকে মাত্র সাত বছর বয়সে দেশে ফিরে ঢাকায় অক্সফোর্ড ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে ইংরেজি মাধ্যমে ভর্তি হন জাহিদ। সেই ছোটবেলা থেকে শুধু পড়ালেখার মধ্যেই নিজেকে আবদ্ধ করে রাখেননি জাহিদ সবুর। স্কুলের বিজ্ঞান মেলায় অংশ নেওয়া, ব্যাডমিন্টন খেলা, বোনের সংগ্রহের বাংলা বই পড়া আর বন্ধুদের সঙ্গেও দারুণ সময় কাটাতে পছন্দ করতেন এই বিস্ময় বালক।
মাধ্যমিকের রেজেল্ট তেমন ভাল না হলেও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পূর্বেই উদ্যোক্তা হবার জেদ ছিল তার মনে প্রাণে, আর সেখান থেকেই শুরু তার পথ চলা। আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি-বাংলাদেশ (এআইইউবি) থেকে সর্বোচ্চ সিজিপিএ নিয়ে স্নাতক পাস করেন জাহিদ। পেয়েছেন প্রায় সব একাডেমিক সম্মাননা। জাহিদ সবুর দ্বিতীয় সেমিস্টার থেকেই ফুল স্কলারশিপে পড়ে ধারাবাহিকভাবে নিজের মেধার স্বাক্ষর রেখেছেন।
ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে এসেই কম্পিউটারের প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ আর সিস্টেম ডিজাইন এসবের হাতেখড়ি। কোনো কিছু সৃষ্টির যে অপার আনন্দ, তা পুরোপুরিই উপভোগ করেন তিনি। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে বিভিন্ন প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছেন এবং পুরস্কারও জিতেছেন।
পড়াশোনা শেষ করে বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য আবেদন করতে জিআরইও দিয়েছিলেন তিনি। আমেরিকার সেরা ১০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছয়টিতে আবেদন করে চারটিতে ডাক পান ফুল ফান্ডিংসহ। কিন্তু সে মুহূর্তে গুগলে কাজ করার সুযোগ লুফে নেন এই তরুণ। তাই ঢুকে পড়েন বিশ্বের সকল মানুষের কাঙ্ক্ষিত এই কর্মক্ষেত্রে। তিনি গুগলে কাজ শুরু করেন তৃতীয় গ্রেডে। বর্তমানে তার অবস্থান অষ্টম গ্রেডে। কর্মজীবনের শুরুতে তিনি ভারতে কাজ করেছেন তার ছয় মাস পর সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে যোগ দেন ক্যালিফোর্নিয়ায় গুগলের সদর দপ্তরে। এখন কাজ করছেন গুগলের জুরিখ দপ্তরে।
জাহিদ সবুরের সাফল্য থেকে বর্তমান তরুণরা শিক্ষা নিতে পারে, সাফল্যের জন্য সর্বোচ্চ সুযোগ-সুবিধার দরকার নেই বরং অধ্যবসায় আর পরিশ্রমই পারে লক্ষ্যে পৌঁছে দিতে।
ফাইল ছবি
সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের দাবিতে ঢাকা থেকে সিলেট অভিমুখে লংমার্চ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিবেকবান নাগরিক সমাজ।
আগামী বুধবার সকাল ১০টায় ‘বিবেকবান নাগরিক সমাজ’-এর ব্যানারে জাতীয় প্রেসক্লাব থেকে এ কর্মসূচি শুরু করা হবে।
মঙ্গলবার ‘বিবেকবান নাগরিক সমাজ’-এর পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অর্থনীতিবিদ আনু মোহাম্মদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষক মোহাম্মদ তানজীমউদ্দিন খানসহ কয়েকজন বিশিষ্ট নাগরিকের পক্ষ থেকে এ বিবৃতি পাঠানো হয়।
আয়োজকরা জানান, ছাত্র-শিক্ষক, চিকিৎসক, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী, আইনজীবী, ব্যবসায়ী, খেলোয়াড়, শ্রমজীবীসহ সমাজের সর্বস্তরের মানুষের অংশগ্রহণে লংমার্চ সফল করা হবে।
বিবৃতিতে বলা হয়, সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আমরণ অনশন চলছে। দীর্ঘ অনশনে অনেকেই অসুস্থ হতে শুরু করেছেন। হাসপাতালে তাদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তবে এখন পর্যন্ত তাদের কেউ অনশন ভাঙেননি। সরকারের পক্ষ থেকে শিক্ষামন্ত্রী বা সংশ্লিষ্ট কেউ শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙাতে এগিয়ে আসেননি। তাদের দাবি পূরণে আশ্বাসও দেখা যায়নি।
এভাবে টানা অনশনে ছাত্র-ছাত্রীরা জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে এসে দাঁড়িয়েছে। এভাবে চলতে পারে না। শিক্ষার্থীরা জীবন বিপন্ন করে অনশন কর্মসূচি পালন করছে, আমাদের উচিত তাদের পাশে দাঁড়ানো। তাদের দাবির প্রতি একাত্মতা প্রকাশ করা।
এমন পরিস্থিতিতে মঙ্গলবারের মধ্যে উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদকে পদত্যাগের আহ্বান জানানো হয়। অন্যথায় আগামী বুধবার ঢাকা থেকে সিলেট অভিমুখে লংমার্চ কর্মসূচি পালন করা হবে। সূত্র: বিডি প্রতিদিন