a
সংগৃহীত ছবি
চীনের টিকা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সিনোফার্মের সঙ্গে চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে দেড় কোটি ডোজ কেনার। দু-একদিনের মধ্যে দেশে সিনোফার্মের ৫০ লাখ ডোজ টিকা আসছে।
গণটিকা কার্যক্রম পুরোদমে শুরু হবে প্রথম চালান দেশে পৌঁছালেই। এছাড়া ১০ দিনের মধ্যে আসবে মডার্নার ২৫ লাখ ডোজ টিকা। এই তথ্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
এছাড়া দেশে মজুত সিনোফার্মের ১১ লাখ ডোজ পাবে শিক্ষার্থীরা। প্রথমে মেডিকেল শিক্ষার্থীদের দেওয়া হবে। এরপর পাবে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা। ফাইজারের টিকা প্রবাসী শ্রমিকদের দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
ইতোমধ্যে এ সংক্রান্ত প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। দেশে কমপক্ষে ১০ কোটি মানুষকে টিকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেই লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিচ্ছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে স্বাস্থ্যসেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, আমরা আশা করছি আগামী মাসে বেশকিছু টিকা পাব। সেই টিকা দিয়ে গণটিকা কার্যক্রম পুরোদমে শুরু করা হবে।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট একটি সূত্রে জানা গেছে যে, চীনের সিনোফার্মের সঙ্গে দেড় কোটি ডোজ টিকা কেনার চুক্তি ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী টিকার দাম পরিশোধ করা হয়েছে।
টিকার প্রথম চালান দেশে আসবে চলতি মাসের ২৮ বা ২৯ তারিখ। গত ২৫ জুন চুক্তির শর্ত অনুসারে প্রতি ডোজের মূল্যের হিসাবে দেড় কোটি ডোজের সমপরিমাণ টাকা চীনের ব্যাংকে পাঠানো হয়েছে। তারা টাকা পেয়েছে বলেও নিশ্চিত করেছে।
তবে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় টিকা দেশে আনতে হবে। সেজন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে বিমান বাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে।
ফাইজারের টিকা প্রবাসী শ্রমিকদের দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। কারণ দেশের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রায় তারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
তাছাড়া মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে বিশেষ করে সৌদি আরব, কাতার, ওমান, চীনের টিকার অনুমোদন দেয়নি। তাই তাদের ফাইজারের টিকা দিয়ে সেদেশে পাঠানো হবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সরকার এর আগেও করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে টিকাদানের সিদ্ধান্ত নেন। টিকাদানের প্রাথমিক পর্যায়েও দেড় কোটি মানুষকে টিকা দিতে পরিকল্পনা নেওয়া হয়।
পরিকল্পনা অনুসারে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে দেড় কোটি ডোজ টিকা কিনতে চুক্তি করে সরকার।
চুক্তি অনুযায়ী জানুয়ারি থেকে প্রতি মাসে ৫০ লাখ ডোজ টিকা আসার কথা ছিল। তবে প্রথম মাসে ৫০ লাখ টিকা এলেও দ্বিতীয় মাসে আসে মাত্র ২০ লাখ ডোজ। এরপর থেকে আর টিকা আসেনি।
এক্ষেত্রে সরকার দ্বিতীয় পর্যায়ের যে পরিকল্পনা করেছে সেটি কতটা বাস্তবায়ন সম্ভব সে বিষয়ে এখনই বলা কঠিন হবে।
মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্রে জানা গেছে, ওরিয়ন ফার্মা লিমিটেড প্রাথমিকভাবে ১০ মিলিয়ন ডোজ টিকা রাশিয়া থেকে আমদানির প্রস্তাব দিয়েছে। একই সঙ্গে অত্যাধুনিক কারখানায় কোভিড-১৯ প্রতিরোধী উৎপাদনের প্রস্তাবও দিয়েছে।
টিকার প্রাপ্তি নিশ্চিতে গত ৩০ মে তারিখে মন্ত্রণালয়ের উপসচিব ডা. মো. শিব্বির আহমেদ ওসমানী স্বাক্ষরিত এ চিঠিতে এ বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে।
এদিকে শুক্রবার স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক গণমাধ্যমে বলেন, বিশ্বজুড়ে টিকা সরবরাহের আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফরম কোভ্যাক্স থেকে পাঠানো যুক্তরাষ্ট্রের মডার্নার তৈরি করোনাভাইরাসের ২৫ লাখ ডোজ টিকা সর্বোচ্চ ১০ দিনের মধ্যে বাংলাদেশে এসে পৌঁছবে।
শুক্রবার কোভ্যাক্স থেকে এ সংক্রান্ত একটি চিঠি পেয়েছেন বলে তিনি নিশ্চিত করেন।
স্বাস্থ্য মন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, কোভ্যাক্স থেকে আমাদের মোট জনসংখ্যার ২০ শতাংশ টিকা দেওয়ার কথা। প্রায় ৭ কোটি ডোজ (৬ কোটি ৮০ লাখ)। আমরা একটা চিঠি পেলাম কোভ্যাক্স থেকে।
তারা জানতে চেয়েছেন মডার্নার ২৫ লাখ ডোজ টিকা আমরা নেব কিনা। আমরা জানিয়ে দিয়েছি যে টিকা নেব। তিনি বলেন, টিকা নেওয়ার জন্য অন্যান্য প্রস্তুতি আমরা নেব।
‘স্বাধীনতাযুদ্ধে ভারতের অবদান ভুলবার নয়’
বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের সময়ে ভারতের সহযোগিতা ভুলবার নয় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতাযুদ্ধে সবমিলিয়ে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান থেকে প্রায় এক কোটি শরণার্থী ভারতে আশ্রয় নিয়ে ছিলেন। ওই সময়ে ভারত সরকার শরনার্থীদের ভরণ-পোষণ দিয়েছে। যুদ্ধে অস্ত্র দিয়ে সহযোগিতা করেছে। তাই মুক্তিযুদ্ধে ভারতের সহায়তা কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করে বাংলাদেশ।
জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে আজ শুক্রবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও বাংলাদেশের সুবর্ণজয়ন্তীর ১০ম দিনে সভাপতির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
এসময় নিজের বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে ভারতের অনেকে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে যুদ্ধ করেছেন। বাংলাদেশ স্বাধীনতা হওয়ার পেছনে ভারতের অবদান ভুলবার নয়।
শেখ হাসিনা আরো বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি সৈন্যরা অত্যাচার-নিপীড়ন চালিয়েছিল। গণহত্যা, অগ্নিসংযোগহ, ধর্ষণ, লুটপাটের শিকার হয়ে বাংলাদেশ থেকে প্রায় এক কোটি মানুষ ভারতে গিয়ে আশ্রয় নেন। ভারত সেই শরণার্থীদের আশ্রয় দিয়েছে, খাদ্য দিয়েছে, চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছে। সেই সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধা যারা অংশ নিয়েছেন, সেই মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ দিয়েছে ভারত, অস্ত্র সরবরাহ করে সহযোগিতা করেছে। আমি ভারতের জনগণ ও সরকারের কাছে বাংলাদেশের জনগণ ও আমার নিজের পক্ষ থেকে অশেষ কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।
ফাইল ছবি
শুক্রবার (২৬ আগস্ট) মধ্য আকাশে বড় ধরনের হার্ট অ্যাটাকের শিকার হওয়া বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পাইলট ক্যাপ্টেন নওশাদ কাইয়ুম এখন ভারতের নাগপুরের কিংসওয়ে হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা ইউনিটে (আইসিইউ) ‘কোমা’য় আছেন।
হাসপাতালের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) রোশান ফুলবান্ধে বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস)-কে বলেন, ‘ক্যাপ্টেন নওশাদের অবস্থা গুরুতর... তিনি সম্পূর্ণ ভেন্টিলেশনের সহায়তায় বেঁচে আছেন... তার মস্তিষ্কে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে... তিনি কোমায় আছেন।’
হাসপাতালের মেডিকেল সার্ভিসেস ডিরেক্টর ডা. সুভরজিৎ দাশগুপ্ত, ক্রিটিক্যাল কেয়ার ফিজিশিয়ান ডা. রঞ্জন বারোকার, এবং ডা. বীরেন্দ্র বেলেকারের অধীনে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ক্যাপ্টেন নওশাদ কাইয়ুম।
শুক্রবার সকালে ওমানের মাস্কাট থেকে শতাধিক যাত্রী নিয়ে বিজি-০২২ ফ্লাইটটি নিয়ে ঢাকা আসার পথে ভারতের আকাশে থাকা অবস্থায় ক্যাপ্টেন কাইউম অসুস্থ বোধ করেন।
পরবর্তীতে বিমানটিকে মহারাষ্ট্রের নাগপুরের ড. বাবাসাহেব আম্বেদকর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণ করানো হয়।
আকাশে অসুস্থ হয়ে পড়ার সাথে সাথেই ক্যাপ্টেন কাইউম কলকাতার এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের কাছে জরুরি অবতরণের অনুরোধ জানান। একই সময় তিনি কো-পাইলটের কাছে বিমানটির নিয়ন্ত্রণ হস্তান্তর করেন।
কলকাতার এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল বিমানটিকে তার নিকটস্থ নাগপুর বিমানবন্দরে অবতরণ করার নির্দেশ দিলে কো-পাইলটই বিমানটিকে অবতরণ করান। বোয়িং ৭৩৭-৮০০ মডেলের বিমানটিতে ১২৪ জন যাত্রী ছিল। তারা সবাইই নিরাপদে ছিলেন।
এদিকে শুক্রবারই আরেকটি ফ্লাইটে করে আট সদস্যের একটি উদ্ধারকারী দল নাগপুরে যায়। মধ্যরাতের পর বিমানটিকে যাত্রীসহ ঢাকার বিমানবন্দরে নিয়ে আসা হয়। সূত্র: ইত্তেফাক