a
সংগৃহীত ছবি
নারী উদ্যোক্তারা যাতে কম সুদে ঋণ নিয়ে ব্যবসা করতে পারেন, সে জন্য ঋণের সুদহার কমিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। শুধু নারী উদ্যোক্তাদের ঋণ দিতে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে দশমিক ৫ শতাংশ সুদে টাকা নিতে পারবে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো। আর সেই টাকা গ্রাহকদের দিতে হবে ৫ শতাংশ সুদে। বাংলাদেশ ব্যাংকের ‘স্মল এন্টারপ্রাইজ খাতে পুনঃ অর্থায়ন স্কিম’–এর আওতায় এ সুবিধা চালু করা হয়েছে।
আগামী ২০২৪ সালের মধ্যে এসএমই খাতের ঋণের কমপক্ষে ১৫ শতাংশ নারী উদ্যোক্তাদের দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ জন্য দফায় দফায় এ স্কিমের সুদহার কমানো হয়েছে। আজ বুধবার ব্যাংক বন্ধের দিনে আবারও এই স্কিমের সুদহার কমিয়ে নতুন করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
নারী উদ্যোক্তাদের ঋণ দিতে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে দশমিক ৫ শতাংশ সুদে টাকা নিতে পারবে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো। আর সেই টাকা গ্রাহকদের দিতে হবে ৫ শতাংশ সুদে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ব্যাংকের এসএমই খাতের ঋণের ১৫ শতাংশ নারী উদ্যোক্তার মধ্যে বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। একইভাবে নারী উদ্যোক্তাদের স্মল এন্টারপ্রাইজ খাতে পুনঃ অর্থায়ন স্কিমের আওতায় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পুনঃ অর্থায়নসুবিধা দেওয়া হয়।
পরবর্তীকালে করোনা মহামারির কারণে নারী উদ্যোক্তাদের কাছে ঋণসুবিধা সহজে পৌঁছে দিতে সুদের হার ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান পর্যায়ে ৩ শতাংশ এবং গ্রাহক পর্যায়ে সর্বোচ্চ ৭ শতাংশ পুনর্নির্ধারণ করা হয়। আজ সেটি আবারও পুনর্নির্ধারণ করা হয়েছে। নতুন নির্দেশনায় এ স্কিমের আওতায় পুনঃ অর্থায়নের সুদহার ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান পর্যায়ে শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ এবং গ্রাহক পর্যায়ে সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হলো।
ব্যাংকাররা বলছেন, প্রয়োজনীয় নথিপত্রের অভাবে নারী উদ্যোক্তারা কম সুদের ঋণ পাচ্ছেন না। আর উদ্যোক্তারা বলছেন, ব্যাংকাররা নারী উদ্যোক্তাদের ঋণ দিতে আগ্রহী নন। এ কারণে নারী উদ্যোক্তাদের মধ্যে কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় ব্যাংকঋণ পৌঁছাচ্ছে না। সূত্র: প্রথম আলো
ছবি সংগৃহীত: প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও অন্যান্য রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস আজ আবারও রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে সংলাপে বসছেন। শনিবার বেলা ৩টা থেকে প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনায় চতুর্থ দফায় সংলাপ শুরু হবে।
আজ লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এলডিপি, গণফোরাম, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, জাতীয় পার্টি-বিজেপি (পার্থ), ১২ দলীয় জোট, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল, লেবার পার্টিসহ আরও কয়েকটি দলকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বলে জানা গেছে।
সংলাপে আমন্ত্রণ পাওয়া দল বা জোটের একাধিক নেতা জানান, প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সংলাপে তাদের আলোচনার মূল কেন্দ্র থাকবে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নির্বাচনকেন্দ্রিক সংস্কার এবং নির্বাচনি রোডম্যাপ। এ ইস্যুতে তারা সুনির্দিষ্ট সংস্কার প্রস্তাব দেবেন বলে বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা গেছে।
এ ছাড়াও দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, প্রশাসন থেকে আওয়ামী লীগের দোসরদের সরানো, গণহত্যার বিচার এবং আওয়ামী লীগের আমলে বিরোধী নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা-গায়েবি মামলা প্রত্যাহারসহ নানান প্রসঙ্গে বক্তব্য থাকবে।
এর আগে গত ৫ অক্টোবর বিএনপি, জামায়াত ও অন্যান্য ইসলামীসহ আরও কয়েকটি দলের সাথে মতবিনিময় করলেও জাতীয় পার্টির সাথে কোন মতবিনিময় বা সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়নি, এবারও না হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। সূত্র: যুগান্তর
ছবি সংগৃহীত
নিউজ ডেস্ক: সাধারণ স্বার্থ বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলার ক্ষেত্রে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এবং এটি বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের উন্নয়নের জন্য পথ নির্দেশ প্রদান করে। কোনো জাতি একা টিকে থাকতে পারে না; বরং অন্য দেশগুলোর সহযোগিতা ও সমর্থনের প্রয়োজন হয়। আন্ত:রাষ্ট্র সম্পর্কের ক্ষেত্রে এটি একটি সাধারণ চর্চা। আধুনিক যুগে কোনো রাষ্ট্রই অন্য রাষ্ট্রের সমর্থন ছাড়া টিকে থাকতে পারে না। অন্য দেশের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন এখন একটি বাস্তবতা, যা নির্ভর করে সংশ্লিষ্ট দেশের প্রয়োজনের ওপর।
দুই দেশের সাধারণ স্বার্থ পারস্পরিক যোগাযোগ বাড়াতে এবং সম্পর্ক উন্নত করতে সরাসরি কাজ করে। বাংলাদেশ এবং পাকিস্তান উভয়ই ভ্রাতৃপ্রতীম দেশ, যাদের মধ্যে বিশ্বাস, ইতিহাস এবং সংস্কৃতি বিশেষভাবে মিল রয়েছে। বর্তমানে উভয় দেশই বিদ্যমান সম্পর্ককে বহুমাত্রিক দৃষ্টিভঙ্গিতে আরও উন্নত করার তাগিদ অনুভব করছে। উভয় দেশের মানুষের উন্নয়নের জন্য একে অপরকে সমর্থন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই সম্পর্কের ভিত্তি হওয়া উচিত মানুষে মানুষে সম্পর্ক, সরকার থেকে সরকারের মধ্যে সম্পর্ক নয়।
সরকারি সম্পর্ক সরকার পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে বদলে যায়, কিন্তু মানুষের মধ্যে সম্পর্ক দীর্ঘস্থায়ী হয় এবং দুই ভ্রাতৃপ্রতীম দেশের মধ্যে স্থায়ী বন্ধন তৈরি করে। উভয় দেশের জনগণ নিকট ভবিষ্যতে ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্ক উন্নয়নের গভীর আগ্রহ প্রকাশ করছে।
মানুষের সম্পর্ক গড়ে তুলতে গভীর এবং দূরদর্শী নীতিমালা প্রণয়ন ও আন্তরিকতার প্রয়োজন। এটি এমন এক আদর্শ সম্পর্ক, যা আমরা বহুদিন ধরে আকাঙ্ক্ষা করে আসছি। কিন্তু কিছু স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর কারণে এটি বাস্তবায়িত হয়নি, যদিও দুই দেশের জনগণ সর্বদা এর পক্ষে ছিল।
২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট বিপ্লব পুরো চিত্র বদলে দিয়েছে এবং আমাদের স্বাধীনতার পর থেকে তৈরি হওয়া কৃত্রিম বাধাগুলো সফলভাবে ধ্বংস করেছে। এখন আমরা এমন একটি কার্যকর পররাষ্ট্রনীতি গ্রহণ করতে সম্পূর্ণ স্বাধীন, যা সব দিক থেকে আমাদের জন্য উপযুক্ত।
সাধারণ স্বার্থের ক্ষেত্রগুলো দ্রুত চিহ্নিত করা উচিত, সময় নষ্ট না করে। সম্পর্কের মূল ভিত্তি হওয়া উচিত স্থায়ী ভ্রাতৃত্বপূর্ণ বন্ধন গড়ে তোলার প্রচেষ্টা।
শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক বিনিময়: শিক্ষা ও সংস্কৃতি হতে পারে আদর্শ ক্ষেত্র। উভয় দেশের সরকারকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের বৃত্তি প্রদান উৎসাহিত করা উচিত। দুই দেশের গবেষকদের বিভিন্ন সাধারণ স্বার্থের ক্ষেত্রে গবেষণা পরিচালনায় পৃষ্ঠপোষকতা করা উচিত। লেখক এবং বুদ্ধিজীবীদের নিয়মিত সফর পরিচালনা করা প্রয়োজন।
মিডিয়া ও সংবাদপত্র: মিডিয়া এবং সংবাদপত্র পাকিস্তানের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক গড়ে তুলতে চমৎকার ভূমিকা রাখতে পারে। উভয় দেশের সংবাদ মাধ্যমের লোকজনের নিয়মিত সফর বিনিময় এবং এটি যথাযথ গুরুত্ব দেওয়া উচিত।
সংস্কৃতি: সংস্কৃতি এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র যেখানে উভয় দেশ একত্রে কাজ করতে পারে। উভয় দেশের মধ্যে ঘন ঘন সাংস্কৃতিক সফর শুরু করা উচিত। সাংস্কৃতিক কার্যক্রমের বিনিময় দুই দেশের মধ্যে দ্রুত বন্ধন তৈরি করতে সহায়ক।
স্বাস্থ্য: স্বাস্থ্য খাতেও উভয় দেশ একত্রে কাজ করে মানসম্পন্ন চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে পারে। উভয় দেশে আধুনিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল যৌথভাবে প্রতিষ্ঠা করা যেতে পারে।
ক্রীড়া ও পর্যটন: ক্রীড়া ও পর্যটনের ক্ষেত্রেও যথাযথ গুরুত্ব দেওয়া উচিত। ঐতিহাসিক স্থানগুলোর শিক্ষামূলক দলভিত্তিক সফর যত দ্রুত সম্ভব শুরু করা উচিত।
বাণিজ্য ও শিল্প: বাণিজ্য ও শিল্প একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র। উভয় দেশের জনগণ ব্যাপক বাণিজ্য কার্যক্রমের মাধ্যমে উপকৃত হতে পারে। জুট ও টেক্সটাইল শিল্পে যৌথ উদ্যোগ গ্রহণ করা যেতে পারে।
প্রশাসন, বিচার ও পুলিশিং: উভয় দেশ নিজেদের প্রশাসনিক, বিচারিক এবং পুলিশিং অভিজ্ঞতা শেয়ার করে এসব ক্ষেত্রের উন্নয়নে কাজ করতে পারে।
জল সম্পদ ব্যবস্থাপনা ও সমুদ্র: জল সম্পদ ব্যবস্থাপনা এবং সমুদ্র সম্পদ শেয়ারিং উভয় দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র হতে পারে। নিরাপদ সমুদ্র নিশ্চিত করতে যৌথ শিপিং লাইন এবং জাহাজ নির্মাণ উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে।
সর্বোপরি উভয় দেশের সাধারণ মানুষের জীবনমান উন্নয়নের জন্য আন্তরিকভাবে এগিয়ে আসা উচিত। যে কোনো প্রাকৃতিক বা মানবসৃষ্ট বিপর্যয়ের মুখোমুখি হতে দুই দেশের জনগণের মানসিক প্রস্তুতি থাকা জরুরি। সর্বোপরি, উভয় দেশের জনগণকে যে কোনো সাধারণ শত্রুর বিরুদ্ধে একসঙ্গে লড়াই করার জন্য সবসময় প্রস্তুত থাকতে হবে।
আসুন, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের জনগণের মধ্যে একে অপরের প্রয়োজনে সত্যিকারের ভ্রাতৃপ্রতীম বন্ধুত্ব গড়ে তুলি।
লেখক : সম্পাদক, মিলিটারি হিস্ট্রি জার্নাল ও আইন ও ইতিহাসের অধ্যাপক।