a বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির প্রতিনিধি পরিষদ সভায় ৭ দফা বাস্তবায়নে জোর দাবি
ঢাকা শুক্রবার, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২, ১২ ডিসেম্বর, ২০২৫
https://www.msprotidin.com website logo

বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির প্রতিনিধি পরিষদ সভায় ৭ দফা বাস্তবায়নে জোর দাবি


সাইফুল আলম, বিশেষ প্রতিনিধি, মুক্তসংবাদ প্রতিদিন ডেস্ক
বৃহস্পতিবার, ২৭ ফেরুয়ারী, ২০২৫, ১০:৪৬
 বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির প্রতিনিধি পরিষদ সভায় ৭ দফা বাস্তবায়নে জোর দাবি

ছবি: মুক্তসংবাদ প্রতিদিন

 

সাইফুল ইসলাম, ঢাকা:  শিক্ষকরা দেশ গড়ার কারিগর, আর তাই তাদেরকে সর্বোচ্চ সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি'র কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ। বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির প্রতিনিধি পরিষদের সভায় সম্মানিত অতিথিবৃন্দ শিক্ষকদের যৌক্তিক দাবী বাস্তবায়নে সার্বিক সহযোগিতা করবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।

আজ ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ খ্রি. রোজ বুধবার সকাল ১০টায় জাতীয় প্রেসক্লাব (জহুর হোসেন চৌধুরী হল) ঢাকায় বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির প্রতিনিধি পরিষদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এটি সংগঠনের সভাপতি জনাব মোঃ নূরুজ্জামান আনসারীর সভাপতিত্বে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মোঃ মনিরুজ্জামান (মনির) এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা দেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল এর জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য এ্যাডভোকেট ওবায়দুল হক নাসির। বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির উপদেষ্টা ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক জনাব কাজী আ কা ফজলুল হক, সংগঠনের নীতিনির্ধারনী পরিষদের চেয়ারম্যান ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোঃ আবদুল্যাহ সরকার।

আরো বক্তব্য রাখেন শিক্ষক নেতা জনাব মোঃ মাসুদুর রহমান, কার্যকরী সাধারণ সম্পাদক আবদুস সবুর মিয়া, সিনিয়র সহ-সভাপতি গাজী শহিদুল ইসলাম, সাহিদ হাসান শামীম, আব্দুর রহমান বাচ্চু, এনামুল হক, সাংগঠনিক সম্পাদক হারুন-অর-রশিদ, হোসনে আরা খাতুন, সিরাজুল হক সজল, এ কে এম নাজমুল ইসলাম, মাজহারুল ইসলাম, ইকবাল আহমদ, এইচ এম সিরাজুল ইসলাম, গোলাম মোস্তফা, ফাতেমা মায়া, বেদেনা, রোকেয়া বেগম প্রমুখ।

শিক্ষক নেতৃবৃন্দ সহকারী শিক্ষকদের ১০ম গ্রেড ও ০৯/০৩/২০১৪খ্রি. তারিখ হতে প্রধান শিক্ষকদের মামলার রায় দ্রুত বাস্তবায়নসহ ৭ দফা দাবী বাস্তবায়নের জোর দাবী জানান। আগামী নির্বাচনে জনগণ যদি বিএনপিকে দেশ সেবার সুযোগ দেয় তাহলে শিক্ষকদের যৌক্তিক দাবী বাস্তবায়নে সার্বিক সহযোগিতা করবেন বলে বিএনপি নেতৃবৃন্দ আশ্বাস দেন।

মুক্তসংবাদ প্রতিদিন / কে. আলম

ঢাকার ২২৯ সরকারি ভবন ঝুঁকিপূর্ণ, দুই মাসের মধ্যে ভাঙতে হবে ৪২টি


মুক্তসংবাদ প্রতিদিন ডেস্ক
মঙ্গলবার, ১৪ মার্চ, ২০২৩, ১১:৪৮
ঢাকার ২২৯ সরকারি ভবন ঝুঁকিপূর্ণ, দুই মাসের মধ্যে ভাঙতে হবে ৪২টি

ফাইল ছবি

রাজধানীতে সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ভবনের মধ্যে ২২৯টি ভবনকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মধ্যে অতিঝুঁকিপূর্ণ ৪২টি ভবন এক সপ্তাহের মধ্যে খালি করতে ও দুই মাসের ভেতর ভবন মালিকদের নিজ উদ্যোগে ভেঙে ফেলতে সময় দেওয়া হয়েছে। অন্যথায় রাজউক অপসারণ করে মালিকপক্ষের কাছ থেকে খরচ আদায় করবে বলে জানিয়েছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ রাজউক।

এছাড়া ঝুঁকির তালিকায় থাকা আরো ১৮৭টি ভবন রেট্রোফিটিং (মজবুত) করতে নোটিশ দেওয়া হয়েছে। সরকার এবং বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে আরবান রেজিলিয়েন্স প্রকল্পের আওতায় রাজউকের আওতাধীন এলাকায় ৩২৫২টি ভবনের ওপর পরীক্ষা করে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ২ হাজার ৭০৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ২০৭টি হাসপাতাল, ৩৬টি থানা ও ৩০৪টি অন্যান্য ভবনের  ওপর এ জরিপ চালানো হয়। যে ৪২টি ভবন ভেঙে ফেলার জন্য বলা হয়েছে সেগুলো হলো, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) তিনটি, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের চারটি, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনটি, মাদ্রাসা বোর্ডের তিনটি, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের একটি এবং শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের ৩০টি ভবন।

এছাড়া রিপোর্টে সাতটি প্রতিষ্ঠানের ১৮৭টি ঝুঁকিপূর্ণ ভবন মজবুতিকরণ করার সুপারিশ করা হয়েছে। এসব ভবনের মধ্যে রয়েছে—ইনস্টিটিউট অব লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজির তিনটি, স্বাস্থ্য প্রকৌশলী অধিদপ্তরের চারটি, মাদ্রাসা বোর্ডের ছয়টি, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০টি, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ১০টি এবং শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের ১৫৪টি ভবন।

রাজউকের তথ্য অনুযায়ী, ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলোকে মজবুতিকরণ এবং অতি ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলো ভেঙে ফেলার বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে আরবান রেজিলিয়েন্স প্রকল্প: রাজউক অংশের প্রকল্প পরিচালকের (পিডি) দপ্তর থেকে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে ইতিমধ্যে চিঠি পাঠানো হয়েছে।

এদিকে ভবন মজবুত ও ভাঙার বিষয়ে বলা হলেও কোন কোন ভবন ভাঙা ও মজবুতের কথা বলা হয়েছে সেটি উল্লেখ করা হয়নি বলে জানিয়েছে বিভিন্ন সরকারি ভবন কর্তৃপক্ষ। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০টি ঝুঁকিপূর্ণ ভবনকে রেট্রোফিটিং করে ব্যবহার উপযোগী করতে নোটিশ দিয়েছে রাজউক। আর তিনটি ভবন ভেঙে ফেলতে বলা হয়েছে। রাজউক থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে চিঠি গেলেও সেখানে এসব ভবন নির্দিষ্ট করে বলা হয়নি বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।  বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার রহিমা কানিজ বলেন, আমাদের কাছে একটি চিঠি এসেছে। কিন্তু সেখানে কোন কোন ভবন ভাঙতে হবে, তা উল্লেখ নেই। তা জানার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলীকে বলেছি, যেন তিনি এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।

ঝুঁকিপূর্ণ ভবন বিষয়ে রাজউকের চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান মিঞা বলেন, বর্তমানে ভবন নির্মাণ অনুমোদনের সময় কাঠামোগত নকশা দেখে না রাজউক। ভূমিকম্পসহ সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রেখে আগামী মাস থেকে রাজউকের কয়েকটি অঞ্চলে ভবনের নির্মাণ অনুমোদন দেওয়ার সময় স্থাপত্য নকশা, কাঠামোগত নকশার পাশাপাশি মেকানিক্যাল, ইলেকট্রিক ও অগ্নিনিরাপত্তাসংক্রান্ত নকশা জমা নেওয়া হবে।

আগামী মে থেকে পদ্ধতিটি পুরো রাজউক এলাকায় চালু করা হবে। এ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি পত্রিকায় প্রকাশ করে সবাইকে সচেতন করা হচ্ছে। সূত্র:ইত্তেফাক

মুক্তসংবাদ প্রতিদিন / কে. আলম

আত্মহত্যা করতে চেয়েছিলেন সমন্বয়ক হাসনাত!


আরাফাত, বিশেষ প্রতিনিধি, মুক্তসংবাদ প্রতিদিন ডেস্ক
বুধবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ০৫:৪৪
আত্মহত্যা করতে চেয়েছিলেন সমন্বয়ক হাসনাত!

ফাইল ছবি: সমন্বয়ক হাসনাত!


বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ নিজের সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্টে নিজের আত্মহত্যা প্রবণতার কথা লিখেছেন। যা পড়ে সত্যিই অবাক হতে হয়।

তার এক প্রিয় বন্ধু মনজুর আত্মহত্যার ঘটনার পর আজ বুধবার সকালে তিনি এই পোস্ট ফেসবুকে প্রকাশ করেন।

হাসনাত লিখেছেন, আমি যে কোন সময় আত্মহত্যা করতে পারি। ঠিক যতগুলো কারনে আমার বন্ধু মনজু গতকাল এসএম হলে আত্মহত্যা করেছে,আত্মহত্যা করার জন্য আমার কাছেও ঠিক ততোগুলো কারণ রয়েছে। উদ্যাম তারুণ্য-পেরোনো প্রান্তিক বয়সে এসে, সেন্ট্রাল লাইব্রেরির নির্জনতায় বসে মাঝে মাঝে আমি ভাবি- আমি এখন পরিচয়হীন,পরিচর্যাহীন-বেকার। আমি না ছাত্র, না পেশাজীবী। না কারো দায়িত্ব নেয়ার যোগ্যতা আমার এখন হয়েছে, না আমার দায়িত্ব নিতে সমাজের আর আগ্রহ রয়েছে। অর্থাভাবে ভীষণভাবে জর্জরিত। আত্মবিশ্বাস ভয়াবহ তলানিতে। মানুষিকভাবেও ভীষণ বিপর্যস্ত।

তিনি লিখেন, কাটছাট করে এই দুর্মূল্যের বাজারে সত্তর টাকায় সারাদিন পার করতে হয়। ‘কড়া’ হয়েছে বলে ক্যান্টিন বয় যখন গরু দিতে চায়, টাকা বাঁচাতে শুষ্ক হাসি দিয়ে ডায়েটে থাকার অযুহাতে সবজি নিয়ে আসতে বলতে হয়। লজ্জাশরমের মাথা খেয়ে মাঝে মাঝে মাছ কিংবা মাংসের একটু ঝোলের জন্য ক্যান্টিন বয়কে বলতে গিয়েও থেমে যাই। ডিম-আলু-ডাল জীবনের সাথে ওতোপ্রোতভাবে জড়িয়ে গিয়েছে। বর্তমান বাজার দরে এগুলোও এখন সাধ্যের বাইরে। খাবার খরচ, চাকরির এপ্লিকেশন ফি, পকেট খরচ, প্রিলি-রিটেনের বইয়ের দাম নিয়ে ভাবতে ভাবতে শরীর ঠান্ডা হয়ে আসে। রাত গভীর হয়,কাটাবন মসজিদের ফজরের আযান কানে আসে,মাস বাড়তে থাকে; এদিকে পাল্লা দিয়ে মুখে রুচি আর পেটে ক্ষুধা দুইটাই বাড়তে থাকে। শুনেছি অভাবে নাকি মানুষের ক্ষুধাও বাড়ে! যেসব বন্ধুবান্ধব ম্যাট্রিকের পর পড়াশোনা না করে বিদেশে চলে গিয়েছে, তারা এখন প্রতিষ্ঠিত। ঘর-সংসার করে থীতু হচ্ছে। বাপ-মা’কে হজ্জে পাঠাচ্ছে। এলাকায় জায়গাজমি কিনে তেজারত বাড়াচ্ছে।

হাসনাত আরও লিখেন, মাঝে মাঝে ফোন উঠিয়ে তাদের কাছে টাকা-পয়সা চাওয়ার কথা মনে হয়। দুই-একবার ফোন হাতে নিয়েও রেখে দিই। আত্মমর্যাদার বায়বীয় চাদরে মোড়ানো লাজুকতা ভুলে গিয়ে যখন বন্ধুদের কাছে ফোন দিইও, অপরপ্রান্তের বন্ধু থেকে নিজের সম্পর্কে যে উচ্চ ধারনা পাই, তা শুনলে যে উদ্দেশ্যে ফোন দিয়েছি, সেই প্রসঙ্গ আর উঠাতে সাহস হয় না। সেসব বন্ধু-বান্ধব ধরেই নিয়েছে দেশ সেরা বিশ্ববিদ্যালয় পাশ করে আমরা এখন অর্থ, বৈভব ও জাগতিক সম্মানে বিপুলভাবে পরিতৃপ্ত। পরিস্থিতি হয়েছে এমন, পকেটে নাই টাকা, কিন্তু চারদিক থেকে অস্বস্তিকর সম্মানের ছড়াছড়ি। আসলে ফাঁকা পকেটে সম্মান বেশি হয়ে গেলে সেটা বদহজম হয়ে যায়। অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঁচ বছর যেসব পড়িয়েছে, আর এখন চাকরির পরিক্ষায় আমাদের থেকে যা জানতে চাওয়া হচ্ছে- সেসবের মধ্যে আকাশ-পাতাল ব্যবধান।

একটার পর একটা শুক্রবার আসে, চাকরির পরীক্ষা আসে, শহরের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে সিট পাল্টায়, পকেটের এডমিট কার্ডটা পাল্টায়, কিন্তু এমসিকিউ-এর গোল্লার-বৃত্তে আটকে থাকা কপালটা আর কলমের খোঁচায় পাল্টায় না। কপাল কবে পাল্টাবে- সে প্রশ্নের উত্তরে আমার জীবন সন্ধানী মন এখন নিশ্চুপ।দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি তো বলার অপেক্ষা রাখে না। কখন কি হয়,কিছুই বলা যায় না।চলমান পরিস্থিতির দিকে তাকিয়ে ক্রমশ হাতাশার নিঃশ্বাস ফেলতে হয়! পরিবার, সমাজ ও আশেপাশের মানুষের ‘এখন কি করো? আর কবে? আর কতদিন?’ প্রশ্নের উত্তর এড়াতে ইদেও হলে থেকে যেতে হয়। পরিচিত মানুষের ফোন কল এড়িয়ে যেতে পারলে মনটা স্বস্তিতে ভরে উঠে। নিজের কষ্ট,অসন্তোষ,রাগ কিংবা ভালোবাসা – আমরা কাউকে কিছুই এখন বলতে পারছি না, মুখ বুজে সমুদ্র গিলতে হচ্ছে!

দিন যত যাচ্ছে পরিবার,সমাজ ও নিজের প্রত্যাশার পারদ ক্রমশ ক্ষীণ হচ্ছে। এতোদিন উড়তে থাকা আমি এবং আমার স্বপ্ন, এই সংকটে আটকে পড়ে ধুলোমলিন বেশে নিয়তির মুখোমুখি হতে চলেছে। লাগামছাড়া ব্যর্থতা ও সংকটের ত্রাহি ত্রাহি রবই শুধু নয়, আমাদের এখন সবার সামনে নিদারুণ উপহাসের পাত্রও হতে হচ্ছে। কাছে আসার ‘রঙিন দিনেরা’, ক্রমাগত দূরে যাওয়ার ধূসর বিবর্ণ গল্পে পরিণত হচ্ছে।

আর ঠিক তখন, ঠিক তখনই, জীবন থেকে মৃত্যুই পরম কাঙ্খিত বলে মনে হয়। ঠিক তখনই হাসনাতরা মনজু কিংবা রুপা কর্মকার হতে চায়। মনজু যেমন শরতের শিশিরের মতো রোদ উঠার আগেই নিঃশব্দে মিলিয়ে গিয়েছে, মনে হয়, ঠিক সেভাবে লোকচক্ষুর অন্তরালে নিভৃতে মিলিয়ে যাই। এক-পা,দু-পা করে মিলিয়ে যাওয়ার পথ ধরতে ইচ্ছে হয়। তবে,কোথায় যেনো বাধা পড়ে যাই!

সত্যজিত রায়ের অপুর সংসার মুভিতে অপুকে বলতে শোনা যায় -তার মধ্যে মহৎ কিছু একটা করার ক্ষমতা আছে, সম্ভাবনা আছে, কিন্তু সেটা সে পারছে না। আবার এই না পারাটাও শেষ কথা নয়, ট্রাজিডিও নয়। সে মহৎ কিছু পারছে না, তার দারিদ্র্য যাচ্ছে না, তার অভাব মিটছে না, কিন্তু এত কিছুর পরেও সে জীবনবিমুখ হচ্ছে না, সে পালাচ্ছে না, স্কিপ করছে না, মনজুর মতো আত্মহনন করছে না বরং সে বাঁচতে চাইছে, সে বলছে- বাঁচার মধ্যেই স্বার্থকতা, বাঁচার মধ্যেই আনন্দ। He wants to live.

এই পয়েন্টটাতে এসে আর জীবনবিমুখ হতে পারি না। আসলেই, বেঁচে থাকতে পারছি এটাই তো সার্থকতা।

একটা থেঁতলে যাওয়া ব্যাঙও মাটির সাথে অর্ধেক লেপ্টে থাকা দেহটা নিয়ে শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত লাফানোর চেষ্টা করে,দুষ্টু ছেলের হাতে ধরা পড়ে পাখা হারানো লাল ফড়িংটাও চেষ্টা করে নীল আকাশে আবার উড়ে বেড়ানোর। আর আমি তো মানুষ, শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি। ভয় কি? আবার শুরু করবো। সমাজ-পরিবার ও আশেপাশের মানুষের প্রত্যাশায় বেঁচে থাকা বন্ধ করে,নিজের আশার উপর নির্ভর করে বাঁচবো। আত্মহত্যা করতে জীবন আমাকে হয়তো শতশত যৌক্তিক কারন দেখাচ্ছে; কিন্তু আমি জীবনকে শুধু একটা কারন দেখিয়েই বেঁচে থাকবো। আর সেটা হলো ‘আশা’। থেমে না গিয়ে এই সম্বলটুকু নিয়েই এগিয়ে যাওয়ার প্রচেষ্টা। ইংরেজিতে একটা কথা আছে ‘Every man dies but not everyman lives’। মৃত্যুকে দেখিয়ে দিবো আমি জীবন থেকে পালিয়ে যাইনি,যাঁরা বেঁচেছে,আমি তাদের একজন।

অজানা এক লুপ্ত নক্ষত্রের মতো হারিয়ে যাওয়ার আগে,ভবিষ্যতের অপ্রত্যাশিত সব বিস্ময়ের মুখোমুখি হতে আমাদের স্বপ্ন ও আত্মবিশ্বাস-এ আমাদের সুস্থির থাকতে হবে। দীর্ঘ খড়া কাটিয়েও আবার যেমন প্রকৃতিতে বৃষ্টি নামে, শুকিয়ে যাওয়া নদীতেও আবার যেমন ঢেউ উঠে,আমরাও জানি,কষ্ট পেতে পেতে কোন একদিন আবার আমরা সূর্যের ন্যায় স্পষ্ট হয়ে সুস্মিত শিশিরের মতো সবার মাঝে আবারও প্রকাশিত হবো। স্বতেজে। তাই, সমাজের কাছে অনুরোধ- অপেক্ষা করুন।আমাদের সময় দিন।আমরা যা,আমাদের সেভাবেই মেনে নিন। ‘কে কী হয়েছে’- এসব উদাহরণ টেনে এনে, ‘আমাদের কী হতে হবে’- এইসব বলা বন্ধ করুন।

পাশাপাশি, আর কোনো হাসনাত যেনো তেলহীন প্রদীপের মতো ধীরে ধীরে নিভে গিয়ে মনজু না হতে হয় সেজন্য দেখা হলেই ‘এখন কি করো’ প্রশ্নটা না করে, ‘এখন কেমন আছো?’-এ প্রশ্নটা করুন। কারণ ,রাষ্ট্রের এই অসম ও অপ্রতুল আয়োজনে আমরা ভালো নেই।”

পোস্টের শেষে তিনি উল্লেখ করেন, আমি একজন চাকরিপ্রার্থী হিসেবে গত বছর (২৩ আগস্ট ২০২৩) এই লেখাটি লিখেছিলাম, যেখানে চাকরিপার্থীদের কষ্ট ও হতাশা তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। একজন চাকরিপ্রার্থী ছাড়া অন্য কেউ কখনোই বুঝতে পারবে না যে, এই যন্ত্রণার মাত্রা কতটা অসহনীয়। আমি অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আহ্বান জানাই, পিএসসির সংস্কার করে দ্রুত সময়ের মধ্যে চাকরির পরীক্ষা ও নিয়োগ কার্যক্রম চালু করুন। এছাড়া, বেকারত্বের প্রেক্ষাপটে প্রহসনমূলক আবেদন ফি বাতিল করুন। সূত্র: চ্যানেল আই অনলাইন

মুক্তসংবাদ প্রতিদিন / কে. আলম
Share on Facebook

মুক্তসংবাদ প্রতিদিন এর সর্বশেষ

মুক্তসংবাদ প্রতিদিন এর জনপ্রিয়

সর্বশেষ - মতামত