a
ফাইল ছবিঃ মুরাদ হাসান
তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান বলেছেন, ‘আমাকে নিয়ে কথা বলেন, কত যোগ্যতা আছে? আসেন বসি। কোথায় বসবেন জাতীয় প্রেস ক্লাবে? চলেন বসি। আমার মন্ত্রিগিরি থাকবে নাকি থাকবে না- আপনাকে বলার অধিকার কে দিয়েছে?
সোমবার চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর আয়োজিত দীপ্ত জয়োল্লাস অদম্য আত্মবিশ্বাস শেখ রাসেল-এর ৫৭তম জন্মবার্ষিকীতে আলোচনা সভায় বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে তিনি এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে নিজের বক্তব্যের শুরুতে মুরাদ হাসান বলেন, আমার প্রতি অনুরোধ, কিছু বিষয়ে যাতে কথা না বলি।
তথ্যপ্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, আমরা বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার মুখের দিকে তাকিয়ে রাজনীতি করি। মেরুদণ্ডহীন মির্জা ফখরুল আর খোঁড়া রিজভী আন্দোলনের ভয় দেখায়। কাদেরকে দেখায়? মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী আওয়ামী লীগকে, বঙ্গবন্ধুকন্যাকে, ডা. মুরাদ হাসানকে? রাজাকারের বাচ্চারা, ওই ভয় আমরা পাই না। আমাদেরকে হুমকিধমকি দিয়ে কোনো লাভ হবে না।
বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে তথ্য প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, আমাকে নিয়ে কথা বলেন, কত যোগ্যতা আছে? আসেন বসি। কোথায় বসবেন? জাতীয় প্রেস ক্লাবে? চলেন বসি। আমার মন্ত্রিগিরি থাকবে না থাকবে- আপনাকে বলার অধিকার কে দিয়েছে?
রাষ্ট্রধর্ম ইসলামকে বাদ দেওয়ার জন্য সংসদে প্রস্তাবের বিষয়ে বক্তব্যের সমালোচকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ডা. মুরাদ মাথা নিচু করে কথা বলবে না। মাথা উঁচা করেই কথা বলবে। কাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করো, কুশপুত্তলিকাদাহ করো?
আমরা যদি শুরু করি তাহলে ঢাকার মাটিতে টিকতে পারবেন না। ডাক্তার মুরাদ হাসান সম্পর্কে ভালো করে জেনে নিয়েন। তারপরে কথা বলেন। আমি মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, আমাকে সম্মান দিয়ে কথা বলবেন। আমি আমার সন্তানদের জন্য রাজনীতি করি।
মুরাদ হাসান বলেন, যাদের ভালো লাগে না, ওই সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী, একাত্তরের পরাজিত শক্তি তোমরা আবারও পরাজিত হবা। ৫০ বছরেও বাংলাদেশে মাথা তুলে দাঁড়াতে পারবা না। আমরা বেঁচে থাকতে এটা হতে দেয়া হবে না।
ফাইল ছবি
সিলেটে বিএনপির গণসমাবেশের একদিন আগে আজ বৃহস্পতিবার বিকালে হঠাৎ মহানগরের চৌহাট্টা পয়েন্টে মিছিল সহকারে অবস্থান নেন জেলা ও মহানগর ছাত্রলীগের একদল নেতাকর্মী।
বৃহস্পতিবার বিকাল পৌনে ৪টার দিকে শতাধিক মোটরসাইকেলযোগে স্লোগান দিতে দিতে পূর্ব জিন্দাবাজার থেকে জিন্দাবাজার পয়েন্ট হয়ে চৌহাট্টা পয়েন্টে গিয়ে অবস্থান নেন তারা। এসময় বিএনপিবিরোধী স্লোগান দিতে থাকেন ছাত্রলীগের নেকাতর্মীরা।
এদিকে, বিএনপির সমাবেশস্থলের অদূরে ছাত্রলীগের এমন অবস্থান নেওয়া দেখে স্থানীয় ব্যবসায়ী ও পথচারীদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দেয়। তবে পুলিশের হস্তক্ষেপে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। কিছু সময় চৌহাট্টা পয়েন্টে অবস্থানের পর ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের জিন্দাবাজারের দিকে চলে যেতে নির্দেশ দেয় পুলিশ। পরে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা মিছিল সহকারে জিন্দাবাজার হয়ে বন্দরবাজারের দিকে চলে যায়।
সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের (এসএমপি) উপ-কমিশনার (উত্তর) আজবাহার আলী শেখ বলেন, ‘সব ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঠেকাতে কঠোর অবস্থানে রয়েছে পুলিশ। ছাত্রলীগের মিছিল আমরা মাদরাসা মাঠের দিকে যেতে দেইনি। মাদরাসা মাঠে ও চৌহাট্টায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।’ সূত্র: বিডি প্রতিদিন
ছবি সংগৃহীত
অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন না হওয়ায় কম্বোডিয়ায় ভিসা নিষেধাজ্ঞার আরোপের সঙ্গে বৈদেশিক সহায়তা কর্মসূচি স্থগিত করলো যুক্তরাষ্ট্র। রোববারের (২৩ জুলাই) সাধারণ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন কম্বোডিয়ান পিপলস পার্টি (সিপিপি) নিরঙ্কুশ বিজয় ঘোষণা করেছে। এরপরেই যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, তারা কম্বোডিয়ায় কিছু বৈদেশিক সহায়তা কর্মসূচি স্থগিত করছে এবং গণতন্ত্রকে দুর্বল করেছে এমন ব্যক্তিদের ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছে।
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার এক বিবৃতিতে বলেছেন, কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন সেনের দল সিপিপি কার্যকর কোনো বিরোধী দলের মুখোমুখি না হওয়ায় ওয়াশিংটন উদ্বিগ্ন।
মিলার বলেন, নির্বাচনের আগে কম্বোডিয়ার কর্তৃপক্ষ রাজনৈতিক বিরোধী দল, গণমাধ্যম ও সুশীল সমাজের বিরুদ্ধে হুমকি ও হয়রানির ধারায় লিপ্ত হয়েছে। এটি দেশটির সংবিধানের চেতনা এবং কম্বোডিয়ার আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতাকে ক্ষুণ্ণ করেছে।
তিনি আরও বলেন, এর প্রতিক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র গণতন্ত্রকে দুর্বল করে এমন ব্যক্তিদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপের পদক্ষেপ নিয়েছে এবং কিছু বৈদেশিক সহায়তা কর্মসূচি স্থগিত করেছে।
যুক্তরাষ্ট্র কম্বোডিয়ার কর্তৃপক্ষকে সত্যিকারের বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বিচার বন্ধ এবং সরকারের সমালোচকদের দোষী সাব্যস্ত করা বন্ধ করতে এবং দেশের আন্তর্জাতিক অবস্থান উন্নত করার জন্য স্বাধীন গণমাধ্যমকে হস্তক্ষেপ ছাড়া কাজ করতে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
কম্বোডিয়ার নির্বাচনে কোনো শক্তিশালী বিরোধী দল ছিল না। ৩৮ বছর ধরে কম্বোডিয়া শাসন করা স্বঘোষিত 'শক্তিশালী নেতা' হুন সেন নির্বাচনের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে পশ্চিমাদের উদ্বেগকে উড়িয়ে দিয়েছিলেন। জেল জুলুম ও মামলা দিয়ে বিরোধী দলগুলোকে বাইরে রাখা হয়েছিল। সবাই নিশ্চিত ‘নামমাত্র’ এ ভোটে আবারও জয়ী হয়েছেন হুন সেনের কম্বোডিয়ান পিপলস পার্টি (সিপিপি)।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এ দেশটি টানা ৩৮ বছর শাসন করছেন কম্বোডিয়ার ‘গণতান্ত্রিক মডেলের স্বৈরশাসক’ প্রধানমন্ত্রী হুন সেন। এশিয়ার সবচেয়ে দীর্ঘমেয়াদি এই নামমাত্র ‘গণতান্ত্রিক’ শাসক ১৯৮৫ সাল থেকে তার ক্ষমতা ধরে রেখেছেন। ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর একের পর এক কঠোর ব্যবস্থা প্রয়োগ করেছেন। এমনকি দেশের আদালতকেও ব্যবহার করেছেন তাদের বিরুদ্ধে। সামরিক বাহিনী, পুলিশসহ গোয়েন্দা গোষ্ঠীকে রেখেছেন হাতের মুঠোয়। সংসদ সদস্যদের পদমর্যাদা থেকে সরিয়ে দেওয়াসহ নেতাদের বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে গ্রেপ্তার এবং নির্বাসনে পাঠিয়েছেন।
বাংলাদেশে নির্বাচনব্যবস্থা নিয়ে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির বিপরীতমুখী অবস্থানের কারণে দেশে রাজনৈতিক সংকট আরও ঘনীভূত হচ্ছে। বিগত দুটি নির্বাচন সুষ্ঠু না হওয়ায় বিএনপি এবারে সরকারের পদত্যাগ এবং নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার এক দফা দাবিতে অনড় রয়েছে। তারা রাজপথেই চূড়ান্ত ফয়সালা করে নির্বাচনে হাটার চেষ্টা করছে।
অপরপক্ষে, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নির্বাচন প্রশ্নে সংবিধানের
দোহাই দিয়ে আবারও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচন করাটাই দলটির চূড়ান্ত লক্ষ্য।
দুই পক্ষই যখন তাদের চূড়ান্ত লক্ষ্য অর্জনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, তখন আলোচনা বা সমঝোতার কোনো সম্ভাবনা কার্যত আর থাকছে না; বরং অনিশ্চয়তা বাড়ছে।
আগামী ডিসেম্বরের শেষে অথবা জানুয়ারির শুরুতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন করার কথা ভাবছে নির্বাচন কমিশন। ওই সময়ে ভোট হলে নভেম্বরেই তফসিল ঘোষণা করতে হবে।
আর সরকার যদি গত ২০১৪ সাল ও ২০১৮ সালের ন্যায় এক তরফা নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যায়, তাতে দেশে অনন্য বিশৃংখলার সৃষ্টি হবে, যা বিগত যে কোন সময়ের তুলনা বেশি বৈ কম হবেনা। বিশেজ্ঞদের ধারণা, যদি একতরফা নির্বাচনে দেশে কোন বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়, তবে সুযোগ বুঝে যুক্তরাষ্ট্রসহ ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও অন্যান্য মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো বাংলাদেশকে কম্বোডিয়ার মতো অবরোধ ও ভিসা নিষাধাজ্ঞাও দিতে পারে, যার জুজুর ভয় তারা আগে থেকেই দিয়ে আসছে!
লেখক: মোহা. খোরশেদ আলম, সম্পাদক, মুক্তসংবাদ প্রতিদিন
তথ্যসূত্র: রয়টার্স, বিবিসি ও নিউ ইয়র্ক টাইমস