a
আজ পবিত্র আশুরা। সৃষ্টির শুরু থেকে নানা ঘটনার কারণে হিজরি মহররম মাসের দশম দিনটি তাৎপর্যপূর্ণ। সবশেষ ফোরাত নদীর তীরে কারবালার প্রান্তরে শেষ নবি হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর দৌহিত্র হজরত হোসাইন (রা.)-এর শাহাদত বিশ্বব্যাপী মুসলমানদের কাছে শোক ও ত্যাগের মহিমাময় অনুষজ্ঞ। এ দিনটিতে বিশ্বের মুসলমানদের মতো বাংলাদেশের মুসলমানরাও নামাজ-রোজাসহ বিভিন্ন নফল ইবাদত করে থাকেন। শিয়া সম্প্রদায় তাজিয়া মিছিল বের করে থাকে। দিনটি উপলক্ষ্যে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে ইসলামিক ফাউন্ডেশন আয়োজন করেছে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল।
মহান আল্লাহতায়ালা এ দিনেই আরশ, কুরসি, লওহ, কলম, আসমান ও জমিন সৃষ্টি করেছেন। এদিনেই আদমকে (আ.) সৃষ্টি করেছেন। পরে শয়তানের প্ররোচনায় তিনি ভুল করলে এদিনেই তাকে দুনিয়ায় পাঠিয়ে দেন, পরে তাকে তার প্রতিনিধি নির্বাচিত করেন। হজরত নূহ (আ.) ৯৫০ বছর ধরে তাওহিদের বাণী প্রচারের পর যখন সেই যুগের মানুষ আল্লাহর বিধিনিষেধ পালনে অস্বীকৃতি জানায়, তখন নেমে আসে আল্লাহর গজব। আশুরার দিনেই হজরত ইব্রাহিম (আ.) শত বিধিনিষেধের মধ্যে জন্মগ্রহণ করেছেন। মূসা (আ.)-এর নেতৃত্বে বনি ইসরাইলকে ফেরাউনের কবল থেকে আল্লাহ রক্ষা করেন এদিনে।
হজরত হোসাইন (রা.) অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ গড়ে তুলতে গিয়ে সেদিন কারবালা প্রান্তরে পরিবার-পরিজন নিয়ে শাহাদতবরণ করেছিলেন। রাসুল (সা.)-এর প্রতিষ্ঠিত ইসলামি রাষ্ট্রব্যবস্থা এবং তার সাহাবিদের প্রবর্তিত খেলাফতি শাসনব্যবস্থা অক্ষুণ্ন রাখার সংগ্রামে তিনি শাহাদতবরণ করেন। কারবালার ঘটনা আমাদের অন্যায় ও অসত্যের বিরুদ্ধে আপসহীনভাবে সংগ্রাম করার কথাই শিক্ষা দেয়।
ইবাদত : হাদিসে এসেছে, আশুরার রোজা পালনে বিগত এক বছরের গুনাহ মাফ হয়। ইসলামের প্রাথমিক যুগে মহররম মাসে রোজা ফরজ ছিল। দ্বিতীয় হিজরি সনে রমজানের রোজা ফরজ হওয়ার বিধান নাজিল হলে রোজা ঐচ্ছিক হিসাবে বিবেচিত হয়। আশুরা দিবসে রোজা পালনের জন্য রাসুলুল্লাহ (সা.) নির্দেশ দিয়েছেন। সর্বাধিক হাদিস বর্ণনাকারী সাহাবি হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত-তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, রমজানের পর সর্বাধিক উত্তম রোজা হলো মহররম মাসের রোজা। এই রোজা রাখার ফজিলত এক বছরের গুনাহ মাফ এবং আরও উল্লেখ আছে এই রোজার আগে বা পরে আরেকটি রোজা রাখা। সূত্র: যুগান্তর
ফাইল ছবি
করোনাভাইরাস ভয়াবহ মহামারি আকার ধারণ করায় পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে যথাযথ সুরক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিতে ১৪ এপ্রিল হতে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত মসজিদে নামাজ আদায়ে বেশ কিছু নির্দেশনা জারি করেছে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়। নির্দেশনগুলো হলো-
(ক) মসজিদে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের প্রতি ওয়াক্তে সর্বোচ্চ ২০ জন মুসল্লি অংশগ্রহণ
করবেন;
(খ) তারাবির নামাজে খতিব, ইমাম, হাফেজ, মুয়াজ্জিন ও খাদিমসহ সর্বোচ্চ ২০ জন মুসল্লি
অংশগ্রহণ করবেন;
(গ) জুমার নামাজে সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে মুসল্লিরা অংশগ্রহণ করবেন;
(ঘ) সম্মানিত মুসল্লিদের পবিত্র রমজানে তিলাওয়াত ও যিকিরের মাধ্যমে মহান আল্লাহর
রহমত ও বিপদ মুক্তির জন্য দোয়া করার অনুরোধ করা হলো।
নির্দেশনায় আরও বলা হয়, প্রাণঘাতি করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে স্থানীয় প্রশাসন, আইন শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণকারী বাহিনী, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং সংশ্লিষ্ট মসজিদের পরিচালনা কমিটিকে উল্লিখিত নির্দেশনা বাস্তবায়ন করার জন্য অনুরোধ জানানো হলো। যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদনক্রমে জনস্বার্থে এ নির্দেশনা জারি করা হলো।
ফাইল ছবি
সম্প্রতি ভারতে নতুন করে আতংক ছড়াচ্ছে ব্লাক এবং হোয়াইট ফাঙ্গাস। সেই ব্লাক ছত্রাকে আক্রান্ত রোগি পাওয়া গেছে এবার বাংলাদেশেও, করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর সুস্থ হয়েছেন দেশে এমন অন্তত দুজনের শরীরে ‘ব্ল্যাক ফাঙ্গাস’ শনাক্ত করা হয়েছে।
বাংলাদেশে চলতি মাসে ঢাকার বারডেম জেনারেল হাসপাতাল থেকে তাদের শরীরে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস শনাক্ত করা হয়।
বারডেম হাসপাতালের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গত ৮ মে ৪৫ বছর বয়সী এক রোগীর শরীরে মিউকরমাইকোসিস বা ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের জীবাণু শনাক্ত হয়। এরপর গত ২৩ মে ৬০ বছর বয়সী আরেক জনের শরীরেও ছাত্রাকজনিত রোগটি পাওয়া যায়।
স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানান, মিউকরমাইকোসিস বা ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে তারাই আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি রাখেন যাদের অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল।
এ বিষয়ে বারডেম হাসপাতালের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. লাভলি বাড়ৈ বলেন, ‘আমাদের ল্যাবে দুজনের শরীরে মিউকরমাইকোসিস শনাক্ত হয়েছে। আমরা তাদের চিকিৎসা দিচ্ছি এবং ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করছি।’
বারডেম হাসপাতালের ল্যাবরেটরিতে বাংলাদেশে কোভিড-১৯ রোগীর শরীরে এটাই প্রথম ব্ল্যাক ফাঙ্গাস শনাক্ত হয়েছে।
তিনি আরো উল্লেখ করে বলেন যে ‘আমরা সতর্কভাবে তাদের নিবীড় পর্যবেক্ষণ করছি’ বিশেষ করে ডা. লাভলি বাড়ৈ বলেন, ‘ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত রোগীর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যদি কম থাকে তাহলে রোগীর অবস্থা গুরুতর হতে পারে। তাই, তাদের সতর্কভাবে চিকিৎসা দিতে হয়।’
তিনি জানান, করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীকে মাত্রা না বুঝে স্টেরয়েড দিলে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যেতে পারে, যার ফলে রোগীর ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়।
ব্ল্যাক ফাঙ্গাস একটি বায়ুবাহিত রোগ। ছত্রাকের বীজগুটি বা স্পোর বাতাসের সাথে সাথে উড়ে বেড়ায়। মানুুষ শ্বাসগ্রহণের সময় নাসারন্ধ্র দিয়ে সাইনাস ও ফুসফুসে ঢুকে যায়। এ কারণে এ দুটি স্থান বেশি আক্রান্ত হয়।
এ ছাড়া পরিপাকতন্ত্রেও এ ছত্রাক প্রবেশ করে রোগ বাঁধাতে পারে। ত্বকে কাটা, ক্ষত বা পোড়া ঘা থাকলে সেগুলোও মিউকর ছত্রাকের প্রবেশপথ হিসেবে কাজ করে। এ ছাড়া দেহের দুর্বল প্রতিরোধ ক্ষমতার সুযোগেও ছত্রাকটি শরীরে প্রবেশ করে ছড়িয়ে পড়তে পারে।