a
ফাইল ছবি
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে চলতি বছরের ৯ জুলাই সৌদি আরবে হজ অনুষ্ঠিত হতে পারে। বাংলাদেশ থেকে হজ ফ্লাইট শুরু হওয়ার কথা রয়েছে ৩১ মে। এবার হজ করতে যেতে আগ্রহীদের পাসপোর্টের মেয়াদ থাকতে হবে ২০২৩ সালের ৪ জানুয়ারি পর্যন্ত।
সম্প্রতি হজযাত্রীদের পাসপোর্ট সংক্রান্ত নিয়মে এমন পরিবর্তন এনে জরুরি বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। এ নির্দেশনায় যেসব হজযাত্রীর পাসপোর্ট নেই বা মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে, তাদের জরুরিভিত্তিতে পাসপোর্ট করতে বলা হয়েছে।
নির্দেশনায় বলা হয়েছে, চলতি বছরের হজ মৌসুমে হজযাত্রীদের নিবন্ধন নিশ্চিত করার জন্য সরকারি ও বেসরকারি উভয় ব্যবস্থাপনায় হজে যেতে ইচ্ছুকদের পাসপোর্টের মেয়াদ যাচাই করে কমপক্ষে ২০২৩ সালের ৪ জানুয়ারি পর্যন্ত মেয়াদযুক্ত পাসপোর্ট প্রস্তুত রাখতে হবে।
নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় নিবন্ধিতরা যারা এ বছর হজে যাবার সুযোগ পাবেন তাদের জন্ম হতে হবে ১ জুলাই ১৯৫৭ এবং এর পরে।
পাশাপাশি সৌদি আরবের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় দ্বারা অনুমোদিত কোভিড টিকার দুই ডোজ এবং ভ্যাকসিনের বুস্টার ডোজ গ্রহণের সনদ হজের পুরো সফরে ব্যবহারের লক্ষ্যে একাধিক কপি বা আইডি কার্ড আকারে লেমিনেট কপি হজযাত্রীকে প্রস্তুত রাখতে হবে।
নিবন্ধন ব্যতিত কোডিড টিকা নিয়ে থাকলে অথবা সুরক্ষা অ্যাপে টিকা নেওয়ার তথ্য আপডেট নেই এমন হজযাত্রীকে টিকা গ্রহণের তথ্য সুরক্ষা অ্যাপে অন্তর্ভুক্তি করে টিকার সনদ গ্রহণ করতে হবে।
উল্লেখ্য, এ বছর বাংলাদেশ থেকে ৫৭ হাজার ৮৫৬ জন হজে যেতে পারবেন বলে এরই মধ্যে ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে। সূত্র: ইত্তেফাক
সংগৃহীত ছবি
একদিন মদিনার দুই ব্যক্তি টেনে-হিচড়ে এক যুবককে অর্ধ পৃথিবীর শাসক খলিফা হজরত উমর রা.-এর দরবারে হাজির করল এবং বিচার দাখিল করল যে এই যুবক আমার পিতাকে হত্যা করেছে। আমরা এর ন্যায়বিচার চাই। তখন খলিফা হজরত উমর রা. ওই যুবককে প্রশ্ন করেন, তার বিপক্ষে করা দাবি সম্পর্কে। যুবকটি উত্তর দেন, তাদের দাবি সম্পূর্ণ সত্য। আমি ক্লান্তির কারণে বিশ্রামের জন্য এক খেজুর গাছের ছায়ায় বসেছিলাম। ক্লান্ত শরীরে অল্পতেই ঘুমিয়ে গিয়েছিলাম। ঘুম থেকে উঠে দেখি আমার একমাত্র পছন্দের বাহন আমার উটটি পাশে নেই। খুঁজতে খুঁজতে কিছু দূর গেয়ে পেলাম, তবে তা ছিল মৃত। পাশেই ওদের বাবা ছিল। যে আমার ওই উটকে তাদের বাগানে প্রবেশে অপরাধে পাথর মেরে হত্যা করেছে। আমি রাগান্বিত হয়ে তাদের বাবার সাথে তর্কাতর্কি করতে করতে একপর্যায়ে তাদের বাবার মাথায় পাথর দিয়ে আঘাত করে ফেলি, ফলে সে সেখানেই মারা যায়। যা সম্পূর্ণ অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে ঘটে গেছে। এর জন্য আমি ক্ষমাপ্রার্থী।
বাদি'রা বলেন, আমরা এর মৃত্যুদণ্ড চাই। হজরত উমর রা. সব শুনে বললেন, উট হত্যার বদলে একটা উট নিলেই হতো, কিন্তু তুমি বৃদ্ধকে হত্যা করেছ। হত্যার বদলে হত্যা, এখন তোমাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হবে। তোমার কোনো শেষ ইচ্ছা থাকলে বলতে পারো। নওজোয়ান বলল, আমার কাছে কিছু ঋণ ও অন্যের কিছু আমানত আছে। আমাকে যদি কিছু দিন সময় দিতেন তবে আমি বাড়ি গিয়ে আমানত ও ঋণের বোঝা পরিশোধ করে আসতাম।
খলিফা হজরত উমর রা. বললেন, তোমাকে একা ছেড়ে দিতে পারি না। যদি তোমার পক্ষ থেকে কাউকে জিম্মাদার রেখে যেতে পারো তবে তোমায় সাময়িক মুক্তি দিতে পারি।
নিরাশ হয়ে নওজোয়ান বলল, এখানে আমার কেউ নেই, যে আমার জিম্মাদার হবে। একথা শুনে হঠাৎ মজলিসে উপস্থিত আল্লাহর নবীর এক সাহাবী হজরত আবু জর গিফারি রা. দাঁড়িয়ে বললেন, আমি হবো ওর জামিনদার। সাহাবী হজরত আবু জর গিফারি রা.-এর এই উত্তরে সবাই হতবাক। একে তো অপরিচিত ব্যক্তি, তার ওপর হত্যার দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি- কিভাবে তিনি এ লোকের জামিনদার হলেন!
খলিফা বললেন, আগামি শুক্রবার জুমা পর্যন্ত নওজোয়ানকে মুক্তি দেয়া হলো। জুমার আগে নওজোয়ান মদিনায়া না এলে নওজোয়ানের বদলে আবু জরকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হবে। মুক্তি পেয়ে নওজোয়ান ছুটল মাইলের পর মাইল দূরে তার বাড়ির দিকে। আবুজর রা. চলে গেলেন তার বাড়িতে। এদিকে দেখতে দেখতে জুমাবার এসে গেছে, নওজোয়ানের কোনো খবর নেই।
হজরত উমর রা. রাষ্ট্রীয় পত্রবাহক পাঠিয়ে দিলেন আবুজর গিফারি রা.-এর কাছে। পত্রে লিখা আজ শুক্রবার বাদ জুমা ওই যুবক যদি না আসে আইন মোতাবেক আবুজর গিফারির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হবে। আবুজর যেন সময়মতো জুমার প্রস্তুতি নিয়ে মসজিদে নববীতে হাজির হন। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে সারা মদিনায় থমথমে অবস্থার সৃষ্টি হয়। একজন নিষ্পাপ সাহাবী আবুজর গিফারী আজ বিনা দোষে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হবেন! জুমার পর মদিনার সবাই মসজিদে নববীর সামনে হাজির। সবার চোখে পানি। জল্লাদ প্রস্তুত।
জীবনে কতজনের মৃত্যুদণ্ড দেখেছে- তার হিসাব নেই। কিন্তু আজ কিছুতেই চোখের পানি
আটকাতে পারছে না কেউ। আবুজরের মতো একজন সাহাবী সম্পূর্ণ বিনাদোষে আজ মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হবেন- এটা মদিনার কেউ মেনে নিতে পারছে না। এমনকি মৃত্যুদণ্ডের আদেশ প্রদানকারী খলিফা উমর রা.-ও অনবরত কাঁদছেন। তবু আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে। কারো পরিবর্তনের হাত নেই। আবু জর রা. তখনো নিশ্চিন্ত মনে হাসি মুখে দাড়িয়ে মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত। জল্লাদ ধীর পায়ে আবু জর রা.-এর দিকে এগুচ্ছেন আর কাঁদছেন। আজ যেন জল্লাদের পা চলে না। পায়ে যেন কেউ পাথর বেঁধে রেখেছে।
এমন সময় এক সাহাবী জল্লাদকে বললো, হে জল্লাদ একটু থামো। মরুভুমির ধুলার ঝড় উঠিয়ে ওই দেখ কে যেন আসছে। হতে পারে ঐটা নওজোয়ানের ঘোড়ার ধূলি। একটু দেখে নাও, তারপর না হয় আবু জরের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর কোরো। ঘোড়াটি কাছে এলে দেখা যায়-সত্যিই এটা ওই নওজোয়ানই। নওজোয়ান দ্রুত খলিফার সামনে এসে বলল, হুজুর বেয়াদবি মাফ করবেন। রাস্তায় যদি ঘোড়ার পা'য়ে ব্যথা না পেত, তবে সঠিক সময়েই আসতে পারতাম। বাড়িতে আমি একটুও দেরি করিনি। বাড়ি পৌঁছে গচ্ছিত আমানত ও ঋণ পরিশোধ করি এবং তারপর বাড়ি এসে বাবা-মা এবং নববধূর কাছে সব খুলে বলে চিরবিদায় নিয়ে মৃত্যুর প্রস্তুতি নিয়ে মদিনার উদ্দেশ্যে রওনা দেই। এখন আবু জর রা. ভাইকে ছেড়ে দিন, আমাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়ে পবিত্র করুন। কেয়ামতে খুনি হিসেবে আল্লাহর সামনে দাঁড়াতে চাই না।
আশেপাশে সব নিরব থমথমে অবস্থা। সবাই হতবাক, কী হতে চলেছে। যুবকের পুনরায় ফিরে আসাটা অবাক করে দিলো সবাইকে। খলিফা হজরত উমর রা. বললেন, তুমি জানো তোমাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হবে, তারপরে ও কেন ফিরে এলে? উত্তরে ওই যুবক বলেন, আমি ফিরে এসেছি, কেউ যাতে বলতে না পারে, এক মুসলমানের বিপদে আরেক মুসলামান সাহায্য করতে এগিয়ে এসে নিজেই বিপদে পড়ে গিয়েছিল।
এবার হজরত উমর রা. হযরত আবু জর গেফারী রা.-কে জিজ্ঞেস করলেন, আপনি কেন না চেনা সত্ত্বেও এমন লোকের জামিনদার হলেন। উত্তরে হজরত আবু জর গেফারী রা. বললেন, পরে কেউ যেন বলতে না পারে, এক মুসলমান বিপদে পড়েছিল, অথচ কেউ তাকে সাহায্য করতে আসেনি।
এসব কথা শুনে, হঠাৎ বৃদ্ধার দুই সন্তানের মাঝে একজন বলে উঠল, হে খলিফা, আপনি তাকে মুক্ত করে দিন। আমরা তার উপর করা দাবি তুলে নিলাম।
হজরত উমর রা. বললেন, কেন? তাদের মাঝে একজন বলে উঠল, কেউ যেন বলতে না পারে, এক মুসলমান অনাকাঙ্ক্ষিত ভুল করে এবং নিজেই সেই ভুল শিকার করে ক্ষমা চাওয়ার পরও অন্য মুসলমান তাকে ক্ষমা করেনি।
সূত্র: নয়াদিগন্ত/ তথ্যসূত্র: হায়াতুস সাহাবা, পৃষ্ঠা: ৮৪৪
লেখক, প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক, মুফতী মামুন আব্দুল্লাহ কাসেমী-মারকাযুদ দিরাসাহ আল ইসলামিয়্যাহ ঢাকা
বহুল প্রতীক্ষিত করোনার টিকা ফেব্রুয়ারীতে দেশে আসার কথা থাকলেও চট্টগ্রামে সেটা মিলতে পারে ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে। ইতিমধ্যে চট্টগ্রামে ২ লাখ ৭১ হাজার ৭৮৮ জনের জন্য পাঁচ লাখ ডোজ টিকা চেয়ে চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে ঢাকায়।
এদিকে চট্টগ্রামে করোনার ভ্যাকসিন প্রদান ও সংরক্ষণের ব্যাপারে সিটি করপোরেশনের সকল ধরনের প্রস্তুতি আছে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন।
তিনি বলেন,সরকারি গাইডলাইন মেনে করোনা ভ্যাকসিন প্রদান করা হবে। করোনার ভ্যাকসিন সংরক্ষণের জন্য চসিকের মোট সাতটি স্টোর ও পর্যাপ্ত স্বাস্থ্য এবং ইপিআই কর্মী রয়েছে। করোনা ভ্যাকসিন প্রদানের ব্যাপারে কোনো ধরনের বিভ্রান্তি ছড়াবেন না।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশনা অনুসারে কোভিড-১৯ মহামারি মোকাবেলায় নিয়োজিত স্বাস্থ্য কর্মী, সম্মুখ সারির কর্মী, রোগ প্রতিরোধহীন ও ক্ষমতাহীন জনগোষ্ঠী এবং দীর্ঘমেয়াদি রোগে আক্রান্ত জনগোষ্ঠীকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এই ভ্যাকসিন দেওয়া হবে।
উল্লেখ্য,অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি এবং আ্যাস্ট্রোজেনেকা কোম্পানির যৌথ উদ্যোগে প্রস্তুতকৃত করোনার ভ্যাকসিন বংলাদেশে সরবরাহ করবে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস। এ লক্ষে বাংলাদেশ সরকার, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস এবং ভ্যাকসিনটি উৎপাদনের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটের ত্রিপক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। এর আওতায় বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস বাংলাদেশ সরকারকে ৩ (তিন) কোটি ডোজ ভ্যাকসিন সরবরাহ করবে।