a
ছবি:মুক্তসংবাদ প্রতিদিন
মহান ২১শে ফেব্রুয়ারি শহীদ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। এই উপলক্ষে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছে বাংলাদেশ বেকার সম্প্রদায়। রাত ১টা ৩০ মিনিটে সংঘটনের সভাপতি মো: আল কাওছার এবং সাধারণ সম্পাদক মো: সাইফুল আলমের নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ ফুলেল শুভেচ্ছা নিবেদন করেন।
একুশে ফেব্রুয়ারির প্রথম প্রহরে রাত ১২টা ১ মিনিটে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে প্রথমে রাষ্ট্রপতি এবং পরে প্রধানমন্ত্রী শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। এরপর স্পিকার ও প্রধান বিচারপতি শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। তার কিছুক্ষণ পরেই বাংলাদেশ বেকার সম্প্রদায় সকল শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সকলে মিলে কিছুক্ষণ নীরবতা পালন করেন। পরবর্তীতে উপস্থিত যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাসহ বিশিষ্টজনদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন।
বেকারের অধিকার আমাদের অঙ্গীকার এই শ্লোগানকে সামনে রেখে সারাদেশের লাখ লাখ বেকারের কর্মসংস্থান এবং বেকারদের জন্য ৪ দফা দাবী বাস্তবায়নের লক্ষে সক্রিয় আন্দোলন এবং গণসংযোগ করে যাচ্ছেন এই সংগঠনটি। জাতির সূর্যতরুণদের আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সবাই। শ্রদ্ধা নিবেদনের সময় উপস্থিত ছিলেন সাংগঠনিক সম্পাদক মো: জসীম নায়েক, সহ- সভাপতি - জোবাইদুল হক সবুজ, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক - আ আ ম আশিকুর রহমান, দপ্তর সম্পাদক - বঙ্কিম চন্দ্র সরকার, প্রচার সম্পাদক - মো: রোমান গাজী সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সাংস্কৃতি বিষয়ক সংস্থা (ইউনেস্কো) মহান একুশের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতি দেওয়ার পর থেকে আন্তর্জাতিক পর্যায়েও গত কয়েক বছর ধরে দিবসটি পালিত হচ্ছে।
বাঙালি জাতির জন্য এই দিবসটি হচ্ছে চরম শোক ও বেদনার। অনদিকে মায়ের ভাষা বাংলার অধিকার আদায়ের জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগের মহিমায় উদ্ভাসিত। যেকোনো জাতির জন্য সবচেয়ে মহৎ ও দুর্লভ উত্তরাধিকার হচ্ছে মৃত্যুর উত্তরাধিকার-মরতে জানা ও মরতে পারার উত্তরাধিকার। ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি শহীদরা জাতিকে সে মহৎ ও দুর্লভ উত্তরাধিকার দিয়ে গেছেন।
১৯৫২ সালের এদিনে ‘বাংলাকে’ রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে বাংলার (তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান) ছাত্র ও যুবসমাজসহ সর্বস্তরের মানুষ সে সময়ের শাসকগোষ্ঠীর চোখ-রাঙানি ও প্রশাসনের ১৪৪ ধারা উপেক্ষা করে স্বতঃস্ফূর্তভাবে রাজপথে নেমে আসে। মায়ের ভাষা প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে দুর্বার গতি পাকিস্তানি শাসকদের শংকিত করে তোলায় সেদিন ছাত্র-জনতার মিছিলে পুলিশ গুলি চালালে সালাম, জব্বার, শফিক, বরকত ও রফিক গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ হন। সেই থেকে দিবসটি গুরুত্বের সঙ্গে পালিত হয়ে আসছে।
ছবি: সংগৃহীত
নজরুল একাডেমির কাজী নজরুল ইসলাম মিলনায়তনে শুক্রবার বিকেলে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের কালজয়ী 'বিদ্রোহী' কবিতার ওপর হাসান আলীম রচিত 'কাজী নজরুল ইসলামের বিদ্রোহী কবিতার নন্দনতত্ত্ব ' গ্রন্থ নিয়ে একটি মনোজ্ঞ আলোচনা অনুষ্ঠান হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন নজরুল একাডেমির সভাপতি সাবেক রাষ্ট্রদূত জনাব মসউদ মান্নান। প্রধান অতিথি ছিলেন বিশিষ্ট কবি ও গবেষক ড. মাহবুব হাসান। স্বাগত বক্তব্য দেন বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা, নজরুল গবেষক, নজরুল সংগীতজ্ঞ, নজরুল একাডেমির সাধারণ সম্পাদক মিন্টু রহমান।
নন্দনতত্ত্ব গ্রহ্নের ওপর মূল্যবান প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন নর্দান ইউনিভার্সিটির ইংরেজি বিভাগের চেয়ারম্যান, বিশিষ্ট গবেষক অধ্যাপক জসিম উদ্দিন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য পেশ করেন বিশিষ্ট কবি ও গীতিকার জাকির আবু জাফর, বিশিষ্ট গবেষক অধ্যাপক ড.ফজলুল হক সৈকত, বিশিষ্ট সাংবাদিক ও কলামিস্ট হারুন ইবনে শাহাদাত, বিশিষ্ট সাহিত্যিক, অনুবাদক, ইংরেজির শিক্ষক আনিস ফাতিমা। ধন্যবাদ জানান নজরুল একাডেমির সহ-সভাপতি মুহাম্মদ আবদুল হান্নান।
অনুষ্ঠানে নজরুলের বিদ্রোহী কবিতার আবৃত্তি করেন রোকসানা ইমাম। নজরুলকে নিবেদন করে কবিতা পাঠ করেন কবি এম আলীম, কবি সাইফ সাদী, কবি সুমন রায়হান, কবি শাহীনুল ইসলাম, কবি রাহমান মাজিদসহ আরো অনেকে।
প্রবন্ধকার অধ্যাপক জসিম উদ্দিন বলেন, নজরুল একাডেমিতে ধারাবাহিকভাবে তিন বছর গবেষণা করে হাসান আলীম এই অসাধারণ গ্রন্থ রচনা করেছেন। আমার মতো কোনো অধ্যাপকের ৩০ বছর গবেষণা করেও এ রকম একটি সমৃদ্ধ গ্রন্থ রচনা করা সম্ভব হবে না।
তিনি বলেন এ গ্রন্হের চৌদ্দটি অধ্যায় মৌলিক গবেষণা। হাসান আলীম যেভাবে প্রতিটি শব্দের বিশ্লেষণ এবং গাণিতিক ফর্মুলার মাধ্যমে ব্যাখ্যা করেছেন তা একেবারে নতুন। আর কোনো গবেষক এভাবে কোনো কবিতার বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ করতে পারেনি। এটি একটি অসাধারণ গবেষণা গ্রন্থ।
প্রধান অতিথি ড.মাহবুব হাসান বলেছেন, হাসান আলীম বিদ্রোহী কবিতার নন্দনতত্ত্ব যেভাবে বিশ্লেষণ করেছেন তা আমার কাছে একেবারে নতুন লেগেছে। আমার জানা মতে এমন আর একটি গ্রন্থ আমাদের ভাষায় রচিত হয়নি। তিনি বলেন, বিদ্রোহী কবিতার ধ্বনিতত্ত্ব, ধ্বনি তাত্ত্বিক ম্যাজিক নম্বর, ছন্দ বিশ্লেষণ, চিত্রকল্প, অলংকার ও রস প্রসঙ্গে হাসান আলীম যে বিশ্লেষণ করেছেন, তাতে আমি বিস্ময় প্রকাশ করছি।
তিনি বলেন বিদ্রোহী কবিতার এত বিস্তৃত বিশ্লেষণ হতে পারে তা আমার ধারণা ছিল না। আর কারো পক্ষে এমন বিশ্লেষণ করা সম্ভব কিনা আমার সংশয় জাগে। হাসান আলীম একটি অসাধারণ কাজ করেছেন।
কবি জাকির আবুজাফর বলেন, এটি হাসান আলীমের একটি অসাধারণ কাজ। কত রাত জেগে জেগে কঠিন সাধনা করে এ অসাধারণ গ্রন্থটি রচনা করেছেন তার হিসেব মেলানো দুষ্কর। এ গবেষণা গ্রন্থটি বিদ্রোহী কবিতার সাথে সাথে চিরকাল বেঁচে থাকবে।
তিনি বলেন, বিদ্রোহী কবিতার এত নন্দনতাত্বিক বিশ্লেষণ আর কেউ করতে পারেননি।
অধ্যাপক ড.ফজলুল হক সৈকত বলেন, হাসান আলীম একজন বিশিষ্ট কবি ও গবেষক। তিনি আমাদের মতো অধ্যাপক নন। তিনি কবিতার নন্দনতত্ত্ব এবং শিল্প বোঝেন। চমৎকার করে তিনি যেভাবে বিদ্রোহী কবিতার নন্দনতত্ত্ব বিশ্লেষণ করেছেন তা কোনো অধ্যাপকের পক্ষে সম্ভব নয়- কারণ অধ্যাপকেরা কবিতা হত্যা করে, ভালো মন্দ বলে, ডিসেকশন করে- কবিতার নন্দনতত্ত্ব বা শিল্প আলোচনা করেন না। কিন্তু হাসান আলীম নিগুঢ়ভাবে কবিতার সৌন্দর্য বিশ্লেষণ করেছেন। এ গ্রন্থটি পিএইচডি গবেষণা এবং উচ্চতর শিক্ষার জন্য রেফারেন্স বই হতে পারে। পাঠ্য হতে পারে।
কলামিস্ট এবং সাংবাদিক হারুন ইবনে শাহাদাত বলেন, বিদ্রোহী কবিতা নিয়ে যে অপবাদ অপব্যাখ্যা ছিল, ধর্মীয়গোড়ামীর অপঘাত ছিল, তা হাসান আলীম অত্যন্ত বিজ্ঞতার সাথে, যুক্তি নির্ভরভাবে, বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণের মাধ্যমে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছেন নজরুলের বিদ্রোহী কবিতা পৃথিবীর মধ্যে অদ্বিতীয় এবং সর্বশ্রেষ্ঠ কবিতা। প্রেস বিজ্ঞপ্তি
ফাইল ছবি
উত্তর আমেরিকার দেশ হাইতিতে আজ ভয়াবহ ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে নিশ্চিত করা হয়েছে হাইতিতে ভূমিকম্পে বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছে। তবে কি পরিমাণ হতাহত হয়েছে তা এখনো জানা যায়নি। আল জাজিরা জানায়, হাইতির পশ্চিমাঞ্চলে শক্তিশালী একটি ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ২। আজ শনিবার (১৪ আগস্ট) যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ (ইউএসজিএস) এর বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে আল জাজিরা।
ইউএসজিএস জানায়, হাইতির পেটিট ট্রু দে নিপ্পস শহর থেকে ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ৮ কিলোমিটার দূরে ছিল। এছাড়া রাজধানী পোর্ট অব প্রিন্স থেকে ১৫০ কিলোমিটার দূরে। অন্যদিকে ইউরোপীয়-ভূমধ্যসাগরীয় ভূমিকম্প কেন্দ্র (ইএমএসসি) থেকে জানানো হয়, এই অঞ্চলে ৭ দশমিক ৬ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। হাইতির জনসুরক্ষা অধিদপ্তরের প্রধান জেরি চান্ডার জানান, আমি নিশ্চিত হয়েছি বহু মানুষ মারা গেছে। তবে কতজনের মৃত্যু হয়েছে তা এখনো জানা সম্ভব হয়নি।
এদিকে ভূকম্পন কেন্দ্রে এক বাসিন্দা ক্রিস্টেলা সেইন্ট হিলারি বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানান, বহু বাড়ি ঘর মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। অনেক মানুষের প্রানহানী হয়েছে। অনেক মানুষকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। প্রায় সবাই ঘরবাড়ি ছেড়ে এখন রাস্তায় অবস্থান করছে।
তিনি আরও জানান, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন ফুটেজে পাওয়া যাচ্ছে মানুষ ধংসস্তুপের নিচে চাপা পড়েছে। তবে ঠিক কখন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা টিম পৌঁছাবে তা বলা সম্ভব হচ্ছে না। বর্তমানে খুবই খারাপ মুহূর্ত এখানে।
উল্লেখ্য ১১ বছর আগে ৭ মাত্রার এক ভূমিকম্পে হাইতিতে প্রায় ২ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। এছাড়া প্রায় ৩ লাখ মানুষ ওই ভূমিকম্পে আহত হয় বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম আল জাজিরার আজকের ভূমিকম্পে সে সংখ্যা ছাড়িয়েও যেতে পারে বলে আশংকা করা হচ্ছে।