a
ফাইল ছবি
সবাইকে কাঁদিয়ে পরপারে পাড়ি জমালেন বাংলা সিনেমার মিষ্টি মেয়ে কবরী। করোনা আক্রান্ত হয়ে ১৩ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর শুক্রবার (১৬ এপ্রিল) দিবাগত রাত ১২টা ২০ মিনিটে মারা যান এই অভিনেত্রী ও রাজনীতিক।
১৯৫০ সালের ১৯ জুলাই চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে জন্মগ্রহণ করেন কবরী। তার আসল নাম মিনা পাল। বাবা শ্রীকৃষ্ণদাস পাল এবং মা লাবণ্য প্রভা পাল। ১৯৬৩ সালে মাত্র ১৩ বছর বয়সে নৃত্যশিল্পী হিসেবে মঞ্চে উঠেছিলেন তিনি। তারপর টেলিভিশন ও পরে সিনেমায়।
১৯৬৪ সালে সুভাষ দত্তের ‘সুতরাং’ ছবির মাধ্যমে সারাহ বেগম কবরীর অভিনয় জীবন শুরু। চট্টগ্রামের মেয়ে মিনা পাল চলচ্চিত্রের লাল-নীল জগতে পা দিয়েই নতুন নাম পান ‘কবরী’। পরিচালক সুভাষ দত্তই তাকে এই নাম দিয়েছিলেন বলে জানা যায়।
দক্ষ অভিনয় শৈলী দিয়ে ‘মিষ্টি মেয়ে’ হয়ে ওঠেন এই অভিনেত্রী। তারপর জনপ্রিয় নায়িকা হিসেবে চলচ্চিত্র দুনিয়ায় কবরীর শুধুই দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলা।
এরপর অভিনয় করেছেন হীরামন, ময়নামতি, চোরাবালি, পারুলের সংসার, বিনিময়সহ অসংখ্য সিনেমায়। আগন্তুকসহ জহির রায়হান নির্মিত উর্দু ছবি ‘বাহানা’ এবং ভারতের চলচ্চিত্র নির্মাতা ঋত্বিক ঘটকের ছবি ‘তিতাস একটি নদীর নাম’।
কবরী বিয়ে প্রথম করেন চিত্ত চৌধুরীকে। সম্পর্ক বিচ্ছেদের পর ১৯৭৮ সালে তিনি বিয়ে করেন সফিউদ্দীন সরোয়ারকে। ২০০৮ সালে তাদেরও বিচ্ছেদ হয়ে যায়। কবরী পাঁচ সন্তানের মা।
২০০৮ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। যুক্ত ছিলেন অসংখ্য নারী অধিকার ও সমাজসেবামূলক সংগঠনের সঙ্গে। অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০১৭-তে প্রকাশিত হয়েছে তার আত্মজীবনীমূলক বই ‘স্মৃতিটুকু থাক’।
হঠাৎ খুসখুসে কাশি ও জ্বরে আক্রান্ত হলে করোনার নমুনা পরীক্ষা করান কবরী। ৫ এপ্রিল ফলাফল পজিটিভ আসে। ওই রাতেই তাকে রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে ৮ এপ্রিল দুপুরে তাকে শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালে আইসিইউতে নেওয়া হয়। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ১৫ এপ্রিল বিকেলে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় অবশেষে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে চিরবিদায় নিলেন নায়িকা।
ফাইল ছবি
দেশের সমালোচিত চিত্রনায়িকা পরীমনি পিরোজপুরের ভাণ্ডারিয়ার মেয়ে। তিনি এখন টক অব দ্য কান্ট্রি। তিনি ভাণ্ডারিয়া উপজেলার ইকড়ি ইউনিয়নের শিংখালী গ্রামের বাসিন্দা। তিনি সেখানে মামার বাড়িতে থেকে বড় হয়েছেন। তার পুরো নাম শামসুন নাহার স্মৃতি।
স্থানীয় সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও পিরোজপুর জেলা পরিষদ সদস্য মো. আব্দুল হাই হাওলাদার জানান, পরীমনির বাড়ি এখানে না হলেও তিনি নানা মো. শামসুল হক গাজীর বাড়িতে থেকে লেখাপড়া করে বেড়ে উঠেছেন। তবে তার বাড়ি নড়াইল জেলার লোহাগড়া উপজেলার সালাবাদ গ্রামে। তার পিতা মনিরুল ইসলাম ছিলেন একজন পুলিশ কনস্টেবল।
স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, পরীমনির শিশুকালে তার মা সালমা সুলতানার মৃত্যু হয়। মায়ের মৃত্যুর পর পিতা-মাতার একমাত্র মেয়ে শামসুন নাহার স্মৃতি ওরফে পরীমনিকে তার নানা মো. শামসুল হক গাজী তাদের ভাণ্ডারিয়ার গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসেন। তিনি ছিলেন মেধাবী ছাত্রী। কিন্তু গরিব হওয়ায় কোনো প্রাইভেট পড়তে পারেননি। তারপরও তিনি ভগিরাতপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পঞ্চম শ্রেণিতে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তিপ্রাপ্ত হন।
এরপর মামার বাড়িতে থেকে পার্শ্ববর্তী মঠবাড়িয়া উপজেলার ভগিরাথপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ২০১০ সালে প্রথম এসএসসি পরীক্ষা দিলেও প্রথমে তিনি ফেল করেন। পরের বছর ২০১১ সালে একই বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাশ করেন।
পরীমনির নানা শামসুল হক গাজী জানান, পরীমনির মায়ের মৃত্যুর পর তাকে আমাদের বাড়িতে নিয়ে আসি। সে আমাদের বাড়িতে থেকে স্থানীয় স্কুলে লেখাপড়া করে এসএসসি পাশ করে। পরে স্থানীয় একটি কলেজে ভর্তি হলেও বরিশালে থাকা খালাতো ভাই ইসমাইল হোসেনের সঙ্গে বিয়ে হয়। সেখানে ২ বছরের দাম্পত্য জীবনের পর বিচ্ছেদ হয়।
স্থানীয়রা জানান, উচ্ছৃঙ্খল জীবনের জন্য খালাতো ভাইয়ের সঙ্গে ডিভোর্স হওয়ার পর ২০১৯ সালে দ্বিতীয় ও ২০২০ সালে তৃতীয় বিয়ে হয় পরীমনির।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে মঠবাড়িয়ার ভগিরাথপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের তার এক সহপাঠী জানান, ছাত্রজীবন থেকে শামসুন নাহার স্মৃতি ওরফে পরীমনি ছিলেন উচ্চাভিলাষী ও উচ্ছৃঙ্খল। তাকে আমরা স্মৃতি নামে চিনতাম। তবে এসএসসির নিবন্ধনে তার নাম ছিল শামসুন নাহার।
জানা গেছে, অত্যন্ত গরিব পরিবারের কন্যা শামসুন নাহার স্মৃতি ওরফে পরীমনি পেটের টানে চলে যান ঢাকায়। সেখানে চিত্রজগতে প্রবেশ করেন। প্রথমে ভালো পরিচিতি লাভ না করলেও পরে ‘বিশ্ব সুন্দরী’ নামে একটি ফিল্মে নায়িকার অভিনয় করে তিনি ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেন।
সংগৃহীত ছবি
শুক্রবার জুমার দিন মুসলমানদের জন্য সপ্তাহের সেরা দিন। পবিত্র কোরআন শরিফে জুমা নামে একটি সূরাও আছে। এইদিনে মহান আল্লাহতায়ালা জগৎ সৃষ্টির পূর্ণতা দান করেছিলেন।
আদি পিতা হজরত আদম (আ.) ও মা হাওয়া (আ.)-কে এই দিনেই জান্নাতে একত্র করেছিলেন এবং এই দিনে মুসলিম উম্মাহ সাপ্তাহিক ঈদ ও ইবাদত উপলক্ষে মসজিদে একত্র হয় বলে দিনটাকে ইয়াওমুল জুমাআ বা জুমার দিন বলা হয়।
জুমার নামাজের সূচনাঃ
জুমার নামাজ ফরজ হয় প্রথম হিজরিতে। রাসূলুল্লাহ (সা.) হিজরতকালে কুবাতে অবস্থান শেষে শুক্রবার দিনে মদিনা পৌঁছেন এবং বনি সালেম গোত্রের উপত্যকায় পৌঁছে জোহরের ওয়াক্ত হলে সেখানেই তিনি জুমার নামাজ আদায় করেন। এটাই ইতিহাসের প্রথম জুমার নামাজ।
হিজরতের পরে জুমার নামাজ ফরজ হওয়ার আগে নবুওয়তের দ্বাদশ বর্ষে মদিনায় নাকীউল খাজিমাতে হজরত আসআদ বিন যুরারাহ (রা.)-এর ইমামতিতে সম্মিলিতভাবে শুক্রবারে দুই রাকাত নামাজ আদায়ের প্রমাণ পাওয়া যায়। তবে সেটা ছিল নফল নামাজ।
জুমার দিনের ফজিলতঃ
সাপ্তাহিক ঈদ হিসেবে জুমার দিনের ফজিলত অনেক বেশি। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন – জুমার দিনে ফেরেশতাগণ বিশেষ রেজিস্টার নিয়ে মসজিদের প্রতিটি দরজায় দাঁড়িয়ে যান। তাঁরা মসজিদে আগমনকারী মুসল্লিদের নাম পর্যায়ক্রমে লিপিবদ্ধ করতে থাকেন। অতঃপর যখন ইমাম সাহেব এসে যান, তখন তারা রেজিস্টার বন্ধ করে খুতবা শুনতে থাকেন।