a
বাইডেন ও নরেন্দ্র মোদী
ভারতে ভয়াবহ আকারে ছড়িয়ে পড়ছে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ। এর মাঝে ব্যাহত হচ্ছে ভ্যাকসিন উৎপাদন। কাঁচামালের অভাবে দেশটির টিকা প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলো পর্যাপ্ত ভ্যাকসিনের ডোজ তৈরি করতে পারছে না। এমতাবস্থায় বিভিন্ন রাজ্যে দেখা দিয়েছে টিকার স্বল্পতা।
এই পরিস্থিতিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ভারত আবেদন করেছিল যাতে করোনা টিকা তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় কাঁচামালের রফতানির ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়। তবে ভারতের আবেদন গ্রহণ না করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন প্রশাসন নিষেধাজ্ঞার পক্ষেই যুক্তি যেন।
এই বিষয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেনের বক্তব্য, ভারতের ভয়াবহ করোনা পরিস্থিতিতে ভ্যাকসিন উৎপাদনে প্রয়োজনীয় কাঁচামাল বা ওষুধ কতটা জরুরি, তা বুঝতে পারলেও ডিপিএ অ্যাক্ট অনুযায়ী কিছু বিধিনিষেধ মানতে হয় মার্কিন সরকারকে। তাই আমেরিকান কোম্পানিগুলোকে দেশের অভ্যন্তরের প্রয়োজনকে অগ্রাধিকার দিতে হয়।
কয়েকদিন আগেই ভ্যাকসিনের উৎপাদন বাড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় কাঁচামালের জোগানের আবেদন জানিয়ে মার্কিন সরকারকে একটি টুইট করেন সেরাম ইনস্টিটউটের সিইও আদার পুনাওয়ালা। এরপরই আমেরিকায় ভারতের অ্যাম্বাসাডর তরণজিৎ সিং সান্ধু বাইডেন প্রশাসনের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছেন, সেখানে ভারতে দ্রুত ওষুধ পাঠানোর ব্যবস্থা করার অনুরোধ জানানো হয়।
এরপর মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্তনি ব্লিনকেন আর ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের মাঝে ফোনালাপে করোনাভাইরাস মহামারীর বর্তমান অবস্থা এবং তা মোকাবেলা করার বিষয়াদি নিয়ে আলোচনা করা হয়।
এদিকে ইতোমধ্যেই বিশ্বজুড়ে ভ্যাকসিন উৎপাদন আর সরবরাহের জন্যে কোয়াড গোষ্ঠী তৈরি হয়েছে। সেখানে ভারত-মার্কিন যৌথ উদ্যোগে আমেরকিায় তৈরি ভ্যাকসিন নোভাভ্যাক্স আর জনসন অ্যান্ড জনসন তৈরি করার কথা। আর সেই প্রস্তুতিও শুরু হয়ে গিয়েছে।
এই বিষয়ে ওয়াশিংটনের বক্তব্য, ভারতের কথা মাথায় রয়েছে মার্কিন সরকারের। তবে সেখানে হোয়াইট হাউজ ওষুধ রফতানির ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলেনি। সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস
করোনাভাইরাস
গত ২৪ ঘন্টায় করোনাভাইরাসে মৃত্যু হয়েছে ৫১ জন। এ নিয়ে করোনাভাইরাসে দেশে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়াল ২৬ হাজার ৯৩১ জন।
এদিকে, গত ২৪ ঘন্টায় করোনাভাইরাসে শনাক্ত হয়েছে ১,৮৭১ জন। এ নিয়ে দেশে মোট করোনাভাইরাসে শনাক্তের সংখ্যা ১৫ লাখ ৩০ হাজার ৪১৩ জন।
আজ রবিবার বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদফতরের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে আরও জানানো হয়, গত ১ দিনে বাসা ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও ৩,৫৮৬ জন করোনারোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ১৪ লাখ ৭৮ হাজার ৮২১ জন।
উল্লেখ্য, গত ২৪ ঘণ্টায় ২৫ হাজার ৭৪টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। নমুনা পরীক্ষায় শনাক্তের হার ৭ দশমিক ৪৬ শতাংশ।
ফাইল ছবি: জোহরা বিবি
৮৫ বছরের বয়োবৃদ্ধা ১৫ সন্তানের জননী জোহরা বিবি ৩৬ বছর যাবৎ ভাত না খেয়েই বেঁচে আছেন। সাতক্ষীরা জেলা শহরতলী কুখরালী গ্রামের ওই বৃদ্ধা এখনো দিব্যি সুস্থ রয়েছেন। ভাত না খাওয়ার বিষয়ে জোহারা বিবি বলেন, ‘আমার আব্বা মান্দার মোড়ল ভারতের বশিরহাট থানার মেজ দারোগা ছিল।
সাকচুড়া আমাদের গ্রামের নাম। ছোট বেলায় আব্বা আমারে মোড়ল পরিবারে বিয়ে দেয়। আমার বয়স যখন তের বছর তখন আমার বড় ছেলের জন্ম হয়। বড় ছেলের বয়স এখন ৭১ বছর। আল্লাহ আমার ১৫ জন সন্তান দিয়েছে। আমার দুই জন ছেলে ও তিন জন মেয়ে মারা গেছে। আল্লাহর রহমতে ১০ জন সন্তান জীবিত আছে, সাত জন ছেলে ও তিন জন মেয়ে।’
জোহারা বিবি আরো বলেন, ‘আমার ছোট ছেলের জন্মের দুই তিন বছর পর আমার পেটে অনেক ব্যথা যন্ত্রণা হত। ছেলেরা বিভিন্ন ডাক্তারের কাছে নিয়ে যায়। ডাক্তার বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা করে পেট কাটতে হবে জানায়। কিন্তু আমি তো পেট কাটবো না। পেটের যন্ত্রণায় আমার খাওয়া কমে যায়। তখন আমি শাকসবজি, তরিতরকারি আর মুড়ি খেতাম। এর পর থেকে আমার পেটের যন্ত্রণা ধীরে ধীরে কমে যায়।’
‘এরপর থেকে আমি আর কখনো ভাত খায়নি। এখন সকালে বিস্কুট আর চা, দুপুরে মুড়ি ভিজিয়ে তরিতরকারি দিয়ে খায়, কখন কখন অল্প মাছ ও মাংস খাই, আর রাতে বিস্কুট আর চা খাই। আমি চশমা ছাড়া কোরআন শরিফ পড়তে পারি, তবে চশমা পড়লে ভাল হয়। শরিল (শরীর) আর আগের মত নেই, আস্তে আস্তে খারাপের দিকে যাচ্ছে, বয়স হচ্ছে তো’- বলেও উল্লেখ করেন জোহারা বিবি।
এ বিষয়ে জোহরা বিবির বড় ছেলে নুর ইসলাম মোড়ল জানান, মার ছোট বেলা থেকে পেটে একটু ব্যথা যন্ত্রণা ছিল। ১৯৮৩-৮৪ সালের দিকে পেটের যন্ত্রণা বৃদ্ধি পেলে আমরা মাকে ডাক্তারের কাছে নিলে ডাক্তার জানায় টিউমার হয়েছে অপারেশন করতে হবে। কিন্তু মা অপারেশন করবে না। ডাক্তারের ওষুধ খায় আর মা ভাত খাওয়া বাদ দেয় এতে মার পেটের যন্ত্রণা ধীরে ধীরে কমে যায়।
নুর ইসলাম মোড়লে বলেন, ‘১৯৮৫ সালের পর থেকে মা আর ভাত খায়নি। মা ভাত না খাওয়ায় প্রথমে আমরা অনেক চিন্তিত ছিলাম কিন্তু মা সুস্থ থাকায় আমাদের চিন্তা দূর হয়। তারপর থেকে মা যা খেতে চায় তা খাওয়ানোর চেষ্টা করি। আল্লাহর কাছে দোয়া করি মা সুস্থ থেকে বাকী জীবন পার করতে পারে।’