a
ফাইল ছবি
স্কুল থেকে পালিয়ে শিক্ষার্থীরা ঘুরছিল লেকের পাড়ে। কেউ আড্ডা দিচ্ছিল, কেউ গায়ে হাওয়া লাগাচ্ছিল। অনেকে ঝালমুড়ি খাচ্ছিল। নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে হাতিরঝিলের আদলে গড়ে উঠা ডিএনডি লেকে শিক্ষার্থীদের এমন পদচারণা ও আড্ডাস্থলে হানা দেয় সিদ্ধিরগঞ্জ থানার পুলিশ কর্মকর্তা।
তারা শিক্ষার্থীদের বুঝিয়ে বলেন, স্কুল সময়ে বাইরে ঘোরাঘুরি না করা, এ সময়ে তারা যেন থাকে নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানে।
মঙ্গলবার (৭ জুন) দুপুরে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মশিউর রহমানের নেতৃত্বে ডিএনডি লেকে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মশিউর রহমান বলেন, স্কুল-কলেজের ইউনিফর্ম পরিহিত যেসব শিক্ষার্থীকে ঘোরাঘুরি করতে দেখেছি, তাদের ডেকে এনে স্কুল-কলেজের সময় ক্লাস ফাঁকি দিয়ে লেকে ঘুরাঘুরি করতে নিষেধ করি। তাদের এটাও বলি যে, ঘুরতে হলে বিকালে পরিবারের লোকজন নিয়ে আসতে হবে। যেসব শিক্ষার্থীর চুলের বাহারি কাটিং ও রং করতে দেখি, তাদের সেলুনে গিয়ে সেগুলো ঠিক করতে বলি। নৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে সুন্দর জীবন গড়ে দেশসেবায় অনুপ্রাণিত করি শিক্ষার্থীদের।
তিনি আরও বলেন, ভবিষ্যতে যদি আবারো তাদের স্কুল-কলেজের সময়ে লেকে ঘোরাঘুরি করতে দেখি তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। প্রথমবারের জন্য তাদের বুঝিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয় পুলিশ এবং তারা আরো অনুরোধ করেন যেন প্রতিটি অভিভাবক ও প্রতিষ্ঠানের প্রধানগণ এসব বিষয়ে বিশেষ নজর রাখেন। সূত্র: যুগান্তর
ফাইল ছবি
আর্থিক অনিয়মের অভিযোগে ইভ্যালির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিন ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. রাসেলের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
গতকাল বৃহস্পতিবার দু’জনের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা জারির প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয় বলে জানিয়েছে দুদক।
দুদক সূত্রে জানা যায়, ইভ্যালির এমডি মো. রাসেল এবং চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিন গোপনে দেশত্যাগের চেষ্টা করছেন। দুদক অনুসন্ধান কার্যক্রম চলমান থাকা অবস্থায় অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা দেশত্যাগ করলে সার্বিক অনুসন্ধান কার্যক্রম ব্যাহত হতে পারে। এর প্রেক্ষিতে গত ৮ জুলাই ইভ্যালির এমডি মো. রাসেল এবং চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিনের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞাসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছে সংস্থাটি
গত ৮ জুলাই গ্রাহক ও মার্চেন্টের ৩৩৯ কোটি টাকার হদিস না থাকার বিষয়ে অনুসন্ধানে নামে দুদক। সংস্থাটির দুই কর্মকর্তাকে সদস্য করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
জানা যায়, গ্রাহক ও মার্চেন্টের টাকাগুলো আত্মসাৎ অথবা পাচার হয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখতে এই তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
ছবি: মুক্তসংবাদ প্রতিদিন
নৈসর্গিক সৌন্দর্যের অপার লীলাভূমি রাঙ্গামাটি। চারিদিকে পাহাড় আর ঝর্ণা। যেদিকে দু’চোখ যায় অপরূপ সৌন্দর্যে মন ভরে যায়। রাঙামাটির বিলাইছড়ির ধুপপানি ঝর্ণা এই মুহূর্তে বাংলাদেশের সবচেয়ে সুন্দর ঝর্ণাগুলোর মধ্যে একটি।
সুবিশাল উচ্চতা, শুভ্র জলরাশির ঝর্ণা আর ঝর্ণার নিচের গুহার জন্য ট্রেকারদের কাছে এই ঝর্ণাটির আবেদন সব সময় অন্যরকম। ঝর্ণার স্বচ্ছ পানি এবং অনেক উচুঁ থেকে আছড়ে পড়া জলরাশি আপনাকে একরকম পাগল করে দিবে, ধুপপানি ঝর্ণার নিচের গুহায় চোখ বন্ধ করে বসলে মনে হবে অন্য কোন জগতে চলে গেছেন।
অনেক উচ্চতা থেকে প্রবল বেগে যখন নেমে আসে ঝর্ণার জলরাশি তখন শুভ্র জলধারা ছাড়া আর কিছুই দৃষ্টিগোচর হয় না, তাই রঙ বুঝেই এর নাম ধুপপানি ঝর্ণা। স্থানীয়রা দুপপানি ঝর্না নামেও ডেকে থাকে। ভুপৃষ্ঠ থেকে ধুপপানির উচ্চতা ১৫০ মিটার এবং ২ কিলোমিটার দূর থেকে ঝর্ণার চঞ্চল শব্দ কানে আসে। বর্ষায় আরও দূর থেকে টের পাওয়া যায় তার অস্তিত্ব। "পরিপূর্ণ এক ট্রেকিং এটি। ভয়, ঝুঁকি, শিহরণ, উচ্ছ্বাস, চমক, সৌন্দর্য কী নেই!"
ঝর্ণার সৌন্দর্য যেমন অপরূপ, এর ট্রেকিং এর পথও এতোটা সুগম নয়। ইতোমধ্যে এই ট্রেকিং সম্পূর্ণ করে এসে এর বিবরণ দেয় "টিম ১৭"।
এই ভ্রমণের সহচরেরা ছিলো আরিফুল ইসালম ইমন, তানভীর হৃদ, অমৃত রায়, রাফি, আবির, বেজওয়ান, নিলয়, ইকরামুল, রাকিবুল, সৈয়দা তাহমিদা, সুস্মিতা সাহা মন, শাহরিয়ার সুচি, উন্মে হাবিবা, আশফিকা আইশি, গাজী শাকিবুল ইসলাম প্রমুখ।
অপরূপ সৌন্দর্যের আধার হওয়া সত্তেও ঝর্ণাটি লোক চক্ষুর অন্তরালেই ছিলো। মনোহর সৌন্দর্য আর ভাব গাম্ভীর্যের এই ঝর্ণাটি মূলত একটি তীর্থস্থান। ২০০০ খ্রিস্টাব্দে কথা, এর আগে গহীন অরণ্যে এই ঝর্ণাটি সম্পর্কে কারো ধারণা ছিলো না। স্থানীয় এক বৌদ্ধ ভান্তে গভীর অরণ্যে গিয়ে এই ঝর্নার নিচে বসে ধ্যান শুরু করেন এবং টানা তিন মাস তিনি এখানে ধ্যান করেন। নিরিবিলি জনমানবহীন পরিবেশে ঈশ্বরের আরাধনা করাই ছিল তাঁর উদ্দেশ্য।
কিছু দিনের মাঝে কাছাকাছি এলাকার অধিবাসীরা তাঁর কথা জানতে পারেন এবং তাঁর সেবা করার উদ্দেশ্যে এখানে আসতে থাকেন। স্থানীয় লোকজন সন্ন্যাসীকে সেবা করতে গেলে ঝর্নাটি জনসম্মুখে আসে।
এই ঝর্ণার ওপরে সাধু তাঁর আশ্রমে ধ্যান করেন। স্থানীয় ভাষায় এই ধর্মযাজক সাধুকে বলা হয় ‘ভান্তে’। তিনি সপ্তাহের ছয় দিন ধ্যান করে শুধু রবিবারে খাবার খাওয়ার জন্য নিচে নেমে আসেন। এই ছয় দিনে ভান্তে কোনো চিৎকার-চেঁচামেচি পছন্দ করেন না। তাই শুধু রবিবারেই ঝর্ণাটায় লোকজনের যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হতো। তবে বর্তমানে এটি ভ্রমণ পিপাসুদের আগ্রহের স্থান হওয়ায় ঝর্ণার স্থানে অতিরিক্ত শব্দ না করার শর্তে স্থানটিতে সপ্তাহের অন্যান্য দিনও প্রবেশের অনুমতি দেয়া হয়।
সর্বশেষ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় না বললেই নয়! ধুপপানি পাড়া হতে নিচে নেমে ঝর্ণার সিঁড়িপথের শুরুতে একটি সতর্কতাবাণী লেখা রয়েছে। সতর্কতাবাণীটি হুবহু তুলে ধরা হলো,
“সম্মানীত ভ্রমণকারী, ধুপপানি ঝর্ণাটি কোনো পর্যটন কেন্দ্র নয়। এখানে বৌদ্ধ ভিক্ষু ও শ্রমণগণ ধ্যান সাধনা করেন। এ এলাকা ধুপপানি সার্বজনীন বৌদ্ধ বিহারের জন্য সংরক্ষিত এবং বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের তীর্থভূমি। তাই ধর্মীয় পবিত্রতা রক্ষা করুন এবং উচ্চস্বরে চিৎকার চেঁচামেচি হৈ-চৈ না করার জন্য বিনীতভাবে অনুরোধ রইলো।”