a
ফাইল ছবি
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করা হবে আজ। হত্যা মামলায় গ্রেফতার ২২ আসামিকে ইতোমধ্যে আদালতে নেওয়া হয়েছে। রোববার সকাল ৯ টার দিকে তাদেরকে ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।
ট্রাইব্যুনাল ১-এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলায় রায় ঘোষণা করবেন।
সংশ্লিষ্ট আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আবু আব্দুল্লাহ ভূঁঞা যুগান্তরকে বলেন, আমরা ২৫ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণে সক্ষম হয়েছি। আসামিদের সর্বোচ্চ সাজা প্রত্যাশা করছি।
অন্যদিকে আসমিপক্ষের আইনজীবীরা বলেছেন, রাষ্ট্রপক্ষ অভিযোগ প্রমাণে ব্যর্থ হয়েছে। তারা আসামিদের খালাস পাবেন বলে আশা করছেন।
২০১৯ সালের ৫ অক্টোবর বুয়েটের শেরেবাংলা হলের গেস্টরুমে আসামি কতিপয় ছাত্রলীগ নেতা সভা করে বুয়েটের ১৭তম ব্যাচের ছাত্র আবরারকে হত্যার সিদ্ধান্ত নেয়। পর দিন রাতে তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। আবরার হত্যার ঘটনায় তার বাবা মো. বরকত উল্লাহ বাদী হয়ে ২০১৯ সালের ৭ অক্টোবর রাজধানীর চকবাজার থানায় মামলা করেন।
তদন্ত শেষে গত বছরের ১৩ নভেম্বর আদালতে মামলার চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দেয় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। ২৫ জনকে অভিযুক্ত করে এ চার্জশিট দেওয়া হয়। এর মধ্যে ১১ আসামি সরাসরি হত্যাকাণ্ডে অংশ নেয়। বাকি ১৪ জনকে বিভিন্নভাবে সম্পৃক্ততার কারণে চার্জশিটে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
গত বছরের ২১ জানুয়ারি এ মামলার চার্জশিট গ্রহণ করেন আদালত। ওই বছরের ১৮ মার্চ ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কেএম ইমরুল কায়েশ মামলাটি বদলির আদেশ দেন। এর পর একই বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর ২৫ আসামির বিরুদ্ধে চার্জ (অভিযোগ) গঠনের মাধ্যমে মামলার আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হয়।
গত ১৪ মার্চ এ মামলায় কারাগারে থাকা ২২ আসামি আত্মপক্ষ সমর্থনের শুনানিতে নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন। অপর তিন আসামি পলাতক থাকায় আত্মপক্ষ শুনানি করতে পারেনি। এর পর কয়েকজন আসামি নিজেদের পক্ষে সাফাই সাক্ষ্যও দেন। ৭ সেপ্টেম্বর মামলায় কিছু ত্রুটি থাকায় রাষ্ট্রপক্ষ পুনরায় চার্জ গঠনের আবেদন করে।
৮ সেপ্টেম্বর আদালত ২৫ আসামির বিরুদ্ধে পুনরায় চার্জ গঠনের আদেশ দেন। এর পর ১৪ সেপ্টেম্বর আত্মপক্ষ শুনানিতে ২২ আসামি ফের নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন। এর পর আসামিপক্ষ ও রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে মামলাটি রায়ের পর্যায়ে পৌঁছায়।
মামলার চার্জশিটে বলা হয়, আসামিরা যোগসাজশে শিবির সন্দেহে আবরারের বিরুদ্ধে মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন অভিযোগ এনে নির্মমভাবে পিটিয়ে তাকে হত্যা করেন। চার্জশিটে আবরার ফাহাদ রাব্বী হত্যা মামলায় আবরারের রুমমেট মিজানুর রহমান ওরফে মিজানকে হত্যার মূল হোতা হিসাবে চিহ্নিত করা হয়। তিনিই আবরারকে শিবির বলে সন্দেহ প্রকাশ করেন।
এর পর শেরেবাংলা হলের গেস্টরুমে কয়েকজন আসামি সভা করে এ হত্যার সিদ্ধান্ত নেন। পরে আবরারকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। চার্জশিটে অভিযুক্ত ২৫ জনের মধ্যে এজাহারভুক্ত ১৯ জন এবং তদন্তে আগত ৬ জন রয়েছেন। এ ছাড়া অভিযুক্তদের মধ্যে আটজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
২৫ আসামির মধ্যে বুয়েট শিক্ষার্থী মোর্শেদুজ্জামান জিসান, এহতেশামুল রাব্বি তানিম ও মোস্তবা রাফিদ পলাতক। বাকি ২২ জন কারাগারে আছেন। সূত্র: যুগান্তর
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
করোনাভাইরাসের কারণে চলমান লকডাউনে ক্ষতিগ্রস্ত দরিদ্র, দুঃস্থ, ভাসমান এবং অসচ্ছল মানুষকে সহায়তার লক্ষ্যে জেলা প্রশাসকগণের অনুকূলে ১০ কোটি ৫০ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
উল্লেখ্য, করোনার প্রথম ঢেউয়ে ২০২০ সালের মার্চ থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত এবং পরবর্তীতে ২০২১ সালের জানুয়ারী হতে আজ অবধি লকডাউনে সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত ও দরিদ্র, দুঃস্থ, ভাসমান এবং অসচ্ছল মানুষের মাঝে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া বরাদ্দ ১০ কোটি ৫০ লাখ টাকা বিতরণ করা হবে প্রতিটি জেলার জেলা কর্মকর্তাদের মধ্যমে।
ছবি: মুক্তসংবাদ প্রতিদিন
নৈসর্গিক সৌন্দর্যের অপার লীলাভূমি রাঙ্গামাটি। চারিদিকে পাহাড় আর ঝর্ণা। যেদিকে দু’চোখ যায় অপরূপ সৌন্দর্যে মন ভরে যায়। রাঙামাটির বিলাইছড়ির ধুপপানি ঝর্ণা এই মুহূর্তে বাংলাদেশের সবচেয়ে সুন্দর ঝর্ণাগুলোর মধ্যে একটি।
সুবিশাল উচ্চতা, শুভ্র জলরাশির ঝর্ণা আর ঝর্ণার নিচের গুহার জন্য ট্রেকারদের কাছে এই ঝর্ণাটির আবেদন সব সময় অন্যরকম। ঝর্ণার স্বচ্ছ পানি এবং অনেক উচুঁ থেকে আছড়ে পড়া জলরাশি আপনাকে একরকম পাগল করে দিবে, ধুপপানি ঝর্ণার নিচের গুহায় চোখ বন্ধ করে বসলে মনে হবে অন্য কোন জগতে চলে গেছেন।
অনেক উচ্চতা থেকে প্রবল বেগে যখন নেমে আসে ঝর্ণার জলরাশি তখন শুভ্র জলধারা ছাড়া আর কিছুই দৃষ্টিগোচর হয় না, তাই রঙ বুঝেই এর নাম ধুপপানি ঝর্ণা। স্থানীয়রা দুপপানি ঝর্না নামেও ডেকে থাকে। ভুপৃষ্ঠ থেকে ধুপপানির উচ্চতা ১৫০ মিটার এবং ২ কিলোমিটার দূর থেকে ঝর্ণার চঞ্চল শব্দ কানে আসে। বর্ষায় আরও দূর থেকে টের পাওয়া যায় তার অস্তিত্ব। "পরিপূর্ণ এক ট্রেকিং এটি। ভয়, ঝুঁকি, শিহরণ, উচ্ছ্বাস, চমক, সৌন্দর্য কী নেই!"
ঝর্ণার সৌন্দর্য যেমন অপরূপ, এর ট্রেকিং এর পথও এতোটা সুগম নয়। ইতোমধ্যে এই ট্রেকিং সম্পূর্ণ করে এসে এর বিবরণ দেয় "টিম ১৭"।
এই ভ্রমণের সহচরেরা ছিলো আরিফুল ইসালম ইমন, তানভীর হৃদ, অমৃত রায়, রাফি, আবির, বেজওয়ান, নিলয়, ইকরামুল, রাকিবুল, সৈয়দা তাহমিদা, সুস্মিতা সাহা মন, শাহরিয়ার সুচি, উন্মে হাবিবা, আশফিকা আইশি, গাজী শাকিবুল ইসলাম প্রমুখ।
অপরূপ সৌন্দর্যের আধার হওয়া সত্তেও ঝর্ণাটি লোক চক্ষুর অন্তরালেই ছিলো। মনোহর সৌন্দর্য আর ভাব গাম্ভীর্যের এই ঝর্ণাটি মূলত একটি তীর্থস্থান। ২০০০ খ্রিস্টাব্দে কথা, এর আগে গহীন অরণ্যে এই ঝর্ণাটি সম্পর্কে কারো ধারণা ছিলো না। স্থানীয় এক বৌদ্ধ ভান্তে গভীর অরণ্যে গিয়ে এই ঝর্নার নিচে বসে ধ্যান শুরু করেন এবং টানা তিন মাস তিনি এখানে ধ্যান করেন। নিরিবিলি জনমানবহীন পরিবেশে ঈশ্বরের আরাধনা করাই ছিল তাঁর উদ্দেশ্য।
কিছু দিনের মাঝে কাছাকাছি এলাকার অধিবাসীরা তাঁর কথা জানতে পারেন এবং তাঁর সেবা করার উদ্দেশ্যে এখানে আসতে থাকেন। স্থানীয় লোকজন সন্ন্যাসীকে সেবা করতে গেলে ঝর্নাটি জনসম্মুখে আসে।
এই ঝর্ণার ওপরে সাধু তাঁর আশ্রমে ধ্যান করেন। স্থানীয় ভাষায় এই ধর্মযাজক সাধুকে বলা হয় ‘ভান্তে’। তিনি সপ্তাহের ছয় দিন ধ্যান করে শুধু রবিবারে খাবার খাওয়ার জন্য নিচে নেমে আসেন। এই ছয় দিনে ভান্তে কোনো চিৎকার-চেঁচামেচি পছন্দ করেন না। তাই শুধু রবিবারেই ঝর্ণাটায় লোকজনের যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হতো। তবে বর্তমানে এটি ভ্রমণ পিপাসুদের আগ্রহের স্থান হওয়ায় ঝর্ণার স্থানে অতিরিক্ত শব্দ না করার শর্তে স্থানটিতে সপ্তাহের অন্যান্য দিনও প্রবেশের অনুমতি দেয়া হয়।
সর্বশেষ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় না বললেই নয়! ধুপপানি পাড়া হতে নিচে নেমে ঝর্ণার সিঁড়িপথের শুরুতে একটি সতর্কতাবাণী লেখা রয়েছে। সতর্কতাবাণীটি হুবহু তুলে ধরা হলো,
“সম্মানীত ভ্রমণকারী, ধুপপানি ঝর্ণাটি কোনো পর্যটন কেন্দ্র নয়। এখানে বৌদ্ধ ভিক্ষু ও শ্রমণগণ ধ্যান সাধনা করেন। এ এলাকা ধুপপানি সার্বজনীন বৌদ্ধ বিহারের জন্য সংরক্ষিত এবং বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের তীর্থভূমি। তাই ধর্মীয় পবিত্রতা রক্ষা করুন এবং উচ্চস্বরে চিৎকার চেঁচামেচি হৈ-চৈ না করার জন্য বিনীতভাবে অনুরোধ রইলো।”