a
ফাইল ছবি
কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে একটি মাদ্রাসায় রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৭জনে দাঁড়িয়েছে। এদের মধ্যে ঘটনাস্থলে চারজন এবং হাসপাতালে নেয়ার পর আরও ৩ জন মারা যায়।
শুক্রবার (২২ অক্টোবর) ভোর সোয়া ৪টার দিকে উখিয়ার এফডিএমএন ক্যাম্প-১৮ এইচ-৫২ ব্লকে অবস্থিত ‘দারুল উলুম নাদওয়াতুল ওলামা আল-ইসলামিয়াহ’ মাদ্রাসায় এ ঘটনা ঘটে।
ক্যাম্পে কর্মরত ৮ এপিবিএন উপ-অধিনায়ক কামরান হোসাইন এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, প্রথমে দুই গ্রুপের গোলাগুলি ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে বলে মনে করা হলেও নিহত ও আহতদের অবস্থা দেখে এটি দুষ্কৃতিকারীদের হামলা বলে ধারনা করা হচ্ছে।
নিহত রোহিঙ্গারা হলেন, এফডিএমএন ক্যাম্প-১৮ এইচ-৫২ ব্লকে অবস্থিত ‘দারুল উলুম নাদওয়াতুল ওলামা আল-ইসলামিয়াহ’ মাদ্রাসার শিক্ষক ক্যাম্প-১২, ব্লক-জে ৫ এর বাসিন্দা হাফেজ মো. ইদ্রীস (৩২), ক্যাম্প-৯’র ব্লক-২৯এর মৃত মুফতি হাবিবুল্লাহর ছেলে ইব্রাহীম হোসেন (২৪), ক্যাম্প-১৮, ব্লক-এইস-৫২’র ভলান্টিয়ার শিক্ষার্থী আজিজুল হক (২২), মো. আমীন (৩২) ঘটনাস্থলে মারা যান। আর হাসপাতালে মারা যাওয়ারা হলেন, এফডিএমএন ক্যাম্প-১৮, ব্লক-এফ-২২
নিহতরা হলেন, মাদ্রাসার শিক্ষক নুর আলম ওরফে হালিম (৪৫) এফডিএমএন ক্যাম্প-২৪’র মাদ্রাসার শিক্ষক হামিদুল্লাহ (৫৫) ও ক্যাম্প-১৮, ব্লক- এইস ৫২’র মাদ্রাসার ছাত্র নুর কায়সার (১৫)।
৮ এবিপিএন এর উপ-অধিনায়ক (অতিরিক্ত পুলিশ সুপার) কামরান হোসাইন জানান, শুক্রবার ভোররাত আনুমানিক সোয়া ৪ টার দিকে এফডিএমএন ক্যাম্প-১৮ এইচ-৫২ ব্লকে অবস্থিত ‘দারুল উলুম নাদওয়াতুল ওলামা আল-ইসলামিয়াহ’ মাদ্রাসায় রোহিঙ্গা দুষ্কৃতিকারীরা অতর্কিত হামলা চালায়।
উক্ত হামলায় মাদ্রাসায় অবস্থানরত ৪ জন এফডিএমএন সদস্য তৎক্ষনাত মারা যায়। ঘটনা জানতে পেরে ময়নারঘোনা পুলিশ ক্যাম্প-১২ এর পুলিশ সদস্যরা তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে গিয়ে আহতদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে প্রেরণ করে। হাসপাতালে নেয়ার পর আরও ৩ জন মারা যায়। এ সময় পুলিশ মুজিব নামে হামলাকারীদের একজনকে অস্ত্রসহ আটক করে।
উখিয়ার ১৮নং ক্যাম্পে কর্মরত ৮ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (৮ এবিপিএন) অধিনায়ক শিহাব কায়সার খান বলেন, কী কারণে এ ঘটনা তা এখনো জানতে পারেনি, তবে ক্যাম্পের পরিস্থিতি সার্বিকভাবে এখন স্বাভাবিক আছে।
গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘অপরাধ করেননি, আত্মবিশ্বাস থাকলে ড. ইউনূস আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিবৃতি ভিক্ষা করে বেড়াতেন না। চলমান মামলার বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে পারি না। বিদেশিরা ড. ইউনূসের পক্ষে এত এত বিবৃতি না দিয়ে আইনজীবী ও বিশেষজ্ঞ পাঠান।’
আজ মঙ্গলবার গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রীর দক্ষিণ আফ্রিকা সফর নিয়ে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। শুরুতে প্রধানমন্ত্রী লিখিত বক্তব্য পড়েন। এরপর শুরু হয় প্রশ্নোত্তর পর্ব।
এই পর্বে এটিএন নিউজের সাংবাদিক আরাফাত সিদ্দিকী প্রশ্ন করেন, নোবেলজয়ীসহ ১৬০ জন বিশিষ্ট নাগরিক ড. ইউনূসের বিচার স্থগিত করার আহ্বান জানিয়ে চিঠি দিয়েছেন। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হচ্ছে কি না, সেটি তাঁরা নজরে রাখবেন। তাঁরা বিগত নির্বাচন নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। সরকারপ্রধান হিসেবে ড. ইউনূসের বিচার স্থগিত করার এখতিয়ার আপনার আছে কি না বা এই বিষয়ে কোনো উদ্যোগ নেবেন কি না। এই চিঠির বিষয়টি আপনি আমলে নিচ্ছেন কি না।
জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘ভদ্রলোকের যদি এতই আত্মবিশ্বাস থাকত যে তিনি অপরাধ করেননি, তাহলে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিবৃতি ভিক্ষা করে বেড়াতেন না। আমাদের দেশের বিচার ব্যবস্থা সম্পূর্ণ স্বাধীন। সবকিছু আইনমতো চলে। কেউ যদি ট্যাক্স না দেয় আর শ্রমিকের অর্থ আত্মসাৎ করে, শ্রমিকের পক্ষ থেকে লেবার আদালতে মামলা হয়। আমাদের কী এমন হাত আছে যে একটা মামলা বন্ধ করে দেব? একটা চলমান মামলা প্রত্যাহার করার আমি কে? আমার তো অধিকার নেই। আমি তো হস্তক্ষেপ করতে পারি না। আমাদের সাফ কথা, দেশের আইন-আদালত, লেবার আদালত আছে। ল উইল টেক ইটস ওন কোর্স।’
ড. ইউনূসের পক্ষে বিবৃতিদাতাদের বিশেষজ্ঞ পাঠানোর আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘একজনের জন্য এত এত বিবৃতি না দিয়ে এক্সপার্ট পাঠাক। এত দরদ থাকলে আইনজীবী ও বিশেষজ্ঞ পাঠাক। যার বিরুদ্ধে মামলা, তার সব দলিল-দস্তাবেজ তারা খতিয়ে দেখুক। সেখানে কোনো অন্যায় আছে কি, তারা নিজেরাই দেখুক। তাদের এসে দেখা দরকার, কী কী অসামঞ্জস্য আছে।’
ড. ইউনূসের মামলার প্রসঙ্গ তুলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘শ্রমিক অধিকার নিয়ে অনেক কথা শুনতে হয়। আমাদের বিরুদ্ধে আইএলওতে নালিশ আর নালিশ। কিন্তু দেশে কোম্পানি আইনে আছে, প্রফিটের ৫ শতাংশ লেবার ওয়েলফেয়ারে দিতে হবে। সেটা না দেওয়ায় লেবাররা মামলা করায় তাদের স্যাক (চাকরিচ্যুত) করা হয়। স্যাক করায় আবার তারা মামলা করে। সেটা দেখার দায়িত্ব আমাদের না। এই মামলা যাতে না হয়, সেটার জন্য ঘুষ দেওয়া। ঘুষের টাকা ব্যাংকে ফ্রিজ করা। মামলা তো আমরা করিনি।’
ড. ইউনূসকে ট্যাক্সের টাকা ফেরত দিতে হবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘ট্যাক্স ফাঁকিতে কেউ ধরা পড়লে তাঁকে তো ট্যাক্স ফেরত দিতে হবে। কিছু ফেরত দিচ্ছেনও।
বিশ্বব্যাপী মুদ্রাস্ফীতি, অর্থনৈতিক চাপ যেখানে সরকারের পাওনা, সেখান থেকে তো আদায় করতে হবেই। আমেরিকা, ইউরোপে ট্যাক্স ফাঁকি দিলে কি ছাড় দেয় তাদের সরকার? ফিলিপাইনের নোবেল বিজয়ীর বিরুদ্ধে ট্যাক্স ফাঁকির মামলা চলছে। বহু নোবেল বিজয়ী আছেন, যাঁরা কারাগারে বন্দীও আছেন।’
বিদেশে ড. ইউনূসের বিনিয়োগ করা অর্থের উৎস প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘সরকারি বেতন তুলতেন গ্রামীণ ব্যাংকের এমডি। সরকারি বেতনভুক্ত একজন এমডি বিদেশে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার ইনভেস্ট করেন ও ব্যবসা করেন। যাঁরা বিবৃতি দিলেন, তাঁরা কি এ বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছেন? একটি ব্যাংকে চাকরি করে এত টাকা বিদেশে বিনিয়োগ কীভাবে করলেন। কীভাবে উপার্জন করলেন। রাজনীতিবিদ কেউ করলে তো লিখতে লিখতে কলম শেষ হয়ে যেত। দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান চালাতে বলেন। দুর্নীতিবাজ ধরা পড়লে পছন্দের হলে তার কোনো দোষ নাই।’
প্রশ্নোত্তর পর্বে একাত্তর টিভির সাংবাদিক ফারজানা রূপা প্রশ্ন করেন, নোবেলজয়ী ১৬০ জন বিশিষ্ট নাগরিকের চিঠিতে শ্রমিকেরা উদ্বিগ্ন। আদালত কোনোভাবে প্রভাবিত হবেন কি না। যুক্তরাষ্ট্র স্যাংশন দেয়, ভিসা বন্ধ করে দিতে পারে। ক্ষতিপূরণ পেতে শুরু করেছে। আদালত স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারবেন কি না, সেটি নিয়ে উদ্বেগ আছে।
জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আদালত স্বাধীনভাবে কাজ করবেন। কে বিবৃতি দিল না দিল, সেটা আদালতের দেখার দরকার কী? আদালত প্রভাবিত হবেন কেন? আদালত ন্যায়বিচার করবেন। আদালত ভয় পেলে চলবে না।
আওয়ামী লীগ সব সময় শ্রমিকদের স্বার্থ দেখেছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বড় বড় কথা বলবে আর মাঝখান থেকে শ্রমিকের টাকা আত্মসাৎ করবে। চমৎকার বাংলাদেশের লোক। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও একেবারে লাফ দিয়ে পড়ল। প্রতিদিন আমাদের লেবার নিয়ে প্রশ্নের পর প্রশ্ন করে জর্জরিত করে দেয়। শ্রমিকদের যেটা পাওনা, সেটা দিতে হবে। অল্প কিছু দিয়ে বাকিটা ঘুষ দিয়ে বন্ধ করা, এটা কি ন্যায়বিচারের কথা? এটা সততার কাজ?’
তাদের নীতিকথা কোথায় ছিল?
দেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘যখন মিলিটারি ডিকটেটররা নির্বাচন করত, তখন এই সুর কোথায় ছিল? আমাদের দেশের আতেলরা যারা এখন স্টেটমেন্ট দেয়, তখন তারা কোথায় ছিল। জিয়াউর রহমান ভোট চুরি শুরু করল, এরশাদ করল, খালেদা জিয়া করল। তখন তাদের নীতিকথা কোথায় ছিল। আমরা স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স, ছবিসহ জাতীয় পরিচয়পত্র, নির্বাচন কমিশনকে সম্পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়া—এই দেশকে, নির্বাচনকে স্বচ্ছ করতে আন্দোলন, সংগ্রাম, রক্ত দেওয়া আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরাই করেছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ভোট চুরির মাধ্যমে যাদের উত্থান, তাদের কাছ থেকে এখন ভোটের স্বচ্ছতার দাবি শুনতে হচ্ছে। যাদের আমলে একটা কথা ছিল, “১০টা হুন্ডা, ২০টা গুন্ডা, নির্বাচন ঠান্ডা”। যতই ভালো করি, আরও ভালো চাই, আরও ভালো চাই, এই তো। বেশি ভালো চেয়ে যখন কপাল পুড়বে, তখন বুঝবে কেমন লাগে।’ সূত্র: প্রথম আলো
ফাইল ফটো:
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তথা স্কুল-কলেজের ছুটি ফের বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে সরকার। কারণ করোনা ভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতি দিন দিন অবনতি হচ্ছে। আগামী এক-দুই দিনের মধ্যে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।
সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে গত বছরের ৮ মার্চ দেশে করোনা সংক্রমণের পর ১৮ মার্চ থেকে। এ সময়ে অনলাইনে এবং সংসদ টিভিতে শ্রেণি কার্যক্রম চালু রেখেছে সরকার।
তবে করোনা সংক্রমণ কমে আসায় আগামী ৩০ মার্চ স্কুল-কলেজ এবং ২৪ মে বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। স্কুল-কলেজ খোলা নিয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের একটি নির্দেশনার আলোকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর অধীন প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রস্তুতিরও নির্দেশ দিয়েছে।
অপরদিকে, চাঁদ দেখার ওপর নির্ভর করে পবিত্র শবে বরাতের ছুটি ২৯ মার্চের পরিবর্তে ৩০ মার্চ নির্ধারণ করেছে সরকার। এছাড়া করোনা রোগী শনাক্তের হার তিন হাজার ছাড়িয়েছে মঙ্গলবার (২৩ মার্চ)।
এ পরিস্থিতিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলছে কিনা- প্রশ্নে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন বুধবার (২৪ মার্চ) সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, এ বিষয়ে দুই-এক দিনের মধ্যে সিদ্ধান্ত জানানো হবে। আমরা সববিষয় মাথায় রাখছি।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন যে, করোনারোগী বাড়ার কারণে সরকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। কারণ এ পরিস্থিতিতে বাচ্চাদের স্কুল-কলেজে পাঠানো ঠিক হবে না। ঈদের পর পর্যন্ত এ ছুটি আপাতত বাড়তে পারে।