a
ফাইল ছবি
চলছে রহমত বরকতের মাস পবিত্র মাহে রমজান। প্রত্যেক বছর পবিত্র রমজান মাসে উপলক্ষে রাজধানী পুরান ঢাকার শত বছরের ঐতিহ্যবাহী ইফতারির বাজারে বাহারি ইফতারির দোকান সাজিয়ে বসেন ব্যবসায়ীরা। ঢাকার বিভিন্ন যায়গা থেকে মানুষ আসে সেখানে ইফতার কিনতে।
কিন্তু বর্তমান করোনা পরিস্থিতি, মহামারী প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের কারণে গত বছরের ন্যায় এবছর ও সে ধরনের উৎসবমুখর ইফতারির বাজার দেখা যাচ্ছে না। কিছু পরিমান দোকান দেখা গেলেও সেখানে আর আগেরমত জৌলস পাওয়া যায় না।
এবার সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ ঠেকানোর জন্য চলমান সর্বাত্মক লকডাউনে রীতিমতো হাহাকার তৈরি হয়েছে সর্বত্ব। ইফতারির প্রসঙ্গ আসলেই চোখে ভাসবে চকবাজারের ইফতারির কথা। দোকানিদের বক্তব্য পুরান ঢাকার মানুষ অন্যদের চেয়ে ভোজন রসিক হিসেবে পরিচিত থাকলেও সরকারি বিধিনিষেধের কারণে এবার সব যায়গায় উল্টো চেহারা দেখতে হচ্ছে।
সব যায়গায় চলাচলে নিয়ন্ত্রণ থাকায় অনেকেই স্থানীয় হোটেল-রেস্তোরাঁ থেকে ইফতারি কিনে ইফতার করছেন। সরকারি নির্দেশনার ভিত্তিতে বিকাল ৩ টা পর্যন্ত হাতে গোনা কয়েকটি দোকান খোলা থাকলেও ক্রেতা না থাকায় বিক্রেতাদের মনে তেমন আনন্দ নেই। নেই তেমন হাক ডাক। করোনার কারনে বিক্রেতারা তেমন বেশি কিছু আইটেম তৈরিও করছে না ব্যবসায় ক্ষতি হওয়ার আশংকায়।
এছাড়া লকডাউন তদারকির দায়িত্বে নিয়োজিত থাকা পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সর্বত্রই টহল দিতে দেখা যাচ্ছে চকবাজারসহ পুরো এলাকায়। সীমিত পরিসরে ইফতার ও বাজারে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে ব্যাপক তৎপরভাবে কাজ করছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
ফাইল ছবি
বাংলাদেশসহ সারা পৃথিবী জুড়ে আবারো মৃত্যুর মিছিল চলছে করোনা মহামারির দ্বিতীয় ঢেউয়ে। করোনার ভয়াবহতারোধে কঠোর লকডাউন চলছে সারাদেশে। অকারণে ঘর থেকে বের হওয়া মানা। সরকারের নির্দেশনা বাস্তবায়নে শৃঙ্খলা বাহিনী মাঠে কঠোরতা দেখাচ্ছে। এরপরও কারণে-অকারণে অতি উৎসাহী মানুষ বাসা থেকে বের হচ্ছেন।
করোনাকালে স্থলে এ পরিস্থিতি হলেও সাগরে মাছদের মাঝেও যেনো কঠোর লকডাউন চলছে! লাখ টাকা খরচ করে জেলেরা সাগরে গেলেও জালে কাঙ্ক্ষিত মাছ ধরা পড়ছে না। এখানে-সেখানে সপ্তাহ খানেক জাল ফেলেও মাছের দেখা না পেয়ে খালি ট্রলার নিয়ে অনেকে তীরে ফিরছেন। এতে রমজানের কারণে বাড়তি চাহিদা থাকলেও বাজারে মাছের দেখা নেই। কোনো কোনো ট্রলারের ভাগ্যে জুটা যৎসামান্য মাছ, যা আগুন লাগা দামে বিক্রি হচ্ছে।
জেলেদের দাবি, সাগরে মাছের আকাল চলছে গত কয়েক মাস ধরে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, মাছ সংকটে বাড়তি দামে লোক হয়রানি যেমন হচ্ছে তেমনি লোকসানও তাদের গুনতে হচ্ছে। কক্সবাজার মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সাগরে যাওয়া ট্রলার গুলো বাঁকখালী নদীর তীরে ফিরছে। কিছু কিছু ট্রলারে মাছ নামলেও পরিমাণ একেবারে কম। আবার অনেকে খালি ট্রলার নিয়েই ফিরেছেন।
জেলেরা বলছেন, সাগরে মাছের আকাল চলছে। জাল ফেলেও মাছের দেখা মিলছে না। ফলে ট্রলারে খাবার শেষ হয়ে যাওয়ায় যা পেয়েছি তা নিয়ে বা খালি ঘাটে ফিরতে বাধ্য হচ্ছেন।
এফবি আল্লাহর দান ট্রলারের মাঝি ইমরান বলেন, গত বছর এই সময় সাগরে মাছ শিকারে গিয়ে ইলিশ পেয়েছিলাম ৫ হাজার। কিন্তু গত ১২ দিন সাগরে মাছ শিকার করে মাত্র ৩০০টি ইলিশ পেয়েছি। অবশেষে খাদ্য শেষ হয়ে যাওয়ায় বাধ্য হয়ে ফিশারি ঘাটে ফিরতে হয়েছে।
মো. নয়ন নামে আরেক জেলে বলেন, ট্রলার মালিক ২ লাখ টাকার রসদে ১৫ জন জেলে দিয়ে মাছ শিকারে পাঠিয়েছিলেন সাগরে। কিন্তু ১৫ দিন সাগরে জাল ফেলে আশানুরূপ মাছ ভাগ্যে জুটলো না। অল্প পরিমাণ মাছ পেয়েছিলাম, যা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে এনে বিক্রি করে টাকা পেয়েছি মাত্র ৪০ হাজার। এতে ট্রলার মালিকের লোকসান হয়েছে ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা। এখন আর ট্রলার মালিক Mb সাগরে পাঠাচ্ছেন না।
নুনিয়ারছড়া এলাকার মৎস্য ব্যবসায়ী নাঈম উদ্দিন বলেন, কক্সবাজার মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র প্রতিদিন সকাল-বিকাল সামুদ্রিক মাছে প্রায় ভরা থাকে। কিন্তু এখন অবতরণ কেন্দ্রে মাছের আকাল।
মৎস্য ব্যবসায়ী জয়নাল আবেদীন হাজারী বলেন, মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে দাম বেড়ে যায় মাছের অবতরণ কম হলে। ট্রলার গুলো যেভাবে খালি ফিরে আসছে তাতে মনে হচ্ছে সাগরে মাছের লকডাউন চলছে। যতোসামান্য যা মাছ মিলছে তা লকডাউনের কঠোরতা হয়তো না মেনে বের হয়ে জালে আটকা পড়ছে। স্থল ও জলে একই পরিস্থিতি বিরাজ করায় ভুগছে সাধারণ মানুষ আর লোকসান গুনছেন ট্রলার মালিক এবং আগাম দাদন দেয়া ব্যবসায়ীরা। আয় বন্ধ হওয়ায় শ্রমিকসহ অবতরণ কেন্দ্র কেন্দ্রীয় কর্মজীবীরা ভুগছেন।
আরেক ব্যবসায়ী শামসুল আলম বলেন, একে তো মাছের পরিমাণ কম, তার উপর কঠোর লকডাউন। সব মিলিয়ে আমরা মহাবিপদে রয়েছি।
ব্যবসায়ী সিরাজুল ইসলাম বলেন, এক কেজি ইলিশের দাম এক হাজার টাকা পড়ছে, রিটা (গুইজ্জা মাছ) বিক্রি হচ্ছে ৪‘শ টাকা, সুরমা সাড়ে ৫‘শ টাকা, চাপা ৩‘শ টাকা ও টুনা ২‘শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সব ধরণের মাছে বাড়তি দাম ৫০ থেকে ১০০-১৫০ টাকা।
মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের মার্কেটিং কর্মকর্তা মো. দেলোয়ার হোসেন জানান, সাগরে মাছের আকাল চলায় জেলেদের মাছ শিকারে অনেক ট্রলার মালিক পাঠাচ্ছেন না। ফলে রাজস্ব আদায় কম হচ্ছে। গত বছর কক্সবাজার মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে ফেব্রুয়ারি, মার্চ ও ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত প্রায় ২ হাজার ৭০০ মেট্রিক টন সামুদ্রিক মাছ অবতরণ হয়েছিল। সে হিসাবে গত বছরের এ সময়ে প্রায় সাড়ে ২৪ লাখ টাকা সরকারি রাজস্ব আয় হয়েছে।
কিন্তু এ বছর একই সময়ে গত রবিবার (১৮ এপ্রিল) পর্যন্ত ১ হাজার ৬০১ মেট্রিক টন মাছ অবতরণ হয়েছে। আর রাজস্ব সাড়ে ১৪ লাখ টাকা আয় হয়েছে। এতে ঘাটতি পড়েছে রাজস্ব আয়ে।
ছবি: মুক্তসংবাদ প্রতিদিন
মো: সিয়াম, ঢাকা: গত ২০ বছরে ছাত্র রাজনীতির ভালো কোন উদাহরণ গড়ে ওঠেনি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এনি।
মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি মিলনায়তনে ছাত্রদলের উদ্যোগে আয়োজিত কোরআন তেলাওয়াত প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে বক্তব্য প্রদানকালে তিনি একথা বলেন
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি বলেন, আজকে যে ছেলের বয়স ২০ বছর সে মনে করে ছাত্রলীগের সহিংস রাজনীতিই মনে হয় ছাত্ররাজনীতী। গত ২০ বছরে যা হয়েছে তার ফলে এমন ধারনা গড়ে উঠেছে। গত ২০ বছরে ছাত্ররাজনীতীর ভালো কোনো উদাহরণ গড়ে উঠেনি। এসবের বিরুদ্ধে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল বারবার প্রতিবাদ করেও টিকে থাকতে পারেনি৷ ৫ আগস্টের পর জাতীয় ও ছাত্র রাজনীতিতে একটা গুনগত পরিবর্তন এসেছে। যার ধারাবাহিকতায় আজকের এই কুরআন তিলাওয়াত প্রতিযোগীতা৷
সাবেক এমপি আমানুল্লাহ আমান বলেন, আজকে মেধার বিকাশ হচ্ছে মেধার প্রতিযোগীতা হচ্ছে এটি শুরু হয়েছে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার হাত ধরে। সেসময় বোর্ডে যারা প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় হতো তাদেরকে তিনি বিদেশ সফরে সাথে করে নিয়ে যেতেন। দীর্ঘ ১৬ বছর সংগ্রাম করে দেশনেতা তারেক রহমান ফ্যাসিবাদ হটিয়েছেন৷ তার নির্দেশে আন্দোলনে মানুষ নেমে পড়ে রাস্তায়। সালাহউদ্দিন টুকু নাসির উদ্দীন নাসির, রাকিব, তারা সারাদেশে আন্দোলনের আগুন জ্বালিয়েছে৷ আজকে বাংলাদেশের মানুষ প্রস্তুত। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার হয়েছে, অনেক সংস্কার হচ্ছে অথচ কদিন আগেও বেগম খালেদা জিয়াকে তারা বিনা চিকিৎসায় হত্যা করতে চেয়েছে। কিন্তু আল্লাহর পরিকল্পনা উত্তম। আজকে হাসিনা পালিয়েছে বেগম জিয়া লন্ডনে চিকিৎসা নিচ্ছেন। ইন শা আল্লাহ তিনি শীঘ্রই আমাদের মাঝে ফিরে আসবেন।
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মামুনুল হক বলেন, বিএনপি'র ঐতিহাসিক রাজনৈতিক ধারাবাহিকতা বুঝতে হলে আমাদেরকে ফিরে যেতে হবে ব্রিটিশ ভারতে, যখন দুটি ধারা বিদ্যমান ছিল। একটি ধারা পূর্ববঙ্গ কে কেন্দ্র করে মুসলমানদের উত্থানকে সহ্য করতে পারেনি তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরোধিতা করেছে ঢাকা কেন্দ্রিক বুদ্ধিজীবিতা এবং মুসলিম নেতৃত্বের বিরোধিতা করেছে। আরেকটি ধারা এর বিপরীত। যারা বাংলাদেশ ভিত্তিক রাজনীতি তখন থেকে শুরু করেছে। পূর্ববঙ্গ কে ধারণ করে রাজনীতি শুরু করেছে যা পর্যায়ক্রমে মুসলিম জাতীয়তাবাদ এবং তারপরে আজকের বিএনপিতে এসে রূপান্তরিত হয়েছে। এটা বিএনপির নেতাদেরকে যেমন বুঝতে হবে তেমনি বিএনপির কর্মী এবং আমজনতা কে বুঝতে হবে।
প্রসঙ্গত, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের উদ্যোগে নিয়মিত শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহনে কুরআন তিলাওয়াত প্রতিযোগিতা আয়োজিত হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের হাকিম চত্বরে ঢাবি ছাত্রদল নেতা তানভীর বারী হামিমের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় "KAMOL MEDI AID, DU presents ১ম আল কুরআন তিলাওয়াত প্রতিযোগিতা-২০২৫" শীর্ষক ব্যানারে প্রতিযোগিতায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৫১ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহন করেন।