a বাংলা মদ ছিটিয়ে পবিত্র করা হলো নববধূর শরীর
ঢাকা বুধবার, ২৯ আশ্বিন ১৪৩২, ১৫ অক্টোবর, ২০২৫
https://www.msprotidin.com website logo

বাংলা মদ ছিটিয়ে পবিত্র করা হলো নববধূর শরীর



শনিবার, ০৩ এপ্রিল, ২০২১, ১১:০১
বাংলা মদ ছিটিয়ে পবিত্র করা হলো নববধূর শরীর!

ডোমের ছেলে হয়ে বাশফোঁড় সম্প্রদায়ের মেয়েকে বিয়ে করায় ডোম সমাজের সমাজপতিদের নানা হেনস্তার শিকার হচ্ছেন হৃদয়-রিতা দম্পতি। পবিত্রতার কথা বলে প্রকাশ্যে নববধূর শরীরে ছেটানো হয়েছে বাংলা মদ। একঘরে করে দেয়ার ভয় দেখিয়ে তাদের ওপর চালানো হচ্ছে মানসিক নির্যাতন। বিচার বসিয়ে করা হয়েছে জরিমানাও।

এখানেই শেষ নয়, ২০ দিনের মধ্যে সারাদেশের ডোম সমাজের লোকজনকে দাওয়াত করে খাওয়ানোরও নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতিরা।

ঘটনাটি ঘটেছে চুয়াডাঙ্গার স্টেশন সংলগ্ন মাছের আড়তপট্টি এলাকায়। গত ২৩ মার্চ রাত আনুমানিক ৯টার দিকে বিচার বসিয়ে এ নির্দেশ দেন ডোম সমাজের সমাজপতিরা।

এদিকে বিচারের নামে অপমান হেনস্তা ও মানসিক নির্যাতন বন্ধ এবং নির্যাতিত পরিবারের নিরাপত্তার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ জয়ভীম ছাত্র-যুব ফেডারেশন। এ দাবিতে শুক্রবার চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার বরাবর আবেদন করেন ফেডারেশনের নেতৃবৃন্দ।

আবেদনপত্রে বলা হয়েছে  যে, চুয়াডাঙ্গার সাতগাড়ি এলাকার স্বর্গীয় বিরু ডোমের ছেলে হৃদয় ডোম মাস দুয়েক আগে বড়বাজার মাথাভাঙ্গা ব্রিজ এলাকার কালীচরণের মেয়ে রিতা বাশফোঁড়কে বিয়ে করেন। ডোমের ছেলে হয়ে বাশফোঁড় সমাজের মেয়ে বিয়ে করায় ডোম সমাজের জাত গেছে বলে অভিযোগ তুলে বিচারের আয়োজন করে সমাজিপতিরা। হৃদয় ডোমের পরিবারকে একঘরে করে দেয়ার ভয় দেখিয়ে গত ২৩ মার্চ বিচার বসান রতন, দুখু, চলুয়া, ভুটকা, বাদল হিরু ডোমসহ ডোম সমাজের সমাজপতিরা। বিচারে নববধূ রিতাকে বাশফোঁড় সম্প্রদায় থেকে ডোম সমাজে রূপান্তরিত করে পবিত্র করার নির্দেশ দেয়া হয়। নির্দেশ মোতাবেক ৫০-৬০ পুরুষের সামনে নববধূ রিতা বাশফোঁড়ের শরীরে বাংলা মদ ছিটিয়ে দেন তারা।

শুধু তাই নয়, বিচারে হৃদয় ডোমের পরিবারকে নগদ ৬ হাজার টাকা জরিমানা, আগামী ২০ দিনের মধ্যে বাংলাদেশের সকল ডোম সম্প্রদায়ের লোকজনকে দাওয়াত করে খাওয়ানোর নির্দেশ এবং নববধূ রিতা বাশফোঁড় তার বাবার বাড়িতে গেলেও কোনো প্রকার খাদ্যগ্রহণ করতে পারবে না বলেও নির্দেশ দেয়া হয়।

বাংলাদেশ জয়ভীম ছাত্র-যুব ফেডারেশনের নেতৃবৃন্দসহ স্থানীয়রা জানিয়েছেন, বর্তমান যুগেও বিচারপতিদের এ ধরনের বিচার মেনে নিতে হচ্ছে। তবে যুবসমাজের অনেকেই জাতে তোলার নামে হেনস্তা করার বিষয়টির প্রতিবাদ করতে চায়। ইচ্ছা থাকলেও তারা সমাজপতিদের বিরুদ্ধে কোনো কথা বলতে পারে না। কেননা তাদের বিরুদ্ধে কথা বলতে গেলেই সেই পরিবারকে ঢেকি বা একঘরে করে রাখা হবে। ফলে সমাজপতিদের অন্যায় অত্যাচার দিন দিন বেড়েই চলেছে।

হৃদয়-রিতা দম্পতির বিয়ের ঘটনায় সমাজপতিদের অন্যায় বিচারের রায় বাতিলসহ আগামীতে বিচারের নামে যেন কোনো নারী বা কোনো পরিবারকে হেনস্তা-অপমানের শিকার না হতে হয় তাই জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার বরাবর আবেদন জানানো হয়। একইসাথে সমাজপতিদের বিচার পরিচালনা বন্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান বাংলাদেশ জয়ভীম ছাত্র-যুব ফেডারেশনের নের্তৃবৃন্দ।

এ ব্যাপারে চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জিহাদ খান ফখরুল আলম জানান, ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

মুক্তসংবাদ প্রতিদিন / কে. আলম

তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপরে, আবারও বন্যার আশঙ্কা


মুক্তসংবাদ প্রতিদিন ডেস্ক
সোমবার, ০১ আগষ্ট, ২০২২, ০৯:৫১
তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপরে, আবারও বন্যার আশঙ্কা

ফাইল ছবি

উজানের পাহাড়ি ঢাল ও টানা ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলায় তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি নিয়ন্ত্রণ করতে তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি জলকপাট খুলে দিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। এতে নদীর তীরবর্তী বাসিন্দারা বন্যার আশঙ্কা করছেন।  

গত কয়েকদিনের ভারী বৃষ্টিপাত ও ভারতের গজলডোবা ব্যারাজে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলার মধ্যে দিয়ে বয়ে যাওয়া তিস্তা নদীতে পানি বেড়েছে। শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে তিস্তা নদীর ডালিয়া পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ২৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমা ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় নদীর তীরবর্তী এলাকায় ও নিম্নাঞ্চলে পানি ঢুকতে শুরু করেছে। এতে উপজেলার নদীর তীরবর্তী বাসিন্দারা বন্যার আশঙ্কা করছেন। এছাড়া পানি নিয়ন্ত্রণ করতে তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি জলকপাট খুলে দিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের ডালিয়া পয়েন্টের নির্বাহী প্রকৌশলী আসফা-উদ-দৌল্লা বলেন, ‘প্রতিবছরের মতো এবারও তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। টানা বৃষ্টিপাত চলতে থাকলে বন্যার আশংকা আছে। তাই আমাদের পক্ষ থেকে তিস্তাপাড়ের মানুষকে সর্তক করার পাশাপাশি সব প্রকার দুর্যোগ মোকাবিলায় আমরা প্রস্তুত আছি।’ সূত্র: ইত্তেফাক

মুক্তসংবাদ প্রতিদিন / কে. আলম

আরও পড়ুন

অপারেশন বুলডোজার ও ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়ির ঐতিহাসিক ধ্বংসযজ্ঞ


কর্নেল আকরাম, কলাম লেখক, মুক্তসংবাদ প্রতিদিন
মঙ্গলবার, ১১ ফেরুয়ারী, ২০২৫, ০৯:০৭
অপারেশন বুলডোজার ও ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়ির ঐতিহাসিক ধ্বংসযজ্ঞ

ছবি সংগৃহীত

 

বুলডোজার সাধারণত ধ্বংসযজ্ঞের কাজে ব্যবহৃত হয় এবং সাম্প্রতিক সময়ে আমরা এটি ৩২ নম্বরে প্রকাশ্যে ব্যবহৃত হতে দেখেছি। হাজার হাজার মানুষ সেখানে জড়ো হয়ে ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়ির ঐতিহাসিক ধ্বংসযজ্ঞে অংশগ্রহণ করেছে। অনেকেই এই ধ্বংসযজ্ঞ উপভোগ করেছে আনন্দের সঙ্গে। এটি স্মরণ করিয়ে দেয় বেগম খালেদা জিয়াকে জোরপূর্বক তার বাসভবন থেকে উচ্ছেদ এবং তার বাড়ি ভেঙে ফেলার ঘটনাকে।  

একটি যুগ আগে, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট, এই বাড়ির সকল বাসিন্দাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছিল এক সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে। সেই সময়ে কেউ সাহস করেনি রাস্তায় নেমে এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ করতে। অনেকেই এই ঘটনাকে "আগস্ট বিপ্লবের" অংশ হিসেবে দেখেছে। তবে ইতিহাসই নির্ধারণ করবে এর প্রকৃত অবস্থান এবং মূল্যায়ন।  

তবে প্রতিটি কর্মেরই একটি প্রতিক্রিয়া থাকে—এটি শুধু সময়ের ব্যাপার। ইতিহাস বারবার নিজেকে পুনরাবৃত্ত করে। সাম্প্রতিক ঘটনাবলী দেখিয়ে দিয়েছে যে, মানুষ ৩২ নম্বর বাড়িকে ধ্বংস করতে বদ্ধপরিকর। বাড়িটি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং শেখ মুজিবের ম্যুরাল সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করা হয়েছে। ভবনের বেসমেন্টে স্কুলছাত্রীদের ইউনিফর্ম পাওয়া গেছে, যা ইঙ্গিত দেয় যে সেখানে সম্ভাব্য নির্যাতন ও হত্যার ঘটনা ঘটেছে। অনেকেই মনে করেন, ৩২ নম্বর বাড়িটি দীর্ঘদিন ধরে ষড়যন্ত্রের কেন্দ্রবিন্দু ছিল।  

শেখ হাসিনা সীমা অতিক্রম করেছেন। যখন জনগণের ক্ষোভ চরম পর্যায়ে পৌঁছেছিল, তখন তিনি তার দলের নিষিদ্ধ ছাত্রসংগঠনগুলোর প্রতি আহ্বান জানান। এতে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়ে যায়। বর্তমানে পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে, এবং এটি কোথায় গিয়ে শেষ হবে তা কেউ জানে না। কিন্তু এটা নিশ্চিত যে, ভবিষ্যতের পরিণতি বিবেচনা না করেই শেখ হাসিনা নিজেই আগুনে ঘি ঢেলেছেন।  

ভারতের আশীর্বাদ নিয়ে শেখ হাসিনা যদি আরও পদক্ষেপ নেন, তবে তার অনুসারীদের জানমাল হুমকির মুখে পড়বে। বিপ্লবের সময় এবং বিজয়ের পরও "বিপ্লববিরোধী" শক্তির বিরুদ্ধে তেমন হত্যাযজ্ঞ চালানো হয়নি। অথচ ওবায়দুল কাদের নিজেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে সরকার পরিবর্তনের পর প্রায় পাঁচ লাখ মানুষ নিহত হতে পারে।

শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক পদক্ষেপ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার একটি পরিকল্পিত প্রচেষ্টা, যা দেশকে আরও সংকটে ফেলতে পারে। জনগণ এবং শিক্ষার্থীরা যে কোনো সময় রাস্তায় নেমে বিপ্লববিরোধী শক্তির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে পারে। যারা দেশের শান্তি বিনষ্ট ও বিভ্রান্তি সৃষ্টির চেষ্টা করছে, তাদের বিরুদ্ধে মানুষ জেগে উঠছে।  

জনগণ এখনও ভুলে যায়নি কিভাবে বেগম খালেদা জিয়াকে জোরপূর্বক বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করা হয়েছিল এবং কিভাবে তার বাড়ি গুঁড়িয়ে ফেলা হয়েছিল। পরবর্তীতে সেই জায়গায় উচ্চ ভবন নির্মাণ করে কর্মকর্তাদের আবাসন ব্যবস্থা করা হয়েছে।  

এখন জনগণের দাবি, ২০২৪ সালের জুলাই বিপ্লবে শহীদ হওয়া পরিবারগুলোর জন্য ৩২ নম্বরে বহুতল ভবন নির্মাণ করা হোক। যারা অতীতে বাড়ি ধ্বংস ও নির্মাণের পরিকল্পনা করেছিল, তারা এর দায় এড়াতে পারবে না। ইতিহাসের পরিহাস—যারা একসময় অন্যের বাড়ি ধ্বংস করেছিল, আজ তাদেরই বাড়ি একই পরিণতির শিকার হয়েছে।  

আমাদের জানতে হবে, যেসব জেনারেল ব্যক্তিগত স্বার্থের জন্য বেগম খালেদা জিয়াকে উচ্ছেদ করেছিল এবং জাতীয় স্বার্থ উপেক্ষা করেছিল, তারা প্রতারক ও বিশ্বাসঘাতক। জনগণ কখনোই এই ষড়যন্ত্রকারীদের ক্ষমা করবে না।  

২০২৪ সালের জুলাই বিপ্লব এখনো শেষ হয়নি। এটি পরিপূর্ণ রূপ নিতে আরও কয়েক বছর সময় লাগতে পারে।* আজ নেওয়া প্রতিটি পদক্ষেপই বিপ্লবের অংশ হিসেবে বিবেচিত হবে। জাতিকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে যতক্ষণ না বিপ্লবের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয় এবং রাষ্ট্র কাঠামোতে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন ও সংস্কার সম্পন্ন হয়।  

কলাম লেখক: প্রফেসর ড. এস কে আকরাম আলী

 

মুক্তসংবাদ প্রতিদিন / কে. আলম
Share on Facebook

মুক্তসংবাদ প্রতিদিন এর সর্বশেষ

সর্বশেষ - সারাদেশ