a
ফাইল ছবি
অস্ট্রেলিয়াকে টানা তিন ম্যাচে হারিয়ে ঐতিহাসিক সিরিজ জয় বাংলাদেশের। ১২৭ রানের মামুলি স্কোর নিয়েও ১০ রানে জয় পেল টাইগাররা।
এই জয়ে পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে ২ ম্যাচ বাকি থাকতেই সিরিজ নিশ্চিত করল বাংলাদেশ। শুক্রবার মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করে ৯ উইকেটে ১২৭ রান করে বাংলাদেশ।
টার্গেট তাড়া করতে নেমে ৪ উইকেট হারিয়ে ১১৭ রানে গুটিয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। ১০ রানের জয়ে ইতিহাস গড়ে বাংলাদেশ। শুক্রবার মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বৃষ্টির কারণে নির্ধারিত সময়ের দেড় ঘণ্টা পর টস হয়।
টস জিতে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমেই বিপদে পড়ে যায় স্বাগতিক বাংলাদেশ। ২.১ ওভারে মাত্র ৩ রানে ফেরেন দুই ওপেনার মোহাম্মদ নাঈম শেখ ও সৌম্য সরকার।
জশ হ্যাজলউডের বলে উইকেটকিপারের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরেন মোহাম্মদ নাঈম। প্রথম দুই ম্যাচে ৩০ ও ৯ রানে আউট হওয়া নাঈম এদিন ফেরেন মাত্র ১ রানে।
নাঈম আউট হওয়ার ঠিক পরের বলেই অ্যাডাম জাম্পার বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফেরেন সৌম্য সরকার। প্রথম দুই ম্যাচে ২ ও ০ শূন্য রানে আউট হওয়া এ ওপেনার এদিন ফেরেন মাত্র ২ রানে।
ব্যাটিং বিপর্যয়ের দিনে আশা জাগিয়েও হতাশ করেন সাকিব আল হাসান। দলীয় ৪৭ রানে ১৭ বলে ২৬ রান করে ফেরেন এ অলরাউন্ডার
১৩ বলে এক চার ও এক ছক্কায় ১৯ রান করে রান আউট হয়ে সাজঘরে ফেরেন আফিফ হোসেন। ১২ ওভারে দলীয় ৭৬ রানে ফেরেন এ তরুণ ব্যাটসম্যান।
দলের বিপর্যয়ে হাল ধরতে পারেননি তরুণ ব্যাটসম্যান শামিম পাটোয়ারিও। ১৩.৪ ওভারে দলীয় ৮১ রানে পঞ্চম ব্যাটসম্যান হিসেবে ফেরেন শামিম। তার আগে ৮ বলে মাত্র ৩ রান করার সুযোগ পান তিনি।
ইনিংস শেষ হওয়ার মাত্র ২ বল আগে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরেন রিয়াদ। তিনি আউট হওয়ার পরের দুই বলে ফেরেন মোস্তাফিজুর রহমান ও মেহেদি হাসান।
অভিষেক ম্যাচে পরপর তিন বলে রিয়াদ, মোস্তাফিজ ও মেহেদিকে আউট করে হ্যাটটিক করেন অস্ট্রেলিয়ান তরুণ পেসার নাথান এলিস।
টার্গেট তাড়া করতে নেমে ১.৩ ওভারে মাত্র ৮ রানে ফেরেন অধিনায়ক ম্যাথু ওয়েড। প্রথম দুই ম্যাচে ১৩ ও ৪ রানে আউট হওয়া ম্যাথু ওয়েড এদিন ১ রানের বেশি করতে দেননি নাসুম।
এরপর ব্যাটিংয়ে নামা মিচেল মার্রশকে সঙ্গে নিয়ে ৬৩ রানের জুটি গড়ে দলকে খেলায় ফেরান বেন ম্যাকডারমট।
অবশ্য তাদের জুটিটা ৬০ রানে ভেঙে যাওয়ার কথা ছিল। ১৩তম ওভারে মোস্তাফিজের বলে ম্যাকডারমটের ক্যাচ ফেলে দেনে শরিফুল ইসলাম। ৩২ রানে নতুন লাইফ পান এ ওপেনার।
ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠা মিচেল মার্শ ও বেন ম্যাকডারমটের জুটি ভাঙেন সাকিব। দ্বিতীয় উইকেটে মার্শ-ডারমট ৭১ বলে গড়েন ৬৩ রানের জুটি। সাকিবের শিকার হওয়ার আগে ৪১ বলে দুই ছক্কায় ৩৫ রান করেন ডারমট।
সাকিব আল হাসানের পর অস্ট্রেলিয়া শিবিরে শরিফুলের জোড়া আঘাত। তার শিকার হয়ে একের পর এক সাজঘরে ফেরেন ময়েজেস হেনরিকস ও মিচেল মার্শ। হেনরিকস ২ রানে আউট হলেও ৪৭ বলে ৫১ রান করে ফেরেন মিচেল মার্শ।
জয়ের জন্য শেষ ১২ বলে অস্ট্রেলিয়ার প্রয়োজন ছিল ২৩ রান। ১৯তম ওভারে দুর্দান্ত বোলিং করেন মোস্তাফিজ। তিনি সেই ওভারে দেন মাত্র ১ রান। তার সেই ওভারেই ম্যাচ জিতে যায় বাংলাদেশ। বাকি ছিল শুধু আনুষ্ঠানিকতা।
শেষ ওভারে অসিদের দরকার ছিল ২২ রান। মেহেদি হাসানকে এক ছক্কা মেরে ১১ রান আদায় করে নিলেও ১০ রানে হেরে যায় অস্ট্রেলিয়া।
ফাইল ছবি
বিশ্বকাপে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে ইংল্যান্ডের দেওয়া ৩৬৫ রানের বিশাল টার্গেটে ব্যাট করছে বাংলাদেশ। বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতেই ৪ উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকে বাংলাদেশ। এরপর লিটন দাস ও মুশফিকুর রহিম ইনিংস মেরামতের চেষ্টা করে। তবে লিটন আউট হলে ফের চাপে পড়ে যায় বাংলাদেশ।
৩৬৫ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে দলীয় ১৪ রানে জোড়া উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ২ বলে ১ রান করে তানজিদ হাসান তামিম ও রানের খাতা খোলার আগেই সাজঘরে ফিরে যান নাজমুল হাসান শান্ত।
এরপর ক্রিজে আসা সাকিব আল হাসানকে সঙ্গে নিয়ে শুরুর ধাক্কা সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন লিটন দাস। তবে দলীয় ২৬ রানে ফের উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ৯ বলে ১ রান করে ফিরে যান সাকিব।
এই তিন ব্যাটারকেই সাজঘরে ফেরান রেস টপলি। এরপর ক্রিজেই সাজঘরে ফিরে যান মেহেদি হাসান মিরাজ। দলীয় ৪৯ রানে ৭ বলে ৮ রান করেন তিনি।
মিরাজের বিদায়ের পর ক্রিজে আসেন মুশফিক। একপ্রান্তে উইকেট হারালেও অন্যপ্রান্তে সাবলীল ব্যাটিংয়ে ৩৮ বলে অর্ধশতক পূর্ণ করেন লিটন।
মুশফিককে সঙ্গে নিয়ে ইনিংস মেরামতের চেষ্টা করেন লিটন। তবে ১২১ রানে ৬৬ বলে ৭৬ রান করে আউট হন লিটন। ২২ ওভার শেষে ৫ উইকেট হারিয়ে ১২৬ রান সংগ্রহ করেছে বাংলাদেশ। সূত্র: ইত্তেফাক
ছবি সংগৃহীত
নিউজ ডেস্ক: ঐক্য জীবনের প্রতিটি স্তরে সাফল্যের মূল চাবিকাঠি এবং এটি একটি ক্লাব থেকে শুরু করে একটি জাতিরাষ্ট্র পর্যন্ত সাফল্যের প্রধান মাধ্যম হিসেবে বিবেচিত। যে কোনো সাফল্যের জন্য ঐক্য অপরিহার্য। সম্প্রতি আমরা বাংলাদেশের ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে জনগণের ঐক্য প্রত্যক্ষ করেছি।
২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট বিপ্লব বাংলাদেশের স্বাধীনতাপ্রিয় মানুষের মধ্যে এক নতুন ঐক্যের জন্ম দিয়েছে। আমরা আবারও ১৯৭১ সালের মতো জাতীয় ঐক্য প্রত্যক্ষ করেছি এবং এটি জাতির জন্য মহান বিজয় এনেছে, যার মাধ্যমে ফ্যাসিস্ট হাসিনার পতন ঘটেছে।
ফ্যাসিস্ট শাসনের বিরুদ্ধে বিজয় অর্জন সহজ ছিল না, কিন্তু জনগণ এবং বিএনপি নেতৃত্বাধীন জাতীয়তাবাদী শক্তি ও জামায়াতে ইসলামী নেতৃত্বাধীন ইসলামী শক্তি অত্যন্ত আন্তরিক ও সংকল্পবদ্ধ হয়ে এই ফ্যাসিস্ট শাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে।
বিএনপি এবং অন্যান্য রাজনৈতিক দল কখনোই ফ্যাসিস্ট সরকারকে চ্যালেঞ্জ ছাড়া ছেড়ে দেয়নি এবং গত পনেরো বছরে তাদের অনেক নেতা-কর্মী জীবন উৎসর্গ করেছেন। জামায়াতে ইসলামীর ক্ষেত্রেও একই অবস্থা ছিল এবং তারা অমানবিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। তাদের কোনো রাজনৈতিক পরিসর দেওয়া হয়নি; বরং পুরো ফ্যাসিবাদী শাসনামলে তারা বাড়িতে বন্দী থাকতে বাধ্য হয়েছেন। বিনা কারণে কয়েকজন শীর্ষ নেতা ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলেছেন।
হেফাজতে ইসলামের অনেক নেতা-কর্মীকে ফ্যাসিস্ট সরকার হত্যা করেছে। অন্যান্য ইসলামী সংগঠনের আলেমগণও এই সময়ে অত্যন্ত কষ্ট ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।
তবে কোনো কিছুই জনগণের মনোবল ধ্বংস করতে পারেনি এবং পুরো জাতি ধৈর্যের সঙ্গে ফ্যাসিস্ট শাসনের পতনের অপেক্ষায় ছিল। আল্লাহর অশেষ রহমতে এটি সম্প্রতি ঘটেছে এবং তিনি আমাদের জন্য একটি নতুন অধ্যায় খুলে দিয়েছেন যাতে আমরা একটি নতুন বাংলাদেশ গড়তে পারি।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন অত্যন্ত সক্রিয় ছিল এবং এটি জুলাইয়ের মাঝামাঝি সময়ে গতি পায়। এরপর রাজনৈতিক দল ও সাধারণ মানুষ ছাত্রদের নেতৃত্বে আন্দোলনে যোগ দেয় এবং ৫ই আগস্ট ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন সম্ভব হয়।
আমরা জাতি হিসেবে সম্প্রতি অর্জিত জুলাই-আগস্ট বিজয়কে হারানোর সামর্থ্য রাখি না। বিএনপি, জামায়াত, ছাত্র সমাজ এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকার— সকলের উচিত এমন কিছু করা থেকে বিরত থাকা, যা ঐক্যের মাধ্যমে অর্জিত এই বিজয়কে নষ্ট করতে পারে।
২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের ঘোষণা যত দ্রুত সম্ভব দেওয়া উচিত ছিল এবং সবকিছু সেই অনুযায়ী বাস্তবায়ন করা যেত। এখনও সময় শেষ হয়ে যায়নি, এবং এখনই সময় নষ্ট না করে এটি করা উচিত।
তবে এই ঘোষণা অবশ্যই জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে হওয়া উচিত এবং জাতীয় সিদ্ধান্তে সব পক্ষের প্রতিনিধিত্ব থাকতে হবে।
সমস্ত রাজনৈতিক বিষয় এবং সংস্কারের ব্যাপারগুলো পক্ষগুলোর মধ্যে সংলাপের মাধ্যমে সমাধান করা উচিত। জাতীয় সরকার গঠন করা যেতে পারে, যা অভ্যন্তরীণ এবং বাহ্যিক যেকোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে সক্ষম হবে। কারণ, অভ্যন্তরীণ এবং বাহ্যিক শত্রুরা আমাদের ঐক্য ধ্বংস করার জন্য সক্রিয় রয়েছে। ঐক্যের মাধ্যমে অর্জিত সাফল্য আমাদের নিজেদের ভুলের কারণে যেন ভবিষ্যতে নষ্ট না হয়।
লেখক: সম্পাদক, মিলিটারি হিস্ট্রি জার্নাল এবং আইন ও ইতিহাসের অধ্যাপক।