a
ফাইল ছবি
পাকিস্তানের কাছে ধরাসায়ী ভারতীয় অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট দল। যুব এশিয়া কাপের হাইভোল্টেজ ম্যাচে রোববার মুখোমুখি হয় ভারত-পাকিস্তান।
দুবাইয়ের আইসিসি একাডেমিতে টস জিতে ভারতকে প্রথমে ব্যাটিংয়ে পাঠায় পাকিস্তান। ভারত ৯ উইকেট হারিয়ে ২৫৯ রান করে। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৬০ রান করেন আদর্শ সিং, ৬০ রান করেন অধিনায়ক উদয় সাহারান। ৫৮ রান করেন শচীন দাস। পাকিস্তানের হয়ে ১০ ওভারে ৪৬ রানে ৪ উইকেট নেন মোহাম্মদ জিসান।
টার্গেট তাড়া করতে নেমে আজান আওয়াইসের অনবদ্য সেঞ্চুরি আর সাদ বিগ ও শাহজাইব খানের জোড়া ফিফটিতে ভর করে ১৮ বল হাতে রেখেই ৮ উইকেটের দাপুটে জয় নিশ্চিত করে নেয় পাকিস্তান যুব দল।
দলের জয়ে ১৩০ বলে ১০টি বাউন্ডারির সাহায্যে ১০৫ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলেন আজান আওয়াইস। ৫১ বলে ৮টি চার আর এক ছক্কায় ৬৮ রান করেন সাদ বিগ। ৮৮ বলে ৬৩ রান করেন শাহজাইব খান। সূত্র: যুগান্তর
ফাইল ফটো: মাশরাফি বিন মুর্তজা
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) প্রেসিডেন্ট বক্স নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করে বসলেন সাবেক সফলতম ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে দেওয়া একান্ত এক সাক্ষাৎকারে মাশরাফি বলেছেন, প্রেসিডেন্ট বক্সে আসলে একজন ক্রিকেটারকে উলঙ্গ করা হয়। পুরো উলঙ্গ করা হয়। এটা উনারাও জানেন। উনারা অস্বীকার করতে পারবেন না। ওখানে আমাদের মানুষরাও থাকেন। ক্রিকেটারদের সঙ্গে সম্পৃক্ত, ভালো সম্পর্কের মানুষও থাকেন। আমরা শুনি।
‘‘প্রেসিডেন্ট বক্সে যখন বলা হয়, ‘ওই প্লেয়ার চলে না’, তখন ওই প্লেয়ার আর চলেই না। যেখানেই ভালো খেলুক আর চলে না।’’
তিনি আরও বলেন, ক্রিকেটারদের কানে না আসলে আমরা জানলাম কোত্থেকে? অন্য কেউ কথা বলছে না এখন। আমার মতো কেউ ছেড়ে আসুক, তখন সেও বলা শুরু করবে। কারণ সে জানে কোড অফ কন্ডাক্ট আর নাই। মিলিয়ে দেখবেন তখন।
বিসিবির বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলে কদিনের জন্য বাংলাদেশের ক্রিকেটকে রীতিমতো কাঁপিয়ে দিয়েছেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। এরপর যুক্ত হন মাশরাফি বিন মুর্তজা।
সর্বশেষ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকের কাছে মাশরাফি বিসিবির ভূমিকা ও পেশাদারিত্বের সঙ্কটসহ সবকিছু নিয়ে খোলামেলা কথা বলেন। তার সাক্ষাতকারটি শুক্রবার প্রকাশ করা হয়। সূত্র: যুগান্তর
ছবি: মুক্তসংবাদ প্রতিদিন
কর্নেল (অব.) আকরাম: বিজয় ও পরাজয় উভয়ই একটি জাতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ এবং তা জাতীয় ইতিহাসের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে যায়। প্রতিটি জাতির ইতিহাসে বিজয় ও পরাজয় রয়েছে, যা জাতির গঠন ও অগ্রগতিতে ভিন্ন ভূমিকা পালন করে। কিছু জাতি তাদের সাফল্যের ইতিহাসে গর্বিত, আবার কিছু জাতি দুর্ভাগ্যবশত ব্যর্থতার ইতিহাসেই বেশি সমৃদ্ধ। মানব সভ্যতার উত্থান-পতন প্রকৃতির নিয়ম, যা আমরা এড়িয়ে যেতে পারি না।
আমাদের জাতীয় উত্থান-পতনের ইতিহাস বুঝতে হলে আমাদের অতীতের পৃষ্ঠাগুলোতে ফিরে যেতে হবে। ১৭৫৭ সালের পলাশীর যুদ্ধে নবাব সিরাজউদ্দৌলার বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে থাকা সেনাবাহিনীকে মীরজাফর বিশ্বাসঘাতকতার মাধ্যমে পরাজয়ে পরিণত করে। আমাদের নিজেদের ভুলের কারণেই বিদেশি শক্তি এদেশে প্রবেশ করে এবং দুই শতাব্দী ধরে আমাদের শাসন করে। কিন্তু আমরা সেই পরাজয়ের ইতিহাসকে বদলে ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান সৃষ্টির মাধ্যমে বিজয়ে রূপান্তর করি।
১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গ এবং ঢাকাকে রাজধানী করে পূর্ববঙ্গ সৃষ্টি হওয়া ছিল বাংলা মুসলমানদের জন্য এক বিশাল বিজয়। কিন্তু এটি খুব দ্রুতই কলকাতার হিন্দু অভিজাতদের ষড়যন্ত্র ও বিচারপতি স্যার আশুতোষ মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে ১৯১১ সালে বাতিল হয়ে যায়। এতে বাঙালি মুসলমানদের সম্ভাব্য সামাজিক উত্থান রুদ্ধ হয়। পরবর্তীতে পাকিস্তানের ভিতরেও বাঙালি মুসলমানদের জাতীয়তাবাদ আবার পরাজিত হয়।
পাকিস্তান জন্মের পর থেকেই ভারত পাকিস্তানকে ভাঙার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে তথাকথিত বাঙালি জাতীয়তাবাদ নতুন করে প্রাণ পায়। পাকিস্তানের অপরিপক্ব সামরিক-রাজনৈতিক নেতৃত্ব পূর্ব পাকিস্তানের জনগণকে কঠোর অবস্থান নিতে বাধ্য করে এবং ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের দিকে ঠেলে দেয়। পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ কখনোই যুদ্ধ চায়নি, এটি তাদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয় ২৫শে মার্চ ১৯৭১।
আমরা যুদ্ধ করেছিলাম, কিন্তু বিজয় ছিনিয়ে নিয়েছিল বিদেশি শক্তি। পলাশীর ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটে ১৯৭১ সালে। আমরা বিজয় অর্জন করলেও তা পরাজয়ে রূপ নেয়। আজ চব্বিশ বছর পর আমরা বুঝতে পারছি, ১৯৭১ সালে আমরা কতটা বড় ভুল করেছি। আমরা নিজেরা যুদ্ধ করে বিজয় অর্জন করতে পারতাম, কিন্তু শত্রুর ফাঁদে পা দিয়ে চূড়ান্তভাবে হেরে গিয়েছিলাম।
১৯৭১ সালের বিজয়কে ভারত তাদের নিজের অর্জন হিসেবে দেখেছে এবং গত ৫৩ বছরে, জিয়াউর রহমানের ছয় বছরের শাসনকাল ব্যতীত, বাংলাদেশকে তারা তাদের উপনিবেশ হিসেবে ব্যবহার করেছে। ২০২৪ সালের জুলাই বিপ্লবের পর তারা আরও স্পষ্টভাবে ঘোষণা করছে যে, ১৯৭১-এর বিজয় তাদেরই।
বিএনপির ভুল এবং সেনাপ্রধান মইনউদ্দিনের বিশ্বাসঘাতকতা, যিনি ইতিহাসের দ্বিতীয় মীরজাফর, ভারতের হাতে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় বসানোর সুযোগ করে দেয়। ফলে ২০০৮ সালের নির্বাচনের মাধ্যমে আবারও বিজয় পরাজয়ে পরিণত হয়। শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদী শাসন দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে জাতিকে জিম্মি করে রেখেছিল এবং ভারত হয়ে ওঠে বাংলাদেশের প্রকৃত শাসক।
কিন্তু যখন জাতি সমস্ত আশার আলো নিভে যেতে দেখছিল, তখন ছাত্রদের নেতৃত্বে ৫ই আগস্ট ২০২৪ সালে এক বিস্ময়কর বিপ্লব ঘটে এবং আমরা দ্বিতীয় স্বাধীনতা অর্জন করি।
কিন্তু অতীতের তিক্ত অভিজ্ঞতা থেকে আমরা শিক্ষা নিতে পারিনি। আমরা ৫ই আগস্টের বিজয়ের পর একটি জাতীয় বিপ্লবী সরকার গঠন করতে ব্যর্থ হয়েছি। জুলাই বিপ্লবের অংশীদারদের মধ্যে বিভক্তি জাতিকে হতাশায় ফেলেছে। আমরা কি সঠিক পথে এগোচ্ছি, নাকি আবারও ভুল পথে পা বাড়াচ্ছি—এ প্রশ্ন এখন সাধারণ মানুষের।
আমাদের এই বিজয় কি হাজারো প্রাণ ও সীমাহীন ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে, তা কি আবার পরাজয়ে পরিণত হবে?
আমরা, বাংলাদেশিরা, আর কোনো ষড়যন্ত্র সহ্য করবো না। দলীয় স্বার্থের জন্য জাতীয় স্বার্থকে জলাঞ্জলি দিয়ে কেউ যদি বিদেশি শক্তির সহায়তা নিতে চায়, জনগণ তা প্রতিরোধ করবে। অতীতের ইতিহাস আর দেখতে চাই না। এই বিজয় চিরদিনের জন্য অটুট রাখতে হবে, আর সেই লক্ষ্যেই আমাদের প্রত্যেককে নিজ নিজ অবস্থান থেকে কাজ করতে হবে।