a
ফাইল ছবি
ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগের গত আসরেই সাকিব আল হাসানকে দলে ভিড়িয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছিল মোহামেডান। ভক্ত-সমর্থকদের এবারও অবাক করা সুখবর উপহার দিয়েছে সাদাকালো শিবির। মোহামেডান এবার দলে টেনেছে টাইগারদের টি-টোয়েন্টি ক্যাপ্টেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, নির্ভরযোগ্য উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিম ও অলরাউন্ডার সৌম্য সরকার।
গতকাল রোববার রাতে এ ত্রয়ী তারকা ক্রিকেটারের সঙ্গে চুক্তি করেছে ক্লাবটি। মোহামেডানের ডেভেলপমেন্ট কমিটির প্রধান, বাংলাদেশ পুলিশের মহা পরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদের বাসায় চুক্তি স্বাক্ষর করেন ক্রিকেটাররা। পেসার তাসকিন আহমেদের সঙ্গে এবার চুক্তি নবায়ন করেছে ক্লাবটি। সাকিবের সঙ্গে গত আসরে ক্লাবটির হয়ে খেলেন তাসকিন আহমেদ, শুভাগত হোম চৌধুরী ও আবু জায়েদ রাহি।
মোহামেডানের দল: সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, সৌম্য সরকার, মেহেদী হাসান মিরাজ, পারভেজ হোসেন ইমন, আব্দুল মজিদ, রনি তালুকদার, শুভাগত হোম, সোহরাওয়ার্দী শুভ, নাজমুল ইসলাম অপু, রুবেল মিয়া, সাগর (উইকেটরক্ষক), আবু জায়েদ চৌধুরী রাহী, হাসান মাহমুদ, তাসকিন আহমেদ, ইয়াসিন আরাফাত মিশু, শাকিল (উইকেটরক্ষক), এনামুল, সালাউদ্দিন শাকিল, আরিফুল ইসলাম ও ইমন ।
ফাইল ছবি
এশিয়া মহাদেশের বিশ্বকাপখ্যাত এশিয়া কাপ গত বছর পাকিস্তানে আয়োজিত হওয়ার কথা ছিল কিন্তু বাধ সাধে করোনাভাইরাস। ঐ সময় স্থগিত হওয়া এশিয়াকাপ চলতি বছর শ্রীলঙ্কায় আয়োজিত হবে বলে ঠিক করেছিল এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল। কিন্তু আরেকবার এশিয়া কাপের বাধা হয়ে দাড়ালো করোনা। এ বছরও হচ্ছে না এশিয়া কাপ!
সংবাদ সংস্থা এএফপি জানিয়েছে শ্রীলঙ্কার ক্রিকেট বোর্ডের প্রধান নির্বাহী অ্যাশলি ডি সিলভা সাংবাদিকদের কাছে নিশ্চিত করেছেন ‘বর্তমান অবস্থার কারণে এ বছরের জুনে টুর্নামেন্টটা আয়োজন করা সম্ভব নয়’। টুর্নামেন্টটা আবার কখন হতে পারবে তা নিয়েও আছে শঙ্কা।
এএফপি জানিয়েছে, অ্যাশলি ডি সিলভা সাংবাদিকদের বলেছেন যে এই টুর্নামেন্ট ২০২৩ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপের আগে হওয়া কখনো সম্ভাবনা নয়। প্রসঙ্গত, এ বছরের অক্টোবরে ভারতে অনুষ্ঠেয় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের কথা মাথায় রেখে এবার এশিয়া কাপও টি-টোয়েন্টি সংস্করণে হওয়ার কথা ছিল।
বর্তমানে করোনার সংক্রমণ কয়েক মাস ধরেই অনেক বেড়ে চলেছে। আজ ১৯ মে থেকে শ্রীলঙ্কা আগমনে দশ দিনের নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে দেশটির সরকার।
ছবি সংগৃহীত
বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা: একটি দেশের শান্তি ও অগ্রগতির জন্য সুস্থ রাজনীতি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একটি রাষ্ট্রের সুস্থ রাজনৈতিক সংস্কৃতি মূলত সেই দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর আন্তরিকতার উপর নির্ভর করে। তবে সুস্থ রাজনৈতিক সংস্কৃতি রাতারাতি গড়ে ওঠে না; এটি দীর্ঘমেয়াদি চর্চার মাধ্যমে ধীরে ধীরে বিকশিত হয়। নিয়মিত অনুশীলনের মাধ্যমেই পরিপূর্ণতা অর্জিত হয়। পশ্চিমা বিশ্ব, বিশেষ করে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি এবং যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘ রাজনৈতিক চর্চার মধ্য দিয়ে সুস্থ রাজনৈতিক সংস্কৃতি গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছে। কিন্তু এশিয়া ও আফ্রিকার তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলো এখনো সুস্থ রাজনৈতিক সংস্কৃতি গড়ে তুলতে ব্যর্থ, যা তাদের সমাজে শান্তি ও উন্নয়নের পথে বাধা সৃষ্টি করছে।
ভারতকে বিশ্বের সবচেয়ে বড় এবং সফল গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে বিবেচনা করা হয়, কিন্তু বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশ এখনো তাদের জনগণের জন্য একটি সুস্থ রাজনৈতিক সংস্কৃতি গড়ে তুলতে পিছিয়ে রয়েছে।
গত চুয়ান্ন বছরে বাংলাদেশ এখনো একটি সুস্থ রাজনৈতিক সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি, এবং এর পেছনের কারণগুলো গবেষণার গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলোর আন্তরিকতার অভাবকে এর প্রধান কারণ হিসেবে দেখা হয়।
স্বাধীনতার পর শেখ মুজিব সরকারের পক্ষ থেকে সুস্থ রাজনৈতিক সংস্কৃতি গড়ে তোলার আন্তরিকতা দেখা যায়নি। বরং তিনি একদলীয় শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেন, যা গণতন্ত্রপ্রেমী জনগণ এবং যুক্তরাষ্ট্রের বিরূপ প্রতিক্রিয়ার মুখে পড়ে। অবশেষে এটি ১৯৭৫ সালের মধ্য আগস্টে তাঁর পতনের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
বাংলাদেশের রাজনীতি একসময় একটি সুস্থ ধারায় যাত্রা শুরু করলেও, ১৯৮১ সালের মে মাসের শেষ দিকে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের নির্মম মৃত্যুতে তা অকালেই থেমে যায়। হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের শাসনামলে দেশে প্রথমবারের মতো ভণ্ডামির রাজনীতির সূচনা হয়। এরশাদের পতনের পর জনগণের মধ্যে আবারো সুস্থ রাজনৈতিক চর্চার প্রত্যাশা জাগে এবং ১৯৯১ সালের ডিসেম্বরের নির্বাচনের মাধ্যমে দ্বিদলীয় রাজনৈতিক ব্যবস্থার যাত্রা শুরু হয়। প্রায় ১৮ বছর পর সংসদীয় সরকার ব্যবস্থা পুনরায় চালু হয়। অনেকেই এটিকে তৎকালীন খালেদা জিয়ার সরকারের একটি বড় ভুল হিসেবে আখ্যায়িত করেন।
আওয়ামী লীগ কৌশলে বিএনপির সংসদীয় অংশগ্রহণ এড়িয়ে যায় এবং প্রথমবারের মতো সংসদে 'ওয়াকওভার' লাভ করে। বিএনপি রাজনৈতিকভাবে পরাজিত হয় এবং আওয়ামী লীগ জামায়াতকে সঙ্গে নিয়ে সংসদ বর্জন করে।
১৯৯৬ সালের ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের পর দেশের রাজনীতি নতুন মোড় নেয় এবং তৎকালীন খালেদা জিয়ার সরকার বাধ্য হয়ে নির্বাচনকালীন তিন মাসের জন্য একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার বিধান সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করে। এটি আওয়ামী লীগের দ্বিতীয় রাজনৈতিক বিজয় হিসেবে দেখা হয় এবং তারা একুশ বছর পর পুনরায় সরকার গঠন করে। ফলে দ্বিদলীয় রাজনৈতিক সংস্কৃতি কিছুটা গতি পায়।
তবে ২০০১ সালের জানুয়ারিতে জামায়াতের সহায়তায় বিএনপি আবার ক্ষমতায় আসে। কিন্তু ২০০৭ সালের জানুয়ারিতে বিএনপির মনোনীত রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে ক্ষমতা কেড়ে নিয়ে সেনাপ্রধান হিসেবে জেনারেল মইনউদ্দিনের ক্ষমতা গ্রহণ রাজনৈতিকভাবে একটি ভয়ানক সিদ্ধান্ত হিসেবে প্রমাণিত হয়। তিনি রাজনীতি থেকে নিরাপদে বিদায় নিতে আওয়ামী লীগের হাতে ক্ষমতা তুলে দেন।
এরপর আওয়ামী লীগ একটি কর্তৃত্ববাদী শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করে এবং সুপ্রিম কোর্টের সহায়তায় সংবিধান থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ধারাও বাতিল করে দেয়। বিএনপি কঠিন রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে এবং আওয়ামী লীগের কূট রাজনীতির বলি হয়ে ওঠে। ফলে দেশের রাজনীতি ক্রমেই অসুস্থ হয়ে ওঠে এবং জনগণের মধ্যে সুস্থ রাজনৈতিক সংস্কৃতি ফিরে আসবে—এই আশাও ধীরে ধীরে মুছে যেতে থাকে।
তবে ২০২৪ সালের *জুলাই বিপ্লব* দেশের রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে এক রকম যুগান্তকারী পরিবর্তন নিয়ে আসে এবং জনগণের মধ্যে ভবিষ্যৎ রাজনীতিতে এক নতুন বিপ্লবী পরিবর্তনের প্রত্যাশা জাগে। জনগণ আর ভণ্ডামিমূলক রাজনীতি দেখতে চায় না।
তবুও দেশের রাজনীতি এখনো সুস্থ রূপ নেয়নি; বরং মাঠের রাজনীতিতে দলগুলোর আচরণ ও মনোভাব আশাব্যঞ্জক প্রতিচ্ছবি তৈরি করতে পারছে না। জাতীয় কিছু গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু, যেমন: সংস্কার ও নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতপার্থক্য দেখা যাচ্ছে। সদ্য গঠিত রাজনৈতিক দল *NCP* সংস্কার এবং বিচার প্রক্রিয়া নির্বাচনপূর্ব শর্ত হিসেবে কড়াভাবে উপস্থাপন করছে।
তারপরও জনগণ এখনো আশাবাদী ও আত্মবিশ্বাসী যে, অদূর ভবিষ্যতে দেশে একটি সুস্থ রাজনৈতিক সংস্কৃতি বিকশিত হবে। এজন্য রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে প্রকৃত দেশপ্রেম জাগ্রত হওয়া জরুরি—জনগণের জন্য, দেশের জন্য।
এই জাতীয় সংকটময় মুহূর্তে যদি রাজনৈতিক দলগুলো তাদের মহৎ দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়, তবে তারা নিজেদের রাজনৈতিক অস্তিত্বের জন্য কঠিন মূল্য দিতে বাধ্য হবে এবং জনগণের সুস্থ রাজনৈতিক সংস্কৃতি দেখার শেষ আশা-ভরসাটুকুও নিঃশেষ হয়ে যাবে।