a
ফাইল ছবি
করোনায় আক্রান্ত হয়ে না ফেরার দেশে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক খন্দকার মুস্তাহিদুর রহমান (৭৪)(ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না লিল্লাজি রাজিউন)। গত শুক্রবার (২০ আগস্ট) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে রাজধানীর ইসলামী ব্যাংক সেন্ট্রাল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
অধ্যাপক খন্দকার মুস্তাহিদুর রহমানের মৃত্যুর তথ্য গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন তার মেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের অধ্যাপক তাসমিনা রহমান। অধ্যাপক তাসমিনা রহমান জানান, পারিবারিক সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে তার বাবাকে বনানী কবরস্থানে দাফন করা হবে।
গত ০৪ আগস্ট করোনা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন অধ্যাপক খন্দকার মুস্তাহিদুর রহমান। পরবর্তীকালে অবস্থার অবনতি হলে হাসপাতালের নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে (আইসিউ) স্থানান্তর করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের গুণী এ অধ্যাপক ২০০৪ সাল থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ চার বছর জাবির উপাচার্যের দায়িত্ব পালন করেন। এদিকে অধ্যাপক খন্দকার মুস্তাহিদুর রহমানের মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারে। সাবেক এই উপাচার্যের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম।
শোকবার্তায় অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম বলেন, "জাবির শিক্ষা, গবেষণা এবং সম্প্রসারণে অধ্যাপক খন্দকার মুস্তাহিদুর রহমানের অবদান স্মরণীয় হয়ে থাকবে"। এদিকে খন্দকার মুস্তাহিদুরের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশসহ বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
ছবি: মুক্তসংবাদ প্রতিদিন
সাইফুল আলম, ঢাকা: গত ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ অনুষ্ঠিত সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁস ও অনিয়মের প্রতিবাদে পরীক্ষা বাতিল এবং পুনঃপরীক্ষার দাবি জানিয়েছেন পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ।
আজ ১৯শে সেপ্টেম্বর ২০২৫ ইং জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তারা এই দাবি এবং প্রতিবাদ জানান। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মো. রিয়াজুল ইসলাম। তিনি বলেন, গত ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, শুক্রবার সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার নিয়োগের প্রাথমিক বাছাই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
উল্লেখ্য, এই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল ০৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫। কিন্তু পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উদযাপনের কারণে তারিখ পরিবর্তন করে ১২ সেপ্টেম্বর ধার্য করা হয়।
এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, ০৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ (বিএসএস সূত্রে) জানা যায় যে উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার পদে “৯০% কমন সাজেশন” দেওয়ার নামে প্রতারণার অভিযোগে মতিউর রহমান নামের একজনকে সিআইডি গ্রেপ্তার করে। সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি জাহিদুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় জড়িত চক্রের অন্যান্য সদস্যদেরও শনাক্ত ও গ্রেপ্তারের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
তবুও ১২ সেপ্টেম্বর নির্ধারিত তারিখে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু পরীক্ষা শেষে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে Zahid Khan (All Exam Helper) নামের একটি ফেসবুক পেইজ থেকে পরীক্ষার পূর্বের রাত ২টা ৬মিনিটে প্রশ্নফাঁসের প্রমাণ পাওয়া যায়, যা প্রশ্নপত্রের সঙ্গে হুবহু মিলে যায়। বিষয়টি ছড়িয়ে পড়লে, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সাইবার অ্যান্ড ক্রাইম বিভাগ এক অভিযানে স্বাধীন মিয়া নামের একজনকে গ্রেপ্তার করে।
আমরা পরীক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে নিম্নলিখিত অভিযোগ ও অনিয়মগুলো আপনাদের সামনে উপস্থাপন করছি:
অভিযোগসমূহ:
১. প্রশ্নফাঁস: পরীক্ষার পূর্বে ও চলাকালীন প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ উঠে এসেছে, যা গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। এ ঘটনায় পরীক্ষার আগে ও পরে দুইজনকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে।
২. অবিভাগীয় প্রার্থীদের অংশগ্রহণঃ
পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে। এতে বৈধ প্রার্থীদের ন্যায্য প্রতিযোগিতা ব্যাহত হয়েছে। এই পরীক্ষা কেবল বিভাগীয় প্রার্থীদের জন্য হলেও আবেদন প্রক্রিয়ার দুর্বলতার সুযোগে বহিরাগত প্রার্থীরাও
উদাহরণস্বরূপ:
কেন্দ্র সরকারি আলিয়া মাদ্রাসা, রুম নং ৩১১, রোল: ১৩৬২০
কেন্দ্র। ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ, রোল: ০০৪৭৭৪ (মহিলা)
৩. পূর্বে প্রাথমিক বিভাগে কর্মরত কিন্তু বর্তমানে অন্যত্র চাকরিরত প্রার্থীদের অংশগ্রহণ: ২৬/০৬/২০১৩ইং তারিখে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হওয়ার পর দীর্ঘদিন অতিবাহিত হওয়ায় অনেক বিভাগীয় প্রার্থী অন্য চাকরিতে চলে যায়। তাদের পূর্বে আবেদন করার সুযোগ থাকায় তারাও পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে, ফলে বিভাগীয় প্রার্থীদের বাছাই জটিল হয়ে উঠেছে।
৪. প্রশ্নপত্রে অসঙ্গতি ও দুর্বল ব্যবস্থাপনা: পিএসসি কর্তৃক নির্ধারিত সিলেবাস অনুসরণ করা হয়নি। একাধিক প্রশ্নে ভুল, অস্পষ্ট ও অগোছালো ছিল। বিশেষ করে গোলাপি রঙের প্রশ্নপত্র ছিল ঝাপসা, ফন্ট সাইজ অত্যন্ত ছোট। অধিকাংশ পরীক্ষার্থীর বয়স ৪৫ বছরের কাছাকাছি হওয়ায় এই ব্যবস্থাপনা আরও অসুবিধা সৃষ্টি করেছে।
৫. প্রশ্নফাঁস চক্রের আর্থিক প্রলোভন: পরীক্ষার্থীদের ফোনে যোগাযোগ করে ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে প্রশ্ন সরবরাহের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। আড়াই হাজার টাকা অগ্রিম এবং বাকিটা পরীক্ষার পর পরিশোধের শর্ত দেওয়া হয়েছে। এমনকি পরীক্ষার পরও কম নম্বর পাওয়া প্রার্থীদের ১২ হাজার টাকার বিনিময়ে নাম্বার বাড়িয়ে দেওয়ার অফার দেওয়া হয়েছে। লিখিত (রিটেন) পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ২০ হাজার টাকায় দেওয়ার চুক্তির কথোপকথনের স্ক্রিনশট আমাদের কাছে সংরক্ষিত আছে।
৬. প্রশ্ন কেনা ও উত্তরপত্র পূরণ সংক্রান্ত অভিযোগ: ঈশ্বরদী উপজেলার সহকারী শিক্ষক মো. আবুল কালাম আজাদ (৩৭ নং সলিমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রোল: ২০৪৭২) জানিয়েছেন, তার উপজেলায় বেশ কয়েকজন শিক্ষক প্রশ্ন কিনে ৯০-এর বেশি নম্বর নিশ্চিত করেছেন। আরেকজন পরীক্ষার্থী জানান, তার পাশের পরীক্ষার্থী প্রশ্ন পাওয়ার আগেই এডমিট কার্ডে লেখা উত্তর OMR শিটে পূরণ করে মাত্র ৩০ মিনিটে পরীক্ষা শেষ করেন। এ বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষককে জানানো হলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
এর আগে ২০১৬ সালে অনুষ্ঠিত ATEO পরীক্ষায় অনিয়মের অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও পরীক্ষা বাতিল করা হয়নি। কিন্তু ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ এর পরীক্ষায় যে অনিয়ম, প্রশ্নফাঁস ও দুর্নীতি সংঘটিত হয়েছে, তা মেধাভিত্তিক প্রতিযোগিতা, ন্যায়বিচার ও বিশ্বাসযোগ্যতাকে মারাত্মকভাবে ক্ষুন্ন করেছে। প্রকৃত যোগ্য প্রার্থীরা বঞ্চিত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
অতএব, আমরা উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার পদে পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী প্রার্থীদের পক্ষ থেকে পরীক্ষা বাতিল ও পুনঃপরীক্ষার জোর দাবি জানাচ্ছি।
১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখে অনুষ্ঠিত উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার পরীক্ষার ফলাফল অবিলম্বে বাতিল করতে হবে। নতুন প্রশ্নপত্রে একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, স্বচ্ছ এবং শান্তিপূর্ণ বিভাগীয় প্রার্থীদের জন্য পরীক্ষা দ্রুত গ্রহণ করতে হবে। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, ন্যায়বিচার, স্বচ্ছতা ও যোগ্যতার স্বার্থে মাননীয় পিএসসি চেয়ারম্যান ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।
ফাইল ছবি
সরকারি ৩৩৩ নম্বরে ফোন করে খাদ্য সহায়তা চাওয়া ফরিদ উদ্দিন আহমেদকে অবশেষে ক্ষতিপূরণ দিচ্ছেন জেলা প্রশাসন। নারায়ণগঞ্জের সদর উপজেলায় বাস করেন বৃদ্ধ ফরিদউদ্দিন আহমেদ। কিছুদিন আগে ফরিদউদ্দিন আহমেদ সরকারি হটলাইন ৩৩৩ নম্বরে কল করে খাদ্য সহায়তা চেয়েছিলেন। কিন্তু তিনি সহায়তা পাননি বরং তাকে জরিমানা হিসেবে ১০০ জনকে খাদ্য সহায়তা প্রদান করতে হয়েছিলো।
এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হলে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মো. মোস্তাইন গতকাল রবিবার সকালে জানিয়েছেন বয়োজ্যেষ্ঠ ফরিদউদ্দিনের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।
ডিসি বলেন, ফরিদউদ্দিনের পরিবারের বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। প্রথমে খবর বের হয়েছিল তিনি একজন বাড়িওয়ালা হয়েও ৩৩৩ নম্বরে ফোন করে খাদ্য সহায়তা চেয়েছেন এজন্য তাকে জরিমানা করা হয়েছিল এতে তিনি অনেকটা ক্ষতিগ্রস্ত হন। পরে বিষয়টির সত্যতা খুজে বের করে তাদের যে পরিমাণ খরচ হয়েছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে আজ সোমবারের মধ্যেই সেসব ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পরিবারের সদস্যদের মধ্যে আছে ১৬ বছর বয়সি প্রতিবন্ধী ছেলে, স্নাতক পড়ুয়া মেয়ে ও স্ত্রী। জানা যায়, তিনি এক সময় হোসিয়ারি কারখানায় কাটিং মাস্টার হিসেবে কাজ করতেন। তিনবার ব্রেনস্ট্রোক করার পর এখন কাজ করতে পারেন না। এখন মাসে মাত্র আট হাজার টাকা বেতনে সেই কারখানাতেই শ্রমিকদের দেখবালের দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমান করোনাকালীন মহামারিতে সংকটে পড়ে নিরুপায় হয়েই জাতীয় কলসেন্টারের ৩৩৩ নম্বরে কল করে খাদ্য সহায়তা চেয়েছিলেন তিনি। ওই কলই তার জীবনে কাল হয়েছিল।
সরকারি সহায়তার আশায় তিনি কল করেছিলেন ওই নম্বরে। কিন্তু সহায়তা তো পাননি, উল্টো তিনি চারতলা ভবনের মালিক এমন তথ্যের কারণে ৬৫ হাজার টাকা জরিমানা গুনতে হয়েছে তাকে। স্থানীয় লোকদের থেকে ধার করে তিনি জরিমানা পরিশোধ করেছিলেন বলে জানান তিনি।
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরিফা জহুরার নির্দেশে তাকে ১০০ জনের মধ্যে চাল, আলু, ডাল, লবণ ইত্যাদি খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করতে হয়েছিলো।