a
সংগৃহীত ছবি
ঢাকা শিক্ষা বোর্ড জানিয়েছে চলমান করোনা পরিস্থিতিতে সব কেন্দ্রে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ২০২১ সালের এসএসসি পরীক্ষা নেয়া হবে। ইতোমধ্যে পরীক্ষা নেয়ার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। এজন্য পরীক্ষার নতুন কেন্দ্র স্থাপন ও কেন্দ্র পরিবর্তনের আবেদন গ্রহণ শুরু করেছে ঢাকা বোর্ড।
বোর্ড থেকে এসএসসি পরীক্ষার নতুন কেন্দ্র স্থাপন ও কেন্দ্র পরিবর্তনের আবেদন আহ্বান করে জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে সোমবার (৭ জুন) বোর্ড বলেছে, ২০২১ সালের এসএসসি পরীক্ষার জন্য তালিকাভুক্ত সব কেন্দ্রকে কোভিড স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরীক্ষা নিতে হবে।
এদিকে কয়েকমাস আগে এসএসসি পরীক্ষার সংক্ষিপ্ত সিলেবাস প্রকাশ করা হয়েছে। সিলেবাস প্রকাশের পর শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছিলেন, ‘পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পর ৮৪দিন ক্লাস করিয়ে পরীক্ষা নেয়া হবে।’
এ পরিস্থিতি গত ১ জুন থেকে এসএসসি’র নতুন কেন্দ্র স্থাপন ও কেন্দ্র পরিবর্তনের আবেদন গ্রহণ শুরু করেছে ঢাকা বোর্ড। আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত নতুন কেন্দ্র স্থাপন ও কেন্দ্র পরিবর্তনের আবেদন গ্রহণ চলবে। নন-এমপিও কোনো প্রতিষ্ঠান বা ভাড়া করা ভবনে পরিচালিত প্রতিষ্ঠানগুলোকে নতুন কেন্দ্রের আবেদন না করতে বলেছে বোর্ড।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয় যে, ২০২১ সালের এসএসসি পরীক্ষার জন্য নতুন কেন্দ্র স্থাপন এবং কেন্দ্র পরিবর্তনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ আগামী ৩০ জুনের মধ্যে বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বরাবর আবেদন করতে হবে। এ আবেদন প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব প্যাডে করতে হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, নতুন কেন্দ্রের জন্য আবেদন বাবদ ৩ হাজার টাকা (অফেরতযোগ্য) এবং কেন্দ্র পরিবর্তনের ক্ষেত্রে ১ হাজার টাকা (অফেরতযোগ্য) ফি সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে জমা দিতে হবে। ফি জমা দেয়ার স্লিপ আদেনপত্রের সঙ্গে জমা দিতে হবে।
জানা গেছে যে, ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইটে নতুন কেন্দ্র অথবা কেন্দ্র পরিবর্তনের নির্ধারিত ছক ডাউনলোড করে পূরণকৃত ছক আবেদনপত্রের সঙ্গে জমা দিতে হবে। প্রস্তাবিত কেন্দ্রটি বোর্ডের অনুমোদন পেলে পার্শ্ববর্তী যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এই কেন্দ্রে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে ইচ্ছুক, সেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানদের নিজস্ব প্যাডে সম্ভাব্য পরীক্ষার্থীদের সংখ্যা উল্লেখ করে সুস্পষ্ট ঘোষণাসহ সম্মতিপত্রের মূলকপি আবেদনপত্রের সঙ্গে যুক্ত করতে হবে।
ফাইল ছবি
সুইসাইড নোটে ‘বাবা-মা ক্ষমা করো, গুড বাই’ লিখে গলায় ফাঁস দিয়ে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পাবিপ্রবি) এক শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে শহরের শালগাড়িয়া মেরিল বাইপাস এলাকার এক ছাত্রাবাস থেকে তার মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই শিক্ষার্থীর নাম তাহমিদুর রহমান জামিল (২২)।
তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার শাহীবাগ এলাকার বজলার রহমানের ছেলে। জামিল পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয়বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, জামিলের কক্ষ থেকে একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধারকৃত নোটে লেখা ছিল ‘বাবা-মা ক্ষমা করো, গুড বাই।’
এতে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছেন। সহপাঠীদের বরাত দিয়ে পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম বলেন, শহরের শালগাড়িয়া মেরিল বাইপাস এলাকার সাফল্য ছাত্রাবাসে থাকতেন শিক্ষার্থী তাহমিদুর রহমান জামিল।
পারিবারিক বিষয় নিয়ে কিছুদিন ধরে মানসিক অস্থিরতায় ভুগছিলেন তিনি। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর ছাত্রাবাসে নিজের কক্ষে ফ্যানের হুকের সাথে ব্যাগের বেল্ট গলায় পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি। তার সাড়া শব্দ না পেয়ে কক্ষের দরজা খুলে তাকে ঝুলতে দেখে থানায় খবর দেন সহপাঠিরা।
পরে পুলিশ গিয়ে তার ঝুলন্ত অবস্থায় তার মৃতদেহ উদ্ধার করে। তিনি বলেন, তার উদ্ধারকৃত সুইসাইড নোট থেকে বোঝা যাচ্ছে সে আত্মহত্যা করেছে। তারপরও ময়না তদন্ত করা হবে। পরিবারের পক্ষ থেকে এখনও অভিযোগ পাওয়া যায়নি।
ফাইল ছবি
চট্টগ্রামের পর বাধাবিপত্তি ডিঙিয়ে ময়মনসিংহেও বড় সমাবেশ করেছে বিএনপি। সমাবেশে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বলেছেন, ‘তারা (সরকার) বিভিন্নভাবে আপনাদের ঠেকানোর চেষ্টা করেছে, কিন্তু পারেনি। চট্টগ্রামেও আপনারা শক্তি জানান দিয়েছেন। সেটা দেখে সরকারের মাথা খারাপ হয়ে গেছে।’
গতকাল শনিবার বিকেলে ময়মনসিংহ শহরের পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট মাঠে দলের বিভাগীয় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল ইসলাম এ কথা বলেন।
জ্বালানি তেল ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি, দলীয় কর্মসূচিতে গুলি করে নেতা-কর্মীদের হত্যার প্রতিবাদে এবং নির্বাচনকালে নিরপেক্ষ সরকারের দাবিতে চট্টগ্রামের পর গতকাল ময়মনসিংহে বিএনপির সমাবেশ হয়। এ সমাবেশে জনসমাগম ঠেকাতে সড়কে যান চলাচল বন্ধ করাসহ নানাভাবে বাধা ও প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেন সরকার সমর্থকেরা। সমাবেশের স্থান নিয়েও অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। স্থানীয় প্রশাসন সমাবেশের ঘোষিত স্থান সার্কিট হাউস মাঠের অনুমতি বাতিল করে শেষ মুহূর্তে পলিটেকনিক মাঠে সমাবেশের অনুমতি দেয়। রাস্তায় যানবাহন না পেয়ে অনেকে হেঁটে, কেউবা অটোরিকশায়, আবার অনেকে বিকল্প পথে নৌকায় করে সমাবেশে যোগ দেন।
এ পরিস্থিতির উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, এভাবেই আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে। এই স্বৈরাচার সরকারের পতনের মাধ্যমেই দেশকে ফিরে পেতে হবে। তিনি বলেন, তেঁতুলিয়া থেকে টেকনাফ পর্যন্ত আন্দোলনের যে জোয়ার উঠেছে, সেই জোয়ারে আওয়ামী লীগ ভেসে যাবে।
মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা পরিষ্কারভাবে বলছি, এ সরকারকে অবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে। সংসদ বিলুপ্ত করতে হবে এবং একটা নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করতে হবে। সেই নির্দলীয় সরকারের অধীনে একটি নির্বাচন কমিশন গঠন হবে। সেই নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে একটা নির্বাচন হবে। সেই নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার তৈরি হবে। অন্যথায় জনগণ আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারের পতন ঘটাবে।’
গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচনের উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, এ নির্বাচনে ১ হাজার ২৪২টি সিসি ক্যামেরা ছিল। পর্যাপ্ত নিরাপত্তাব্যবস্থা ছিল, পুলিশ-র্যাব পাহারায় ছিল, তার পরেও ওই নির্বাচন দুপুরের মধ্যে বন্ধ ঘোষণা করতে হয়েছে। এ থেকেই প্রমাণিত হয়, দলীয় সরকারের অধীনে কখনো সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। তাই এ সরকারকে হটিয়ে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন করতে বাধ্য করা হবে।
মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ১৯৭৪ সালে আওয়ামী লীগের দুঃশাসনে দেশে দুর্ভিক্ষ লেগেছিল। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার আগে বলেছিলেন, তারা ১০ টাকা কেজি দরে চাল খাওয়াবে। সেই চালের দাম এখন ৭০ টাকা হয়েছে। তারা বলেছিল, ঘরে ঘরে চাকরি দেবে; এখন চাকরি পেতে হলে আওয়ামী লীগের লোকজন ২০ লাখ টাকা ঘুষ নেন বলে অভিযোগ করেন মির্জা ফখরুল।
সরকার উন্নয়নের নামে হাজার হাজার কোটি টাকা মেরে খাচ্ছে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানির দাম বাড়িয়েছে; তারা উন্নয়নের নামে হাজার হাজার কোটি টাকা চুরি করে, লুট করে বিদেশে টাকা পাচার করে। তারা কানাডা, লন্ডনে, বেগমপাড়ায় বাড়ি করে, মালয়েশিয়ায় সেকেন্ড হোম বানায়। আর আমার দেশের মানুষ না খেয়ে থাকে।’
দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, ‘অবৈধ এ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন নয়। চট্টগ্রাম ও ময়মনসিংহের গণসমাবেশ বলে দেয় বিএনপি ঝিমিয়ে পড়ে নাই। এভাবে আন্দোলন চালিয়ে গেলে একপর্যায়ে সরকার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি মেনে নিতে বাধ্য হবে।’
সমাবেশে বৃহত্তর ময়মনসিংহের শেরপুর, জামালপুর, নেত্রকোনাসহ পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন এলাকার বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মী ও সমর্থক অংশ নেন। সমাবেশে আসতে বাধা বা যান চলাচল করতে দেওয়া হবে না জেনে আগের দিন সন্ধ্যা থেকেই নেতা-কর্মীরা বিক্ষিপ্তভাবে ময়মনসিংহ শহরে এসে জড়ো হতে থাকেন। তাঁদের কেউ শহরে আত্মীয়স্বজনদের বাসায়, কেউ আবাসিক হোটেলে, কেউবা রাতে রাস্তায় অবস্থান করেন। এর মাঝে সকাল থেকেই একে একে জড়ো হতে থাকেন মাঠে। নানা স্লোগানে ব্যানার, প্ল্যাকার্ড হাতে তাঁরা মাঠে আসেন। দুপুর হতেই জনসভাস্থল ভরে যায়।
সমাবেশস্থল ছাড়াও নেতা-কর্মীদের ভিড় ছড়িয়ে পড়ে আশপাশের সড়ক ও বাসাবাড়ির গলিতে। শহরের চরপাড়া থেকে মাসকান্দা পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার সড়কে নেতা-কর্মীদের ভিড় লেগে যায়। নেতা-কর্মীদের কেউ দাঁড়িয়ে, কেউবা সড়কে বসে মাইকে বক্তব্য শুনছিলেন। একটু পরপরই পুরো সড়ক দখল করে নেতা-কর্মীদের মিছিল আসতে দেখা যায়। মিছিল থেকে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিসহ দলীয় নেতা-কর্মীদের ওপর সরকারের নিপীড়ন ও অত্যাচারের প্রতিবাদ করা হয়। সূত্র: প্রথম আলো