a
শীলা ঘটক । ফাইল ছবি
ঠাকুরবাড়ির বাজার সরকার শ্যাম গাঙ্গুলীর তিন নম্বর মেয়ে__
রবির আদরের নতুন বৌঠান।
রবি ডাকতোও খুব মিষ্টি করে, নতুন-বৌ-ঠান ___
কথায় বলে জন্মদিনে বিয়ে দিতে নেই___
নয় বছরে জ্যোতির সঙ্গে বিয়ে হলো ঐ তারিখেই___
বিধাতা হয়তো এটাই চেয়েছিলেন!
আমি কাদম্বরী_____
কোন ছেলেপুলে হলো না____
‘বাঁজা’ বলে ঠাকুরবাড়ির মানুষের দুচোখের বিষ,
সারাক্ষণ আমায় নিয়ে চলত ফিসফাস।
আমার বাবাকে পাঠিয়ে দেওয়া হলো গাজীপুরের জামিদারি দেখতে।
বেয়াইমশাই মেয়ের বাড়িতে থাকবে!
সেটা আবার হয় নাকি!
নয় বছর থেকে একেবারে একা!
আমি কাদম্বরী____
ঊর্মিলা আমার ননদ স্বর্ণকুমারীর মেয়ে
দু বছর বয়স ওর
আমার বড় আদরের
ওকে খাওয়ানো, স্নান করানো, ঘুম পাড়ানো __
সব করতুম আমি।
বাড়ির পেছনের ঘোরানো লোহার সিঁড়ি দিয়ে
পড়ে গেল একদিন___
বাঁচলো না___চলে গেল চিরতরে।
আমার ভালোবাসার প্রান পাখীটি চলে গেল___
আমি একেবারে একা......
জ্যোতির উপযুক্ত বউ হতে পারিনি আমি!
বাজার সরকার শ্যাম গাঙ্গুলীর তিন নম্বর মেয়ে আমি।
শ্বশুরমশায়ের ইচ্ছেতে বিয়েটা হয়েছিল,
মেজজা-ভাসুর কারোর ভালো লাগেনি আমায়......
গায়ের রঙ কালো ......
জ্যোতির মতো রাজপুত্তুরের এই বৌ!
ঠাকুরবাড়ির দমবন্ধ ঘরে____
খোলা জানালা দিয়ে দক্ষিণা বাতাসের মতো___
রবি আসতো আমার ঘরে।
আমার রবি।
যাকে আমি খুব ভালোবাসতুম খু-ব।
রবি আমার চেয়ে দুবছরের ছোটো।
রবির এই আসা-যাওয়া নিয়েও অ-নে-ক খোঁটা!
আমি কাদম্বরী ____
কবিতা লিখতুম, একা থাকতে থাকতে
লিখে ফেলেছিলুম অনেকগুলো কবিতা।
রবি তা নিয়ে হাসিঠাট্টা করতও খুব।
দুজনে মিলে ঘরের সামনে গড়েছিলুম নন্দনকানন।
রবির বিয়ে হয়ে গেল___
আবার আমি একা।
অবসাদে ভ’রে থাকতো মন___
বেশ কদিন হলো রবি আর আসে না।
নতুন বৌ এসেছে যে, তার ঘরে......
আমাকে সময় দেবার সময় কই তার!
আমি কাদম্বরী___
একদিন জ্যোতিকে বললুম, আজকের রাত টা আমার কাছে থাকো না......
জ্যোতি চলে গেল_____
শুনলে না আমার কথা।
বেঁচে থাকার ইচ্ছে গুলো এক এক করে শেষ হয়ে গেল
এই বিশাল বাড়িতে আমি একেবারে একা।
মা কে মনে পড়ে না____
মা থাকলে হয়তো জন্মের তারিখে বিয়ে দিত না আমায়......
আমি তো সত্যিই সুখী হলুম না,
চারদিকটা অন্ধকার---ঘন অন্ধকার___
চোখের জল আর কবিতা লেখা____
একদিন জ্যোতির পকেট থেকে পেলুম একটা চিঠি____
প্রেমের চিঠি, ভালোবাসার চিঠি, সোহাগের চিঠি...
গোপন কিছু কথার চিঠি________ এক নটীর চিঠি!
জ্যোতির জীবনে আমি একেবারেই শূন্য____
বুঝলুম সেইদিন___ খুব বেশী করে ......
বেঁচে থাকার শেষ ইচ্ছেটুকুও রইল না আর ___
বাজার সরকার শ্যাম গাঙ্গুলীর তিন নম্বর মেয়ে
আমি কাদম্বরী।
------শীলা ঘটক, এফবি/দেশ পত্রিকা, কোচবিহার
ছবি সংগৃহীত
পঞ্চাশের যুবতী
কি সাহস রে বাবা মহিলার।
বয়সটা যে পঞ্চাশ ছুঁয়েছে সে দিকে
কোনো ভ্রুক্ষেপ ই নেই।
কি একটিভ স্যোশাল মিডিয়ায় !!
ফেসবুক,ইনস্টাগ্রাম কিছুতে--ই বাদ নেই।
সারা দিনে তার লাইক, কমেন্ট,আর শেয়ারের ছড়াছড়ি।
আবার টিকটকেও কখনো নায়িকা-, --তো কখনো গায়িকা !
বাপরে বা---প পারেও বটে।
নিজেকে একেবারে টিন এজারে এনে নামিয়েছে।
এই তো সেদিন দেখলাম
হৈ হৈ করতে করতে
পার্টিতে মেয়ের সাথে ডান্স করছে।
উঁঃ লজ্জার মাথা খেয়েছে এক্কেবারে।
* * *
হ্যাঁ হ্যাঁ বলুন। যত্ত খুশি বলুন।
এ সব শুনে শুনে গা সওয়া হয়ে গেছে, বুঝলেন।
কি হয়েছে পঞ্চাশ হয়েছে তো।
পঞ্চাশ হয়েছে বলে ঘরের কোণে
একটা সুতির ছাপা পরে বসে থাকব নাকি।
শুনুন,সারা জীবন শুধু
এটা করতে নেই,ওটা করতে নেই
এখানে যাওয়া হবে না,ওখানে যাওয়া হবে না
এই ই শুনে এসেছি।
যখন ষোলোই ছিলাম
ছেলে বন্ধু তো দূরের কথা
কোনো মেয়ে বন্ধুর বাড়িতে গেলেও
মা কে সঙ্গে নিয়ে যেতে হতো।
আর পিকনিক, ঘোরাফেরা,সিনেমা !
এ সব তো অলীক কল্পনা ছিল মশাই---
অলীক কল্পনা।
তারপর যখন কুড়ি হল---
বেশ রাঙা টুকটুকে বৌ সেজে শ্বশুরবাড়িতে এলাম।
বাব রে বা---প !!!
সেখানেও আবার এমন নজরদারি,
কি বলি !! ---
কোনটা খাইনা, কেন খাইনা?
হাতে কেন বড় বড় নখ রেখেছি?
সকলের সামনে নাইটি পড়তে আমার লজ্জা করে কিনা,---
মেয়ে মানুষ হয়ে এত হৈ হৈ কিসের,
ইত্যাদি ইত্যাদি।
আর বাইরে গেলে !
শ্বশুর-শ্বাশুড়ি, জা -ননদ হাজারটা কৈফিয়ত।
তারপর পঁচিশে---, যখন মা হলাম,
ছেলেকে খাওয়াতে অসুবিধা হবে বলে
নাইটি ছেড়ে সুতির ছাপা পড়া ধরলাম।
কোমরে আঁচল গুঁজে এমন দশভুজা হয়ে গেলাম যে----
কোথায় সিনেমা,কোথায় বেড়ানো,
আর কোথায় যে আনন্দ সব ভুলে গেলাম।
না না এটার জন্য আক্ষেপ করছিনা।
এটা তো আমার কর্তব্য।
দেখতে দেখতে আরো পঁচিশটা বছ--র কেটে গেল।
ছেলে আর মেয়ের পড়াশোনা,গানবাজনা
আর ওদের সামাজিক প্রতিষ্ঠা নিয়ে।
ওদের সংসারও গড়ে দিয়েছি নিজের হাতে।
ওরা এখন যে যার মত ---
বন্ধু বান্ধব, হৈ হুল্লোড়,পার্টি, ভ্রমণ এসব নিয়ে ব্যস্ত।
তাই আমিও একটা প্রফাইল খুললাম
খুঁজেনিলাম নিজের একটা জগৎ।
জানেন? আমার ফেসবুক ফ্রেন্ডের সংখ্যা এখন দু-হাছার ছাড়িয়েছে!
আমা---র আবার ফেসবুকে ভেসে ওঠা
ঐ সব রেডিমেড কমেন্টে মন ভরেনা।
তাই ভালো কোনো পোষ্ট পেলেই
ইয়া---ব্বড় একটা কমেন্ট লিখি।
কত খুশি হয় ওরা জানেন?
আর আমার কবিতা গুলো যখন
শেয়ারের পর শেয়ার হয়,
তখন মনটা আনন্দে উথলে ওঠে।
এই নিয়েই তো আমার একার দুপুর টা কাটিয়ে দিই রোজ।
মেয়ে,জামাই,ছেলে,বৌমা ওরা যখন দু-দিনের জন্য এসে আবার চলে যায়
তখন ঐ খারাপ মনটা ভোলাতে খুব বেশি সময় লাগেনা আমার।
জানেন,আমি এখন নিজের পছন্দের মাছ কিনি বাজার থেকে।
আর যে খাবারটা খেতে ইচ্ছে সেটাই বানাই।
যেখানে যেতে ইচ্ছে করে সেখানে যাই।
আর তো কটা মাত্র দিন পড়ে আছে তাই না।
নিজেকে কি করে ঠকাই বলুন তো?
মর্নিং ওয়াক করি,কিটো ডায়েট করি,
ঘন ঘন পার্লারে যাই।
শরীর চর্চা থেকে মনের চর্চা
স---ব সব করি এখন।
এই তো আমার যুবতি হওয়ার বয়স।
তাই যে যাই বলুক
চলুন, মনের বয়স বাড়তে না দিয়ে
এই পঞ্চাশেই আবার না হয় যুবতি হয়ে যাই।
লেখিকা:গোপা গড়াই মন্ডল
ফাইল ছবি
হামাসের সঙ্গে চলমান যুদ্ধে সতর্কতা হিসেবে ইসরায়েলে নিজেদের একটি উত্পাদন প্ল্যান্ট বন্ধ ঘোষণা করেছে বিশ্বের বৃহত্তম খাদ্যদ্রব্য প্রক্রিয়াজাতকারী সুইজারল্যান্ডভিত্তিক কোম্পানি নেসলে। খবর রয়টার্সের।
পূর্ব-সতর্কতা হিসেবে ইসরাইলে ঐ উত্পাদন প্ল্যান্ট ‘সাময়িকভাবে বন্ধ’ করা হয়েছে বলে বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে।
অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার ক্ষমতাসীনগোষ্ঠী হামাসের সঙ্গে গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর প্রথম কোনো জায়ান্ট কোম্পানি হিসেবে নেসলে তাদের উত্পাদন প্ল্যান্ট বন্ধ ঘোষণা করেছে।
হামাসের আকস্মিক হামলার পর বেশ কয়েকটি বৈশ্বিক কোম্পানি ইসরায়েলে তাদের কিছু কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ করে রেখেছে। আবার কিছু কিছু কোম্পানি তাদের কর্মীদের বাড়ি থেকে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছে।
নেসলে বলেছে, ইসরাইলে তাদের উত্পাদন প্ল্যান্টটি কয়েক দিন বন্ধ থাকবে। তবে এই বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানাতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে জায়ান্ট এই কোম্পানি।
নেসলে প্রধান নির্বাহী মার্ক স্নাইডার সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের নজর আমাদের সহকর্মী এবং কর্মচারীদের সুরক্ষিত রাখার দিকে। ব্যবসার উন্নয়ন নিয়ে আমার কোন মন্তব্য নেই। আমরা প্রয়োজনীয় সতর্কতা নিয়েছি।’
অন্যান্য বহুজাতিক প্যাকেজড পণ্য সংস্থাগুলো এখনও পর্যন্ত দ্বন্দ্বের বিষয়ে নীরব রয়েছে, এমনকি খুচরা, স্বাস্থ্যসেবা এবং তেল সংস্থাগুলো তাদের অবস্থান নিয়ে উদ্বিগ্ন। সূত্র: ইত্তেফাক