a
ফাইল ছবি। জিয়াউর রহমান
খুব ছোট বেলার কথা। ৭৮ সালে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট কর্তৃক প্রবর্তিত বাংলাদেশ টেলিভিশন আয়োজিত শিশুদের সুকুমার বৃত্তির প্রতিযোগিতা নতুন কুঁড়ির প্রতিযোগী এবং পুরস্কার বিজয়ী ছিলাম। তখনও আমি আমাদের প্রেসিডেন্টকে সরাসরি দেখিনি। এরপর বাংলাদেশ বেতার আয়োজিত একটি মঞ্চানুষ্ঠান হয়। রেডিওতে তো শুধু গান হয়,দেখা যায়না। কিন্তু প্রেসিডেন্ট সাহেব আদেশ দিলেন ঢাকার শাহবাগের রেডিও বাংলাদেশের হোম সার্ভিস এর ভেতরে পেছন দিকের উন্মুক্ত বাগানে একটা মঞ্চানুষ্ঠান করার জন্য। যেখানে উনি উপস্থিত থেকে পুরো অনুষ্ঠান উপভোগ করবেন।
আমরা যারা নিয়মিত রেডিও কলকাকলীতে অংশগ্রহণ করতাম তারাই সে অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করলাম।প্রায় এক মাস ধরে রিহার্সাল হলো। গ্রামবাংলার মানুষের জীবন যাত্রা নিয়ে একটি নৃত্যনাট্য। অনেক কোরাস ভয়েজ ছিল, বলাই বাহুল্য সেখানে বড় বড় একক গান আমার ভাগে পড়লো এবং অনুষ্ঠানের শুরুতেই নৃত্যনাট্যের অংশ হিসেবে, যেন কেবল ভোর হলো এটা বোঝানোর জন্য ছিল ফজরের আজান।সেই আজান আমাকে দেয়া হলো। আজানের পরেই নাটকের ভেতরে বিবেক এসে গাইতে থাকে "মনরে পথে পথে পথ বাঁধিতে একতারা বাজাই"।সবই আমাকে গাইতে হয়েছে। এরপর পুরো একটা গ্রামীণ গল্প নাচেগানে উপস্থাপিত হলো।
আমাকে অনুষ্ঠানের বড় কেউ একজন ডেকে নিয়ে গিয়ে একদম প্রেসিডেন্ট সাহেব এর সামনে দাঁড় করালেন। আমি বুঝতে পারছিলাম না কি করা উচিত। উনি আমাকে এক হাতে টেনে নিয়ে একদম কাছে দাঁড় করিয়ে সেই বিখ্যাত সুমিষ্ট হাসি দিয়ে বললেন তোমার নাম? এতো সুন্দর নাম কে রাখলেন? তারপর বললেন এতো সুন্দর করে আজান কিভাবে দিলে তুমি! তারপর অনেক দোয়া করলেন। আমার বাবা-মা পাশেই দাঁড়ানো ছিলেন, উনি তাঁদের দিকে তাকিয়ে হেসে হেসে বললেন বাচ্চার যত্ন নেবেন। ও একটা রত্ন। যাইহোক।
এরপর একসময় আমাদের "মাদারটেক আব্দুল আজিজ উচ্চ বিদ্যালয়" এ তিনি এলেন স্কুল পরিদর্শনে। তখনকার দিনেই তিনি আমাদের স্কুলে অনুদান সহ পুরো স্কুলে যাতে এক জায়গা থেকে ক্লাসে ক্লাসে ঘোষণা বা লেকচার শোনা যায় এমন সাউন্ড সিস্টেম মাইক্রোফোন সেট কিনে দিলেন। উনি আসার সাথে সাথে আমার রিহার্সাল করা গান "প্রথম বাংলা আমার শেষ বাংলাদেশ" গাচ্ছিলাম।উনি আমাদের সামনে দিয়ে সহাস্যে ধীরে ধীরে যাচ্ছিলেন স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা এবং শিক্ষকদের সাথে শেইকহ্যান্ড করতে করতে। আমার দিকে চোখ পড়তেই উনি চেনা একটা হাসি দিলেন, মানে উনি আমাকে দেখেই চিনেছেন এই মেয়েটিই সেই কনকচাঁপা এবং আমাদের প্রধান শিক্ষক কে জিজ্ঞেস করলেন যে কনকচাঁপা আপনার স্কুলে পড়ে? ভাবা যায়! একজন দেশের প্রেসিডেন্ট! তাঁর এতো তুচ্ছ বিষয় মনে রাখার ব্যাপারটা আজও বিস্মিত করে আমাকে। ওনার নির্দেশে "পেন পলস" ক্লাব নামক একটি এনজিও শুধু বাচ্চাদের নিয়ে কাজ করতো। সেখানেও আমি জিয়া শিশু পুরস্কার কয়েকবার পেয়েছি।
পেনপলস ক্লাবের পুরস্কার গুলো অপূর্ব ছিলো। নানান গুনীজনের জীবনীগ্রন্থ শিশুতোষ ভাষায় লেখা বই,একশোটা কাঠপেন্সিল, বিশ দিস্তা কাগজ! এগুলো পুরস্কার এর আইডিয়া ওনারই ছিলো। ওনার নামে "জিয়া পরিষদ" এর নানা কর্মকাণ্ডেও আমি অংশগ্রহণ করেছি।
সোজা কথায় তিনি ছিলেন অসম্ভব শিশুপ্রিয় মানুষ। শিশু-কিশোররা ঠিক ঠাক গড়ে ওঠে কিনা এনিয়ে তাঁর কঠিন নজরদারি ছিল। বিটিভিতে আমাদের অনেক শিল্পীর সাথে জনাব তারেক রহমান ও কোকো রহমান বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছেন। কিন্তু প্রেসিডেন্ট সাহেবের কড়া নির্দেশ ছিলো তাঁর সন্তানদের যেন বিশেষ দৃষ্টিতে না দেখা হয়! তাদের বেশভুষা, তাদের যাতায়াতের যানবাহন খুবই সাধারণ ছিল। তারা দুই ভাই কোন প্রোটোকল ছাড়া বিটিভির গাড়িতে রিহার্সাল এ যাতায়াত করতো।
এই ছিলেন আমাদের শহীদ প্রেসিডেন্ট সমুখভাগের মুক্তিযোদ্ধা শ্রদ্ধার ও ভালোবাসার জিয়াউর রহমান।
মনে পড়ে তাঁর মৃত্যুতে অনেক কেঁদেছিলাম। টিভিতে লাখো মানুষের ঢল আর হৃদয়বিদারক করুণ ধারাবিবরণীতে কেঁদে কেঁদে অস্থির হয়ে গেছিলাম এই কিশোরী আমি!
আমার সেই অনুভূতি আজও তেমনি আছে,থাকবে।
স্রষ্টা, তুমি বীর মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান সাহেবকে জান্নাতুল ফেরদৌসের স্থায়ী বাসিন্দা করে নেয়ার অনুগ্রহ করো।
ফেসবুক থেকে সংগৃহীত.../কন্ঠশিল্পী: কনক চাঁপা
ছবি সংগৃহীত
পরকীয়া একটি মানসিক ব্যাধি। পরকীয়া পারিবারিক অশান্তি এবং বিবাহ বিচ্ছেদের একটি অন্যতম কারণ। অধিকাংশ পরকীয়ার সম্পর্ক গুলোতেই ভালোবাসা থাকে না, পরকীয়ার সম্পর্কে যে অনুভূতিগুলো তৈরি হয় সেটিকে প্রেম বলা যেতে পারে যেখানে রোমান্স থাকে, শারীরিক সম্পর্কের একটা বিষয় থাকে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পরকীয়া সম্পর্কগুলো ক্ষণস্থায়ী হয়, সর্বোচ্চ দুই থেকে তিন বছর এই সম্পর্কিত মানুষ দুটির একে অপরের প্রতি আকর্ষণ থাকে। এরপর সম্পর্কের পরিণতি হতে থাকে। ক্ষণস্থায়ী এই সম্পর্কের প্রভাব অনেক ক্ষতিকর যা দুটি সুন্দর সাজানো সংসারকে ধ্বংস করে দেয়। পরকীয়া থেকে ফিরে আসা ব্যক্তিটি তার জীবন সঙ্গীর কাছে আগের মত আর বিশ্বস্ত হতে পারে না। ভাঙা বা ছেরা জিনিসকে সুপার গ্লু দিয়ে জোরা লাগালে জোরা লাগবে কিন্তু একটা দাগ থেকে যায়।
পরকীয়া সম্পর্ক দিন দিন বেড়েই চলছে। যার ফলে বাড়ছে পারিবারিক অশান্তি এবং বিবাহ বিচ্ছেদ। এই সম্পর্ক গুলো গড়ে ওঠার পেছনে কে দায়ী? কেন মানুষ পরকীয়া সম্পর্কে জড়িত হয়? অনেক মানুষ তার স্বভাবগত কারণে পরকীয়া সম্পর্ক করে থাকে। কখনো কখনো তারা একটি নয়, একই সঙ্গে একাধিক পরকীয়া সম্পর্ক করে। একটি সম্পর্ক ভেঙে গেলে আবার অন্য কারো সঙ্গে নতুন করে পরকীয়া করে। এই বিকৃত স্বভাবের মানুষগুলোর এই ধরনের আচরণ গড়ে ওঠার পেছনে তার ত্রুটিপূর্ণ পারিবারিক পরিবেশ, পরিবার থেকে ন্যায় নীতি এবং ধর্মীয় শিক্ষার অভাব এবং বিকৃত সামাজিক অবস্থা অনেক ভূমিকা পালন করে। পরকীয়ায় লিপ্ত আছে এমন কারো সঙ্গে বন্ধুত্ব থাকলেও পরকীয়া করার প্রতি প্রভাবিত হতে পারে।
পরকীয়ার অন্যান্য কারণ গুলোর মধ্যে একটি অন্যতম কারণ হচ্ছে জীবনসঙ্গীর কাছ থেকে পাওয়া অবহেলা। বিশেষ করে পুরুষরা যখন তার স্ত্রীর কাছ থেকে বিভিন্নভাবে অবহেলিত হয় এবং স্ত্রীরা সে বিষয়ে উদাসীন থাকে তখনই একজন পুরুষ বহির্মুখী হয়। এক্ষেত্রে স্বামী স্ত্রীর শারীরিক সম্পর্ক বা যৌন সম্পর্কের অপরিপূর্ণতা সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।অপর পক্ষে একজন স্ত্রীও যখন স্বামীর কাছ থেকে অবহেলিত হন তখন সে পরকীয়া করতে পারে।
পরকীয়া কখনোই স্থায়ী হয় না সুতরাং যে সম্পর্ক স্থায়ী হয় না বরং এর প্রভাব দুটো পরিবারের উপরে মারাত্মক ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে তাই এ বিষয়ে সচেতন হওয়া প্রয়োজন। স্বামী এবং স্ত্রী উভয়কেই সুন্দর সম্পর্ক ধরে রাখার জন্য মনোযোগী হতে হবে। উভয়েই উভয়ের চাহিদাগুলো পূরণ করার জন্য সচেষ্ট থাকতে হবে। স্বামী-স্ত্রীর সুন্দর সম্পর্ক পরকীয়ার চেয়ে হাজার হাজার গুণ বেশি শ্রেয়। তাই এই সম্পর্ক কে টিকিয়ে রাখার জন্য সচেতনতার প্রয়োজন রয়েছে। আর যারা জীবনসঙ্গীর কাছ থেকে সবকিছু পাওয়া সত্বেও পরকীয়ার উপর নির্ভরশীল তাদের উচিত একজন ভালো মনোবিজ্ঞানীর পরামর্শ নেয়া।
সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন এবং সুন্দর সম্পর্কে সম্পর্কিত থাকুন।
নাসরীন আহমেদ
প্রাক্তন শিক্ষক মনোবিজ্ঞান বিভাগ
সিদ্ধেশ্বরী গার্লস কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়
বেইলী রোড, ঢাকা
বাংলাদেশ
সংগৃহীত ছবি
নিউজ ডেস্ক: বিগত তিনটি বিতর্কিত সংসদ নির্বাচনের (২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালে অনুষ্ঠিত) দায়িত্বে থাকা সাবেক জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) মধ্যে যাঁদের চাকরির বয়স ২৫ বছর হয়েছে, তাঁদের বাধ্যতামূলক অবসর দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার এবং বাকিদের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তাঁদের মধ্যে চাকরির বয়স ইতিমধ্যে ২৫ বছর হওয়া ২২ জন সাবেক ডিসিকে আজ বৃহস্পতিবার বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে।
সচিবালয়ে আজ সাংবাদিকদের এই সিদ্ধান্তের কথা জানান জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. মোখলেস উর রহমান। এর আগে গতকাল বুধবার বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও দপ্তরে কর্মরত যুগ্ম সচিব ও সমপর্যায়ের পদে থাকা প্রশাসনের ৩৩ জন কর্মকর্তাকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করেছে সরকার। তাঁরা ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত বিতর্কিত নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসকের দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. মোখলেস উর রহমান বলেন, সম্প্রতি জনপ্রশাসন–সংক্রান্ত একটি কমিটি হয়েছে, সেখানে ৪জন উপদেষ্টা আছেন। এই কমিটিতে মন্ত্রিপরিষদ সচিব আছেন। আর তিনি নিজে সাচিবিক দায়িত্বে আছেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব হিসেবে।
মোখলেস উর রহমান বলেন, এই কমিটিতে কয়েকটি বড় সিদ্ধান্ত হয়েছে। ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের বিতর্কিত নির্বাচনে যাঁরা রিটার্নিং কর্মকর্তা ছিলেন (ডিসিরা রিটার্নিং কর্মকর্তা হন), তাঁরা নেতিবাচক ভূমিকা রেখেছিলেন। তাঁদের মধ্যে ইতিমধ্যে ৪৩ জনকে ওএসডি করা হয়েছে। ওএসডি করা হয়েছে যাঁদের চাকরির বয়স ২৫ বছরের কম তাঁদের। আর যাঁদের চাকরির বয়স ২৫ বছরের বেশি, তাঁদের বাধ্যতামূলক অবসরে দেওয়া হচ্ছে। আজ এ রকম ২২ জন সাবেক ডিসিকে বাধ্যতামূলক অবসর দেওয়ার আদেশ জারি করা হয়েছে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব বলেন, যাঁদের চাকরির বয়স ২৫ বছরের কম, তাঁরা ওএসডি হবেন। আর যাঁদের চাকরির বয়স ২৫ বছরের বেশি, তাঁরা বাধ্যতামূলক অবসরে যাবেন। আর যাঁদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ থাকবে, তাদের বিষয়গুলো দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) পাঠানো হবে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব জানান, যুগ্ম সচিব ধনঞ্জয় কুমার দাসকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।
সাবেক ডিসিদের বাইরেও অন্য কর্মকর্তাদের বিষয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব বলেন, যাঁদের নামে দুর্নীতি আছে বা যাঁরা আইনের বাইরে গিয়ে অতিরঞ্জন কাজগুলো করেছেন, তাঁরাও চাকরিবিধি অনুযায়ী সাজা ভোগ করবেন। সূত্র: প্রথম আলো