a স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন মঙ্গলতরী
ঢাকা সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২, ২৪ নভেম্বর, ২০২৫
https://www.msprotidin.com website logo

স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন মঙ্গলতরী


হানিফ,মুক্তসংবাদ প্রতিদিন:
রবিবার, ০৯ মে, ২০২১, ০২:৪৯
স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন মঙ্গলতরী

ফাইল ছবি

বেশির ভাগ বাবা-মা হীন হতদরিদ্র পরিবারের এতিম সন্তানদের জীবন কাটাতে হয় রাস্তায় কিংবা এতিমখানায়। দুবেলা খেতে পারাটাই যাদের কাছে সৌভাগ্যের ব্যাপার। এছাড়াও অভাবের সংসার হওয়ায় অনেক পরিবারের সন্তানদের পোলাও-মাংস খাওয়ানোর সামর্থ্য থাকে না। তারা সন্তানকে একটি সুন্দর জীবন দিবে সে স্বপ্নই ছিল দুচোখে। কিন্তু, মহামারী যেন সেই স্বপ্ন ভেঙ্গে চুরমার করেছে।

তাদের স্বপ্ন পূরপণের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে বিভিন্ন এনজিও এবং স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন । তেমনি এক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন "মঙ্গলতরী"। বৃহত্তর এই সংকটময় পরিস্থিতিতে তারাও যুক্ত হয়েছে ক্ষুদ্র প্রচেষ্টায়। "প্রচেষ্টা" নামক এই প্রোগ্রামের জন্য তারা গিয়েছিলো গাজিপুর জেলার কালিয়াকৈর থানার সফিপুরে অবস্থিত "জামিয়া মোহাম্মাদীয়া আরাবিয়া মাদরাসা ও এতিমখানা"তে। 

মাদ্রাসার সকল এতিম শিক্ষার্থী (১৫ জন) সহ হতদরিদ্র অসহায় আরো ২২ জনকে পাঞ্জাবি বিতরণ করা হয়। সেই সাথে মাদ্রাসার দায়িত্বপ্রাপ্ত অস্বচ্ছল একজন হুজুরকেও তারা সহায়তা প্রদান করে। গত ৫ই মে ২০২১ বাদ আসর এই পাঞ্জাবি বিতরণ প্রোগ্রামটি অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক হাফেজ মাসুদ সাহেদ এবং দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকবৃন্দ। এছাড়াও মাদ্রাসার সকল শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকদের জন্য ইফতারির আয়োজন করে। ইফতারির মেন্যু তে ছিলো গরুর গোশতের বিরিয়ানি, খেজুর, শরবত ইত্যাদি। 

মঙ্গলতরীর  প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অপু সরকার বলেন, মানবসেবায় নিয়োজিত করতে তার অনেক ভাল লাগে আর সে থেকেই তার বন্ধু ও সহযোগী হাসনাইন ইফতিকে নিয়েই সংগঠনটির যাত্রা। 

উক্ত সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক জনাব নাজমুল হাসান বলেন "সময়টা এখন একে অপরের পাশে দাঁড়ানোর। তাইতো আপনার একটু আত্মত্যাগে ফোটাতে পারে হাজারো মুখে হাসি। করোনাকালীন এই সংকটময় পরিস্থিতিতে, সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জন্য নিজে এগিয়ে আসুন অন্যকে এগিয়ে আসতে উৎসাহিত করুন "

উল্লেখ্য যে মঙ্গলতরীর ভলিন্টিয়ারের সংখ্যা প্রায় ৩৫ জন। যারা নিরলস পরিশ্রমের মাধ্যমে সকলের মাঝে সচেতনতা তৈরি করে যাচ্ছে বিভিন্নভাবে। 

সংগঠনটির অন্যতম সংগঠক ও স্বেচ্ছাসেবক রিসাত রহমান স্বচ্ছ বলেন, "অসংখ্য শ্রমজীবী মানুষ এই সময়ে কর্মহীন। পরিবার ও সন্তান নিয়ে অভুক্ত দিন কাটাচ্ছে তারা। আমরা যথাসম্ভব চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি তাদের কাছে অন্তত একবেলা পুষ্টিকর খাবার পৌঁছে দিতে। এ জন্য প্রয়োজন আপনাদের একান্ত সহায়তা"। 
মঙ্গলতরীর সাথে আপনি শামিল হতে পারেন তাদের মহৎ উদ্যোগে ফেইসবুক লিংক: www.facebook.com/mongoltori2020/ তাদেরকে সহায়তা পাঠানো বিকাশ/নগদ/রকেট নম্বর ০১৭১৮৪৮৬৩৭৩।

মুক্তসংবাদ প্রতিদিন / khurshedalm@msprotidin.com

একজন দেশপ্রেমিক চৌধুরী ডা. জাফরুল্লাহ একটা ইতিহাস


আরাফাত আলম, বিশেষ প্রতিনিধি, মুক্তসংবাদ প্রতিদিন
শুক্রবার, ১১ জুলাই, ২০২৫, ০৯:২২
একজন দেশপ্রেমিক চৌধুরী ডা. জাফরুল্লাহ একটা ইতিহাস

ছবি সংগৃহীত

কয়েক বছর ধরে পরেন একটা শার্ট, ওপরের বোতাম তার ছেঁড়া। কেউ একজন জিজ্ঞাসা করতে বলেছিলেন, "নষ্ট না হলে আমি কি করব, ফেলে তো দিতে পারি না !"

অথচ বাবা তার রাউজানের জমিদার। লন্ডনে পড়তে গিয়ে তার যে গাড়ি ছিল, দেশ থেকে  বড়ো কেউ গেলে সে গাড়িই ধার দেয়া হতো তাদের। তিনি যে দর্জির কাছে কাপড় সেলাই করতেন, সে দর্জি ছিলেন ব্রিটিশ রাজপুত্র প্রিন্স চার্লসের ব্যক্তিগত দর্জি৷ দেশে ফিরে দেশের মানুষের জীবদ্দশা দেখে সেই বিলাসী জীবন ত্যাগের প্রতিজ্ঞা করেছিলেন জাফরুল্লাহ, আমৃত্যু তাই পালন করেছেন। 

লন্ডনের প্রকাশ্য রাস্তায় নিজেদের পাসপোর্টে আ'গুন ধরিয়ে দিলো কয়েকজন বন্ধু। এরা সবাই এবারের এফআরসিএস পরীক্ষার্থী৷ পরীক্ষা আর দেয়া হলো না, রাষ্ট্রহীন নাগরিক হিসেবে লন্ডন থেকে ফেরত পাঠানো হলো ভারতে৷ দেশের মুক্তিযুদ্ধকে সমর্থন দিয়ে পাকিস্তানের পাসপোর্ট পোড়ানো সে বন্ধুদের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন ডা.জাফরুল্লাহ চৌধুরী। 

ভারতে এসে আগরতলা ক্যাম্পের একপাশে চট-বেড়া দিয়ে গড়ে তুললেন ৪৮০ শয্যার ফিল্ড হাসপাতাল। দিনরাত এক করে হাজার হাজার মানুষের জীবন বাঁচানোর কাজ চলল তাতে। যুদ্ধ শেষ হলে এ হাসপাতালই হয়ে উঠল গরিবের গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র৷ 

 আজ ৫০ বছর পরেও, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের নর্মাল ডেলিভারি বা ডায়ালাইসিস খরচ ২৫০০ টাকা৷ করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর ভদ্রলোকের জন্য ভিআইপি কেবিনের ব্যবস্থা করা হয়েছিল, আনা হচ্ছিল দামী ওষুধ৷ দুটোকেই 'না' করে জাফরুল্লাহ বললেন, ' নিজের হাসপাতালের ওপর নিজে ভরসা না রাখলে মানুষ কি করে রাখবে? যে ওষুধ গরীবে কিনে খেতে পারবে না, সে ওষুধ আমি নেব না।'

১৯৮২ সালে জাতীয় ওষুধ নীতির নেতৃত্ব দিয়েছেন জাফরুল্লাহ। স্বপ্নবাজ এ লোকটির হাত ধরেই ৯০ শতাংশ ওষুধ আজ দেশেই তৈরি হয়। বিনামূল্যে বিলি হয় গণস্বাস্থ্যের ওষুধ। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রই আবিষ্কার করেছিল বাংলাদেশের করোনা টিকা বঙ্গভ্যাক্স, বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদন পেয়েছিল যে টিকা, পায়নি কেবল বাংলাদেশে। 

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে চাকরির কয়েকটা বাঁধাধরা নিয়ম তিনি করেছিলেন। কর্মরতদের ধূ'মপান নিষিদ্ধ । প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বামী ড. ওয়াজেদ মিঞার চাকরির ব্যাপারে ১৯৯৬ সালে নেত্রী নিজেই ফোন করেন জাফরুল্লাহকে। তিনি  শেখ হাসিনাকে তখনই সাফ জানিয়েছিলেন, ' ধূ'মপান ছাড়তে না পারলে চাকরি হবে না। ' বাধ্য হয়ে একমাসেই ধূ'মপান ছাড়েন ডা. ওয়াজেদ। 

দোর্দণ্ড প্রতাপে যখন ক্ষমতায় এসেছেন জিয়াউর রহমান, জাফরুল্লাহকে মেজর জিয়া হাতে একটা ফাঁকা চেক ধরিয়ে আদেশ দিলেন, মন্ত্রী হও৷ সেদিন গরিবের ডাক্তার ৪ পৃষ্ঠার চিঠি লিখে জবাব দিয়েছিলেন, একজনও স্বাধীনতাবিরোধী থাকলে সে মন্ত্রীসভায় তিনি যাবেন না৷ ৮-১৮'র তরুণরা যখন নির্লিপ্ত, তখন ৮০ বছর বয়সেও হুইল চেয়ারে রাজপথ দাপিয়ে বেড়িয়েছেন এই মানুষটি৷ দাঁড়িয়েছেন বিচারের কাঠগড়ায়,পেয়েছেন অর্থদন্ডও। 

নিজ প্রতিষ্ঠান গণস্বাস্থ্যের সম্পদ আছে কয়েক হাজার কোটি টাকার।পেয়েছেন ম্যাগসেসে পদকের মতো অসংখ্য আন্তর্জাতিক সম্মাননা। অথচ সমস্ত জীবন দেশের জন্য উৎসর্গ করে কপর্দকহীন হয়ে চলে গেলেন একগুঁয়ে মানুষটি। একেকটা হাসপাতাল যখন হয়ে উঠছে মানুষ মারার কল, তখন গরিব যাতে কম খরচে ক্যানসার চিকিৎসা পায়, ওষুধ পায়,  তার বন্দোবস্ত করে গণস্বাস্থ্য হাসপাতাল গড়েছেন মানুষটি।  

জীবন-মরণের মাঝখানে দাঁড়িয়ে শেষবার জাফরুল্লাহ বলেছিলেন, কিছু হলে দেশেই হোক, বিদেশে চিকিৎসা তিনি কিছুতেই নেবেন না।
সারাজীবনের মতো একবারই এই মৃত্যু সাজ,
এতদিন প্রাণ ছিলো, অমরত্ব শুরু হলো আজ.. 

এই জেদ, এই উদ্যম,এই দেশপ্রেমকে কুর্নিশ। আপনি জিতে গেছেন ১৬ কোটি হৃদয়৷ অভিবাদন, মহামানব জাফরুল্লাহ চৌধুরী!

  -ফেসবুক থেকে সংগ্রহীত

মুক্তসংবাদ প্রতিদিন / কে. আলম

বর্তমানে অনেক বিতর্কিত প্রভাবশালীদের ঘুম হারাম


এমএস.প্রতিদিন ডেস্ক:
শনিবার, ০৭ আগষ্ট, ২০২১, ০৯:৫৫
বর্তমানে অনেক বিতর্কিত প্রভাবশালীদের ঘুম হারাম

ফাইল ছবি

বিতর্কে জড়িয়ে একের পর এক গ্রেফতার হচ্ছেন অভিনেত্রী ও মডেলরা। অপরাধে তাদের সম্পৃক্ততার চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে। আরও এক ডজন মডেল বর্তমানে নজরদারিতে রয়েছেন। এতে আতঙ্কে অন্তত ২১ প্রভাবশালী ব্যক্তির ‘ঘুম হারাম’ হওয়ার অবস্থা।

এক সময় এসব ব্যক্তি ওই মডেলদের ঘনিষ্ঠ ছিলেন। তাদের নিয়ে তারা দেশের বাইরেও ‘প্লেজার ট্রিপে’ গেছেন। তাদের বিরুদ্ধে মডেলদের বিভিন্ন অপরাধে ব্যবহার ও ইন্ধন জোগানোর অভিযোগ রয়েছে। এখন তাদের অনেকে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে তদবির করতে মাঠে নেমেছেন।

প্রশাসনের উচ্চ পর্যায়ে যোগাযোগ করছেন কেউ কেউ। মোবাইল ফোন বন্ধ করে এবং ফেসবুক আইডি নিষ্ক্রিয় করে তাদের অন্তত চারজন গা-ঢাকা দিয়েছেন। তবে তাদের গতিবিধি নজরদারিতে রেখেছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।

রোববার রাতে মডেল ফারিয়া মাহবুব পিয়াসা ও মরিয়ম আক্তার মৌ গ্রেফতার হয়েছেন। মাদক আইনের মামলায় তিন দিনের রিমান্ড শেষে তাদের শুক্রবার আদালতে উপস্থাপন করা হয়।

এরপর রাজধানীর তিন থানার পৃথক তিনটি মাদক মামলায় পিয়াসার আট দিন ও মৌকে একটি মামলায় চার দিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ। বুধবার বিকালে পরীমনিকে গ্রেফতারের পর মাদক মামলায় তাকে চার দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।

পরীমনি, পিয়াসা ও মৌর কয়েক সহযোগীও রয়েছেন রিমান্ডে। জিজ্ঞাসাবাদে স্বর্ণ চোরাচালান, ব্ল্যাকমেইলিং, মাদক ব্যবসা, জাল মুদ্রা তৈরি, অস্ত্র কারবারে সম্পৃক্ততাসহ নানা অবৈধ ও অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা গ্রেফতার অভিনেত্রী ও মডেলরা স্বীকার করেছেন।

এ সময় তাদের ‘সুগার ড্যাডি’দের নামও উঠে আসে। যারা টাকার বিনিময়ে অথবা চাপ দিয়ে অনেক মডেলের ঘনিষ্ঠ হয়েছেন। নানা অপরাধমূলক কাজে ব্যবহার করেছেন। সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক কিংবা প্রশাসনিকভাবে এসব প্রভাবশালী ব্যক্তিকে খুঁজছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

ঢাকাই চলচ্চিত্রের আলোচিত নায়িকা পরীমনির অবৈধ কাজের সহযোগীদের নাম পাওয়া গেছে বলে শুক্রবার জানান ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) যুগ্ম কমিশনার হারুন-অর-রশিদ। তিনি বলেন, পরীমনি যেসব অবৈধ কাজ ও ব্যবসা করতেন, সেগুলো কাদের নিয়ে করতেন, কাদের সহযোগিতায় করতেন, কারা তার নেপথ্যে রয়েছেন আমরা তাদের নাম পেয়েছি। তাদের বেশির ভাগই বড়লোক এবং খারাপ প্রকৃতির মানুষ।

যারাই তার সঙ্গে জড়িত ছিলেন তাদের গ্রেফতার করা হবে। আর প্রযোজক নজরুল মডেলদের নিয়ে ঘরোয়া পার্টি করতেন। উচ্চবিত্তদের মডেল সাপ্লাই দিতেন। সেই তথ্যও আমরা পেয়েছি। তাদের সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে।

পুলিশ, র‌্যাব ও একাধিক গোয়েন্দা সূত্রের তথ্যের ভিত্তিতে ২১ প্রভাবশালী ব্যক্তির নাম পাওয়া গেছে। তাদের মধ্যে স্বর্ণ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত তিনজন, পোশাক শিল্পের ব্যবসার সঙ্গে জড়িত দুজন, রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ ছয়জন, অন্য সব ব্যবসায় জড়িত ছয়জন, বিশেষ দুই ব্যক্তি ও একটি বিশেষ পেশায় থাকা একজন এবং ফার্নিচার-প্লাস্টিকসহ কয়েকটি ব্যবসায় জড়িত একজন রয়েছেন।

রাজধানীর তারকা হোটেল ও পার্টি হাউজে তাদের নিয়মিত যাতায়াত ছিল। এছাড়া ‘স্পা সেন্টার’সহ নামে-বেনামে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের আড়ালে গুলশান-বনানীর ২৭টি স্থানে অনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনা হতো। সেখানেও এ প্রভাবশালীদের নিয়মিত যাতায়াত ছিল। এছাড়া বনানীর অন্তত ১৩টি সিসা লাউঞ্জেও ছিল তাদের অন্যতম আখড়া।

সূত্র জানায়, সুন্দরী রমণীদের নিয়ে দুবাই, ইউরোপ, আমেরিকা, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিায়সহ বিভিন্ন দেশে একাধিক ‘লেজার ট্রিপ’ দিয়েছেন অনেকে। ঘন ঘন তাদের বিদেশ যাত্রার তথ্য পুলিশের ইমিগ্রেশন শাখা থেকে সংগ্রহ করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে পিয়াসা, মিশু, জিসান ও একটি শিল্পপ্রতিষ্ঠানের কর্ণধার ব্যক্তির দুই ছেলের একসঙ্গে সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়া ভ্রমণের তথ্য বেরিয়ে এসেছে। দেশের বাইরে অবস্থানকালে তাদের অনেকের ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের ভিডিও ও স্থিরচিত্র এখন গোয়েন্দাদের হাতে। এগুলো বিশ্লেষণ করে আরও একাধিক মামলা হতে পারে।

গোয়েন্দা সূত্র জানায়, অভিনেত্রী ও মডেলদের গ্রেফতারের পর এসব প্রভাবশালী ব্যক্তির অনেকে গা-ঢাকা দিয়েছেন। লোকচক্ষুর আড়ালে থাকতে তাদের অনেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিষ্ক্রিয় রয়েছেন অথবা ফেসবুক আইডি ডিঅ্যাকটিভ করেছেন। অনেকে অনলাইনে যোগাযোগের সময় পাঠানো বিভিন্ন ছবি, কথোপকথন, অডিও ও ভিডিও বার্তা মুছতে অপর প্রান্তে থাকা তরুণীদের অনুরোধ করছেন। পরিস্থিতি বিবেচনায় তাদের কেউ কেউ দেশত্যাগের চিন্তাও করছেন। অনেকে আবার অভিযোগ থেকে বাঁচতে নেমেছেন লবিং-তদবিরে।

প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ও রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী বিভিন্ন ব্যক্তির বাসায় ঘন ঘন যাতায়াত করছেন তারা। সাক্ষাৎকালে কেউ কেউ তদবির করতে না পেরে অনলাইনে বিভিন্ন অ্যাপসের মাধ্যমে যোগাযোগের চেষ্টাও করছেন।

ঢাকার তিনটি অভিজাত হোটেলের দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রভাবশালী বেশ কয়েকজন নিয়মিত ‘গেস্ট’কে গত সপ্তাহে তারা দেখতে পাননি। যাদের সঙ্গে প্রায় সব সময় রুপালি জগতের অভিনেত্রী, মডেলসহ অনেক সুন্দরী তরুণীকে দেখা যেত। এসব সুন্দরীর অনেককে মুখ ঢেকে কিংবা বোরকা পরেও হোটেলে ঢুকতে দেখা যেত। এবারের অভিযানে প্রভাবশালী ব্যক্তিরা চলাচল সীমিত করেছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

অভিনেত্রী ও মডেলদের কেলেঙ্কারির ঘটনার এবার শেষ দেখতে চায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সেজন্য রিমান্ডে পিয়াসা ও মৌর মোবাইল ডিভাইসগুলো থেকে প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণ করছেন তারা।

ডিবি সূত্রে জানা যায়, সেখানে ‘ব্ল্যাকমেইলিং’র জন্য রাখা অন্তত ১০টিরও বেশি ভিডিওচিত্র ও অনেকগুলো স্থিরচিত্র পাওয়া গেছে। এতে পিয়াসা-মিজান, মৌ সিন্ডিকেটের অনেকের ছবি রয়েছে। পাশাপাশি অনেক প্রভাবশালীর বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আছে। তাদের বিষয়েও খোঁজখবর নিচ্ছে পুলিশ। পিয়াসা-মৌকে গ্রেফতারের পর যেসব অপরাধে তাদের সম্পৃক্ততার খবর পাওয়া গেছে- তাতে প্রভাবশালীদের ভূমিকা নিয়েও চলছে অনুসন্ধান।

সূত্র জানায়, গুলশানের হোটেল পাড়ায় নিয়মিত যাতায়াত ছিল এমন অনেক তথাকথিত মডেলও রয়েছেন গ্রেফতার আতঙ্কে। তাদের অন্তত তিনজন এখন ঢাকার বাইরে অবস্থান করছেন। ঢাকার বনানী, গুলশান, মোহাম্মদপুর, বনশ্রী এলাকায় তাদের ‘সেফ প্লেস’ হিসাবে পরিচিত কয়েকটি ফ্ল্যাট এখন ফাঁকা। গ্রেফতার আতঙ্কে তারা গা-ঢাকা দিয়েছেন। মোবাইল ফোন ও নম্বর পরিবর্তন করেছেন কেউ কেউ। 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রাজধানীর গুলশান-২ এলাকায় নিয়মিত যাতায়াত ছিল এসব অপকর্মের অন্যতম হোতা জনৈক ব্যক্তির। তিন দিন ধরে তাকে এ এলাকায় দেখা যাচ্ছে না। এছাড়া এ এলাকায় অর্চনা ও তানসিয়ারের যাতায়াতও কমে গেছে। এভাবে গুলশানপাড়ার অনেক পরিচিত মুখকে এখন দেখা যাচ্ছে না।

গোয়েন্দা সূত্র জানায়, পিয়াসার নেটওয়ার্কে ২০ থেকে ২৫ জন সুন্দরী রমণী রয়েছে। গুলশান, বনানী, বারিধারার অনেক ধনাঢ্য ব্যবসায়ী তাদের নিয়ে দেশের বাইরে ট্যুরে (প্লেজার ট্রিপ) যান। কোটি কোটি টাকা কামিয়ে ‘জিরো থেকে হিরো’ বনে গেছে চক্রটি। এছাড়া জিসান ও মিশুর চক্রে রয়েছে আরও ১০ থেকে ১২ জন। তাদের প্রতিটি পার্টিতে অংশ নিত ১৫-২০ জন। সূত্র: যুগান্তর

মুক্তসংবাদ প্রতিদিন / কে. আলম
Share on Facebook

মুক্তসংবাদ প্রতিদিন এর সর্বশেষ