a
ফাইল ছবি
ক্লাব ফুটবলে মেসি আর বার্সা ছিলো যেন এক সুতায় গাথা এক সম্পর্ক। সে সম্পর্ক ছিন্ন করে মেসি এখন পিএসজি প্লেয়ার, এতদিন বার্সেলোনার স্কোয়াডে লিওনেল মেসি ছিলেন অন্যতম আকর্ষণ। মেসি মানে বার্সা, বার্সা মানে মেসি। ভক্তদের রাত জাগার অন্যতম কারণ ছিল ফুটবল জাদুকরের বাঁ-পায়ের কারুকার্যে একটি চোখধাঁধানো গোল উপভোগ করা। সেটিতো গত হয়ে গেছে। লিওনেল মেসি এখন বার্সেলোনার নন। তিনি এখন প্যারিস সেন্ট জার্মেইয়ের।
লিওনেল মেসিকে ঘিরেই তৈরি হতো বার্সেলোনার সব পরিকল্পনা। তার উপস্থিতিতে সতীর্থদের কাজটাও হতো সহজ। কিন্তু মেসি নেই তাই বলে কি সবকিছু থেমে থাকবে? অবশ্যই না! গত শুক্রবার থেকে শুরু হয়েছে স্প্যানিশ লা লিগার ২০২১-২২ মৌসুম।
নিজেদের প্রথম ম্যাচে আজ রবিবার রাতে মাঠে নামছে কাতালানরা। বাংলাদেশ সময় আজ রাত ১২টায় ক্যাম্প ন্যুতে রিয়াল সোসিয়াদাদ বার্সার প্রতিপক্ষ। কিন্তু ন্যু ক্যাম্পে আর্ম ব্যান্ড পড়ে নামবেন না মেসি। দীর্ঘ ১৮ বছর পর মেসিহীন মৌসুম শুরু করছে বার্সেলোনা। আর্জেন্টাইন তারকা ছাড়া সাফল্য পেতে বার্সার ফুটবলারদের পরিশ্রম করতে হবে অনেক বেশি। এটি মনে করেন দলটির তরুণ ডিফেন্ডার সের্জিনো ডেস্টও।
অন্যদিকে রিয়াল সোসিয়াদ কোচ ইমানুয়েল আলগুয়াছি বলেন " বার্সোলোনা মেসিকে ছাড়া আরো শক্তিশালী এক দল তাই আমাদের আরো গোছানো ফুটবল খেলতে হবে"।
ফাইল ছবি
কাতার বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে খেলতে নামা ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার ম্যাচটি শেষ পর্যন্ত স্থগিত করা হলো। ম্যাচের পাঁচ মিনিট পার হওয়ার পর কোয়ারেন্টাইন জটিলতার কারণে বন্ধ করা হয় ম্যাচটি।
ম্যাচটি স্থগিতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে আর্জেন্টিনা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন।
বাংলাদেশ সময় রবিবার দিবাগত রাত ১টায় ব্রাজিলের ঘরের মাঠ সাও পাওলোয় শুরু হয় ম্যাচটি। কিন্তু খেলা শুরুর পাঁচ মিনিট পর হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায়। স্বাস্থ্যের ছাড়পত্র দেওয়া নিয়ে ঝামেলায় শেষ পর্যন্ত মাঠই ছেড়ে চলে গেছেন আর্জেন্টাইন ফুটবলাররা।
খেলা শুরুর আগে বাধা না দিলেও ম্যাচ শুরুর পর তৎপর হন ব্রাজিলের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা। বেশ কিছুক্ষণ আর্জেন্টিনার কোচ ও খেলোয়াড়দের মাঝে তর্ক-বিতর্ক চলে। পরে মাঠ ছেড়ে চলে যান আর্জেন্টিনার ফুটবলাররা। কিছুক্ষণ পর আর্জেন্টাইন অধিনায়ক লিওনেল মেসি মাঠে ফেরেন। এরপর তিনি বেশ কিছুক্ষণ কথা বলে আবার ড্রেসিং রুমে চলে যান। এরপরই খেলা স্থগিতের ঘোষণা আসে।
গত তিনদিন ধরেই ব্রাজিলে অবস্থান করছিল আর্জেন্টিনা ফুটবল দল। এই সময়ে তারা করেছে অনুশীলনও। কিন্তু ম্যাচ শুরুর পর কেন হঠাৎ ব্রাজিলিয়ান স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা তৎপর হলেন সেটা বুঝতে পারছেন না আর্জেন্টিনার কোচ ও সংশ্লিষ্টরা।
ছবি সংগৃহীত
নিউজ ডেস্ক: সমাজে যে কোনো ধরনের নেতৃত্বের জন্য প্রজ্ঞাই সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ। একটি জাতিকে অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির পথে পরিচালিত করতে রাজনৈতিক নেতাদের অবশ্যই প্রজ্ঞার গুণাবলী থাকতে হবে। প্রজ্ঞাবিহীন রাজনৈতিক নেতা কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি অর্জন করতে পারে না; বরং জনগণের জন্য সমস্যার সৃষ্টি করে। একটি সমাজ কেবল তখনই সমৃদ্ধি লাভ করতে পারে যখন তা সুশাসিত ও প্রাজ্ঞ নেতৃত্ব দ্বারা পরিচালিত হয়।
ইতিহাসে এমন অসংখ্য উদাহরণ আছে যেখানে একজন গতিশীল নেতার নেতৃত্বে একটি দেশ দ্রুত উন্নতি লাভ করেছে। সাম্প্রতিক ইতিহাসে মালয়েশিয়ার মাহাথির মোহাম্মদ তার একটি উৎকৃষ্ট উদাহরণ। বর্তমান বিশ্বে তুরস্কের এরদোয়ান আরেকজন প্রাজ্ঞ নেতৃত্বের দৃষ্টান্ত। বিশেষ করে তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোর উন্নয়নে নেতার রাজনৈতিক প্রজ্ঞাকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা করা হয়।
দক্ষিণ এশিয়ার ইতিহাসের দিকে তাকালে দেখা যায়, এখানে অনেক মুসলিম নেতা তাদের প্রজ্ঞাবান নেতৃত্বের মাধ্যমে জনগণের কল্যাণে কাজ করেছেন। ব্রিটিশ ভারতের রাজনৈতিক অঙ্গনে ঢাকার নবাব স্যার সলিমুল্লাহ আবির্ভূত হয়েছিলেন এবং প্রজ্ঞাবান নেতা হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করেছিলেন। মুসলিম লীগের প্রতিষ্ঠা তার রাজনৈতিক প্রজ্ঞার এক উজ্জ্বল প্রমাণ।
মোহাম্মদ আলী জিন্নাহকে দক্ষিণ এশিয়ার ইতিহাসে সর্বাধিক সফল রাজনৈতিক নেতা হিসেবে বিবেচনা করা হয়, যিনি ভারতের মুসলিমদের জন্য একটি নতুন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ইতিহাস সৃষ্টি করেছিলেন। পাকিস্তানের জন্ম তার রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ও দূরদর্শিতার ফলেই সম্ভব হয়েছিল।
বাঙলার আরেক রাজনৈতিক মেধাবী ছিলেন শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক, যিনি কলকাতার মুসলিম মধ্যবিত্ত সমাজের উত্থানে অসাধারণ অবদান রেখেছিলেন। খাজা নাজিমুদ্দিন ও হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীও রাজনৈতিক প্রজ্ঞার মহান উদাহরণ, যারা পাকিস্তান গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।
বাংলাদেশের জনগণ প্রথমবার রাজনৈতিক প্রজ্ঞার পরিচয় পেয়েছিল মেজর জিয়ার মাধ্যমে, যিনি সঠিক সময়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে পুরো জাতিকে অনিশ্চয়তা ও উদ্বেগ থেকে মুক্ত করেছিলেন। যদিও শেখ মুজিব বাঙালি জাতীয়তাবাদের উত্থানের জন্য ভূমি প্রস্তুত করেছিলেন, তবে যুদ্ধের সময় পাকিস্তান সেনাবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করে নেতৃত্ব প্রদানে ব্যর্থ হন। তার এই ভূমিকা পরবর্তীতে রাজনৈতিক বিতর্কের জন্ম দেয়। দেশ পরিচালনায়ও তিনি রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ও দূরদর্শিতার অভাবে ব্যর্থ হন। বাকশাল গঠন শেখ মুজিবের একটি বড় রাজনৈতিক ভুল হিসেবে বিবেচিত হয় এবং এর ফলে তার জীবনও ঝরে যায়।
অন্যদিকে, জিয়াউর রহমান ছিলেন বাংলাদেশের এক দূরদর্শী নেতা, যিনি একটি আধুনিক ও স্বাধীন বাংলাদেশ গঠনে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছিলেন, যেখানে বহিরাগত হুমকি থেকে মুক্তি ছিল। তার গৃহীত সংস্কার কর্মসূচি তার রাজনৈতিক প্রজ্ঞার প্রমাণ। 'বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ' ধারণার প্রবর্তন এবং বিএনপির প্রতিষ্ঠা তার প্রজ্ঞাবান নেতৃত্বের ফল। গত পাঁচ দশকের ইতিহাসে জিয়াউর রহমানকেই বাংলাদেশের একমাত্র দূরদর্শী নেতা হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
জেনারেল এরশাদ নিজেকে দেশ গড়ার একজন কর্মী হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে পারতেন, কিন্তু রাজনৈতিক প্রজ্ঞার অভাবে তিনি বাংলাদেশের রাজনীতিতে প্রথমবারের মতো ভণ্ডামির দ্বার খুলে দেন। এরশাদের পতনের পর বিএনপি বেগম খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক প্রজ্ঞার মাধ্যমে ক্ষমতায় আসে এবং রাষ্ট্র পরিচালনায় দক্ষতা প্রদর্শন করে। তবে বিএনপির কিছু রাজনৈতিক ভুলের কারণে ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে। এরপর খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক প্রজ্ঞা আবার কাজ করে এবং বিএনপি পুনরায় ক্ষমতায় ফিরে আসে।
কিন্তু পরবর্তীতে বিএনপির রাজনৈতিক ভুলভ্রান্তি বড় বিপর্যয়ে পরিণত হয় এবং তারাই এর শিকার হয়। পরবর্তী রাজনৈতিক পরিবেশ দেশের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় এবং গত পনেরো বছর ধরে শেখ হাসিনার ফ্যাসিস্ট শাসনামলে বাংলাদেশের মানুষ সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়ে।
বিএনপি ও জামায়াতের নেতাকর্মীরা এই ফ্যাসিস্ট শাসনের চরম নির্যাতনের শিকার হন। হেফাজতসহ অন্যান্য ইসলামী রাজনৈতিক দলগুলোকেও কঠোর দমন-পীড়নের সম্মুখীন হতে হয়। বাংলাদেশের জনগণ পরিবর্তনের সকল আশা হারিয়ে ফেলেছিল, কিন্তু হঠাৎ করে আল্লাহর কৃপায় একটি বিপ্লবের মাধ্যমে, যা বিপুল প্রাণহানি ও অপরিসীম কষ্টের বিনিময়ে এসেছিল, তারা আশার আলো দেখতে পায়।
ড. ইউনুসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সফলতা অর্জন করেছে এবং ড. ইউনুস দায়িত্ব পালনে যোগ্য বলেই প্রতীয়মান হয়েছেন। তবে সমস্যা রয়েছে বিপ্লবের অংশীদারদের মধ্যে, যারা দেশের সংকটময় মুহূর্তে নিজেদের দায়িত্ব ভুলে ক্ষমতার জন্য প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হচ্ছে।
দেশ অবশ্যই একটি রাজনৈতিক দলের দ্বারা পরিচালিত হওয়া উচিত এবং এটি এখন বিএনপির পালা। জনগণ প্রত্যাশা করে বিএনপির নেতৃত্ব এমন পরিপক্কতা ও রাজনৈতিক প্রজ্ঞা প্রদর্শন করবে, যা অভ্যন্তরীণ ও বহিরাগত হুমকির মুখে দেশকে রক্ষা করতে সক্ষম হবে।
বাংলাদেশের জনগণ ঐতিহাসিকভাবে স্বাধীনতাপ্রেমী এবং যারা জনগণের ইচ্ছার বিরুদ্ধে যাবে, তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে কখনও দ্বিধা করবে না। বাংলাদেশের জন্য যারা রাজনীতি করছেন, তাদের সবার এই বাস্তবতা মনে রাখা উচিত।