a
করোনাভাইরাস
গত ২৪ ঘন্টায় করোনাভাইরাসে মৃত্যু হয়েছে ৪১ জন। এ নিয়ে করোনাভাইরাসে দেশে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়াল ২৬ হাজার ৯৭২ জন।
এদিকে, গত ২৪ ঘন্টায় করোনাভাইরাসে শনাক্ত হয়েছে ১,৯৫৩ জন। এ নিয়ে দেশে মোট করোনাভাইরাসে শনাক্তের সংখ্যা ১৫ লাখ ৩২ হাজার ৩৬৬ জন।
আজ সোমবার বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদফতরের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে আরও জানানো হয়, গত ১ দিনে বাসা ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও ৪,১১২ জন করোনারোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ১৪ লাখ ৮২ হাজার ৯৩৩ জন।
উল্লেখ্য, গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষা করা হয় ২৫ হাজার ৩৮৮টি। পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ৭ দশমিক ৬৯ শতাংশ।
ফাইল ছবি
প্রতিদিন বাড়ছে করোনার সংক্রমণ। দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ দ্রুত হারে বাড়ছে এবং এই মুহূর্তে অন্তত ২৯টি জেলা করোনাভাইরাসের উচ্চ সংক্রমণের ঝুঁকিতে রয়েছে বলে জানায় স্বাস্থ্য বিভাগ। এসব জেলার মধ্যে রয়েছে ঢাকা, চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, ফেনী, চাঁদপুর, নীলফামারী, সিলেট, টাঙ্গাইল, গাজীপুর, কুমিল্লা, নোয়াখালী, মাদারীপুর, নওগাঁ, রাজশাহী ইত্যাদি। ঢাকায় সোমবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানানো হয়।
সোমবার (২৯ মার্চ) স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় বাংলাদেশে এযাবৎকালের মধ্যে সবচেয়ে বেশি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তি শনাক্ত করা হয়েছে। আর এই সময়ের মধ্যে ৪৫ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা সাংবাদিকদের বলেন, গত কিছুদিন ধরে বাংলাদেশে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ছে এবং সংক্রমণের মাত্রা ‘খুব দ্রুত বাড়ছে’। তিনি বলেন, মার্চের ১৩ তারিখে সংক্রমণের মাত্রা উচ্চ ছিল ৬টি জেলায়, ২০ তারিখে দেখা গেছে ২০টি জেলা ঝুঁকিতে আছে। আর মার্চের ২৪ তারিখে দেখা গেছে করোনাভাইরাস সংক্রমণের হার উচ্চ এমন জেলার সংখ্যা ২৯টি। তাই বোঝা যাচ্ছে, সংক্রমণের হার বাড়ছে দ্রুত।
করোনাভাইরাস থেকে ঝুঁকির মাত্রা প্রতি সপ্তাহেই বিশ্লেষণ করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। বিভিন্ন জেলা থেকে পাওয়া তথ্য, রোগীর সংখ্যা, সংক্রমণের মাত্রা- এসবের ওপর ভিত্তি করে ঝুঁকিপূর্ণ জেলা চিহ্নিত করে অধিদপ্তর। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সংক্রমণের উচ্চ হার সামাল দিতে এখন স্থানীয়ভাবে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, প্রতি জেলায় কভিড-১৯ নিয়ন্ত্রণসংক্রান্ত কমিটি রয়েছে এবং এসব কমিটি স্থানীয় প্রশাসন, পুলিশ এবং স্বাস্থ্য বিভাগের সঙ্গে মিলে সংক্রমণ ঠেকানোর জন্য এক সঙ্গে কাজ করবে।
মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, আরটিপিসিআরের পাশাপাশি এখন হাসপাতালগুলোতে অ্যান্টিজেন পরীক্ষার ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ২৮ হাজারের বেশি নমুনা পরীক্ষা করা হয় বলে সংবাদ সম্মেলনে জানান। তিনি বলেন, প্রয়োজন হলে পরীক্ষার সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে। নমুনা সংগ্রহের যেসব বুথ বন্ধ করা হয়েছিল, সেগুলোও খুলে দেওয়া হবে।
করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়ার জন্য সরকারের সবচেয়ে বড় যে অস্ত্র, সেই টিকার ঘাটতি নিয়ে আলোচনা আছে। মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা স্বীকার করেন যে যারা প্রথম ডোজ টিকা নিয়েছেন, তাদের সবাইকে দ্বিতীয় ডোজ দেবার মতো টিকার মজুদ বর্তমানে দেশে নেই। তিনি বলেন, এই মুহূর্তে সরকারের হাতে ৪২ লক্ষ টিকা মজুদ আছে। আর এপ্রিল মাসে কিছু টিকার চালান আসবে বলে সরকার আশা করছে।
সংক্রমণ বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে হাসপাতালগুলোতে ক্রমে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। এখন স্বাস্থ্য অধিদপ্তর চেষ্টা করছে যে কভিড-ডেডিকেটেড হাসপাতালের সংখ্যা আরও বাড়ানোর। তবে রোগীদের অনুরোধ জানানো হয়েছে, নিজ নিজ জেলার হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার জন্য। মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, ঢাকার বাইরে থেকে রোগীরা ঢাকায় চলে আসেন, যে কারণে ঢাকার হাসপাতালগুলোতে চাপ বাড়ে।
করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে সোমবার সরকার ১৮ দফা নতুন নির্দেশনা ঘোষণা করেছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে, সব ধরনের সামাজিক, রাজনৈতিক, ধর্মীয় অনুষ্ঠানে জনসমাগম সীমিত করা। মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরার মতে, সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি ঠেকাতে এই ১৮ দফা ‘স্ট্রিক্টলি’ অর্থাৎ কঠোরভাবে মেনে চলতে হবে। এই ১৮ দফা নির্দেশনার মধ্যে সরকার উচ্চসংক্রমণযুক্ত এলাকায় সকল ধরনের জনসমাগম নিষিদ্ধ করেছে। এ ছাড়া, পর্যটন ও বিনোদনকেন্দ্রে জনসমাগম সীমিত করার নির্দেশনাও রয়েছে এর মধ্যে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলেছে, যেসব জেলায় উচ্চসংক্রমণ রয়েছে, প্রয়োজনে সেসব জেলার সঙ্গে আন্তজেলা যোগাযোগও সীমিত করা হবে। তবে সেটি সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসন জেলার পরিস্থিতি বুঝে সিদ্ধান্ত নেবেন। এছাড়া, প্রয়োজন হলে স্থানীয়ভাবে লকডাউন আরোপ করা হতে পারে। প্রত্যেক জেলার হাসপাতালে অক্সিজেনের সুবিধা এবং অন্যান্য চিকিৎসা সুবিধা পর্যাপ্ত রয়েছে বলে দাবি করা হয় সংবাদ সম্মেলনে।
‘স্বাধীনতাযুদ্ধে ভারতের অবদান ভুলবার নয়’
বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের সময়ে ভারতের সহযোগিতা ভুলবার নয় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতাযুদ্ধে সবমিলিয়ে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান থেকে প্রায় এক কোটি শরণার্থী ভারতে আশ্রয় নিয়ে ছিলেন। ওই সময়ে ভারত সরকার শরনার্থীদের ভরণ-পোষণ দিয়েছে। যুদ্ধে অস্ত্র দিয়ে সহযোগিতা করেছে। তাই মুক্তিযুদ্ধে ভারতের সহায়তা কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করে বাংলাদেশ।
জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে আজ শুক্রবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও বাংলাদেশের সুবর্ণজয়ন্তীর ১০ম দিনে সভাপতির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
এসময় নিজের বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে ভারতের অনেকে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে যুদ্ধ করেছেন। বাংলাদেশ স্বাধীনতা হওয়ার পেছনে ভারতের অবদান ভুলবার নয়।
শেখ হাসিনা আরো বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি সৈন্যরা অত্যাচার-নিপীড়ন চালিয়েছিল। গণহত্যা, অগ্নিসংযোগহ, ধর্ষণ, লুটপাটের শিকার হয়ে বাংলাদেশ থেকে প্রায় এক কোটি মানুষ ভারতে গিয়ে আশ্রয় নেন। ভারত সেই শরণার্থীদের আশ্রয় দিয়েছে, খাদ্য দিয়েছে, চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছে। সেই সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধা যারা অংশ নিয়েছেন, সেই মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ দিয়েছে ভারত, অস্ত্র সরবরাহ করে সহযোগিতা করেছে। আমি ভারতের জনগণ ও সরকারের কাছে বাংলাদেশের জনগণ ও আমার নিজের পক্ষ থেকে অশেষ কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।