a
ফাইল ছবি
সাংবাদিক রোজিনা ইসলাম যেসব নথি কব্জায় নিয়েছিলেন, সেগুলো প্রকাশ পেলে দেশের ক্ষতি হয়ে যেত বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি আরও দাবি করেন, রোজিনাকে ‘নির্যাতন করা হয়নি’। ওই সাংবাদিক টিকা আমদানি সংক্রান্ত এমন কিছু নথি ‘সরিয়েছিলেন’, যেগুলো প্রকাশ হলে ‘দেশের ক্ষতি’ হতো।
রোজিনাকে গ্রেফতারের ঘটনা নিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অবস্থান ব্যাখ্যা করতে আজ বেলা ১১টায় সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয়েছিল। কিন্তু সচিবালয়ে কর্মরত সাংবাদিকদের সংগঠন বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএসআরএফ) উক্ত সম্মেলন বর্জন করে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী দুপুরে আগারগাঁওয়ে একনেক সভা শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে নিম্নের উত্তরগুলো দেন।
ঘটনার বিবরণ দিয়ে জাহিদ মালেক বলেন, সচিবালয়ের কর্মকর্তাদের কাছে যেটুকু জেনেছি, তাতে স্বাস্থ্য সচিবের পিএসের অনুপস্থিতিতে সোমবার দুপুরে তার কক্ষে ঢুকেছিলেন সাংবাদিক রোজিনা।
সেখানে যে ডিউটিতে ছিল, সে দেখল যে একজন ব্যক্তি ওখানে ফাইলের ছবি তুলছে, ফাইল কিছু বের করে ব্যাগে ঢুকিয়েছে, শরীরেও ঢুকিয়েছে। তখন সে চিল্লাচিল্লি করছে, আমাদের মহিলা অফিসাররা আসে; এসে তারা বলছে যে ‘আপনি কেন এসব করছেন?’ তখন তার কাছ থেকে ওই কাগজ আর ফাইলগুলো নিয়ে নিয়েছে।
মন্ত্রী যোগ করেন, এর মধ্যে পুলিশে খবর দেওয়া হয়, পুলিশ এসে বিষয়টি টেকওভার করে। এ সময় প্রথম আলোর সাংবাদিকের মোবাইল নিয়ে নেওয়া হয়। সেখানে বেশ কিছু ছবি পাওয়া গেছে।
সোমবার দুপুরের পর স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিবের একান্ত সচিব মো. সাইফুল ইসলাম ভূঞার কক্ষে রোজিনাকে প্রায় সাড়ে ৫ ঘণ্টা আটকে রাখা হয়। পরে রাত সাড়ে ৮টার দিকে তাকে শাহবাগ থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের একজন উপসচিব তার বিরুদ্ধে মামলা করেন।
সেখানে ১৮৬০ সালের দণ্ডবিধির ৩৭৯ ও ৪১১ ধারায় চুরি এবং ১৯২৩ সালের ‘অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টের’ ৩ ও ৫ ধারায় গুপ্তচরবৃত্তি ও রাষ্ট্রীয় গোপন নথি নিজের দখলে রাখার অভিযোগ আনা হয় এই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে।
এজাহারে বলা হয়েছে—রোজিনা যেসব নথির ‘ছবি তুলেছেন’, তার মধ্যে ‘টিকা আমদানি’ সংক্রান্ত কাগজপত্রও ছিল।
সেই প্রসঙ্গ টেনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, বিষয়টি দুঃখজনক। কেননা এই ফাইলগুলো ছিল টিকা সংক্রান্ত। আমরা যে রাশিয়ার সঙ্গে টিকার চুক্তি করছি, চীনের সঙ্গে টিকার চুক্তি করছি। সেগুলো নন ডিসক্লোজার (গোপন) আইটেম। আমরা রাষ্ট্রীয়ভাবে বলেছি— আমরা এটা গোপনে রাখব, এগুলো বলব না।
তিনি বলেন, সেগুলো যদি বাইরে চলে যায়, তা হলে রাষ্ট্রীয়ভাবে আমরা প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করলাম এবং আমরা টিকা নাও পেতে পারি। এতে দেশ ও দেশের মানুষের জন্য বিরাট ক্ষতি হতে পারতো। এগুলো সিক্রেট ডকুমেন্ট, বাইরে যাওয়া ঠিক হয়নি।
রোজিনা ইসলামকে সচিবালয়ে আটকে রেখে ‘শারীরিকভাবে হেনস্তা’ করা হয়েছে বলে তার স্বামী যে অভিযোগ করেছেন, সেটি অস্বীকার করেছেন জাহিদ মালেক। তিনি বলেন, যেটা শুনলাম, তাকে অনেকক্ষণ আটকিয়ে রাখা হয়েছে। তিনি নিজেই শুয়ে পড়ছেন, বসে পড়ছেন। তাকে পুলিশ নিতে পারছিলেন না। শারীরিকভাবে কোনো নির্যাতন বা আঘাত করা হয়নি। এটি সঠিক নয়।
একজন সাংবাদিক প্রশ্ন রেখেছিলেন, বর্তমান সরকার যেখানে দুর্নীতির তথ্য প্রকাশের জন্য সাংবাদিকদের পুরস্কৃত করার নিয়ম করেছে, সেখানে রোজিনার বিরুদ্ধে কেন ঔপনিবেশিক আমলের ‘অফিসিয়াল সিক্রেটস’ আইনে মামলা দেওয়া হলো?
জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমি তো আইনজ্ঞ না। আইনের বিষয়ে কিছু বলব না।
করোনাভাইরাস
গত ২৪ ঘন্টায় করোনাভাইরাসে মৃত্যু হয়েছে ৮৮ জন। এ নিয়ে করোনাভাইরাসে দেশে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়াল ২৬ হাজার ৩৬২ জন।
এদিকে, গত ২৪ ঘন্টায় করোনাভাইরাসে শনাক্ত হয়েছে ৩,৪৩৬ জন। এ নিয়ে দেশে মোট করোনাভাইরাসে শনাক্তের সংখ্যা ১৫ লাখ ৭ হাজার ১১৬ জন।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদফতরের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে আরও জানানো হয়, গত ১ দিনে বাসা ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও ৫,৯০১ জন করোনারোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ১৪ লাখ ৩৭ হাজার ৮৮৫ জন।
উল্লেখ্য, ২৪ ঘণ্টায় ৩৩ হাজার ২৫টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। নমুনা পরীক্ষায় শনাক্তের হার ১০ দশমিক ৪০ শতাংশ।
ফাইল ফটো: ইমরান খান
সিনেট নির্বাচনে একটি বড় ধাক্কার পর পার্লামেন্টের আস্থা ভোটে জয়ী হয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। বিরোধীদের বর্জন ও প্রতিবাদের মধ্যে শনিবার এই ভোটের আয়োজন করা হয়।
স্পিকার তার ঘোষণায় বলেন, আস্থা ভোটে জয়ী হতে ১৭২ ভোট দরকার হলেও ইমরান খান ১৭৮টি ভোট পেয়েছেন। চলতি সপ্তাহে সিনেট নির্বাচনে আলোচিত একটি আসনে দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইউসুফ রাজা গিলানির কাছে অর্থমন্ত্রী হাফিজ শেখ হেরে যাওয়ায় ইমরান খান নিজেই জাতীয় পরিষদে এই আস্থা ভোটের ডাক দেন।
স্পিকার বলেন, ৮ বছর আগে প্রধানমন্ত্রী আস্থা ভোটে ১৭৬টি ভোট পেলেও এবার তিনি আরও দুটি ভোট বেশি পেয়েছেন। ফল ঘোষণার পরেই স্পিকার ফ্লোর দেন আমির লিয়াকত নামের এক আইনপ্রণেতাকে। তিনি প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের তারিফ করে একটি কবিতা আবৃত্তি করেন।
আরেক আইনপ্রণেতা মাকবুল সিদ্দিকী বলেন, আস্থা ভোটে আপনি জয়ী হয়েছেন। এবার দেশবাসীর মধ্যে আস্থা ফেরানোর সময় এসেছে। ভোট চলাকালে পার্লামেন্টের বাইরে পিটিআই সমর্থকদের ইমরান খানের সমর্থনে স্লোগান দিতে দেখা গেছে।
এদিকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শহীদ খাকান আব্বাসি, আহসান ইকবাল, মুসাদ্দিক মালিক ও খুররাম দস্তগিরসহ পিএমএল-নওয়াজের নেতৃবৃন্দ এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর সমালোচনা করেন।