a
ছবি সংগৃহীত
আগামী জুলাই মাস থেকে অবৈধ বা অনিবন্ধিত মোবাইল ফোন বন্ধ হয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। মঙ্গলবার (২৩ জানুয়ারি) বিকালে সচিবালয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) রাষ্ট্রদূত চার্লস হুইটলির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।
জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, আমরা আশা করছি যে, টেকনোলজি ডেভেলপ, টেস্টিং এবং এটা অপারেশন করতে আমাদের ৫ মাস সময় লাগবে। হঠাৎ করে আমরা এমন কোনো নীতি চাপিয়ে দিতে চাই না, যাতে করে একটা অস্থিরতা তৈরি হয়।
সবাই যেন অবৈধ পথ পরিহার করে সঠিকভাবে কেনেন এ আহ্বান জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা প্রথম থেকে বলছি-অবৈধ পথে কেউ যেন ফোন না নিয়ে আসে। যাতে করে পরে তারা ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। সেজন্য আমরা একটা রিজেনেবল টাইম দিচ্ছি, আগামী তিন মাসে আমরা টেকনোলজি ডেভেলপ করবো, পরে দুই মাসে টেস্টিং করবো। আমাদের প্রত্যাশা জুলাই মাসের মধ্যে এটা অপারেশনাল করবো। সুতরাং এ সময়ের মধ্যে যেন সবাই সতর্ক থাকে।
অনিবন্ধিত ফোনগুলো রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ থাকবে জানিয়ে তিনি বলেন, এজন্যই দেরি হচ্ছে নতুন ফোনের রেজিস্ট্রেশন করা আর সেকেন্ড হ্যান্ড ফোনের নাম ট্রান্সফার করা। সূত্র: ইত্তেফাক
ছবি সংগৃহীত
কুমিল্লার বুড়িচং এলাকার ষোলনল ইউনিয়নের বাসিন্দা আবদুল হক। গত বছরের জুনে নিজ এলাকার ৪২ শতক জমি নিবন্ধন করতে দলিল লেখকদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। নিবন্ধনে ২ লাখ ২৬ হাজার টাকার খরচ হবে বলে জানানো হয়। একজনের মাধ্যমে জানতে পেরে আবদুল হক দলিল ক্যালকুলেটর সাইটে গিয়ে ওই জমির নিবন্ধন খরচ বের করেন। দেখতে পান, জমির নিবন্ধনের সরকারি খরচ মাত্র ৬৮ হাজার টাকা।
আবদুল হক গনমাধ্যমকে বলেন, ‘জমি দলিল করতে প্রথমেই মুহুরি আর দলিল লেখকের কাছে যাই। তারা বেশি খরচ দেখাচ্ছিল। দলিল ক্যালকুলেটরে দেখলাম সরকারি খরচ অনেক কম। ক্যালকুলেটরের ওয়েবসাইটে কোথায় কীভাবে এই টাকা জমা দিতে হবে সেটাও বলা ছিল। পরে নিজেই বুঝে বুঝে নিবন্ধনের সব কাজ করেছি। ৭০ হাজার টাকার মধ্যেই হয়ে গেছে।’
জমি কেনাবেচা ও দলিল হস্তান্তরের খরচ নিয়ে সাধারণ লোকজন নানাভাবে হয়রানি ও প্রতারণার শিকার হন। কোন এলাকার জমি, ক্রেতা-বিক্রেতার ধরন, দলিলের ধরন ইত্যাদি বিষয়ের ভিত্তিতে জমির নিবন্ধন খরচ ভিন্ন হয়। নিবন্ধনের খরচ আসলে কত, সেটি একজন সাধারণ মানুষের পক্ষে হিসাব করে বের করাও প্রায় অসম্ভব। পুরো প্রক্রিয়াটি সহজ করে দিয়েছে সরকারের তৈরি করা ‘দলিল ক্যালকুলেটর’।
এটি মূলত এলাকাভেদে জমি নিবন্ধনের খরচ বের করার একটি পদ্ধতি। যে-কেউ বিনা মূল্যে এটি ব্যবহার করে জমি নিবন্ধনের সরকার নির্ধারিত খরচ দেখতে পারেন।
দলিল ক্যালকুলেটরটি পাওয়া যাবে dolil.gov.bd এ ওয়েবসাইটে। ‘দলিল ক্যালকুলেটর: এক ক্লিকে দলিল রেজিস্ট্রি খরচের হিসাব’ সাইটটিতে প্রবেশ করলে দলিল ফি ক্যালকুলেটর, সম্পত্তির বাজারমূল্য, আইন ও বিধিমালা, দলিল রেজিস্ট্রি পদ্ধতি, দলিলের ফরম্যাট, নামজারি/ মিউটেশন, খারিজ, অনলাইন খতিয়ান/রেকর্ড এবং অন্য সব তথ্য এই আট ক্যাটাগরি বা বিভাগে পাওয়া যাবে। জমির নিবন্ধনসংক্রান্ত নানা ধরনের তথ্য এখানে পাওয়া যায়। ‘দলিল ফিস ক্যালকুলেটর’ নামের মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমেও এ খরচের তথ্য জানা যাবে।
দলিল ক্যালকুলেটরে দলিলের প্রকৃতি, বিভাগ, জেলা, সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের নাম, জমির অবস্থান, জমির মূল্য, স্থাপনা রয়েছে কি না, বিক্রেতার ধরন, দলিলের পৃষ্ঠা সংখ্যা ও ভাষা নির্বাচন করতে হয়। এরপর ফলাফল বাটনে চাপ দিলেই জমির সরকার নির্ধারিত নিবন্ধন খরচ কত, তা চলে আসে।
উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, খুলনা বিভাগের বাগেরহাট জেলার চিতলমারী সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে সাধারণ বিক্রেতা একটি জমির সাফকবলা দলিল করবেন। ইউনিয়ন অধিভুক্ত স্থাপনা ছাড়া এই জমির মূল্য হয় ২০ লাখ টাকা। এই জমির নিবন্ধন খরচ আসে ১ লাখ ৩০ হাজার ৭১০ টাকা। এর মধ্যে স্ট্যাম্প শুল্ক, রেজিস্ট্রেশন ফি, স্থানীয় সরকার কর, উৎস কর, ভ্যাট, হলফনামার স্ট্যাম্প, এন ফি, ই ফি এবং কোর্ট ফির কোনটিতে কত লাগবে, সেটি আলাদা করে দেখানো হয়।
দলিল ক্যালকুলেটরে শুধু নিবন্ধন খরচই দেখায় না, এই অর্থ কীভাবে পরিশোধ করতে হবে, সেই পদ্ধতিও বলা থাকে। যেমন ওপরে উল্লেখ করা জমির রেজিস্ট্রেশন ফি সোনালী ব্যাংকের কোন কোডে পে-অর্ডার করতে হবে, সেটি বলা আছে। ভ্যাটের অর্থ ট্রেজারি চালানের মাধ্যমে সোনালী ব্যাংকে কোন কোড ব্যবহার করে পরিশোধ করতে হবে, তা উল্লেখ আছে। এভাবে প্রতিটি খাতভিত্তিক নিবন্ধন খরচ পরিশোধের উপায় বলা আছে।
ক্যালকুলেটরটির উদ্ভাবক সাব-রেজিস্ট্রার মো.শাহাজাহান আলী। তিনি বর্তমানে কেরানীগঞ্জ দক্ষিণের সাব-রেজিস্ট্রার এবং আইন মন্ত্রণালয়ের ই-রেজিস্ট্রেশন প্রকল্পের সহকারী প্রকল্প পরিচালক। তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘জমির নিবন্ধন ফি কত, কী কী কাগজ লাগে, কোথায় যেতে হয়—এসব বিষয় জানতে লোকজনকে হয়রানি হতে হয়। তাই সব তথ্য এক জায়গায় করার উদ্যোগ নিই। পাইলট কার্যক্রম হিসেবে নীলফামারী জেলার জন্য এই ক্যালকুলেটর করা হয়। এখন দেশের ৬৪ জেলার জন্যই এই ক্যালকুলেটর কার্যকর।’
কোনো এলাকায় জমি কেনা বা বিক্রির আগে সেই এলাকায় জমির সরকার নির্ধারিত মূল্য কত, সেটি জানা থাকলে সুবিধা। দলিল ওয়েবসাইটটিতে মৌজা অনুযায়ী জমির দাম কত, সেটিও দেখা যায়। সম্পত্তির বাজারমূল্য দেখতে বিভাগ, জেলা ও সাব-রেজিস্ট্রার অফিস নির্বাচন করতে হয়। ফলাফলে ক্লিক করলে সম্পত্তির ‘সর্বনিম্ন বাজারমূল্য নির্ধারণ বিধিমালা’র হিসেবে মৌজা অনুযায়ী জমির দাম দেখানো হয়।
আইন মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ নিবন্ধন অধিদপ্তরের জন্য এ দলিল ক্যালকুলেটর তৈরিতে অর্থায়ন করেছে আইসিটি মন্ত্রণালয়। ওয়েবসাইটটি তৈরি করেছে মাইসফট হ্যাভেন (বিডি) লিমিটেড।
প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মোফাখখারুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, ভূমিব্যবস্থার ডিজিটালাইজেশনের ক্ষেত্রে এই দলিল ক্যালকুলেটর অন্যতম সংযোজন।
ওয়েবসাইটে জমি নিবন্ধনসংক্রান্ত যাবতীয় তথ্যই পাওয়া যাচ্ছে। সরকারের ভূমি ব্যবস্থাপনার সঙ্গে যুক্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও এই দলিল ক্যালকুলেটর থেকে সুবিধা পাচ্ছেন। চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদার সাব-রেজিস্ট্রার নফিয বিন যামান গণমাধ্যমকে বলেন, বেশ কিছু বিষয়ের ওপর জমির নিবন্ধন খরচ নির্ভর করে। এসব তথ্য মনে রাখাও কঠিন। এই ক্যালকুলেটরে সহজেই তা জানা যায়। এটির আরও বেশি প্রচার হলে জনসাধারণের ভোগান্তি অনেকটা কমবে।
সামছুর রহমান, ঢাকা/সূত্র: প্রথম আলো
ফাইল ছবি
বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের জন্য ২৪ জন বিশিষ্ট নাগরিক চলতি বছর (২০২২) একুশে পদক পাচ্ছেন। বৃহস্পতিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে একুশে পদকের জন্য মনোনীতদের নাম ঘোষণা করে।
এ বছর ভাষা আন্দোলনে দুজন, মুক্তিযুদ্ধ ক্যাটাগরিতে চারজন, শিল্পকলায় সাতজন, ভাষা ও সাহিত্যে দুজন, সমাজসেবায় দুজন, গবেষণায় চারজন (দলগতভাবে তিনজন) একুশে পদক পাচ্ছেন। এছাড়া সাংবাদিকতা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, শিক্ষায় একজন করে একুশে পদকের জন্য মনোনীত হয়েছেন।
একুশে পদক পাচ্ছেন যারা:
‘ভাষা আন্দোলন’ ক্ষেত্রে অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে পদক পাচ্ছেন মোস্তফা এম এ মতিন (মরণোত্তর) ও মির্জা তোফাজ্জল হোসেন মুকুল (মরণোত্তর)।
‘শিল্পকলা’য় পদক পাচ্ছেন জিনাত বরকতউল্লাহ (নৃত্য), নজরুল ইসলাম বাবু (মরণোত্তর) (সংগীত), ইকবাল আহমেদ (সংগীত), মাহমুদুর রহমান বেণু (সংগীত), খালেদ মাহমুদ খান (খালেদ খান) (মরণোত্তর) (অভিনয়), আফজাল হোসেন (অভিনয়), মাসুম আজিজ (অভিনয়)।
‘মুক্তিযুদ্ধ’ ক্যাটাগরিতে বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যক্ষ মো. মতিউর রহমান, সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলী (মরণোত্তর), কিউ এ বি এম রহমান, আমজাদ আলী খন্দকার পদক পাচ্ছেন।
এছাড়া ‘সাংবাদিকতা’য় এম এ মালেক, ‘বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি’তে মো. আনোয়ার হোসেন, শিক্ষায় অধ্যাপক ড. গৌতম বুদ্ধ দাশ একুশে পদক পাচ্ছেন।
‘সমাজসেবা’য় একুশে পদক পাচ্ছেন এস এম আব্রাহাম লিংকন ও সংঘরাজ জ্ঞানশ্রী মহাথে। কবি কামাল চৌধুরী ও ঝর্ণা দাশ পুরকায়স্থ ‘ভাষা ও সাহিত্য’ ক্ষেত্রে পদক পাচ্ছেন।
এছাড়া ‘গবেষণা’য় ড. মো. আবদুস সাত্তার মন্ডল এবং উচ্চ ফলনশীল জাতের ধান আবিষ্কারের জন্য দলগতভাবে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের ড. মো. এনামুল হক (দলনেতা), ড. সাহানাজ সুলতানা ও ড. জান্নাতুল ফেরদৌস একুশে পদকের জন্য মনোনীত হয়েছেন।
বাংলাদেশের বিশিষ্ট সাহিত্যিক, শিল্পী, শিক্ষাবিদ, ভাষাসৈনিক, ভাষাবিদ, গবেষক, সাংবাদিক, অর্থনীতিবিদ, দারিদ্র্যবিমোচনে অবদানকারী, সামাজিক ব্যক্তিত্ব ও প্রতিষ্ঠানকে জাতীয় পর্যায়ে অনন্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ১৯৭৬ সাল থেকে একুশে পদক দেওয়া হচ্ছে। নির্বাচিত প্রত্যেককে এককালীন নগদ চার লাখ টাকাসহ ৩৫ গ্রাম ওজনের একটি স্বর্ণপদক, রেপ্লিকা ও একটি সম্মাননাপত্র দেয়া হয়। সূত্র: ইত্তেফাক