a
সংগৃহীত ছবি
মুত্তিযুুদ্ধের চেতনা, পেশাদ্বারিত্ব ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিয়ে বর্তমানকে পর্যবেক্ষন করে ভবিষৎ সর্ম্পকে সম্মুখ ধারনা পোষণ করা বা উপলব্ধি করা সাংবাদিকদের নৈতিক দায়িত্ব। সাংবাদিক নির্যাতন দিবস পালন অনুষ্ঠানে সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন।
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন আয়োজিত আজ ২১ জুন সাংবাদিক নির্যাতন দিবস অনুষ্ঠানে সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন মিলনায়তনে এসব কথা বলেন।
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কদ্দুস অফ্রাদের সভাপতিত্বে ডিইউজের সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলম খান তপুু’র সঞ্চালনায় সাংবাদিক নির্যাতন দিবস পালন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি ইকবাল সোবাহান চেৌধুরী ও সাবেক বিএফইউজের সভাপতি মঞ্জুরুল আহসান বুলবুুলসহ জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াছমিন এবং ওমর ফারুক ।
অন্যান্যের মাঝে উপস্থিত ছিলেন বিএফইউজের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব আবদুুল মজিদ ও বঙ্গবন্ধু সাংবাদিক পরিষদের সদস্য সচিব মুহাম্মদ আবুু সাঈদ (বিএসএস) এবং ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খাইরুল আলম, জাতীয় প্রেসক্লাবের কোষাধ্যক্ষ, শাহেদ চৌধুরীসহ ডিইউজের অন্যান্য নেতৃবৃৃন্দ।
এসময় সাংবাদিক নেতা ইকবাল সোবাহান চৌধুরী তার বক্তব্যে বলেন, ১৯৭১ সালে পাকিস্তানী রাজাকার বাহিনী সাংবাদিকদের উপর হামলা চালিয়ে বর্বর নির্যাতন ও হত্যাকান্ড চালিয়ে ছিল। সেই একইভাবে ১৯৯২ সালের ২১ জুন আজকের এই দিনে তৎকালীন সরকারের মদত পুুষ্ট পুুলিশ যেভাবে সাংবাদিকদের উপর হামলা করে আহত করেছিল তা একাত্তরের পূন:রাবৃত্তি যা স্বাধীন দেশ হিসেবে এটি কাম্য নয়।
তিনি আরও বলেন, বর্তমান সরকার মুত্তিযুদ্ধের চেতনার সরকার এবং সাংবাদিক বান্ধব সরকার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সকল ক্ষেত্রে সচ্ছতা ফিরিয়ে আনতে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন, তারই ধারাবাহিকতায় সাংবাদিক এবং গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও সচ্ছতা ফিরিয়ে আনতে নানাবিধ কর্মসূচি হাতে নিয়েছেন আশা করি তা খুব দ্রুত বাস্তবায়ন হবে। তাই সাংবাদিকদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে এবং পেশাদ্বারিত্ব ফিরিয়ে আনতে হবে।
অপর এক বক্তব্যে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল বলেন, সাংবাদিকতা শিক্ষিত মানুষের পেশা, আর ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন পেশাদারিত্বের সংগঠন। এই সংগঠনের যে নেতা হয়ে আসবে তাকে ইউনিয়নের কার্যক্রম সম্পর্কে জানতে হবে। তার পাশাপাশি ইতিহাস সম্পর্কে সম্মুখ ধারণা থাকতে হবে এবং পেশাদারিত্ব ফিরিয়ে আনতে সাংবাদিককে পেশাদার হতে হবে। আমরা যদি সক্রিয় হই তাহলে ইউনিয়নকে কেউ বিক্রি করতে পারবে না।
এসময় জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, জাতীয় প্রেসক্লাবে ঢুকে সাংবাদিকদের উপর হামলা করে ৫০ জন সাংবাদিককে আহত করা হয়েেছে এটি লজ্জাস্কর।
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সংগ্রামী সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ সভাপতির বক্তব্যে বলেন, যে সময়ের ঘটনা তখন আমি তরুণ রিপোর্টার পার্লামেন্টে ছিলাম। তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে ২১শে জুনের হামলার কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, অন্ধকারে সাংবাদিকদের দেখে নাই।
তিনি আরও বলেন, তৎকালীন সাংবাদিকদের উপর হামলার যে তদন্ত হয়েছিল তা প্রকাশ করার জন্য ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের পক্ষ থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ে স্বারকলিপি দেয়া হবে যাতে করে গণসম্মুখে এটি প্রকাশ করা হয়। আজকের এই সাংবাদিক নির্যাতন হামলা দিবসটি সারা দেশে পালিত হচ্ছে। আগামীতে দিবসটি ব্যাপকভাবে পালন করা হবে।
ফাইল ছবি: ম্যাথিউ মিলার
বাংলাদেশ সরকার বিতর্কিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পরিবর্তনের যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তাকে স্বাগত জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন। একই সঙ্গে আইনটিকে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন করারও আহ্বান জানিয়েছে।
সোমবার মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে যুক্তরাষ্ট্রের এমন অবস্থানের কথা জানান দেশটির মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার।
এ সময় তিনি আইন সংস্কার, মত প্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষায় বাংলাদেশ সরকারের দীর্ঘদিনের প্রতিশ্রুতিকে স্বাগত জানান।
প্রেস ব্রিফিংয়ে একজন সাংবাদিক বাংলাদেশে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সংশোধন করে নতুন সাইবার নিরাপত্তা আইনের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের মূল্যায়ন সম্পর্কে জানতে চান। জবাবে ম্যাথিউ মিলার বলেন, বাংলাদেশের মন্ত্রিপরিষদ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তাকে আমরা স্বাগত জানাই।
তিনি বলেন, আগেও আমরা বলেছি, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনকে সমালোচকদের গ্রেফতার, আটক ও তাদের কণ্ঠকে স্তব্ধ করে দেওয়ার জন্য ব্যবহার করা হয়েছে। নতুন সাইবার নিরাপত্তা আইনকে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন করতে আইনটিকে রিভিউ করার জন্য সব পক্ষকে সুযোগ দিতে এবং তাদের মতামত এতে তুলে ধরতে বাংলাদেশ সরকারকে আমরা উৎসাহিত করছি।
ব্রিফিংয়ে আরেক সাংবাদিক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একজন আত্মস্বীকৃত খুনির বিষয়ে বলেন, একজন খুনি এখন যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছে। তাকে বাংলাদেশের হাতে ফেরত দেওয়া সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে ম্যাথিউ মিলার বলেন, প্রত্যাবর্তন বিষয়ে আমি কোনো মন্তব্য করব না।
ম্যাথিউ মিলারকে আবারও প্রশ্ন করে ওই সাংবাদিক জানতে চান, সম্প্রতি বাংলাদেশ সফর করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের বেসামরিক নিরাপত্তা, গণতন্ত্র ও মানবাধিকার বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি উজরা জেয়া এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু। প্যাসিফিক জোন এবং বাংলাদেশ নিয়ে সেখানে কোনো আলোচনা হয়েছে কিনা?
এ প্রশ্নের জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র বলেন, এ বিষয়ে যে বিবৃতি দেওয়া হয়েছে তার বেশি আমার কাছে কোনো তথ্য নেই। ওইসব মিটিংয়ের পরই আমরা সেই বিবৃতি দিয়েছি।
এর আগে সোমবার মন্ত্রিসভা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সংস্কার করে নতুন একটি আইন করার প্রস্তাব অনুমোদন দেয়।
সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন’ নামটি পরিবর্তন করে তার বদলে নতুন নাম হবে ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন’। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অধিকাংশ ধারা নতুন আইনেও থাকবে। তবে বিতর্কিত বিভিন্ন ধারায় পরিবর্তন আনা হচ্ছে বলে দাবি করা হয়।
যেসব ধারা নিয়ে বেশি বিতর্ক ছিল, কয়েকটি ক্ষেত্রে সেগুলোর সাজা কমিয়ে আনা হবে। যেমন- ‘জামিন অযোগ্য’ কয়েকটি ধারাকে করা হয়েছে ‘জামিন যোগ্য’।
এ ছাড়া মানহানি মামলায় কারাদণ্ডের বিধান বাদ দিয়ে রাখা হবে শুধু জরিমানার বিধান। ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে সাজা কমানো হবে। সূত্র: যুগান্তর
ফাইল ছবি: বক্তব্য রাখছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু
নির্বাচন যত পিছিয়ে যাবে সংকট তত তীব্র হবে উল্লেখ করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, ‘আমরা বর্তমান সরকারের কাছে খুব বেশি কিছু প্রত্যাশা করি না। ছোট্ট একটি প্রত্যাশা আছে। দীর্ঘ ১৫ থেকে ২০ বছর ধরে দেশের মানুষ ভোট দিতে পারে না। ড. মুহাম্মদ ইউনুস জ্ঞান গরিমা এবং কর্মের জন্য আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত একজন ব্যক্তি। তিনি নির্বাচন কবে হবে এই কথাটা যতদিন জাতিকে জানাতে না পারবেন ততদিন নানান বিতর্ক তৈরি হবে। এই বিতর্ক সৃষ্টিতে সরকারের ভূমিকা থাক এটা আমরা প্রত্যাশা এবং পছন্দ করি না।’
আজ শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ নাগরিক অধিকার আন্দোলন আয়োজিত প্রতীকী প্রতিবাদ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অবিলম্বে গ্রহণযোগ্য ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন করে নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণার দাবিতে এ সমাবেশ হয়।
দুদু বলেন, ‘এক মাসে কিছু হয় না। একটা সন্তান জন্ম দিতেও নয় মাস লাগে। এক মাসে যদি কোনো সন্তান আনতে হয় সেটা হয় মৃত। ১৬টি বছর এদেশের মানুষ রক্ত দিয়েছে। ১৬টি বছর এদেশের ছাত্র, শ্রমিক, কৃষক গুম ও নিখোঁজ হয়েছে। ১৬টি বছর জেল খেটেছে। এক মাসের আন্দোলনের কথা সব বিবেচনায় যদি এনে থাকেন সেটা ঠিক হয়নি। এজন্য যত তাড়াতাড়ি নির্বাচন করা সম্ভব হবে তত তাড়াতাড়ি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব। যত তাড়াতাড়ি নির্বাচন করা সম্ভব হবে, তত তাড়াতাড়ি নির্বাচিত সরকার দেশ পরিচালনায় তার উপযুক্ততা প্রমাণ করতে পারবে। এটাই আমাদের মাথায় রাখতে হবে। সেদিকেই আমি সরকারকে আহ্বান করি। কারণ, এই সরকার আমাদের সরকার। এই সরকার ব্যর্থ হলে বাংলাদেশের স্বাধীনতা গণতন্ত্র বিপন্ন হবে। সেজন্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সিদ্ধান্ত নিয়ে নির্বাচন দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।’
তিনি বলেন, ‘বাজারে আগুন লেগে গেছে। দ্রব্যমূল্য এতটাই বেড়েছে যে মানুষ অস্বস্তিতে পড়েছে। নতুন সরকার আসার পরে এই অবস্থা হবে সেটা কেউ প্রত্যাশা করে নাই। মানুষ প্রত্যাশা করেছিল, জিনিসপত্রের দাম কমবে। সংস্কার সরকার করবে সে সংস্কার পরবর্তী সরকার সংসদে এসে অনুমোদন করবে।’
দুদু বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে মিলেমিশে চলাটাই এ সরকারের সাফল্যের একটি কারণ হতে পারে। দূরত্ব বাড়লে দেশের জন্য, গণতন্ত্রের জন্য, স্বাধীনতার জন্য বিপদ হতে পারে।’
প্রতীকী সমাবেশে বাংলাদেশ নাগরিক অধিকার আন্দোলনের আহ্বায়ক এম জাহাঙ্গীর আলম সভাপতিত্ব করেন এবং সদস্য সচিব ইঞ্জিনিয়ার মোফাজ্জেল হোসেন হৃদয় সঞ্চালনা করেন।
এছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বিএনপির চেয়ারপাসন উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সালাম, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক জেড খান মো. রিয়াজউদদীন নসু, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ ও জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য প্রিন্সিপাল শাহ মুহাম্মদ নেছারুল হক। সূত্র: বিডি প্রতিদিন