a
ফাইল ছবি: শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি বিমান শেখ হাসিনা ও তার ছোট বোন শেখ রেহানাকে নিয়ে নিয়ে দিল্লির কাছে গাজিয়াবাদের হিন্ডন বিমানঘাঁটিতে অবতরণ করে। সেদিন সন্ধ্যায় ওই বিমানঘাঁটিতে তাদের স্বাগত জানান ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল।
তার পরদিন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর দেশের পার্লামেন্টে জানান, ভারত সরকারের কাছে শেখ হাসিনা ‘সাময়িকভাবে’এ দেশে আসার অনুমোদন চেয়েছিলেন এবং তা মঞ্জুর হওয়ার পরই তিনি ভারতের মাটিতে পা রেখেছেন।
সেই থেকে শেখ হাসিনা এখনও পর্যন্ত ভারতেই আছেন। যতদূর জানা যাচ্ছে দিল্লির উপকণ্ঠে একটি আধাসামরিক বাহিনীর অতিথিনিবাস বা ‘সেফ হাউসে’ই দুই বোনকে একসঙ্গে রাখা হয়েছে। তবে এই মুহূর্তে তাদের ঠিকানা কী, সেটা সরকারিভাবে কখনওই প্রকাশ করা হয়নি।
শেখ হাসিনা ঠিক কোন ‘ইমিগ্রেশন স্ট্যাটাসে’ ভারতে রয়েছেন, সে ব্যাপারেও এখনও পর্যন্ত ভারত সরকার সম্পূর্ণ নীরব রয়েছে।
অর্থাৎ তিনি কোনও বিশেষ ভিসায় ভারতে অবস্থান করছেন, না কি তাকে রাজনৈতিক আশ্রয় (পলিটিক্যাল অ্যাসাইলাম) দেওয়া হয়েছে – এ ব্যাপারে আনুষ্ঠানিকভাবে ভারত সরকার আজ পর্যন্ত একটি শব্দও খরচ করেনি।
এই কারণেই প্রশ্ন উঠছে, ভারতে এই মুহূর্তে তার অবস্থানের ইমিগ্রেশন (অভিবাসন)-গত বৈধতাটা ঠিক কী এবং সেই স্ট্যাটাস কতদিন পর্যন্ত বৈধ থাকতে পারে?
দিল্লিতে সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে বিবিসি বাংলা এই প্রশ্নের যে জবাব পেয়েছে তা এরকম- বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ হাসিনার যে ‘ডিপ্লোম্যাটিক/অফিশিয়াল’ পাসপোর্ট ছিল তা এখনও বৈধ এবং সেই পাসপোর্টের সুবাদে তিনি অন্তত দেড় মাস কোনও ভিসা ছাড়াই অনায়াসে ভারতে অবস্থান করতে পারেন।
ফলে যদি-না এর মধ্যে সেই পাসপোর্ট ‘রিভোকড’ বা প্রত্যাহৃত হয়, তাহলে এই সময়সীমার মধ্যে অন্তত ভারতে তার বর্তমান অবস্থান সম্পূর্ণ আইনসম্মত, ভারতের এ ক্ষেত্রে আলাদা করে কোনও ব্যবস্থা নেওয়ারও প্রয়োজনও নেই।”
ভারতীয় কর্মকর্তারা বলছেন, শেখ রেহানার ক্ষেত্রে অবশ্য এই জটিলতাটুকুও নেই, কারণ তিনি ব্রিটেন বা যুক্তরাজ্যের পাসপোর্টধারী – ফলে সাধারণ ‘ভিসা অন অ্যারাইভালে’ই (ভারতের মাটিতে পা রাখার পর ব্রিটিশ নাগরিকদের যে ভিসা মঞ্জুর করা হয়, তিনি কার্যত যতদিন খুশি ভারতে থাকতে পারেন।
শেখ হাসিনার ভারতে বর্তমানের অবস্থানের ইমিগ্রেশন সংক্রান্ত বিষয়টিকেই এই প্রতিবেদনে ব্যাখ্যা করা হয়েছে।
ভারত সরকার যা বলছে-
গত ১৬ অগাস্ট (শুক্রবার) বিকেলে দিল্লিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে ঠিক এই বিষয়টি নিয়েই মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়ালকে নির্দিষ্ট প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছিল।
সে দিন তার কাছে জানতে চাওয়া হয়, “প্রায় দু’সপ্তাহ হল বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিল্লিতে অবতরণ করেছেন। আপনি কি আমাদের বলতে পারেন তার এই অবস্থানের (ইমিগ্রেশন-গত) স্ট্যাটাসটা কী ... অর্থাৎ তিনি কি নিয়মিত ভিসায় এ দেশে আছেন? না কি তিনি রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করেছেন? না কি তাকে কোনও ধরনের গৃহবন্দি বা অন্তরীণ অবস্থায় (ডিটেনশনে) রাখা হয়েছে?”
“প্রশ্নটা এই কারণেই করা, যে আমরা নানা ধরনের পরস্পরবিরোধী সংকেত পাচ্ছি। তার কন্যা (সাইমা ওয়াজেদ পুতুল) টুইট করেছেন যে তিনি মা-র সঙ্গে দেখা করতে পারেননি। আবার এর পাশাপাশি, আমেরিকায় অবস্থানরত তার ছেলের (সজীব ওয়াজেদ জয়) মাধ্যমে শেখ হাসিনা বিবৃতিও জারি করেছেন। ফলে শেখ হাসিনার ভারতে অবস্থানের প্রকৃত স্ট্যাটাস নিয়ে যে বিভ্রান্তি তৈরির অবকাশ হচ্ছে, তার বদলে ভাল হয় যদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আমাদের জানায় ঠিক কোন শর্তের অধীনে তিনি এ দেশে রয়েছেন।”
যে সাংবাদিক এই প্রশ্নটি করেছিলেন, তিনি শেখ হাসিনাকে ‘বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী’ বলে উল্লেখ করেছিলেন। মুখপাত্র কিন্তু তার জবাব দেওয়ার সময় প্রথমেই স্পষ্ট করে দেন, তিনি ‘সাবেক প্রধানমন্ত্রী’কে নিয়ে কথা বলছেন!
রণধীর জয়সওয়াল তখন বলেন, “আমরা গত সপ্তাহেও এই বিষয়টি ব্যাখ্যা করেছিলাম যে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর ভারতে আসার বিষয়টি অনুমোদন করা হয়েছিল খুব স্বল্প সময়ের নোটিশে।”
“এই পরিস্থিতি এখনও ক্রমাগত পাল্টাচ্ছে (‘ইভলভিং’)। এই মুহূর্তে অন্তত তার (শেখ হাসিনার) পরিকল্পনা নিয়ে আমাদের নতুন করে কিছু জানানোর নেই”, বলেন তিনি।
পুলিশের ১২ কর্মকর্তাকে ডিএমপিতে বদলিপুলিশের ১২ কর্মকর্তাকে ডিএমপিতে বদলি
১৬ অগাস্ট মুখপাত্রের এই বক্তব্য ছিল ঠিক তার দশদিন আগে (৬ অগাস্ট) পার্লামেন্টে করা পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের বক্তব্যের হুবুহু প্রতিধ্বনি।
সে দিন মি জয়শঙ্কর সভায় জানিয়েছিলেন, শেখ হাসিনা ৫ই অগাস্ট পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর “খুব অল্প সময়ের নোটিশে তখনকার মতো (‘ফর দ্য মোমেন্ট’) ভারতে আসার জন্য অনুমোদন (‘অ্যাপ্রুভাল’) চান। একই সঙ্গে (শেখ হাসিনার বিমানের জন্য) ফ্লাইট ক্লিয়ারেন্সের অনুমতিও চাওয়া হয় বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের তরফে।”
বাংলাদেশের পরিস্থিতি বর্ণনা করার জন্য মি জয়শঙ্কর সে দিনও এই ‘ইভলভিং’ বা পরিবর্তনশীল শব্দটি ব্যবহার করেছিলেন।
ভারতের সরকারি অবস্থানে যে মাঝের এই কয়েকদিনে এতটুকুও পরিবর্তন হয়নি, তা এই ধরনের বক্তব্য থেকেই স্পষ্ট।
এরপরও মূল প্রশ্নটা থেকেই যাচ্ছে, তাহলে শেখ হাসিনা ভারতে এই মুহুর্তে ঠিক কীসের ভিত্তিতে আছেন?
দিল্লিতে একাধিক শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা আভাস দিয়েছেন, ভারতে শেখ হাসিনার এই মুহুর্তে অবস্থানের ভিত্তিটা হলো ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত ‘সংশোধিত ট্র্যাভেল অ্যারেঞ্জমেন্ট’।
দুই দেশের শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদি সরকারের মধ্যে ঢাকাতে এই সমঝোতা স্বাক্ষরিত হয়েছিল ২০১৮ সালের ১৫ জুলাই।
ভারতের পক্ষে ওই সমঝোতাপত্রে সই করেছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন বিশেষ সচিব (বাংলাদেশ ও মিয়ানমার) ব্রজরাজ শর্মা। আর বাংলাদেশের পক্ষে স্বাক্ষরকারী ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিরাপত্তা পরিষেবা বিভাগের তখনকার সচিব ফরিদউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী।
প্রাথমিকভাবে পাঁচ বছর মেয়াদী এই সমঝোতাটি তারপর নিয়মিত ব্যবধানে নবায়ন করার কথা, যা এ বছরের গোড়ার দিকে করাও হয়েছে।
ওই সমঝোতাপত্রের ১(এ) ধারাতেই পরিষ্কার উল্লেখ করা আছে, উভয় দেশের ডিপ্লোম্যাটিক ও অফিশিয়াল পাসপোর্টধারীদের ৪৫ দিনের মেয়াদে ভিসা ছাড়াই বসবাসের জন্য (‘ভিসা ফ্রি রেজিম’) থাকতে দিতে দুই দেশ পারস্পরিকভাবে রাজি হয়েছে।
অর্থাৎ কি না, এই সমঝোতা অনুযায়ী বাংলাদেশের ডিপ্লোম্যাটিক/অফিশিয়াল পাসপোর্টধারীরা ভারতে ভিসা ছাড়াই ৪৫ দিন থাকতে পারবেন- আবার অন্যদিকে ভারতের ওই বিশেষ ধরনের পাসপোর্টধারীরা বাংলাদেশেও ঠিক একই সুবিধা পাবেন।
প্রসঙ্গত, রাষ্ট্র বা সরকারের যে পদাধিকারীদের কূটনৈতিক বা সরকারি কোনও প্রয়োজনে বিদেশে সফর করতে হয়, তাদেরই এই ‘ডিপ্লোম্যাটিক’ বা ‘অফিশিয়াল’ বা ‘সার্ভিস’ পাসপোর্ট ইস্যু করা হয়ে থাকে। - বিবিসি বাংলা
সংগৃহীত ছবি
বাংলাদেশে বর্তমানে করোনায় সংক্রমিত রোগীদের মধ্যে ৯৮ শতাংশের শরীরে ডেলটা ধরন পাওয়া গেছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) এক গবেষণা প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে।
আজ বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিএসএমএমইউতে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য ও জিনোম সিকোয়েন্সিং রিসার্চ প্রজেক্টের সুপারভাইজার শারফুদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, দেশের ৮ বিভাগ থেকে করোনার ৩০০ নমুনা সংগ্রহ করে জিনোম সিকোয়েন্সিং করে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।
উপাচার্য বলেন, ডেলটা অতি সংক্রামক ধরন। এ থেকে সুরক্ষা পেতে টিকা নিতে হবে। টিকার লাভ হলো, জটিলতা কম হয়। এতে মৃত্যুহার কমে যাবে। তবে সুরক্ষার জন্য মাস্ক পরতে হবে।
গবেষণায় অন্তর্ভুক্ত করোনায় আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে ৫৩ শতাংশ পুরুষ। ৯ মাস বয়স থেকে ৯০ বছর বয়সী রোগী গবেষণায় অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। তবে ৩০ থেকে ৩৯ বছর বয়সী রোগীর সংখ্যা বেশি ছিল। গত ২৯ জুন থেকে ৩০ জুলাই পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত রোগীদের নমুনা সংগ্রহ করে এই গবেষণা করা হয়। এতে দেখা যায়, মোট সংক্রমণের প্রায় ৯৮ শতাংশ ডেলটা ভেরিয়েন্ট। আর ১ শতাংশ বিটা ভেরিয়েন্ট।
গবেষণার প্রথম ১৫ দিনে এই বিটা ভেরিয়েন্ট ছিল ৩ শতাংশ। এ ছাড়া এক করোনা রোগী পাওয়া গেছে, যিনি মরিসাস ভেরিয়েন্ট অথবা নাইজেরিয়ার ভেরিয়েন্টে আক্রান্ত। তবে বিষয়টি নিয়ে এখনো তদন্ত চলছে।
ভারতে শনাক্ত ভেরিয়েন্টটি ডেলটা ভেরিয়েন্ট এবং দক্ষিণ আফ্রিকায় শনাক্ত ভেরিয়েন্টটি বিটা ভেরিয়েন্ট হিসেবে পরিচিত।
গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছে, চলতি বছরের জানুয়ারিতে দেশে যুক্তরাজ্যে শনাক্ত আলফা ভেরিয়েন্টে সংক্রমণের হার বেশি ছিল। মার্চ মাসের প্রতিবেদন অনুসারে, ওই সময় বিটা ভেরিয়েন্টের সংক্রমণের হার বেশি ছিল।
করোনার এই জিনোম সিকোয়েন্সিং গবেষণার প্রধান গবেষক বিশ্ববিদ্যালয়টির অ্যানাটমি বিভাগের চেয়ারম্যান ও জেনেটিকস অ্যান্ড মলিকিউলার বায়োলজির অধ্যাপক লায়লা আনজুমান বানু। সহযোগী গবেষক ফার্মাকোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান ও সহ–উপাচার্য (শিক্ষা) এ কে এম মোসারফ হোসেন। এ ছাড়া ১৪ জন গবেষক এই গবেষণায় অংশ নিয়েছেন। সূত্রঃ প্রথম আলো
ফাইল ছবি: ডা. মুরাদ হাসান এমপি
মাথায় সিলিং ফ্যান ভেঙ্গে পড়ে আহত হয়েছেন সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান এমপি। এতে তার কপালে তিনটি সেলাই করতে হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার দৌলতপুর গ্রামের নিজ বাড়িতে এ দুর্ঘটনা ঘটে। তবে তার আঘাত আশঙ্কাজনক নয় বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
সরিষাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) ডা. দেবাশীষ রাজবংশী জানান, রাত ৮টার দিকে দুর্ঘটনার খবর পেয়ে আমি তার বাড়িতে যাই। ফ্যান পড়ে তার কপালের ডান দিকে কেটে গেছে। এতে তার কপালে তিনটি সেলাই করা হয়েছে। তবে তার আঘাত আশঙ্কাজনক নয়। তার চিকিৎসা বাড়িতেই চিকিৎসাধীন করা হচ্ছে।