a
ফাইল ছবি
আবহাওয়া খারাপ থাকায় সাগরে উত্তাল অবস্থা বিরাজ করছে। যার ফলে এলএনজি খালাসে বিঘ্ন ঘটায় প্রতিদিন অন্তত ৪০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস পাইপলাইনে সরবরাহ করা সম্ভব হবে না।
এ কারণে আজ সোমবার (১৪ জুন) থেকে আগামী বুধবার (১৬ জুন) পর্যন্ত তিন দিন আবাসিক, শিল্প, বিদ্যুৎ ও বাণিজ্যিক কাজে গ্যাস সরবরাহ ব্যাহত হবে।
তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কম্পানি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
এ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আগামী তিন দিন অর্থাৎ ১৬ জুন পর্যন্ত সাগরে বৈরী আবহাওয়ার কারণে এলএনজি সরবরাহে বিঘ্ন ঘটার ফলে গ্যাস সরবরাহে বিঘ্ন বা স্বল্প চাপ বিরাজ করবে।
তিতাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলী ইকবাল মো. নুরুল্লাহ এ বিষয়ে বলেন, 'বৈরী আবহাওয়ার কারণে এলএনজি ঢুকতে পারছে না। আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী তিন দিন আবহাওয়া খারাপ থাকবে। ফলে এলএনজি নামাতে পারবে না। এ কারণেই আগামী তিন দিন সারা দেশেই গ্যাসের স্বল্প চাপ বিরাজ করবে।'
এদিকে বিষয়টি নিয়ে তিতাসের এমডি বলেন, 'এটি মানুষের জন্য খুবই কষ্টদায়ক হবে। তার পরও আমাদের কিছু করার নেই।'
প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন । ফাইল ছবি
করোনা ভাইরাসের ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট রোধে ঈদুল ফিতরের পর চলমান লকডাউন আরও এক সপ্তাহ বাড়তে পারে। আগামী ১৬ মে এই সিদ্ধান্ত জানানো হবে বলে জানিয়েছেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন।
মঙ্গলবার গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, করোনার ভাইরাসের সংক্রমণের বিস্তার রোধে আমাদের পরিকল্পনা আছে আর এক সপ্তাহ লকডাউন বাড়ানোর। দেশে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া গেছে। এটা ঝুঁকির মধ্যে ফেলতে পারে।
জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমাদের সবাইকে মাস্ক পরতে হবে। মাস্ক পরলেই নিরাপদ, আর না পরলে বিপদ-এই কথাটি মাথায় রাখতে হবে। করোনা সংক্রমণ রোধে দেশে গত ৫ এপ্রিল থেকে লকডাউন চলছে। করোনা ভাইরাসের কারণে ঈদে লঞ্চ-ট্রেন এবং দূরপাল্লার বাস বন্ধ রাখা হয়েছে।
ছবি সংগৃহীত
গতকাল সকাল সাড়ে নয়টায় রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ভূমিকম্প হয়। ভূমিকম্পটি ৫.২ মাত্রার হওয়ায় ক্ষয়ক্ষতির তেমন খবর পাওয়া যায়নি। তবে ৬ বা তার অধিক কম্পন হলে খুদ ঢাকা শহরেই অনেক ক্ষয়ক্ষতি হতো বলে বিশেষজ্ঞদের ধারণা।
ভূতাত্ত্বিকদের মতে, রাজধানী ঢাকা শহর মাঝারি ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে রয়েছে। অপরিকল্পিত নগরায়ন এবং বিল্ডিং কোড না মানা এর অন্যতম বড় কারণ। ইতিপূর্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. সৈয়দ হুমায়ুন আকতার ও অধ্যাপক মো. জিল্লুর রহমানসহ অনেকের মতে, ভূমিকম্পের উৎসগতভাবে ঢাকা 'মধ্য' ঝুঁকিতে রয়েছে। আর ঝুঁকিটা বাড়ার অন্যতম কারন অবকাঠামোগত ত্রুটির কারণে। এই ঢাকা শহরে ৭ মাত্রার ভূমিকম্প হলে ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।
উল্লেখ্য, তুরস্ক ও সিরিয়ার ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতির অন্যতম কারন সেদেশগুলোতেও যথাযথ বিল্ডিং কোড না মানার কারণে। আর এবিষয়গুলো সামনে এসেছিল বড় আকারের দুর্ঘটনা ঘটার পর। আর আমাদের দেশে ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে বিল্ডিং কোড না মানার ব্যাপকতর অভিযোগ রয়েছে। প্রতিটি সংস্থাকে ম্যানেজ করে বেশিরভাগ সুউচ্চ ভবনগুলো গড়ে উঠেছে।
আবার সেসব সংস্থার লোকজন পরিবর্তন হলে তাদের স্থলে আসীন ব্যক্তিদেরও সেসব দুর্বল ভবনগুলো থেকে বছরকে বছর ম্যানেজের উপর দিয়েই চলে যাচ্ছে। আর বেশিরভাগ ডেভোলপার কোম্পানিগুলো থাকে সব সময় ধরা ছোঁয়ার বাইরে। তারা কোন রকম বিল্ডিং তৈরি করে বিক্রি করে হয়ে যায় উধাও। আর এসব লক্ষ্য করা যায় যখন কোন বড় রকমের দুর্ঘটনা ঘটে, তাদের আর খুঁজে পাওয়া যায়না।
এদিকে নগর পরিকল্পনাবিদরা মনে করেন, ঢাকাসহ অন্যান্য ঘনবসতি শহরগুলোতে ভূমিকম্প বা বড় আকারের কোন দুর্যোগ দেখা দিলে দুর্যোগ পরবর্তী উদ্ধারকার্য চালানো কষ্টসাধ্য হয়ে উঠবে। ফলে এতে ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতির সম্ভাবনা থেকেই যায়।
এমনিতেই ঢাকার বেশির ভাগ ভবনগুলোতে ভূমিকম্প প্রতিরোধ ব্যবস্থা একেবারেই দূর্বল। অন্যদিকে পুরান ঢাকার ভবনগুলো গা ঘেঁষাঘেষি করে তৈরি করা এবং রাস্তাগুলোও সরু। ছোটখাটো যানবাহন চলাচল করা দূরুহ ব্যাপার। তাই সামান্য দুর্ঘটনাতেও সেখানে উদ্ধারমূলক কর্মকান্ড চালানো কষ্টসাধ্য হয়ে যায়। বসিলা, বনশ্রী, আফতাবনগরসহ ঢাকা শহরের বেশীরভাগ সুউচ্চ ভবনগুলো জলাভূমি ভরাট করে বালি বা কাদামাটির উপর তৈরি করার কারণে ঝুঁকির মাত্রা এক্ষেত্রে অনেক বেশি।
২০০৯ সালে জাইকা ও সমন্বিত দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মসূচী(সিডিএমপি) এক জরিপে উল্লেখ করেছে যে, ঢাকায় ৭ বা তার চেয়ে বেশি মাত্রার ভূমিকম্প হলে শহরের প্রায় ৭২ হাজার ভবন ভেঙ্গে পড়বে এবং ১ লাখ ৩৫ হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্থ হবে। প্রায় ১৪ বছরে নিয়ম না মেনে তৈরি করা আরও অনেক বিল্ডিং হয়েছে, সেসব যোগ করলে ক্ষতিগ্রস্থ ভবন সংখ্যা কত দাঁড়ায় তা সহজেই অনুমেয়। সুধীজন ও বিশেষজ্ঞগণ মনে করেন, ভূমিকম্পসহ অন্যান্য দুর্যোগ সময়গুলোতে যাতে ক্ষতির পরিমাণ সহনীয় থাকে সে ব্যাপারে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্নভাবে আলোচনা ও টক-শোতে পরামর্শ দিলেও দৃশ্যমান কোন পরিবর্তন চোখে পরেনি।
বিশেষত: এসব বিষয়ে অনেকে অনেক কথা বললেও একজন মানুষের নাম না বললেই নয়, তিনি হচ্ছেন সর্বজন শ্রদ্ধেয় ও ঠোঁটকাটা প্রিয় মানুষটি মরহুম বীর মুক্তিযোদ্ধা স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন।
লেখকঃ মোহা. খোরশেদ আলম, সম্পাদক: মুক্তসংবাদ প্রতিদিন ও নির্বাহী পরিচালক: হিউম্যানরাইটস এন্ড এনভায়রমেন্ট ডেভে. সোসাইটি(হিডস)।