a
ফাইল ছবি: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এটা একটু কম-বেশি হবেই। কিন্তু আমাদের নানা লোকজন রয়েছে যারা এটা নিয়ে নানারকম মন্তব্য এবং গুজব করে বেড়ায়।’
তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি আমাদের ৩ মাসের খাদ্য কেনার যে রিজার্ভ সেটা থাকলেই যথেষ্ট। তবে ভোগ্যপণ্য এবং খাদ্যপণ্যে পরনির্ভরশীলতা কমাতে হবে, নিজের দেশে উৎপাদন বাড়াতে হবে।’
বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে দেওয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
সরকার প্রধান বলেন, ‘আমাদের যে উর্বর জমি ও জনসংখ্যা রয়েছে তাতে উদ্যোগ নিলে আমরা সেটা করতে পারি। শুধু উৎপাদন নয় খাদ্যপণ্য সংরক্ষণ আধুনিকীকরণ করতে হবে এবং খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পও ব্যাপকভাবে গড়ে তুলতে হবে। এতে করে দেশের মানুষের জন্য যেমন একটা বাজার তৈরি হবে আবার বিদেশেও আমরা রপ্তানি করতে পারব।’
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এখানে করোনাভাইরাস মোকাবিলা করতে হয়েছে আমাদের, তারই সঙ্গে শুরু হয়েছে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ। ফলে বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দা দেখা দিচ্ছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই যুদ্ধ অর্থহীন। কারণ আমরা দেখতে পাচ্ছি যে, এই যুদ্ধ শুধুমাত্র যারা অস্ত্র তৈরি করে তারাই লাভবান হচ্ছে, আর সাধারণ মানুষের জীবন বিপন্ন হচ্ছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই যুদ্ধ, শুধু যুদ্ধই না তার সঙ্গে আবার স্যাংশন (নিষেধাজ্ঞা)। এই স্যাংশন, পালটা-পালটি স্যাংশনের ফলে আজকে সারা বিশ্ব অর্থনৈতিক ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘উন্নত দেশগুলো হিমশিম খাচ্ছে এবং তারা এখন বিদ্যুৎ সাশ্রয়, জ্বালানি সাশ্রয়, খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত এবং সে কারণে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে। সেখানে আমাদের মতো দেশ, কেবল আমরা উন্নয়নের পথে যাত্রা শুরু করেছি। আমরা একটা লক্ষ্যে পৌঁছানোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি আপ্রাণভাবে, আর তখনই এই ধরনের বাধা আমাদের জন্য অত্যন্ত দুঃখজনক।’
আমাদেরকে থেমে থাকলে চলবে না উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে জ্বালানি সাশ্রয়ের ব্যাপারে সব দেশই কিন্তু নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। আমরাও সেটা অনুসরণ করছি।’
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সেন্টেনিয়াল কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রসহ দেশের বিভিন্ন উপজেলায় নির্মিত ২৪টি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র উদ্বোধনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানের আয়োজক প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো।
এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দরকার হচ্ছে একটা দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলা। কেননা আমাদের যুব সমাজ রয়েছে। এই ক্ষেত্রে আমাদের বিভিন্ন পদক্ষেপ নিতে হচ্ছে এবং আমরা তা নিচ্ছি।’
প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন।
প্রবাসী কল্যাণ সচিব ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন এবং বিএমইটির মহাপরিচালক মো. শহিদুল আলম অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন। সূত্র: বাসস
ফাইল ছবি
সারাদেশে রাতের তাপমাত্রা কমবে এবং শীতের তীব্রতা আরো বাড়তে পারে। এর পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে।
আজ শুক্রবার আবহাওয়া অধিদপ্তরের এক পূর্বাভাসে এ কথা বলা হয়েছে।
শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, অস্থায়ীভাবে আকাশ আংশিক মেঘলাসহ সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের নদী অববাহিকায় মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা এবং দেশের অন্যত্র হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে।
এ সময়ে রাতের তাপমাত্রা ১ থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমতে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে বলেও পূর্বাভাসে উল্লেখ করা হয়েছে।
এতে আরও বলা হয়েছে, গোপালগঞ্জ, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, মৌলভীবাজার, যশোর ও কুষ্টিয়া জেলাসহ এবং রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের শৈত্য প্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকবে এবং তা বিস্তার লাভ করতে পারে।
ছবি: মুক্তসংবাদ প্রতিদিন
সাইফুল আলম, ঢাকা: তামাকজাত পণ্যের দ্রুত কর ও মূল্য বৃদ্ধির দাবী জানিয়েছে স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশন। বুধবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী, সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাব এর তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলরুমে, “জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় আসন্ন ২০২৫-২৬ বাজেটে তামাকজাত পণ্যের কর ও মূল্য বৃদ্ধির আবশ্যকতা” শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবী জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে তামাকজাত পণ্যের কার্যকর করারোপ এবং মূল্য বৃদ্ধির যৌক্তিক দাবী তুলে ধরা হয়। বর্তমানে বাজারে নিম্ন, মধ্যম, উচ্চ, ও অতি উচ্চ- এই চার স্তরের সিগারেট বিক্রি হচ্ছে। আসন্ন অর্থবছরে নিম্ন ও মধ্যম- এই দুটি স্তরকে একিভূত করে একটি নতুন স্তর তৈরি করে মোট স্তরের সংখ্যা তিনটিতে নামিয়ে আনা। এই নতুন তিন স্তরের সিগারেটের দশ-শলাকার একেকটি প্যাকেটের দাম যথাক্রমে ৯০ টাকা, ১৪০ টাকা, ও ১৯০ টাকা ধার্য করার প্রস্তাব করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে, স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক এবং গ্লোবাল এলায়েন্স ফর ভ্যাক্সিন অ্যান্ড ইনিশিয়েটিভ (গ্যাভী), চেয়ার, ডাঃ নিজাম উদ্দীন আহম্মেদ, তামাকজাত পণ্যে ব্যবহারের কিছু ক্ষতিকর দিক তুলে ধরেন। তিনি বলেন, টোব্যাকো এটলাস ২০১৮-এর তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে তামাক ব্যবহারজনিত রোগে প্রতিবছর প্রায় ১ লাখ ৬১ হাজার মানুষ অকাল মৃত্যুবরণ করেন। সে হিসেবে প্রতিদিন ৪৪২টি প্রাণ অকালে ঝরে যাচ্ছে। তামাকের কারণে বিভিন্ন রোগ যেমন- হৃদ্রোগ, ফুসফুস, ডায়াবেটিস, দীর্ঘমেয়াদি শ্বাসরোগ, ক্যান্সার, কিডনি রোগ এবং আঘাতজনিত রোগ ক্রমেই বাড়ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) তথ্য মতে, তামাকজাত পণ্য ব্যবহারের ফলে সৃষ্ট রোগের কারনে তরুণ প্রজন্মের ছেলে মেয়েরা অকালেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পরছে। এই অকাল মৃত্যু হ্রাসে বর্তমান সরকারকে এখনই তামাকজাত পণ্যের উপর কার্যকর করারোপ এবং মূল্য বৃদ্ধি করতে হবে।
স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশনের পলিসি অ্যাডভাইজর ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মোঃ রফিকুল ইসলাম বলেন, জনস্বাস্থ্য রক্ষায় যেখানে তামাকপণ্যের উপর কার্যকর করারোপ করা জরুরি সেখানে তামাক কোম্পানিগুলোর নানা রকম মিথ্যাচার এটিকে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করছে। তামাকপণ্যের উপর অতিরিক্ত করারোপ এবং দাম বৃদ্ধি করলে সরকারের রাজস্ব কমে যাবে বলে তামাক কোম্পানি প্রচারণা চালাচ্ছে, যা মোটেও যুক্তিসংগত নয়।
তিনি আরও বলেন, আসন্ন ২০২৫-২৬ বাজেটে তামাকপণ্যের উপর কার্যকর করারোপ এবং দাম বৃদ্ধি করা হলে ৬৯ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আয় করা সম্ভব, ১৭ লক্ষ্য মৃত্যু রোধ করা সম্ভব, ২৪ লক্ষ্য প্রাপ্তবয়স্ক মানুষকে ধূমপান থেকে বিরত রাখা সম্ভব এবং ১৭ লক্ষ্য তরুণকে ধূমপান শুরু করা থেকে বিরত রাখা সম্ভব। গ্লোবাল ইয়ুথ টোব্যাকো জরিপের তথ্যমতে ১৩ থেকে ১৫ বছর বয়সীদের মধ্যে ভারত, ইন্দোনেশিয়া এবং বাংলাদেশে ধূমপান আসক্ত কিশোর-কিশোরীর হার সবচেয়ে বেশি। বাংলাদেশে প্রায় ১২ শতাংশ কিশোর-কিশোরী নিয়মিত ধূমপানে আসক্ত। তাই ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে রক্ষায় আসন্ন ২০২৫-২৬ অর্থবছরে তামাকজাত পণ্যের কর ও মূল্য বৃদ্ধির কোন বিকল্প নেই।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় এন্টি টোব্যাকো ক্লাবের প্রেসিডেন্ট, মুতাসিম বিল্লাহ (মাসুম), তরুণ প্রজন্মকে আহ্বান করেন তামাকজাত পণ্য ব্যবহার করা থেকে বিরত থকার জন্য এবং তিনি বাংলাদেশ সরকারকে অনুরোধ করেন আসন্ন ২০২৫-২৬ বাজেটে তামাকজাত পণ্যের উপর কর ও মূল্য বৃদ্ধি করে তরুণ প্রজন্মকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য।
এই সংবাদ সম্মেলনের মধ্যে দিয়ে জীবন রক্ষায় তামাকজাত পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি এবং কার্যকর করারোপ করার দাবী জানানো হয় এবং তামাক বিরোধী কার্যক্রমকে সুদূঢ় করতে বর্তমান তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার দাবী জানানো হয়।