a আওয়ামী লীগের ঢাকা দখলের চেষ্টা, আর উপদেষ্টাদের নির্বাচন নিয়ে বরাবরের ন্যায় শিশুসূলভ বক্তব্য!
ঢাকা শনিবার, ১৮ শ্রাবণ ১৪৩২, ০২ আগষ্ট, ২০২৫
https://www.msprotidin.com website logo

আওয়ামী লীগের ঢাকা দখলের চেষ্টা, আর উপদেষ্টাদের নির্বাচন নিয়ে বরাবরের ন্যায় শিশুসূলভ বক্তব্য!


সম্পাদকীয় মতামত, মুক্তসংবাদ প্রতিদিন
বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই, ২০২৫, ০৭:৪৫
আওয়ামী লীগের ঢাকা দখলের চেষ্টা, আর উপদেষ্টাদের নির্বাচন নিয়ে বরাবরের ন্যায় শিশুসূলভ বক্তব্য!

ছবি এডিট: মুক্তসংবাদ প্রতিদিন

 

নিজস্ব প্রতিনিধি: আজ যুগান্তরের রিপোর্টে প্রকাশ অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পর থেকেই দেশে চলছিল একের পর এক ষড়যন্ত্র। নানামুখী অপতৎপরতার মাধ্যমে নতুন সরকারকে ব্যর্থ করার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়েছিল পরাজিত আওয়ামী শক্তি। সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ হওয়ায় এবার রাজধানী ঢাকা দখলের চেষ্টা করছেন আওয়ামী লীগ। এই পরিকল্পনাকে সামনে রেখে বেশকিছু নেতাকর্মী রীতিমতো গেরিলা প্রশিক্ষণও নিয়েছে।

উল্লেখ্য, প্রশিক্ষিত গেরিলা বাহিনীর প্রধান উদ্দেশ্য দেশে অরাজকতা সৃষ্টি করে রাজধানী ঢাকাকে দখলে নেয়া। এলক্ষ্যে দেশে-বিদেশে হাজার হাজার নেতা-কর্মী প্রশিক্ষণ নিচ্ছে।

সম্প্রতি পুলিশের হাতে গ্রেফতার হওয়া একাধিক চক্রের সদস্যের কাছে এসব তথ্য নিশ্চিত করে বলেছে একাধিক গণমাধ্যম।

অথচ, গতকাল বুধবার স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, আগামী ৫ আগস্ট জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি ঘিরে কোনো ধরনের নিরাপত্তা শঙ্কা নেই।

অপরপক্ষে, আজ বৃহস্পতিবার মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব জনাব শফিকুল আলম বলেন, আগামী ৫-৬ দিন অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আজ (৩১ জুলাই) দুপুরে সচিবালয়ের গণমাধ্যম কেন্দ্রে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব মন্তব্য করেন।

এদিকে আইন উপদেষ্টা আজ বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে সংস্কার ও সমসাময়িক বিষয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বরাবরের ন্যায় আবারও বলেন, কিছুদিনের মধ্যেই নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হবে। বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে সংস্কার ও সমসাময়িক বিষয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে উপদেষ্টা এ কথা জানান। তিনি আরও বলেন, জনগণের ভোটাধিকার প্রয়োগের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে এবং কিছুদিনের মধ্যেই আগামী নির্বাচনের ঘোষণা আসবে। সবাই ভোট দিতে পারবেন।

রাজনৈতিক দলসহ সুশীল সমাজ যখন ভোট সংক্রান্ত বিষয়গুলো সামনে আনেন, তখন সরকারি লোকজন আবোল-তাবোল অনেক কথাই বলেন কিন্তু সুনিদিষ্ট তারিখ কখনো উল্লেখ করেননা। তবে পতিত স্বৈরাচারের প্রেতাত্বাগুলো যখন দেশে বিভিন্ন জায়গায়, বিভিন্নভাবে মাথা চাড়া দিয়ে উঠে, তখন ঐক্যের নামে বিএনপিসহ ছোট, বড় সকল দলগুলোকে কাছে নিয়ে মাথা হাত ‍বুলিয়ে বলার চেষ্টা করেন, শীঘ্রই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে। এভাবে নির্বাচনের মুলা ঝুলিয়ে কালক্ষেপণ করে দেশে একটি অস্থির ও অরাজোকতা পরিবেশ তৈরি হলে এর দায়ভার কে নেবে?

সরকারের আশির্বাদে এনসিপি নামক দল নানান রটনা, ঘটনা দিয়ে সৃষ্টি হওয়ার পর থেকে সরকারের ছত্রচ্ছায়ায় এরা দেশে নানান রকম নৈরাজ্য সৃষ্টি করে জুলাই-আগষ্টের যে স্পিরিট মানুষের মাঝে ধারণ করেছিল, তা অনেকটাই থিতিয়ে যেতে বসেছে। এর দায়ভার বর্তমান অন্তবর্তী সরকার কি এড়াতে পারবে?

বর্তমান সরকার হয়তোবা তাকিয়ে আছে, বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো যদি নির্বাচনের জন্য মাঠ গরম করে এবং এনসিপি-জামাতসহ ছোট ছোট দলগুলোকে দিয়ে প্রতিরোধ করে আরও কিছুদিন ক্ষমতায় আঁকড়ে থাকাটা মন্দ কি? এসব দিবা স্বপ্ন কিছু অথর্ব ব্যক্তিবর্গ করতে পারেন! তারা হয়তোবা ভুলে যেতে বসেছেন, বিগত স্বৈরাচার সরকার প্রায় ১৭ বছর ক্ষমতায় থেকে অঢেল অর্থকরী কামিয়েছে। তারা সেসব দেদারছে খরচ করে দেশের পুরো দৃশ্যপট পাল্টিয়ে দেয়া অসম্ভবের কিছুনা। হয়তোবা এর কিছুটা রেশ বুঝতে পেরেই মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব জনাব শফিকুল আলম বলেন, আগামী ৫-৬ দিন অন্তবর্তী সরকারের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। 

সবশেষ, নিয়মতান্ত্রিকভাবে নির্বাচন না দিয়ে অন্য কোন ফাঁক ফোকর দিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার উকি-ঝুকি দিলে পরিণামে  ঝুঁকিই বাড়বে বৈকি! ৫ আগষ্টের পর যে কোন সরকার আওয়ামীর ন্যায় স্বৈরতন্ত্রের পথে হাঁটলে এদেশের মানুষ পতিত হাসিনার চেয়েও খারাপ কিছু ঘটিয়ে দেবে, এটা কিন্তু হলফ করে বলা যায়।

মুক্তসংবাদ প্রতিদিন / কে. আলম

মোদি অসত্য কথা বলেছেন


আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
শুক্রবার, ০২ এপ্রিল, ২০২১, ০৪:২৩
মোদি অসত্য কথা বলেছেন

লেখক সুখরঞ্জন দাশগুপ্ত

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দুই দিনের বাংলাদেশ সফর সফল না ব্যর্থ? এ প্রশ্নের উত্তর দিতে পারে একমাত্র দিল্লির সাউথ ব্লক এবং ঢাকার সেগুনবাগিচা। কিন্তু ভারতে মোদিবিরোধী প্রতিক্রিয়া এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, অবিজেপি-শাসিত সব রাজ্যের নেতারা ধিক্কার জানিয়েছেন। বিশ্বের অন্যতম বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ সাবেক প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং লিখিত বিবৃতি দিয়ে মোদিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বলেছেন, মোদির বক্তব্যে একটা বিষয় পরিষ্কার, ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে বাংলাদেশ যে স্বাধীনতা অর্জন করেছে, যার সহযোদ্ধা ছিলেন ইন্দিরা গান্ধী- এ কথা বিশ্ব জানে, জানে বাংলাদেশ, জানে ভারতবর্ষ। সেখানে বিজেপির আরেক প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারি বাজপেয়ির কোনো ভূমিকাই ছিল না। তিনি কোনো সংগঠনও তৈরি করেননি, আর বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় পাকিস্তান-আমেরিকা বিরোধী কোনো আন্দোলনও করেননি। 

মোদি তাঁর বক্তব্যে শুধু ইন্দিরাজিকেই অপমান করেননি, অটলজিকেও অপমান করেছেন। মোদি ঢাকায় বলেছেন বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের সময় তিনি সত্যাগ্রহ করেছেন। একজন প্রধানমন্ত্রীর বিদেশের মাটিতে দাঁড়িয়ে এমন অসত্য বিবৃতি দেওয়া দেশের পক্ষে অপমানজনক বলে মনমোহন সিং মনে করেন। মোদির তখন বয়স ছিল আঠারো কি উনিশ। তখন তিনি আরএসএস স্কুলের ছাত্র। ভারতের ইতিহাস বিকৃত করার কোনো অধিকার তার থাকা উচিত নয়। ঢাকায় তিনি তাঁর বক্তব্যের মধ্যে যে এ ধরনের বজ্জাতি করবেন তা ঢাকা সফরের চার দিন আগেই জানা গিয়েছিল। কারণ ঢাকা সফরের এক সপ্তাহ আগে থেকেই বিজেপি অফিস প্রচার করে মোদি বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে সত্যাগ্রহ করেছিলেন। 

মনমোহন সিং তাঁর বিবৃতিতে আরও বলেছেন, এ অসত্য বিবৃতি দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ ও ভারতের জনগণের কাছে তাঁর ক্ষমা চাওয়া উচিত। ঢাকায় তাঁর উক্তির পরে ভারতের আরটিআই (তথ্য জানার অধিকার), যে আইনটি মনমোহনের আমলেই হয়েছিল, সে আইনটিও তুলে দেওয়ার জন্য মোদি এবং অমিত শাহ আদাজল খেয়ে উঠেপড়ে লেগেছেন।

Bangladesh Pratidinমনমোহন সিং মোদির ঢাকা সফরের বিকৃতি নিয়ে এতই ক্ষুব্ধ যে তিনি মোদির উদ্দেশে বলেছেন, দোহাই আপনার, দেশের বর্তমান প্রজন্ম তো বটেই নবীন প্রজন্মের কাছেও ইতিহাস বিকৃত করবেন না। ইতিহাস কাউকে ক্ষমা করে না, আপনাকেও করবে না। ’৭১-এর ১৬ ডিসেম্বর ইন্দিরাজি লোকসভায় যখন বাংলাদেশের স্বাধীনতার কথা ঘোষণা করছিলেন তখন অটলজি দাঁড়িয়ে বলেছিলেন (সংসদের রেকর্ড দেখতে পারেন), আপনি দেবী দুর্গা। আপনি এক অসাধারণ কাজ করেছেন। 

মোদি আপনার বিবৃতিতে তো সে কথাটি বলেননি। ২০১৪ সালে ক্ষমতায় আসার পর আপনি বলেছিলেন আর এখনো বলছেন, আপনি গান্ধী পরিবারকে ইতিহাস থেকে পুরোপুরি মুছে দেবেন। মনমোহন সিং বলেছেন যারা ইতিহাস মুছে ফেলার কথা বলেন তারা মূর্খের স্বর্গে বাস করেন। ইতিহাস ইতিহাসই। আপনার জানা উচিত গুজরাট দাঙ্গায় শত শত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ নিহত হওয়ার সময়ে সংসদে দাঁড়িয়ে বিজেপির তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী অটলজি বলেছিলেন, আপনি রাজধর্ম পালন করেননি। তিনি আপনাকে পদ থেকে সরিয়ে দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু আপনি লালকৃষ্ণ আদবানির বদান্যতায় সেদিন গুজরাটের ক্ষমতায় থেকে গিয়েছিলেন। 

বাজপেয়িজি আমাদের সবার শ্রদ্ধার পাত্র, তাই তাঁকে নিয়ে বাংলাদেশের মাটিতে দাঁড়িয়ে অসত্য কথা বলা শুধু অন্যায় নয়, অপরাধ। এ অপরাধের কোনো ক্ষমা নেই। আপনি বাংলাদেশে গিয়ে পশ্চিমবঙ্গ ও আসামে ভোটে জেতার জন্য মন্দিরে মন্দিরে পুজো দিয়েছেন। পুজো দেওয়ার অধিকার আপনার আছে, কিন্তু সে পুজো পুঁজি করে ভোটব্যাংক তৈরি বা ক্ষমতা দখলের চেষ্টার কোনো অধিকার আপনার নেই।

মোদির বাংলাদেশ সফরের এক দিন পর নিখিল ভারত কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক রণদীপ সিং সুরজেওয়ালা সাংবাদিকদের ডেকে কয়েকটি প্রশ্ন তুলেছেন। তার মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য বাংলাদেশের স্থপতি শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবার হত্যা, ইন্দিরা গান্ধী ও তাঁর পুত্র এবং পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীকে হত্যার ইতিহাস আপনার অজানা থাকার কথা নয়। অথচ আপনি এ ব্যাপারে একটি শব্দও ঢাকায় উচ্চারণ করেননি। 

সুরজেওয়ালা আরও বলেছেন, বাজপেয়িজির প্রধানমন্ত্রিত্বের আমলে সংসদে সন্ত্রাসবাদীদের হামলার সময় অটল বিহারি বাজপেয়ি প্রথম ফোনটি পান তখনকার বিরোধী দলের নেত্রী সোনিয়া গান্ধীর কাছ থেকে। সোনিয়া গান্ধী ফোন তুলেই অটলজিকে জিজ্ঞেস করেন, আপনি কোথায় আছেন? কেমন আছেন? সে বছরই সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘের অধিবেশনে যোগ দিয়ে অটল বিহারি বাজপেয়ি সাংবাদিকদের এ গোপন কথাটি উল্লেখ করে বলেছিলেন, নীতিগতভাবে আমাদের মধ্যে যত বিভেদই থাক, আমরা ভারতবাসী হিসেবে এক এবং ঐক্যবদ্ধ। দেশের গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ও সার্বভৌমত্ব আমাদের সবার কাছেই গুরুত্বপূর্ণ। সেজন্যই সংসদ হামলার সময় বিরোধী দলের নেত্রী হয়েও সোনিয়াজি আমার কুশল জিজ্ঞেস করেছিলেন। এই হলো সৌজন্য। 

রাজীব গান্ধী হত্যার পর তাঁর শোকসভায় দাঁড়িয়ে অটল বিহারি বাজপেয়ি বলেছিলেন, রাজীব গান্ধী যখন প্রধানমন্ত্রী, জাতিসংঘের বার্ষিক অধিবেশনে যোগ দিতে যাবেন, তখন তিনি খবর পেলেন অটলজি খুব অসুস্থ, তাঁর বিদেশে চিকিৎসা দরকার। রাজীব অটলজিকে বললেন, আপনাকে আমার সঙ্গে নিউইয়র্কে যেতে হবে। আপনার চিকিৎসা দরকার। রাজীব গান্ধী কোনো দিন কাউকে এ কথা বলেননি। তিনি অটলজিকে সঙ্গে নিয়ে নিউইয়র্কে যান এবং তাঁর সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করে দেশে ফিরে আসেন। কিন্তু এ কথাটি ফাঁস করে দেন অটলজি, রাজীব গান্ধীর হত্যার পর তাঁর স্মরণসভায়। এটাই ছিল ভারতের গণতন্ত্র ও সৌজন্য।

মোদির ঢাকা সফরের পর অবসরপ্রাপ্ত কয়েকজন বিদেশ সচিবের সঙ্গে আমি কথা বলেছি। তারা দেখেছেন নেহরু থেকে নরসীমা রাও বা মনমোহন সিং সবাই এক অসামান্য সৌজন্যবোধ। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় আমি পেশাগত কারণে নয় মাসের প্রতিদিনের বড় বড় ঘটনার সাক্ষী ছিলাম এবং আনন্দবাজারে তার রিপোর্টও করেছি। কিন্তু কোনো দিন দেখিনি জনসংঘের কোনো নেতা বা কর্মী বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য রাস্তায় বেরিয়েছেন। 

মোদির এ আত্মপ্রচার এবং ক্ষমতার দম্ভে ভারতবর্ষের সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে শিক্ষাবিদ, ইতিহাসবিদ, রাজনীতিবিদ সবাই উদ্বিগ্ন। সবার একটাই শঙ্কিত প্রশ্ন- এ দেশটাকে মোদি-শাহরা কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন? ক্ষমতা দখলই কি শেষ কথা? মনুষ্যত্ববোধ বলে কিছু থাকবে না? থাকবে না সৌজন্যবোধ?

লেখক : প্রবীণ সাংবাদিক [ভারত]। সংগৃহীত:বিডিপ্রতিদিন

মুক্তসংবাদ প্রতিদিন / কে. আলম

মিথেন নির্গমন অর্ধেক কমালে "সবুজ অর্থনীতি"-র বাজারমূল্য দাঁড়াবে ১.৫ বিলিয়ন ডলার


সাইফুল আলম, মুক্তসংবাদ প্রতিদিন
সোমবার, ২৬ মে, ২০২৫, ০৫:০৮
মিথেন নির্গমন অর্ধেক কমালে সবুজ অর্থনীতির বাজারমূল্য দাঁড়াবে এক দশমিক পাঁচ বিলিয়ন ডলার

ছবি: মুক্তসংবাদ প্রতিদিন

 

সাইফুল আলম, ঢাকা:  জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবেলা বিশেষত মিথেন গ্যাস নিয়ন্ত্রণে প্রযুক্তি নির্ভর নতুন উদ্ভাবন নিয়ে এসেছেন জিন বিজ্ঞানী ড. আবেদ চৌধুরী ও তাঁর গবেষক দল। আজ ২৬ মে সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে এ উদ্ভাবন বিষয়ে বিস্তারিত উপস্থাপন করেন তিনি।

রোম, কৃষাণ ফাউন্ডেশন, মেধাসম্পদ সুরক্ষা মঞ্চ ও জ্যাকফুট পোস্টের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বেসিসের সাবেক সভাপতি ও বিডিজবসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এ কে এম ফাহিম মাশরুর, পরিবেশ গবেষক পাভেল পার্থ, অমল ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী ইশরাত করিম ইভা।

সংবাদ সম্মেলনে আবেদ চৌধুরী বলেন, বৈশ্বিক উষ্ণায়নের জন্য দায়ী গ্রীনহাউস গ্যাসের অন্যতম মিথেনের বড় অংশ আসে গবাদিপশু অর্থাৎ গরু, ছাগল আর মহিষের পেট থেকে। এই জাবর কাটা প্রাণীগুলোর হজম প্রক্রিয়ার সময় ঢেঁকুর, নিঃশ্বাস ও বর্জ্যের মাধ্যমে বিপুল মিথেন গ্যাস নিঃসরণ হয়। বৈশ্বিকভাবে প্রতিবছর এ ধরনের গবাদিপশু থেকে নির্গত হয় প্রায় ১০০ মিলিয়ন টন মিথেন। বাংলাদেশের গবাদিপশু খাত থেকেও প্রতিবছর প্রায় ৩০ মিলিয়ন টন কার্বন ডাই-অক্সাইডের সমতুল্য মিথেন নির্গত হয়।

অস্ট্রেলিয়ার গবেষণা প্রতিষ্ঠান Loam Bio এর পক্ষ থেকে এই আবিষ্কার সম্পর্কে বিজ্ঞানী ড. আবেদ চৌধুরী বলেন, তাদের উদ্ভাবিত বিশেষ ধরনের প্রাকৃতিক ছত্রাক, যা গবাদিপশুর হজম প্রক্রিয়ায় মিথেন উৎপাদন ৯০ শতাংশ পর্যন্ত কমিয়ে দিতে সক্ষম। এই ছত্রাক কোনো রকম জেনেটিক মডিফিকেশন ছাড়াই কাজ করে এবং পশুর স্বাস্থ্যে বিরূপ প্রভাব ফেলে না। এটি পশুখাদ্যে ফিড অ্যাডিটিভ হিসেবে মেশালে কার্যত মিথেন নির্গমন বন্ধ হয়ে যায়।

২০২৫ সালের মার্চ মাসে Biotechnology Reports জার্নালে প্রকাশিত এই গবেষণা ইতোমধ্যেই আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। এই আবিষ্কারের ভিত্তিতে গড়ে উঠেছে নতুন কোম্পানি - ROAM Agricultural। প্রতিষ্ঠানটির মডেল অনুযায়ী খামারিরাই ছোট ছোট ইউনিটে এই ছত্রাক উৎপাদন করতে পারবেন। তিনি বলেন, ROAM কোম্পানির মালিকানার বড় অংশ মাত্র ৮ মিলিয়ন ডলারে বিনিয়োগকারীদের জন্য উন্মুক্ত; বাংলাদেশেও এই সুযোগ নিতে পারে। আবেদ চৌধুরী বলেন, গবেষণায় দেখা গেছে, সঠিক প্রযুক্তি ও ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে গবাদী পশু থেকে মিথেন নির্গমন ৫০ শতাংশ পর্যন্ত কমানো সম্ভব। বাংলাদেশ যদি মিথেন নির্গমন অর্ধেক কমাতে সক্ষম হয়, তাহলে এই "সবুজ অর্থনীতি"-র সম্ভাব্য বাজারমূল্য দাঁড়াবে প্রায় ১.৫ বিলিয়ন ডলার!

এছাড়াও উক্ত অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন এ কে এম ফাহিম মাশরুর, পাভেল পার্থ এবং ইশরাত করিম ইভা। তারা বলেন, বাংলাদেশ থেকে মিথেন গ্যাস নির্গমন কমাতে হবে। সবুজ অর্থনীতির দিকে আগাতে হবে। বাংলাদেশ যদি চায় ROAM কোম্পানির বিনিয়োগে অংশগ্রহণ করতে পারে। ক্ষতিকর মিথেন গ্যাস নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশি বিজ্ঞানী ড. আবেদ চৌধুরীর নতুন উদ্ভাবন নিয়ে অনেক বড় আশা প্রকাশ করেন। বৈশ্বিক জলবায়ু নিয়ন্ত্রণে এই উদ্ভাবন অনেক কাজে লাগবে বলে সবাই প্রত্যাশা করেন এবং বিজ্ঞানী ড. আবেদ চৌধুরীকে শুভেচ্ছা ও সাধুবাদ জানান।

মুক্তসংবাদ প্রতিদিন / কে. আলম
Share on Facebook

সর্বশেষ - মতামত