a
ফাইল ছবি
বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। এ ছাড়া আরও ৩৯ দেশে এ পরিস্থিতি বিরাজ করছে বলে জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব। ক্ষমতাবান গোষ্ঠীকে ভয়ভীতি প্রদর্শন ও প্রতিশোধস্পৃহা থেকে বেরিয়ে ‘ডু নট হার্ম’ নীতি মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
গত বৃহস্পতিবার ‘কো-অপারেশন উইথ ইউনাইটেড নেশনস, ইট’স রিপ্রেজেন্টেটিভস অ্যান্ড মেকানিজমস ইন দ্য ফিল্ড অব হিউম্যান রাইটস’ নামে একটি প্রবন্ধ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক সংস্থা ইউনাইটেড নেশনস হিউম্যান রাইটস কাউন্সিল (ইউএনএইচআরসি)।
সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় ইউএনএইচআরসির চলমান সেশনে প্রতিবেদনটি উত্থাপন করা হয়েছে। আগামী ৬ অক্টোবর পর্যন্ত চলবে এই সেশন।
প্রতিবেদন প্রস্তুতের জন্য যে ৪০ দেশের তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি প্রস্তুত করা হয়েছে, সেসব হলো— বাংলাদেশ, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, আলজেরিয়া, অ্যান্ডোরা, বাহরাইন, বেলারুশ, বুরুন্ডি, ক্যামেরুন, চীন, কলম্বিয়া, কিউবা, ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব (ডিআর) কঙ্গো, জিবুতি, মিশর, ফ্রান্স, গুয়েতেমালা, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, ইরান, ইরাক, ইসরায়েল, সৌদি আরব, লিবিয়া, মালদ্বীপ, মালি, মেক্সিকো, মিয়ানমার, নিকারাগুয়া, ফিলিপাইন, কাতার, রাশিয়া, দক্ষিণ সুদান, তানজানিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ভিয়েতনাম, ভেনিজুয়েলা, ইয়েমেন এবং ফিলিস্তিন।
২০২২ সালের ১ মে থেকে ২০২৩ সালের ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত সংগ্রহ করা বিভিন্ন তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে ইউএনএইচআরসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই ৪০ দেশের অন্তত ২২০ ব্যক্তি ও ২৫ প্রতিষ্ঠান সরকার এবং প্রভাবশালী গোষ্ঠীর লাগাতার হয়রানি, ভয়ভীতি প্রদর্শন ও প্রতিশোধপরায়ণতার শিকার।
রাষ্ট্র ও ক্ষমতাবানদের উৎপীড়নের শিকার এসব ব্যক্তি ও গোষ্ঠীর সবাই মানবাধিকার তৎপরতা ও সিভিল সোসাইটির সঙ্গে যুক্ত বলেও উল্লেখ করেছে জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থা।
সোমবার এক বিবৃতিতে জাতিসংঘের মহাসচিব এই প্রতিবেদনের প্রসঙ্গে বলেন, ‘জাতিসংঘ সব রকম ভয়ভীতি প্রদর্শন ও প্রতিশোধমূলক তৎপরতা বন্ধে পদক্ষেপ নিতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। ভিন্নমত পোষণকারীদের ভয়ভীতি প্রদর্শন ও উৎপীড়নের ব্যাপারে জাতিসংঘ জিরো-টলারেন্স নীতি মেনে চলে এবং জাতিসংঘ মনে করে, আলাপ-আলোচনা ও সংলাপের ভিত্তিতে যাবতীয় সমস্যার সমাধান সম্ভব।’
তিনি আরও বলেন, ‘সদস্যরাষ্ট্রগুলোকে আরও গণতান্ত্রিক করে তুলতে আমাদের প্রয়াস অব্যাহত থাকবে। আমরা প্রতিশোধমূলক মামলাগুলোর প্রতি নিজেদের প্রতিক্রিয়া আরও জোরদার করব এবং বার্ষিক প্রতিবেদনগুলোতে এ সংক্রান্ত ঘটনা শনাক্ত করা ও নথিপত্রসহ উপস্থাপন করার প্রয়াস আমাদের অব্যাহত থাকবে। আমরা এ বিষয়ক তথ্যের প্রচারও শক্তিশালী করব।’
গত বৃহস্পতিবার প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ইউএনএইচআরসির প্রধান ও জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব ইলেজ ব্র্যান্ডস কেহরিস বলেন, বিভিন্ন প্রতিকূলতার কারণে তারা উৎপীড়নের শিকার ব্যক্তি ও গোষ্ঠীগুলোর সঠিক সংখ্যা তুলে আনতে পারেননি। বাস্তবে এই সংখ্যা আরও অনেক বেশি।
‘দুঃখজনক হলেও সত্য যে আমাদের নানামুখী প্রচেষ্টা সত্ত্বেও বিভিন্ন দেশে রাষ্ট্র ও প্রভাবশালী গোষ্ঠীগুলোর প্রতিশোধমূলক আচরণ নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। বরং দিন দিন তা বাড়ছে,’। সূত্র: এএফপি/যুগান্তর
ছবি এডিট: মুক্তসংবাদ প্রতিদিন
নিজস্ব প্রতিনিধি: আজ যুগান্তরের রিপোর্টে প্রকাশ অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পর থেকেই দেশে চলছিল একের পর এক ষড়যন্ত্র। নানামুখী অপতৎপরতার মাধ্যমে নতুন সরকারকে ব্যর্থ করার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়েছিল পরাজিত আওয়ামী শক্তি। সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ হওয়ায় এবার রাজধানী ঢাকা দখলের চেষ্টা করছেন আওয়ামী লীগ। এই পরিকল্পনাকে সামনে রেখে বেশকিছু নেতাকর্মী রীতিমতো গেরিলা প্রশিক্ষণও নিয়েছে।
উল্লেখ্য, প্রশিক্ষিত গেরিলা বাহিনীর প্রধান উদ্দেশ্য দেশে অরাজকতা সৃষ্টি করে রাজধানী ঢাকাকে দখলে নেয়া। এলক্ষ্যে দেশে-বিদেশে হাজার হাজার নেতা-কর্মী প্রশিক্ষণ নিচ্ছে।
সম্প্রতি পুলিশের হাতে গ্রেফতার হওয়া একাধিক চক্রের সদস্যের কাছে এসব তথ্য নিশ্চিত করে বলেছে একাধিক গণমাধ্যম।
অথচ, গতকাল বুধবার স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, আগামী ৫ আগস্ট জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি ঘিরে কোনো ধরনের নিরাপত্তা শঙ্কা নেই।
অপরপক্ষে, আজ বৃহস্পতিবার মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব জনাব শফিকুল আলম বলেন, আগামী ৫-৬ দিন অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আজ (৩১ জুলাই) দুপুরে সচিবালয়ের গণমাধ্যম কেন্দ্রে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব মন্তব্য করেন।
এদিকে আইন উপদেষ্টা আজ বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে সংস্কার ও সমসাময়িক বিষয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বরাবরের ন্যায় আবারও বলেন, কিছুদিনের মধ্যেই নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হবে। বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে সংস্কার ও সমসাময়িক বিষয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে উপদেষ্টা এ কথা জানান। তিনি আরও বলেন, জনগণের ভোটাধিকার প্রয়োগের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে এবং কিছুদিনের মধ্যেই আগামী নির্বাচনের ঘোষণা আসবে। সবাই ভোট দিতে পারবেন।
রাজনৈতিক দলসহ সুশীল সমাজ যখন ভোট সংক্রান্ত বিষয়গুলো সামনে আনেন, তখন সরকারি লোকজন আবোল-তাবোল অনেক কথাই বলেন কিন্তু সুনিদিষ্ট তারিখ কখনো উল্লেখ করেননা। তবে পতিত স্বৈরাচারের প্রেতাত্বাগুলো যখন দেশে বিভিন্ন জায়গায়, বিভিন্নভাবে মাথা চাড়া দিয়ে উঠে, তখন ঐক্যের নামে বিএনপিসহ ছোট, বড় সকল দলগুলোকে কাছে নিয়ে মাথা হাত বুলিয়ে বলার চেষ্টা করেন, শীঘ্রই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে। এভাবে নির্বাচনের মুলা ঝুলিয়ে কালক্ষেপণ করে দেশে একটি অস্থির ও অরাজোকতা পরিবেশ তৈরি হলে এর দায়ভার কে নেবে?
সরকারের আশির্বাদে এনসিপি নামক দল নানান রটনা, ঘটনা দিয়ে সৃষ্টি হওয়ার পর থেকে সরকারের ছত্রচ্ছায়ায় এরা দেশে নানান রকম নৈরাজ্য সৃষ্টি করে জুলাই-আগষ্টের যে স্পিরিট মানুষের মাঝে ধারণ করেছিল, তা অনেকটাই থিতিয়ে যেতে বসেছে। এর দায়ভার বর্তমান অন্তবর্তী সরকার কি এড়াতে পারবে?
বর্তমান সরকার হয়তোবা তাকিয়ে আছে, বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো যদি নির্বাচনের জন্য মাঠ গরম করে এবং এনসিপি-জামাতসহ ছোট ছোট দলগুলোকে দিয়ে প্রতিরোধ করে আরও কিছুদিন ক্ষমতায় আঁকড়ে থাকাটা মন্দ কি? এসব দিবা স্বপ্ন কিছু অথর্ব ব্যক্তিবর্গ করতে পারেন! তারা হয়তোবা ভুলে যেতে বসেছেন, বিগত স্বৈরাচার সরকার প্রায় ১৭ বছর ক্ষমতায় থেকে অঢেল অর্থকরী কামিয়েছে। তারা সেসব দেদারছে খরচ করে দেশের পুরো দৃশ্যপট পাল্টিয়ে দেয়া অসম্ভবের কিছুনা। হয়তোবা এর কিছুটা রেশ বুঝতে পেরেই মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব জনাব শফিকুল আলম বলেন, আগামী ৫-৬ দিন অন্তবর্তী সরকারের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
সবশেষ, নিয়মতান্ত্রিকভাবে নির্বাচন না দিয়ে অন্য কোন ফাঁক ফোকর দিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার উকি-ঝুকি দিলে পরিণামে ঝুঁকিই বাড়বে বৈকি! ৫ আগষ্টের পর যে কোন সরকার আওয়ামীর ন্যায় স্বৈরতন্ত্রের পথে হাঁটলে এদেশের মানুষ পতিত হাসিনার চেয়েও খারাপ কিছু ঘটিয়ে দেবে, এটা কিন্তু হলফ করে বলা যায়।
File Photo: Corona-virus