a রাজার দোষে রাজ্য নষ্ট, প্রজা কষ্ট পায়
ঢাকা মঙ্গলবার, ৩১ ভাদ্র ১৪৩২, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
https://www.msprotidin.com website logo

রাজার দোষে রাজ্য নষ্ট, প্রজা কষ্ট পায়


এমএস.প্রতিদিন ডেস্ক:
শুক্রবার, ১৬ জুলাই, ২০২১, ১২:২৮
রাজার দোষে রাজ্য নষ্ট, প্রজা কষ্ট পায়

ফাইল ছবি । গোলাম মাওলা রনি

শিরোনামের প্রবাদবাক্যটি কে রচনা করেছিলেন আমার জানা নেই। তবে আমাদের দেশের হাটে-ঘাটে-মাঠে তো বটেই এমনকি অন্দরমহলের একান্ত আলোচনাতেও প্রবাদটি এত বেশি আলোচিত হয় যার কারণে এটি এখন আবু বঙ্গালা অথবা মুঞ্জালাদের দেশে যেন সর্বাধিক উচ্চারিত বেদবাক্যে পরিণত হয়েছে। স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়ায় যে পরাজিত হয় সে কাঙাল প্রজারূপে নিজেকে রাজার আসন থেকে নামিয়ে নিয়ে আসে স্বেচ্ছায় এবং সব দায়-দায়িত্ব বিজয়ীর ঘাড়ে চাপিয়ে তাকে রাজা বানিয়ে অভিসম্পাত করতে গিয়ে বলে ওঠে, রাজার দোষে রাজ্য নষ্ট, প্রজা কষ্ট পায়! স্বামী-স্ত্রী ছাড়া অন্যান্য সম্পর্ক বা শ্রেণীপেশার লোকজন যখন স্বার্থের সঙ্ঘাতে শোচনীয়ভাবে পরাজিত হয় তখন হাজারো ঐতিহ্যবাহী গালিগালাজের পাশাপাশি ভদ্র ভাষায় যে অভিসম্পাত দেয়া হয় সেগুলোর মধ্যে আজকের শিরোনামের প্রবাদ বাক্যটিই সবচেয়ে বেশি উচ্চারিত হয়।

রাজা কে- অথবা প্রজা কে কিংবা রাজার কোন দোষে প্রজা কষ্ট পায় তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনার আগে দুটো শব্দের সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা দেয়া প্রয়োজন। প্রথম শব্দটি হলো- আবু বঙ্গালা। মধ্যযুগের বিখ্যাত ঐতিহাসিক মিনহাজ উস সিরাজ তার তুযুকে ফিরোজশাহী গ্রন্থে আবু বঙ্গালা শব্দটি ব্যবহার করেছেন। দিল্লির সম্রাট ফিরোজ শাহ তুখলক যখন বাংলায় এসেছিলেন বিদ্রোহ দমনের জন্য, তখন তার সাথে মিনহাজ উস সিরাজও ছিলেন। তখনকার দিনে যারা বাঙালিদের নেতৃত্ব দিতেন তাদের আবু বঙ্গালা অর্থাৎ বাঙালিদের পিতা বলা হতো। মিনহাজ উস সিরাজের মতে- তখন বাংলা প্রদেশে শত শত আবু বঙ্গালা ছিল যারা মূলত গোত্রপতি এবং জায়গিরদার বা সরকারের পক্ষে খাজনা আদায়কারীরূপে আখ্যায়িত হতেন। তারা যোদ্ধা ছিলেন এবং নিজেদের নিরাপত্তার জন্য নির্ধারিত সংখ্যক সৈন্য পুষতেন।
 
আবু বঙ্গালারা জায়গীর লাভ করতেন দিল্লির সম্রাটের কাছ থেকে। সুতরাং সম্রাটের প্রয়োজনে তারা তাদের পোষ্য সৈন্যসহ সম্রাটের জন্য যুদ্ধক্ষেত্রে প্রাণ বিজর্সন করতে অঙ্গীকারবদ্ধ ছিলেন। এমনকি সম্রাট যদি তার নিযুক্ত প্রাদেশিক গভর্নরের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অবতীর্ণ হতেন সে ক্ষেত্রে নিয়ম মোতাবেক আবু বঙ্গালারা সম্রাটের বাহিনীর সঙ্গে একীভূত হয়ে যুদ্ধ করতেন এবং এটাই শত শত বছর ধরে চলে আসছিল সারা ভারতবর্ষে। তবে ভারতের অন্যান্য অংশের জায়গিরদাররা যেভাবে দিল্লির প্রয়োজনে বিশ্বস্ততার সাথে দায়িত্ব পালন করতেন তা কিন্তু প্রায়ই বাংলায় এসে উল্টো রূপ ধারণ করত। অর্থাৎ আবু বঙ্গালারা সুযোগ পেলেই কেন্দ্রীয় সরকারের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করত এবং কোনো প্রাদেশিক গভর্নর যদি বিদ্রোহ করত তবে তারা নিয়োগকর্তার অবদান ভুলে বিদ্রোহীর পক্ষ অবলম্বন করত।

আবু বঙ্গালাদের উল্লেখিত চরিত্রের কারণে দিল্লির নিযুক্ত গভর্নররা এ দেশে এসেই স্বাধীন ও সার্বভৌম শাসক হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন এবং প্রায়ই বিদ্রোহ করে বসতেন। দিল্লির সুলতানি আমল থেকে শুরু করে মোঘল পর্যন্ত এই ধারা অব্যাহত ছিল। ফলে বাংলার ঘন ঘন বিদ্রোহ নিয়ে দিল্লিকে তটস্থ থাকতে হতো। মিনহাজ উস সিরাজ যে সময়ের কথা বলছেন সেটা সম্ভবত ১৩৫৩ সাল ছিল। মিনহাজের মতে দিল্লির কেন্দ্রীয় বাহিনী যখন যুদ্ধক্ষেত্রে অবতীর্ণ হলো তখন আবু বঙ্গালারা তাদের সৈন্য সামন্তসহ ফিরোজ শাহ তুঘলকের পক্ষ ত্যাগ করে গভর্নর ইলিয়াস শাহের পক্ষ নিলো। ইলিয়াস বারবার চেষ্টা করছিলেন আত্মসমর্পণ করার জন্য। কিন্তু আবু বঙ্গালারা তাকে যুদ্ধের জন্য প্ররোচিত করতে থাকল। ফলে একটি অসম যুদ্ধে ইলিয়াস শাহের পরাজয় ঘটল এবং হাজার হাজার বঙ্গালা সৈন্য মারা পড়ল।

আবু বঙ্গালাদের প্রসঙ্গ বাদ দিয়ে এবার মুঞ্জালা শব্দ নিয়ে কিছু বলি। এটি একটি চৈনিক শব্দ। চীন দেশে অন্তত হাজার খানেক জনপ্রিয় চীনা ভাষা রয়েছে। এগুলোর মধ্যে মান্ডারিন এবং ক্যান্টনিজ ভাষায় সংখ্যাগরিষ্ঠ চীনা কথা বলে। এই দুটি ভাষার বাইরে গুয়ানিজ এবং সাংহায়ানিজ ভাষাও অত্যন্ত জনপ্রিয়। গুয়াংসু প্রদেশের বেশির ভাগ লোকের কথ্য ভাষার নাম গুয়ানিজ। অন্য দিকে বৃহত্তম সাংহাই এলাকার লোকজন সাংহায়ানিজ ভাষায় কথা বলে। আজকের নিবন্ধে আমি যে মুঞ্জালা শব্দের কথা বলছি তা মূলত সাংহাই অঞ্চলের শব্দ। এই এলাকার অধিবাসীরা বাংলাদেশের লোকজনকে মুঞ্জালা বলে ডাকে। আপনি যদি কখনো ওই এলাকায় যান তবে তারা আপনাকে বাংলাদেশীর পরিবর্তে মুঞ্জালা বলে সম্বোধন করবে। সাংহাই বিমানবন্দরে বাংলাদেশী পাসপোর্ট দেখামাত্র ইমিগ্রেশনের কর্মকর্তারা ফিসফাস করে মুঞ্জালা মুঞ্জালা বলে আরো কিসব কথাবার্তা তাদের সহকর্মীদের সাথে আলোচনা করে এবং পাসপোর্টটি ঘুরিয়ে ফিরিয়ে বারবার পরখ করতে থাকে।

ব্যবসায়িক কাজে আমাকে একটা সময় খুব ঘন ঘন চীন যেতে হতো। আমি সাধারণত ঢাকা থেকে সরাসরি হংকং যেতামÑ তারপর সেখানকার কাজ সেরে সোজা সাংহাই যেতাম। তারপর অভ্যন্তরীণ রুট ব্যবহার করে চীনের অন্যান্য শহর-বন্দরে যেতাম। এর বাইরে সিঙ্গাপুর-ব্যাংকক অথবা কুয়ালালামপুরে কাজ থাকলে সেখান থেকেও সরাসরি সাংহাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যেতাম এবং প্রত্যেকবারই লক্ষ্য করতাম যে ইমিগ্রেশন কর্মকর্তা আমার পাসপোর্টটি হাতে নিয়ে ১০-১২ মিনিট ধরে নাড়াচাড়া করত এবং একটু পরপর আমার দিকে তাকাত। এরপর মাইক্রোফোনে চীনা ভাষায় যেন কিসব বলত যার মধ্যে শুনতে শুনতে আমি মুঞ্জালা শব্দটি মুখস্থ করে ফেলেছিলাম। আমি আমার স্বাভাবিক কমনসেন্স দ্বারা অনুধাবন করতাম যে, আমাকে দাঁড় করিয়ে রেখে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার মাধ্যমে ঊর্ধ্বতন কর্তারা আমার গতিবিধি এবং মতিগতি বুঝার চেষ্টা করছেন। অন্যদিকে, ডেস্কে বসা কর্মকর্তাটি আমার পাসপোর্টের পাতা উল্টাতে উল্টাতে আমার ভ্রমণবৃত্তান্ত হয়তো তার কর্তৃপক্ষকে জানাত।

আমাকে কোনো দিন অন্য কোনো চীনা বিমানবন্দরে জিজ্ঞাসাবাদ তো দূরের কথা এমনকি কোনো প্রশ্নও তারা করেনি। কেবল সাংহাই বিমানবন্দরে উল্লিখিত উপায়ে কালক্ষেপণ করাত। এ অবস্থায় আমার মনে প্রশ্ন জাগল ওরা কেন বাঙালিদের দেখলে মুঞ্জালা মুঞ্জালা বলছে এবং বেশির ভাগ বাংলাদেশী পাসপোর্টধারীকে হয়রানি করছে। এ অবস্থায় সাংহাইতে আমাদের কোম্পানির এজেন্ট রিচার্ডকে বিষয়টি বললাম। কিন্তু সে কোনো সদুত্তর দিতে পারল না। এরপর আমি তাকে জিজ্ঞাসা করলাম মুঞ্জলা শব্দের অর্থ কি। সে আমার কথা শুনে কিছুটা বিব্রত হলো এবং যথাসাধ্য চেষ্টা করল প্রশ্নটি এড়িয়ে যাওয়ার জন্য। কিন্তু আমি যখন নাছোড়বান্দার মতো তাকে চেপে ধরলাম তখন সে জানাল যে মুঞ্জালা অর্থ বোকা বা নির্বোধ মানুষের দেশ। এ ঘটনার পর আমি আর কোনো দিন সাংহাই বিমানবন্দর দিয়ে ইন করিনি। আবু বঙ্গালা এবং মুঞ্জালা নিয়ে বহু মজার কাহিনী এবং অনেক ঐতিহাসিক উদ্ধৃতি দেয়া যাবে। কিন্তু আমি ওদিকে না গিয়ে আজকের শিরোনাম প্রসঙ্গে আলোচনা শুরু করতে চাই। আবু বঙ্গালাদের কারণে বাঙালির হাজার বছরের ইতিহাসে অসংখ্য রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ বিগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে যার ফলে সাধারণ জনগণের দুঃখ দুর্দশা বা কষ্টের কোনো সীমা পরিসীমা ছিল না। অধিকন্তু আমাদের দেশকাল সমাজে আবু বঙ্গালা প্রবৃত্তির নেতা পাতিনেতা চামচা ও সুবিধাভোগীদের আধিক্য এবং তাদের প্রভাব প্রতিপত্তির কারণে যুগ যুগ ধরে আমজনতা নির্যাতিত নিপীড়িত ও বঞ্চিত হয়ে আসছে। ফলে আমাদের গড়পড়তা সাধারণ বুদ্ধি বা কমনসেন্স কমতে কমতে রীতিমতো তলানিতে ঠেকেছে। তা ছাড়া আমাদের সেন্স বা মানসিক সুস্থতার সূচকও অন্যান্য দেশের তুলনায় নিম্নগামী। আমরা যদি আমাদের সেনসিবিলিটি বা অনুভব শক্তি অর্থাৎ মানুষের সুকুমার মনোবৃত্তি আবেগ এবং সংবেদনশীলতাকে মূল্যায়ন করার ক্ষমতার কথা বিবেচনা করি তবে জাতিগতভাবে লজ্জিত হতে হবে।

আমরা যদি আমাদের সেন্স অব হিউমার বিশ্লেষণ করি তবে দেখতে পাব যে, এই অসাধারণ মানবিক গুণটি স্থূল হতে হতে রীতিমতো গর্ভবতী গর্দভ বা গন্ডারের পেটের মতো হয়ে গেছে। আমাদের সেনটিমেন্ট বা হৃদয়ানুভূতি কবে যে সেন্সলেস অর্থাৎ নির্বোধ, মূঢ় বা অর্থহীন হয়ে পড়েছে তা বোঝার জন্য মুঞ্জালা শব্দের অর্থ এবং ব্যাখ্যা সংবলিত চৈনিক টিকা গ্রহণের বিকল্প নেই। উল্লিখিত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা যদি রাজা এবং প্রজার সমীকরণ করতে চাই তবে দেখতে পাবো যে, আবু বঙ্গালা প্রকৃতির নেতৃত্ব থাকলে প্রজাদের দুর্ভোগ যেমন বাড়ে তেমনি প্রজারা এক সময় মানবিক গুণাবলি হারিয়ে মুঞ্জালার বৈশিষ্ট্য অর্জন করে। এমন অবস্থায় প্রজাদের ওপর প্রকৃতিগতভাবেই নিকৃষ্ট রাজা চেপে বসে। আর নিকৃষ্ট রাজার অদ্ভুত সব পাগলামো এবং নির্বুদ্ধিতা কিভাবে প্রজাদের জীবনকে জাহান্নামে রূপান্তর করে ফেলে তার কিছু পরোক্ষ উদাহরণ আমরা মিনহাজ উস সিরাজের তুযুকে ফিরোজশাহীতে এবং ইবনে বতুতার ভ্রমণ বৃত্তান্তে পেয়ে যাবো।

ইতিহাসের পাঠকরা নিশ্চয়ই জানেন যে, আমাদের রাজনীতি অর্থনীতি ও সমাজ ব্যবস্থায় যখন মারাত্মক কোনো অসঙ্গতি অনিয়ম এবং আজব তামসার ঘটনা ঘটে তখন আমরা সাধারণত সেটিকে তুঘলকি কাণ্ড বলে থাকি। সর্বভারতীয় রাজনৈতিক ইতিহাসের কয়েক হাজার বছরের রাজনৈতিক ঘটনাপঞ্জি যদি বিচার বিশ্লেষণ করা হয়, তবে সুলতান মুহাম্মদ বিন তুঘলক এবং পরে ফিরোজ শাহ তুঘলকের জমানায় যেসব পরস্পরবিরোধী কর্মকাণ্ড ঘটেছে তার সাথে অন্য কোনো রাজা বাদশাহদের রাজত্বকালের তুলনা চলে না। এই দুই তুঘলকি শাসকের কারণে রাজধানী দিল্লি দুইবার বিরানভূমিতে পরিণত হয়েছে। মুহাম্মদ বিন তুঘলক দিল্লি থেকে রাজধানী দেবগিরিতে স্থানান্তর করতে গিয়ে ভারতের অর্থনীতির সর্বনাশ ঘটিয়েছেন এবং প্রচণ্ড রক্তপাত নিষ্ঠুরতা ও অহেতুক যুদ্ধের দামামা বাজিয়ে লাখ লাখ লোকের প্রাণ সংহার করেছেন। তিনি রাজনীতি সিংহাসন এবং রাজপ্রাসাদকে এতটাই ভয়ঙ্কর বানিয়ে ফেলেছিলেন যে, তার মৃত্যুর পর কেউ সুলতান হতে চায়নি এবং পৃথিবীর ইতিহাসে এটিই একমাত্র বিরল ঘটনা যে ভারতবর্ষের মতো বৃহত্তম সাম্রাজ্যের সম্রাটের মৃত্যুর পর কেউ সিংহাসনে বসতে চায়নি- ফলে পুরো তিন দিন সিংহাসন খালি ছিল।

উল্লিখিত অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে সাম্রাজ্যের আমির-ওমরাহ, আলেম-ওলামা এবং উজির-নাজিররা একরকম জোর করে সুলতান মুহাম্মদ বিন তুঘলকের চাচাতো ভাই ফিরোজ শাহ তুঘলককে সিংহাসনে বসান ১৩৫১ সালের ২৩ শে মার্চ। তিনি প্রায় ৩৭ বছর রাজত্ব করেন। কিন্তু আশা আকাঙ্ক্ষা ও ইচ্ছার বিপরীতে পাওয়া বিশাল সাম্রাজ্যটিকে তিনি আল্লাহর মাল দরিয়ায় ঢাল এইরূপ মনোভাব নিয়ে পরিচালনা করতে থাকেন। তিনি বাংলা ও উড়িষ্যা ছাড়া অন্য কোনো অঞ্চলে যুদ্ধাভিযান চালাননি। ফলে দিল্লি শাসিত অঞ্চলের সংখ্যা মারাত্মকভাবে কমে যায়। তিনি যুদ্ধ বিগ্রহে জড়াতেন না। কাউকে ক্ষেপাতেন না। উল্টো আলেম ওলামা সেনাপতি কোতোয়ালদের তোয়াজ তদবির করতেন। তিনি অনেক ভালো ভালো কাজ করেছেন কিন্তু রাষ্ট্রীয় দুর্নীতি কুশাসন ও অবিচার অনাচারের জন্য সর্বকালের ইতিহাস ভঙ্গ করেছেন। তার আমলে যে রাষ্ট্রীয় দুর্নীতি হতো অমনটি মানবজাতির ইতিহাসে কোনো রাষ্ট্র কোনো কালে ঘটেনি। কথিত আছে সুলতান নিজে তার কর্মচারীদের কাছ থেকে কাজ আদায়ের জন্য গোপনে ঘুষ দিতেন।

সুলতান ফিরোজ শাহ তুঘলকের কারণে কেবল দিল্লির সিংহাসন নয় পুরো ভারতবর্ষের রাজনীতি ধ্বংস হয়ে যায়। বাংলার আবু বঙ্গালারা দলে দলে তাদের সাঙ্গোপাঙ্গ মুঞ্জালাদের নিয়ে দিল্লিতে আসর জমাতে থাকেন। এভাবেই ৩৭টি বছর পার হয়। সুলতানের মৃত্যুর পর তার দুর্বল উত্তরাধিকারীরা গৃহযুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে এবং ১০ বছরের গৃহযুদ্ধে তুঘলকি রাজ্যের প্রজাদের জীবনে যে নরক যন্ত্রণা চলছিল তাতে ঘি ঢেলে দেয়ার জন্য বিশ্ববিখ্যাত বিজেতা তৈমুর লং দিল্লি আক্রমণ করেন এবং দিল্লিকে নরককুণ্ড বানিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো বিরানভূমিতে পরিণত করেন।

লেখক : সাবেক সংসদ সদস্য/সূত্র: নয়া দিগন্ত

মুক্তসংবাদ প্রতিদিন / কে. আলম

প্রধানমন্ত্রী জিয়াউর রহমানকে নিয়ে সঠিক কথা বলেননি: ফখরুল


এমএস.প্রতিদিন ডেস্ক:
মঙ্গলবার, ০৯ মার্চ, ২০২১, ১১:৪১
প্রধানমন্ত্রী জিয়াউর রহমানকে নিয়ে সঠিক কথা বলেননি: ফখরুল

ফাইল ফটো: মির্জা ফখরুল

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য সঠিক নয়। মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে ‘ঐতিহাসিক ৯ মার্চ’ উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় বিএনপি নেতারা এ কথা বলেন। তারা বলেন, এক দিনে, একজনের ভাষণে দেশের স্বাধীনতা আসেনি- বিএনপির এমন বক্তব্যের পরপরই সরকারপ্রধান ক্ষিপ্ত হয়ে অনেক কথা বলেছেন।

বিএনপির স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন জাতীয় কমিটির উদ্যোগে এ আলোচনা সভা হয়। জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব আবদুস সালাম সভা পরিচালনা করেন। প্রসঙ্গত, ১৯৭১ সালের ৯ মার্চ পল্টন ময়দানে মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী পাকিস্তানি শাসকদের প্রতি পূর্ব বাংলার স্বাধীনতা স্বীকার করে নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘মুজিবের নির্দেশ মতো আগামী ২৫ তারিখের মধ্যে কিছু না হলে আমি শেখ মুজিবের সঙ্গে মিলে ১৯৫২ সালের মতো তুমুল আন্দোলন গড়ে তুলব।’

সভায় আওয়ামী লীগের সমালোচনা করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, জিয়াউর রহমান যদি স্বাধীনতার ঘোষণা না দিতেন, তাহলে যুদ্ধ শুরু হতো না। প্রবাসী সরকার গঠন হওয়ার অনেক আগেই ৪ এপ্রিল হবিগঞ্জের তেলিয়াপাড়ায় জিয়াউর রহমান, এমএজি ওসমানীসহ সেক্টর কমান্ডাররা সবাই বসে বৈঠক করে ‘ন্যাশনাল কমান্ড ফর লিবারেশন ওয়ার’ তৈরি করেন।

প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতি ইঙ্গিত করে মির্জা ফখরুল বলেন, ২৫ ও ২৬ মার্চের সঙ্গে জিয়াউর রহমানকে জড়িয়ে দেওয়া বক্তব্য হাস্যকর ছাড়া কিছু নয়। এটা কেউ বিশ্বাস করবেন না। এটার কোনো প্রমাণ সরকারপ্রধান দেখাতে পারবেন না। কোনো নেতাকে ছোট বা কাউকে বড় করার জন্য নয়, স্বাধীনতা অর্জনে যার যে অবদান আছে, তা আমরা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে চাই।

মির্জা ফখরুল বলেন, অবশ্যই আওয়ামী লীগের বিরাট অবদান আছে। ১৯৭১ সালের তাদের যে অবদান, তা কেউ কোনোদিন অস্বীকার করে না। কিন্তু তারা যখন অন্যদের অবদানকে অস্বীকার করে, তা আমরা কোনোমতেই মেনে নিতে পারি না। জিয়ার খেতাব তুলে নেবে, নিক। তাতে কিছু আসে যায় না। জিয়া এ দেশের মানুষের অন্তরে রয়েছেন।

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, আমরা ৭ মার্চ পালন করেছি। তাতে আওয়ামী লীগের গাত্রদাহ শুরু হয়েছে।

জিয়াউর রহমানকে নিয়ে দেওয়া বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, এরকম অসত্য ভাষণ জাতির জন্যও লজ্জাকর।

জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) নেতা মোস্তফা জামাল হায়দার বলেন, স্বাধীনতা এক দিনে, কারও একক প্রচেষ্টায় আসেনি। তাই কেউ এককভাবে এর কৃতিত্ব দাবি করতে পারেন না।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ বলেন, একাত্তরের ৯ মার্চ মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম শুরু করার জন্য পল্টন ময়দানে আহ্বান জানিয়েছিলেন।

মুক্তসংবাদ প্রতিদিন / এম কে আলম

শাকিব-বুবলী অভিনীত ‘বীর’ আসছে টিভিতে


বিনোদন ডেস্ক:
সোমবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২১, ০৩:৫৮
শাকিব-বুবলী অভিনীত ‘বীর’ আসছে টিভিতে

ফাইল ছবি

গত বছর প্রেক্ষাগৃহে এসেছিল কাজী হায়াতের ৫০তম চলচ্চিত্র ‘বীর’। শাকিব খান ও শবনম বুবলী অভিনীত ছবিটি নিয়ে বেশ আলোড়ন হয়েছিল। বছর ঘুরতে না ‍ঘুরতে সিনেমাটি এবার দেখা যাবে বিনামূল্যে।

অর্থাৎ টেলিভিশনে ওয়ার্ল্ড প্রিমিয়ার হতে যাচ্ছে এটির। যা করছে দীপ্ত টিভি। এসকে ফিল্মসের ব্যানারে যৌথভাবে ছবিটি প্রযোজনা করেছেন শাকিব খান ও মোহাম্মদ ইকবাল। ইকবাল বলেন, ‘‘বীর’ নানা কারণে আলোচিত চলচ্চিত্র। ছবিটি দর্শকের কাছেও প্রশংসিত হয়েছে।’’

চলচ্চিত্রটি নিয়ে শাকিব খান জানিয়েছিলেন, ছবির গল্পটাই এমন যে তাকে নতুনভাবে প্রস্তুত হতে বাধ্য করেছে। কারণ, ‘বীর’ হলো দেশ ও প্রেমের ছবি।

সিনেমাটিতে আরও আছেন মিশা সওদাগর, নাদিম প্রমুখ।

এদিকে দীপ্ত টিভি জানায়, শাকিব ও বুবলী অভিনীত দর্শকপ্রিয় এই সিনেমা চলবে দীপ্ত টিভির ৭ দিনের ঈদ অনুষ্ঠানমালার প্রথমদিনে। এবারই প্রথম টেলিভিশনে প্রচার হতে যাচ্ছে ‘বীর’ ছবিটি।

মুক্তসংবাদ প্রতিদিন / কে. আলম
Share on Facebook

মুক্তসংবাদ প্রতিদিন এর জনপ্রিয়

সর্বশেষ - রাজনীতি