a
সংগৃহীত ছবি
আজ শুক্রবার, শুক্রবার মানেই মুসলিমদের জন্য ইবাদাতের জন্য এক বিশেষ দিন, রমজান মাসের শেষ শুক্রবারকে বলা হয় পবিত্র জুমাতুল বিদা। আরবিতে ‘বিদা’ শব্দের অর্থ শেষ। জুমাতুল বিদা মানে শেষ শুক্রবার বা শেষ জুমা। পবিত্র মাহে রমজানের শেষ জুমার দিনটি মুসলিম বিশ্বে জুমাতুল বিদা নামে পরিচিত। ১৪৪২ হিজরির শেষ জুমাবার আজ।
আজ জুমার নামাজ আদায়ের পর মুসল্লিরা আল্লাহর কাছে নিজদের জন্য নিজেদের পরিবার, সমাজ, আত্নীয়স্বজনদের জন্য বিশেষ দোয়া করেন। দুই চোখের জল ঝরিয়ে ক্ষমা ও রহমত অর্জনের বিরাট সুযোগ পেলেন আজ।
ইসলামের সূচনাকালে মদিনায় যখন রমজানে রোজার বিধান নাজিল হয়, তখন থেকেই প্রতি বছর রমজানের শেষ জুমাকে বিশেষ গুরুত্বসহকারে আদায় করে আসছে মুসলিম উম্মাহ।
পবিত্র রমজান মাসের আর অল্প কয়েক দিন বাকি আছে। এখনই হিসাব মিলাতে হবে, বিশ্বজনীন এ ক্ষমা ও পুণ্য লাভের মাসে আমাদের সংগ্রহ কতটুকু? খোদার কাছ থেকে নিজেদেরকে ক্ষমা করিয়ে নিতে পেরেছি কি?
হজরত আনাস ইবনে মালেক (রা.) বলেন, একবার রমজান মাস এলো, তখন রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন, এ মাস তোমাদের কাছে এসেছে, এতে একটি রাত রয়েছে, যা হাজার মাসের চেয়েও উত্তম। যে ব্যক্তি তা থেকে বঞ্চিত হয়েছে, সে সব ধরনের কল্যাণ থেকেই বঞ্চিত হয়েছে। মূলত এর কল্যাণ থেকে চিরবঞ্চিত ব্যক্তিরাই বঞ্চিত ব্যক্তি। (ইবনে মাজাহ)।
হাদিসে আছে, হজরত আবু হুরায়রা (রা:) বলেছেন রাসূল (সা.) এরশাদ করেছেন, যখন রমজান মাস আসে আসমানের দরজাগুলো খুলে দেয়া হয় এবং দোজখের দরজাগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়, আর শয়তানকে শৃ’ঙ্খলিত করা হয়। (বুখারী, মুসলীম)। তাই সারা বছরের মাঝে মুমিনের কাছে রমজান খুবই গুরুত্বপূর্ণ। জুমাতুল বিদার মাধ্যমে কার্যত রোজাকে বিদায় জানানো হয়।
ফাইল ছবি
ফ্রান্সে ১৯৫০-এর দশক থেকে রোমান ক্যাথলিক চার্চে ঘটে যাওয়া বহু যৌন নির্যাতনের ঘটনার তদন্তের জন্য গঠিত এক নিরপেক্ষ কমিশনের প্রধান বলেছেন, সে সময় হাজার হাজার শিশু নির্যাতনকারী তৎপর ছিল।
জঁ-মার্ক সোভ ফরাসি বার্তা সংস্থাকে জানিয়েছেন, ২,৯০০ থেকে ৩,২০০ শিশু নির্যাতনকারী পাদ্রী এবং অন্যান্য যাজকদের বিরুদ্ধে প্রমাণ সংগ্রহ করেছেন তারা।
তিনি বলছেন, "এটি হচ্ছে ন্যূনতম অনুমান।"
মোট ১১৫,০০০ জন পাদ্রী ও অন্য গির্জা কর্মকর্তার ব্যাপারে তদন্ত চালানো হয়। রিপোর্টটি তৈরি হয়েছে চার্চ, আদালত এবং পুলিশের দলিলপত্রের আর্কাইভে পাওয়া তথ্য এবং যৌন নির্যাতনের শিকারদের সাক্ষাৎকারের ওপর ভিত্তি করে।
আগামী মঙ্গলবার এই তদন্তের চূড়ান্ত প্রতিবেদন পেশ করা হবে। আর রিপোর্টটি হবে আড়াই হাজার পৃষ্ঠার বেশি।
যৌন নির্যাতনের একজন ভুক্তভোগী বলেছেন, এর ফল হবে বোমা ফাটার মতো।
বিভিন্ন দেশে কয়েকটি কেলেংকারির ঘটনা ফাঁস হওয়ার পর ফরাসি ক্যাথলিক গির্জা কর্তৃপক্ষ ২০১৮ সালে নিরপেক্ষভাবে ওই তদন্তের নির্দেশ দেন।
কমিশনের সদস্যদের মধ্যে ছিলেন ডাক্তার, ইতিহাসবিদ, সমাজবিজ্ঞানী এবং ধর্মতত্ত্ববিদরা। আড়াই বছরের মধ্যে সাড়ে ছয় হাজারেরও বেশি সাক্ষীর সাথে যোগাযোগ করা হয়।
রোমান ক্যাথলিক প্রকাশনা দ্য ট্যাবলেটের ক্রিস্টোফার ল্যাম্ব বলেছেন, এই যৌন নির্যাতন কেলেংকারি ক্যাথলিক চার্চকে গত ৫০০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় সংকটে ফেলে দিয়েছিল।
এর ধারাবাহিকতায় পোপ ফ্রান্স এ বছরই ক্যাথলিক চার্চে নিয়মকানুনে সংশোধনী আনেন - যাতে যৌন নিপীড়ন, শিশুদের ওপর যৌন নির্যাতন, শিশু পর্নোগ্রাফি, এবং এসব ঘটনা চাপা দেবার চেষ্টাকে স্পষ্টভাবে অপরাধ হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়।
সোভ ফরাসী দৈনিক লা মঁদকে বলেছেন, এই প্যানেল এমন ২২টি ঘটনার তথ্যপ্রমাণ কৌঁসুলিদের হাতে তুলে
দেয়া হয়েছে যেগুলোর ব্যাপারে এখনো ফৌজদারি পদক্ষেপ নেয়া সম্ভব হবে। সূত্র : বিবিসি বাংলা
সংগৃহীত ছবি
ভালো নেই রাজধানীর বাড়ি-ফ্ল্যাট মালিক ও ভাড়াটিয়ারা। করোনা মহামারিতে গ্রামে চলে গেছেন শতকরা ৪০ ভাগ ভাড়াটিয়া। ফাঁকা পড়ে আছে অনেক ফ্ল্যাট, বাড়ি। রাজধানীর অনেক বাসার গেটে বা দেওয়ালে সাঁটানো হয়েছে ‘টু-লেট’ বা ‘বাড়ি ভাড়া’ বিজ্ঞাপন।
আবার বড় বাসা ছেড়ে দিয়ে কম ভাড়ার বাড়িতে উঠতে বাধ্য হচ্ছে অনেক পরিবার। করোনার কারণে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে যে ধাক্কা লেগেছে, তাতে কর্মহীন হয়ে পড়েছে লাখ লাখ মানুষ। আয় কমে গেছে অগণিত মানুষের।
রাজধানীতে আগে কাজের সুবাদে যারা বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতেন, তারা এ পরিস্থিতিতে চলে গেছেন গ্রামের বাড়িতে। অনেকে বাসা ছাড়ার সিদ্ধান্ত জানিয়ে রেখেছেন বাড়ির মালিককে। এ কারণে মূলত ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় ভাড়াটিয়া সংকট দেখা দিয়েছে। এদিকে করোনা মহামারিতে শুধু যে ভাড়াটিয়ারাই অর্থসংকটে বিপদে পড়েছেন, তা নয়; একই সংকটে পড়েছেন বাড়ির মালিকরাও। বাড়িভাড়ার টাকায় সংসার চালানো বাড়িওয়ালারা ভাড়াটিয়া না পেয়ে মাসের পর মাস অর্থকষ্টে ভুগছেন বলে জানা গেছে ।
কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশনের এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, ঢাকার ৮০ শতাংশ বাড়িওয়ালা বাড়িভাড়া দিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। বাড়িই যেহেতু তাদের ব্যবসা, তাই বিভিন্ন বিল ও করের ঊর্ধ্বগতি সাপেক্ষে তারা বছরে গড়ে ৯ শতাংশ ভাড়া বাড়ান। ৭৫ শতাংশ বাড়িওয়ালা ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে কিংবা সারা জীবনের সঞ্চয় দিয়ে বাড়ি বানিয়ে থাকেন। বাড়িভাড়া ছাড়া সাধারণত তাদের অন্য কোনো আয়ের উত্স থাকে না। তাই ঋণের কিস্তি পরিশোধ কিংবা সংসার চালানোর তাগিদে ভাড়া পাওয়া তাদের জন্য জরুরি।
বাংলাদেশ ভাড়াটিয়া পরিষদের তথ্যমতে, ঢাকার মোট ভাড়াটিয়ার ৪০ শতাংশ রাজধানী ছেড়ে গ্রামে চলে গেছেন। করোনা মহামারিতে চাকরি চলে যাওয়া, বেতন কমিয়ে দেওয়া এবং ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ থাকার প্রভাব পড়েছে রাজধানীর ভাড়াটিয়া ও বাড়িওয়ালাদের ওপর। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এ ধরনের সমস্যা যে কেবল নিম্নবিত্তের তা নয়, ঢাকায় বাড়িভাড়ার টাকা জোগাড় করতে হিমশিম খাচ্ছে মধ্যবিত্ত অনেক পরিবারও।
ইতালি প্রবাসী সোয়েব হোসেন (ছদ্মনাম) বলেন, ‘করোনায় আমার চাকরি নেই, স্ত্রী-তিন সন্তান, বৃদ্ধ মা ও ভাই রয়েছে ঢাকায়। আমাদের আয়ের উত্স রাজধানীর ফ্ল্যাট ভাড়ার টাকা। অথচ আমার চাকরিও নেই, ঢাকায় বাড়িভাড়ার টাকাও নেই, এখন জমানো টাকা ভেঙে সংসার চালাতে হচ্ছে। সঙ্গে তিন সন্তানের স্কুলের বেতন দিতে হচ্ছে।’
অনেক বাড়িওয়ালা তার বাড়ি ভাড়া বাড়াতে একই ফ্লাটে একাধিক পরিবারকে ঢুকিয়ে তারা বিকল্প পথ খুঁজছে। এসবের ফলে পুরাতন ভাড়াটিয়াদের সাথে নতুন ভাড়াটিয়াদের নানা রকম সমস্যাও সৃষ্টি হচ্ছে। এসব ব্যাপারে কিছু কিছু বাড়িওয়ালা নিজে সেসব বাড়িতে না থাকলে ভাড়াটিয়াদের কোন সুযোগ-সুবিধা না দেখে নানান কৌশলে বাসা ভাড়া বাড়ানোর চেষ্টা করে, যা দেখার কেউ নেই।
এদিকে করোনা ভাইরাসের কারণে মানুষের আয়ে যে প্রভাব পড়েছে তা বিবেচনা করে বাড়িভাড়া কমানোর দাবি জানিয়েছে বেশ কয়েকটি সংগঠন। এরই মধ্যে এক থেকে তিন মাসের বাড়িভাড়া মওকুফের জন্য বাড়ির মালিকদের কাছে আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ ভাড়াটিয়া কল্যাণ সমিতি এবং ভাড়াটিয়া পরিষদ।
ভাড়াটিয়া পরিষদের সভাপতি বাহারানে সুলতান বাহার বলেন, আমরা প্রথম থেকেই দাবি জানিয়ে আসছি, নিম্ন-মধ্যম আয়ের মানুষের জন্য কিছুটা হলেও বাড়িভাড়া মওকুফ করার জন্য। কিন্তু আমাদের কথা কেউ শুনছেন না। অনেক মানুষ বেকার এবং আয় কমার কারণে তাদের পরিবারকে গ্রামের বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছেন। আর আয়ের আশায় পরিবারের কর্তা ব্যক্তিটি কোনো মেসে বা কম টাকা ভাড়ার বাসায় উঠেছেন। মানুষকে খুব খারাপ অবস্থার মধ্যে দিন কাটাতে হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, করোনা পরিস্থিতিতেও অনেক বাড়ির মালিক ভাড়াটিয়াদের প্রতি সহানুভূতি না দেখিয়ে ভাড়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করছেন। যে কারণে অনেকেই বাসা ছেড়ে দিতে বাধ্য হচ্ছেন। ভাড়াটিয়াদের অসহায়ত্বের কথা বিবেচনা করে বাড়ির মালিকদের উচিত কিছুটা ছাড় দেওয়া, কিছুটা ভাড়া মওকুফ করা। অনেক বাড়িওয়ালা উভয় সংকটে পড়েছেন, কি করবেন বুঝে উঠতে পারছেন না।