a
ছবি: মুক্তসংবাদ প্রতিদিন
কামরুল হোসেন, ঢাকা: ক্ষমতার বড়াই থাকলে কত কিছু করা যায় তার উৎকৃষ্ট প্রমাণ দিলেন কথিত ভন্ড পীর এবং পীরের কিছু লোকজন। আজ ৩ বছরের শিশুকে নিয়ে শারমিন জাহানের ক্রন্দনের ধ্বনি স্তম্ভিত করে দেয় উপস্থিত সকল সাংবাদিকদের।
আজ ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, দুপুর ২ টায় রাজধানী ঢাকার "ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ" এর হলে ভন্ড পীর সৈয়দ এম সাইদুর রহমান আল মাহবুবী কর্তৃক আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালসহ থানার মিথ্যা মামলা দায়ের থেকে প্রতিবাদে প্রেস কনফারেন্স করেন শারমিন জাহান।
সংবাদ সম্মেলনে সকলকে তিনি বলেন, উপস্থিত প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় সম্মানিতে সাংবাদিক ভাই ও বোনেরা, আমার সালাম ও আদার ! আমি শারমিন জাহান, স্বামী- এমডি জিয়াউদ্দিন রিপন, সাং- বাসা নং-১৯, রোড-৭/২, ব্লক-সি, সেকশন-৬, থানা- পল্লবী, মিরপুর, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন, ঢাকা। এ মর্মে বলছি যে, আমার স্বামী এমডি জিয়াউদ্দিন রিপন একজন অরাজনৈতিক ব্যক্তি, কখনোই কোন রাজনীতির সাথে জড়িত ছিল না। আমার স্বামী বাংলাদেশের স্বনামধন্য শীর্ষ গ্রুপ অব কোম্পানী যমুনা গ্রুপের অন্যতম অঙ্গপ্রতিষ্ঠান যমুনা ইলেকট্রনিক্স এন্ড অটোমোবাইলস লিং এর সিনিয়র জিএম (কর্পোরেট সেলস) পদে দীর্ঘদিন যাবৎ সুনামের সাথে কর্মরত আছেন। যার উপর অর্পিত আছে উক্ত কোম্পানীর বাৎসরিক প্রায় ১০০ কোটি টাকার ব্যবসা।
কোম্পানী নির্ধারিত সকাল ৯.০০ টা থেকে সন্ধ্যা ৬.০০ টা পর্যন্ত চাকুরীর শর্ত মোতাবেক কোম্পানীর হেড অফিসে তাকে উপস্থিত থাকতে হয় এবং প্রতিদিনের কর্ম শেষে নিয়মিত রাত্র অনুমান ৮.০০ টা নাগাদ তিনি বাসায় ফিরে আসেন। প্রিয় সাংবাদিকবৃন্দ, প্রতিদিনের ন্যায় বিগত ১৯/১২/২০২৫ ইং তারিখেও তিনি যথারীতি বাসায় ফিরে এসে আমাদের একমাত্র সন্তান আনাহিতা মনিকে (বয়স ৩ বছর) নিয়ে খুঁনসুটি করে ঘুম পারিয়ে দেন। ওই দিন অর্থাৎ গত- ১৯/১২/২০২৪ ইং দিবাগত রাত ১.৩০ দিকে হঠাৎ কিছু পুলিশ সাথে ভন্ড পীরের কিছু লোকজন সাথে নিয়ে আমার স্বামীকে উঠিয়ে নিয়ে যায়।
পরে কাফরুল থানায় গিয়ে জানতে পারি গত-১৯/০৭/২০২৪ ইং তারিখের ঘটনাকে কেন্দ্র করে একজন ভুক্তভোগীকে দিয়ে আমার স্বামীকে ১ নং আসামী করে আরো ৭ জনকে এজাহারভুক্ত আসামী করে সাথে ১০০-১৫০ অজ্ঞাতনামা আসামী করে গত-১০/১২/২০২৪ ইং তারিখে কাফরুল থানার মামলা নং-০৯ (১২) ২৪. ধারা-১৪৭/১৪৮/১৪৯/৩২৬/৩০৭/১০৯/৩৪ দন্ডবিধি দায়ের করে। আমরা পরের দিন বিজ্ঞ আদালতে জামিনের জন্য গেলে প্রকৃত ঘটনা জানতে পারি।
প্রকৃত ঘটনাঃ আমার স্বামীর পারিবারিক সম্পত্তি মিরপুর ৬ নং -এ ব্লক সি, রোড নং-৭/২ - এ আপাতত একটি বিল্ডিং পীর সাহেব জোরপূর্বক দখলের চেষ্টা করেন। এ বিষয়ে ঢাকার ১ম সহকারী জজ আদালতে একটি দেওয়ানী মামলা- ১৬৩/২৪ বিচারাধীন আছে। তা স্বত্ত্বেও গত ২৯/১১/২০২৪ ইং তারিখে মিরপুর আর্মি ক্যাম্পের তার (স্বামী) পরিচিত এক সেনা কর্মকর্তার মাধ্যমে আমার স্বামীকে ডেকে নেওয়া হয়। যেহেতু দেওয়ানী মামলা চলমান আছে সেই কারণে তারা এ বিষয়ে আর কোন কথা বাড়ায় নি কিন্তু তার পরে গত-১০/১২/২০২৪ ইং তারিখে আমার স্বামীর বিরুদ্ধে এই মামলা দায়ের করে এবং ১৯/১২/২০২৫ ইং তারিখে গ্রেফতার করে। এ পর্যন্ত অনেকবার বিশিষ্ট আইনজীবী নিয়োগ করে জামিন শুনানী করেছে কিন্তু কোন লাভ হয় নি। ইতিমধ্যে বিভিন্নভাবে, বিভিন্ন লোক মারফত আমাদের জানানো হয়েছে যে কোনভাবেই আমার স্বামী জামিন পাবে না।
কারণ, উক্ত ভন্ড পীর সৈয়দ এম সাইদুর রহমান আল মাহবুবীর হাত অনেক লম্বা, যে ইতিপূর্বে বিতর্কিত দেওয়ানবাগী পীর সাহেবের ক্যাশিয়ার ছিল। তার পক্ষ থেকে জনানো হয় যে সিএমএম কোর্ট থেকে সুপ্রিম কোর্ট, এমনকি এটর্নি জেনারেলের কার্যালয় পর্যন্ত তাদের লোক রয়েছে যাতে আমার স্বামীর জামিন না হয়। এমনকি বলা হয়েছে যদি আমার স্বামী যদি তাদের সাথে উক্ত সম্পত্তি নিয়ে ঐ ভন্ড পীরকে বুঝিয়ে না ছেড়ে দেয় তাহলে সে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মামলায় আসামী করে ফাঁশিতে ঝুলাবে। ইতিমধ্যে তারই ধারাবাহিকতায় আমাদের অজান্তে মহামান্য হাইকোর্টে এক বেঞ্চ থেকে আরেক বেঞ্চে আমার স্বামীর জামিনের আবেদন করে যাচ্ছেন এবং আমাদের জানানো হয়েছে যে গত-১৬/০২/২০২৫ ইং তারিখে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আন্তর্জাতিক অপরাধ মামলা নং ১৬ দায়ের করা হয়েছে। এখনো যদি আমরা উক্ত ভন্ড পীরের কথায় রাজি হই তাহলে তিনি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাই্যুনালসহ অন্যান্য মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার বন্দ্যোবস্ত করবেন, অন্যথায় আমার স্বামীকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মামলায় ফাঁশিতে ঝুলিয়ে মারার ব্যবস্থা করবেন বলে জানিয়েছেন।
আমি একজন কম বয়সী নারী সেই সাথে ৩ বছরের একটি কন্যা সন্তান নিয়ে এই ভন্ড পীরের লোকজনের ভয়ে আমার বাবার বাড়ীতে বসবাস করছি। এই ভন্ড পীর তার নেটওয়ার্ক মাধ্যমে আমার স্বামী সম্পর্কে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে জেল-হাজতে রেখেছে, যেখান থেকে জামিনের ব্যবস্থা করতে পারছি না, অন্যদিকে আরো মামলা মোকদ্দমা ও জীবনের ভয়-ভীতি, হুমকি দিয়ে বেড়াচ্ছে। আমরা হুমকি- দুমকির ভয়ে এক মাসের বেশি সময় ধরে নিজের বাসা ছেড়ে অন্যত্র বসবাস করছি। কোন উপায়ন্তর না পেয়ে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়েছি।
এই সময় শারমিন জাহান (এমডি জিয়াউদ্দিন রিপনের স্ত্রী) বলেন, আমি একজন মেয়ে হয়ে ছোট কন্যা শিশুকে নিয়ে এই কষ্ট এবং অত্যাচার সহ্য করতে পারছি না। আপনারা জাতির বিবেক, আপনারা প্রকৃত সত্য উদঘাটন করুন। একজন পীরের ভয়ে যদি বাড়ি ছাড়তে হয় নারীদের তাহলে এই দেশে আইন আর আদালতের উপর মানুষের কিভাবে ভরসা থাকবে?
ছবি: মুক্তসংবাদ প্রতিদিন
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি দখলদার বাহিনীর বর্বর হামলার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় এর সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (১৯ মার্চ) মাগরিবের নামাযের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ থেকে মিছিলটি শুরু হয়। পরবর্তীতে মিছিলটি বাহাদুর শাহ পার্ক প্রদক্ষিণ শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্ত চত্বর এলাকায় এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।
বিক্ষোভ মিছিলে শিক্ষার্থীরা ফ্রি ফ্রি প্যালেস্টাইন, বিশ্ব মুসলিম ঐক্য কর ফিলিস্তিন স্বাধীন কর, ট্রাম্পের ২ গালে, জুতা মারো তালে তালে, একশন টু একশন, ডাইরেক্ট একশন ইত্যাদি স্লোগান দেন।
মিছিল শেষে সমাবেশে জবি ছাত্রশিবির এর সাধারণ সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম বলেন- ❝যখন ফিলিস্তিনে মুসলমানরা মারা যায়, যখন ফিলিস্তিনের শিশুদের বুকে আঘাত করা হয়, তখন আমাদের কলিজায় আঘাত করার মত কষ্ট আমরা অনুভব করি। আমি আমাদের দেশের যুব সমাজসহ পুরো পৃথিবীর যুবসমাজের কাছে আহবান জানাই, তোমরা যদি এখনও ঘুমিয়ে থাকো তোমরা যদি বদরের হাতিয়ার কে বিক্রি করে তসবির দানার ভিতর ইসলামকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাও তাহলে সারা জীবন আমাদেরকে মার খেয়ে যেতে হবে। এখন সময় এসেছে আবার তোমাকে বদরের হাতিয়ার নিয়ে জেগে উঠতে হবে।❞
ইসলামি ছাত্র আন্দোলনে জবি শাখার সভাপতি বলেন-❝বিশ্ব মুসলিমকে ঐক্য করতে হলে প্রত্যেকটা মুসলিম দেশকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। যদি ইসলামি নেতৃত্ব প্রতিটা দেশে দেশে শক্তি সঞ্চয় করতে পারে তাহলে ইসরাইলের বুকে চূড়ান্ত আঘাত হানতে সক্ষম হব।❞
গনতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ এর কেন্দ্রীয় কমিটির সহ- সংগঠক ফয়সাল মুরাদ বলেন- ❝আমার ভাইয়েরা আমার বোনেরা ছোট ছোট শিশুরা অনাহারে বিনা চিকিৎসায় থাকার পর তাদের উপর আবার বোমা নিক্ষেপ করা হয়৷ আমাদের মুসলিম বিশ্বের প্রত্যেকটা ভাই বোনের বুকে রক্ত ক্ষরন হয়। ইহুদিদের, ইসরাইলের আমেরিকার এই বর্বর আচরনের আমরা তীব্র নিন্দা জানাই। আমার ফিলিস্তিনি ভাই বোনদেরকে রক্ষা করার জন্য পুরো বিশ্বকে উদাত্ত আহবান জানাই।❞
ফাইল ছবি: বেনজীর আহমেদ
সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ ও তার স্ত্রী-সন্তানের নামে থাকা আরও ১১৩টি দলিলের সম্পদ এবং গুলশানের চারটি ফ্ল্যাট জব্দ (ক্রোক) করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে বিভিন্ন কোম্পানিতে তাদের নামে থাকা শেয়ার অবরুদ্ধ করারও আদেশ দেওয়া হয়েছে।
রোববার ঢাকা মহানগর আদালতের সিনিয়র স্পেশাল জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন এ আদেশ দেন।
দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর গণমাধ্যমকে বলেন, গত বৃহস্পতিবার বেনজীর আহমেদের ৮৩টি দলিলের সম্পদ ক্রোকের আদেশ দিয়েছিলেন আদালত। পরে তার আরও সম্পদের খোঁজ পাওয়া যায়। সেই সব সম্পদ ক্রোকের আদেশ চেয়ে দুদক রোববার আদালতে আবেদন করলে, শুনানি নিয়ে আদালত বেনজীর আহমেদের সম্পদ ক্রোকের আদেশ দিয়েছেন।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার বেনজীর আহমেদ, তার স্ত্রী জীশান মির্জা ও সন্তানদের নামে থাকা ৩৪৫ বিঘা (১১৪ একর) জমি জব্দ (ক্রোক) এবং বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংকে তাদের নামে থাকা ৩৩টি ব্যাংক হিসাব (অ্যাকাউন্ট) অবরুদ্ধ (ফ্রিজ) করার আদেশ দেওয়া হয়।
বেনজীর আহমেদ ২০২০ সালের ১৫ এপ্রিল থেকে ২০২২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আইজিপি ছিলেন। এর আগে তিনি ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার ও র্যাবের মহাপরিচালক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে র্যাব এবং র্যাবের সাবেক ও বর্তমান যে সাত কর্মকর্তার ওপর যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা দেয়, তাদের মধ্যে বেনজীর আহমেদের নামও ছিল। তখন তিনি আইজিপির দায়িত্বে ছিলেন। সূত্র: যুগান্তর