a
ফাইল ছবি: তামিম ইকবাল
ড্যাসিং ওপেনার তামিম ইকবালকে বাইরে রেখেই বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) ঘোষণা করেছে বাংলাদেশের বিশ্বকাপ স্কোয়াড। ইনজুরির কারণে ১৫ সদস্যের দলে জায়গা হয়নি দেশসেরা ওপেনারের। পিঠের চোটের কারণে এশিয়া কাপেও খেলতে পারেননি তিনি, পরে ছেড়ে দেন নেতৃত্বও।
ভারতে অনুষ্ঠিতব্য ওয়ানডে বিশ্বকাপে নাজমুল হোসেন শান্ত যাচ্ছেন সহ-অধিনায়ক হিসেবে। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তৃতীয় ওয়ানডেতেও ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক ছিলেন তিনি। ম্যাচশেষে সংবাদ সম্মেলনে এসে দীর্ঘদিনের সঙ্গী তামিমকে মিস করার কথা জানায় শান্ত।
তিনি বলেন, ‘দল অনেক ভালো হয়েছে। তামিম ভাইয়ের সঙ্গে অনেক দিন ধরে খেলেছি। বাংলাদেশ দলকে অনেকদিন সার্ভিস দিয়েছেন, হয়তো ভবিষ্যতে আরও দেবেন। অবশ্যই মিস করবো এবং অনেক কিছু শিখেছি।’
সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হন শান্ত, তখন থেকেই ধারাবাহিকতার শুরু তার। এই ব্যাটার জানিয়েছেন, ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সের চেয়ে তার কাছে জরুরি দলীয় সাফল্য।
তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয় যে ব্যাটার হিসেবে আমার দায়িত্ব প্রতিদিন রান করা। স্বপ্নের মতো বলবো না, এরকমই হওয়া উচিত আসলে। এর থেকেও ভালো হওয়া উচিত, ভালো করা সম্ভব। আমি চেষ্টা করেছি আরও উন্নতি করার। আরও কীভাবে লম্বা সময় ধরে ভালো খেলতে পারি।’
‘আমার সর্বোচ্চ রান করা ম্যাটার করে না। আমরা টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সেমিফাইনালে খেলি নাই। দল হিসেবে এত ভালো ফল করিনি। ব্যক্তিগত পারফরম্যান্স আমি ব্যক্তিগতভাবে কাউন্ট করি না, আমাদের দলে যারা আছে তারা কেউই করে না। গুরুত্বপূর্ণ হলো ম্যাচ আমরা জিতেছি কি না, দল হিসেবে ভালো করছি কি না।’ সূত্র: বিডি প্রতিদিন
ফাইল ফটো
ক্রাইস্টচার্চে টাইগারদের ২-০ ব্যবধানে হারিয়ে সিরিজ জিতলো নিউজিল্যান্ড। ৪৮ ওভার ১ বলে স্বাগতিকদের বিপক্ষে সিরিজ জিতেলো নিউজিল্যান্ড। শেষপর্যন্ত ১১০ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে দলকে ৫ উইকেটের সহজ জয় এনে দিয়েই মাঠ ছেড়েছেন কিউই অধিনায়ক। ক্রাইস্টচার্চের মাঠে এটিই যেকোনো দলের সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জেতার রেকর্ড। একইসঙ্গে তিন ম্যাচ সিরিজটিও জিতে নিয়েছে নিউজিল্যান্ড
এর আগে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের দ্বিতীয়টিতে ক্রাইস্টচার্চে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টসে হেরে ব্যাট করেছে বাংলাদেশ। শুরুটা ভালো না হলেও হাফ সেঞ্চুরির পর তুলে নেন অধিনায়ক তামিম ইকবাল ও মোহাম্মদ মিথুন। অবশেষে নির্ধারিত ৫০ ওভারে টাইগারদের সংগ্রহ ৬ উইকেটের বিনিময়ে ২৭১ রান। অর্থাৎ, কিউইদের টার্গেট ২৭২ রান। এই ম্যাচে একাদশে কোনো পরিবর্তন ছাড়াই মাঠে নেমেছে নিউজিল্যান্ড। আর এক পরিবর্তন নিয়ে মাঠে নেমেছে বাংলাদেশ। টাইগার একাদশে হাসান মাহমুদের পরিবর্তে একাদশে ফিরেছেন পেস বোলিং অলরাউন্ডার মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন।
বাংলাদেশের একাদশ: তামিম ইকবাল (অধিনায়ক), লিটন দাস, সৌম্য সরকার, মুশফিকুর রহিম (উইকেটরক্ষক), মোহাম্মদ মিঠুন, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মেহেদী হাসান মিরাজ, শেখ মেহেদী হাসান, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, তাসকিন আহমেদ এবং মুস্তাফিজুর রহমান।
নিউজিল্যান্ড একাদশ: মার্টিন গাপটিল, হ্যানরি নিকলস, ডেভন কনওয়ে, উইল ইয়ং, টম লাথাম (উইকেটরক্ষক ও অধিনায়ক), জেমস নিশাম, ড্যারেল মিচেল, মিচেল স্যান্টনার, কাইল জেমিসন, ম্যাট হেনরি, ট্রেন্ট বোল্ট।
ছবি সংগৃহীত
কুমির দেখলে, সে শিয়ালের সঙ্গে কিছুতেই পেরে উঠছে না। তখন সে ভাবলে, 'ও ঢের লেখাপড়া জানে, তাতেই খালি আমাকে ফাঁকি দেয়। আমি মূর্খ লোক, তাই তাকে আঁটতে পারি না।' অনেকক্ষণ ভেবে কুমির এই ঠিক করল যে, নিজের সাতটা ছেলেকে শিয়ালের কাছে দিয়ে খুব করে লেখাপড়া শেখাতে হবে। তার পরের দিনই সে ছানা সাতটাকে সঙ্গে করে শিয়ালের বাড়ি গিয়ে উপস্থিত হল। শিয়াল তখন তার গর্তের ভিতরে বসে কাঁকড়া খাচ্ছিল। কুমির এসে ডাকলে,
'শিয়াল পণ্ডিত, শিয়াল পণ্ডিত, বাড়ি আছ?' শিয়াল বাইরে এসে বললে, 'কী ভাই, কী মনে করে?'
কুমির বললে, 'ভাই, এই আমার ছেলে সাতটাকে তোমার কাছে এনেছি। মূর্খ হলে করে খেতে পারবে না। ভাই, তুমি যদি এদের একটু লেখাপড়া শিখিয়ে দাও।' শিয়াল বললে, 'সে আর বলতে? আমি সাতদিনে সাতজনকে পড়িয়ে পণ্ডিত করে দেব।' শুনে কুমির তো খুব খুশি হয়ে ছানা সাতটাকে রেখে চলে গেল। তখন শিয়াল তাদের একটাকে আড়ালে নিয়ে বললে—
'পড় তো বাপু— কানা খানা গানা ঘানা,
কেমন লাগে কুমির ছানা?'
এই কথা বলে, সেটার ঘাড় ভেঙে, খেয়ে ফেললে।
পরদিন যখন কুমির তার ছানা দেখতে এল, তখন শিয়াল তাদের একেকটি করে গর্তের বাইরে এনে দেখাতে লাগল। ছয়টিকে ছয়বার দেখালে, শেষেরটা দেখালে দুবার। বোকা কুমির তা বুঝতে না পেরে ভাবলে, সাতটাই দেখানো হয়েছে। তখন সে চলে গেল, আর অমনি শিয়াল ছানাগুলোর একটাকে আড়ালে নিয়ে বললে—
'পড় তো বাপু— কানা খানা গানা ঘানা, কেমন লাগে কুমির ছানা?'
এই কথা বলে, সেটার ঘাড় ভেঙে, খেয়ে ফেলল। পরদিন কুমির তো ছানা দেখতে এল। শিয়াল একেকটি করে গর্তের বাইরে এনে, পাঁচবার পাঁচটাকে দেখাল, শেষেরটিকে দেখাল তিনবার। তাতেই কুমির খুশি হয়ে চলে গেল। তখন শিয়াল ঠিক আগের মতো করে আর একটা ছানাকে খেল।
এমনি করে সে রোজ একটি ছানা খায়, আর কুমির এলে তাকে ফাঁকি দিয়ে ভোলায়। শেষে যখন একটি ছানা বই আর রইল না, তখন সেই একটিকেই সাতবার দেখিয়ে সে কুমিরকে বোঝাল। তারপর কুমির চলে গেলে সেটিকেও খেয়ে ফেলল। তারপর আর একটিও রইল না।
তখন শিয়ালনী বললে, 'এখন উপায়? কুমির এলে দেখাবে কি? ছানা না দেখতে পেলে তো অমনি আমাদের ধরে খাবে!'
শিয়াল বললে, 'আমাদের পেলে তো ধরে খাবে। নদীর ওপারের বনটা খুব বড়, চল আমরা সেইখানে যাই। তা হলে কুমির আর আমাদের খুঁজে বার করতেই পারবে না।'
এই বলে শিয়াল শিয়ালনীকে নিয়ে তাদের পুরনো গর্ত ছেড়ে চলে গেল। এর খানিক বাদেই কুমির এসেছে। সে এসে 'শিয়াল পণ্ডিত, শিয়াল পণ্ডিত' বলে কত ডাকল, কেউ তার কথার উত্তর দিল না। তখন সে গর্তের ভিতর-বার খুঁজে দেখল—শিয়ালও নেই শিয়ালনীও নেই! খালি তার ছানাদের হাড়গুলো পড়ে আছে।
তখন তার খুব রাগ হল, আর সে চারদিকে ছুটাছুটি করে শিয়ালকে খুঁজতে লাগল। খুঁজতে-খুঁজতে নদীর ধারে গিয়ে দেখল, শিয়াল আর শিয়ালনী সাঁতরে নদী পার হচ্ছে।
অমনি 'দাঁড়া হতভাগা।' বলে সে জলে ঝাঁপ দিয়ে পড়ল। জলের নীচে ছুটতে কুমিরের মতো আর কেউ পারে না, দেখতে দেখতে সে গিয়ে শিয়ালের পিছনের একটা পা কামড়ে ধরল।
শিয়াল সবে তার সামনের দু-পা ডাঙায় তুলেছিল, শিয়ালনী তার আগেই উঠে গিয়েছিল। কুমির এসে শিয়ালের পা ধরতেই সে শিয়ালনীকে ডেকে বললে, 'শিয়ালনী, শিয়ালনী, আমার লাঠিগাছা ধরে কে টানাটানি করছে। লাঠিটা বা নিয়েই যায়।'
একথা শুনে কুমির ভাবলে, 'তাই তো, পা ধরতে গিয়ে লাঠি ধরে ফেলেছি। শিগগির লাঠি ছেড়ে পা ধরি।'
এই ভেবে যেই সে শিয়ালের পা ছেড়ে দিয়েছে, অমনি শিয়াল একলাফে ডাঙায় উঠে গিয়েছে। উঠেই বোঁ করে দে ছুট। তারপর বনের ভিতরে ঢুকে পড়লে আর কার সাধ্য তাকে ধরে।
তারপর থেকে কুমির কেবলই শিয়ালকে খুঁজে বেড়ায়। কিন্তু শিয়াল বড্ড চালাক, তাই তাকে ধরতে পারে না। তখন সে অনেক ভেবে এক ফন্দি করল। কুমির একদিন চড়ায় গিয়ে হাত পা ছড়িয়ে মড়ার মতো পড়ে রইল। তারপর শিয়াল আর শিয়ালনী কচ্ছপ খেতে এসে দেখল, কুমির কেমন হয়ে পড়ে আছে। তখন শিয়ালনী বললে, 'মরে গেছে। চল খাইগে!' শিয়াল বললে, 'রোস, একটু দেখে নিই।' এই বলে সে কুমিরের আর-একটু কাছে গিয়ে বলতে লাগল, 'না। এটা দেখছি বড্ড বেশি মরে গেছে। অত বেশি মরাটা আমরা খাই না। যেগুলো একটু-একটু নড়ে-চড়ে, আমরা সেগুলো খাই।' তা শুনে কুমির ভাবলে, 'একটু নড়ি-চড়ি, নইলে খেতে আসবে না।' এই মনে করে কুমির তার লেজের আগাটুকু নাড়তে লাগল। তা দেখে শিয়াল হেসে বললে, ঐ দেখ, লেজ নাড়ছে! তুমি তো বলেছিলে মরে গেছে!' তারপর আর কি তারা সেখানে দাঁড়ায়! তখন কুমির বললে, 'বড্ড ফাঁকি দিলে তো! আচ্ছা এবারে দেখাব!'
একটা জায়গায় শিয়াল রোজ জল খেতে আসত। কুমির তা দেখতে পেয়ে সেখানে গিয়ে লুকিয়ে রইল। ভাবল শিয়াল জল খেতে এলেই ধরে খাবে। সেদিন শিয়াল এসে দেখল সেখানে একটাও মাছ নেই! অন্য দিন ঢের মাছ চলা-ফেরা করে। শিয়াল ভাবল, 'ভালো রে ভালো আজ সব মাছ গেল কোথায়? বুঝেছি, এখানে কুমির আছে!' তখন সে বললে, 'এখানকার জল বেজায় পরিষ্কার। একটু ঘোলা না হলে কি খাওয়া যায়? চল শিয়ালনী, আর-এক জায়গায় যাই।' এ কথা শুনেই কুমির তাড়াতাড়ি সেখানকার জল ঘোলা করতে আরম্ভ করলে। তা দেখে শিয়াল হাসতে-হাসতে ছুটে পালিয়েছে!
আর একদিন শিয়াল এসেছে কাঁকড়া খেতে। কুমির তার আগেই সেখানে চুপ করে বসে আছে। শিয়াল তা টের পেয়ে বললে, 'এখানে কাঁকড়া নেই, থাকলে দু-একটা ভাসত।'
অমনি কুমির তার লেজের আগাটুকু ভাসিয়ে দিল। কাজেই শিয়াল আর জলে নামল না। এমনি করে বারবার শিয়ালের কাছে ঠকে গিয়ে, শেষে কুমিরের ভারি লজ্জা হল। তখন সে আর কী করে মুখ দেখাবে? কাজেই সে তার ঘরের ভিতরে গিয়ে বসে রইল।
....ফেসবুক থেকে সংগৃহীত
শিয়াল পণ্ডিত, উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী