a
ছবি:মুক্তসংবাদ প্রতিদিন
গত ২১ জুলাই, ২০২২ খ্রিঃ তারিখ মাস্টার্সের থিসিসের কাজ শেষে বাস যােগে নিজ বাসায় ফিরছিলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী পারিশা আক্তার (২৫)। তেজগাঁও থানাধীন কারওয়ান বাজারস্থ ওয়াসা ভবনের সামনে আনুমানিক সন্ধ্যা ৬ টার দিকে ট্রাফিক সিগন্যালে থেমে যায় বাসটি। এ সময় বাসের জানালা থেকে অভিযােগকারী পারিশার হাত থেকে তার ব্যবহৃত পােকো এম থ্রি কালাে রঙ এর মােবাইল ফোনটি টান দিয়ে এক ছিনকারী।
অভিযােগকারী এ সময় দ্রুত বাস থেকে নেমে সাহসিকতার পরিচয় দিয়ে ০১ জন সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে ধরে ফেলতে সক্ষম হন। পারিশার সাথে থাকা তার বন্ধুরা ঘটনাস্থল থেকে অপর একজন সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে ধরে ফেলেন। সন্দেজভাজন ব্যক্তিদ্বয় বিভিন্ন অপরাধের সাথে জড়িত থাকলেও, পারিশার মােবাইল চুরির ঘটনার সাথে জড়িত ছিলেন মর্মে প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
পরিশেষে, পারিশা ও তার বন্ধুদের সাহসী ভূমিকার বিষয়টি বিভিন্ন প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক ও সামাজিক যােগাযােগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে আলােচিত হয়। সংঘটিত অপরাধের বিষয়ে প্রথমে তেজগাঁও থানায় একটি জিডি লিপিবদ্ধ করেন পারিশা আক্তার। পরবর্তীতে আইনী বিষয় ও ন্যায় বিচার নিশ্চিতে পুলিশের অনুরােধে মামলা করতে সম্মত হন পারিশা (তেজগাঁও থানার মামলা নং ৪১, তারিখঃ ২৪ জুলাই, ২০২২ খ্রিঃ, ধারাঃ ৩৭৯ দন্ডবিধি, তদন্তকারী কর্মকর্তাঃ এসআই তারেক জাহান খাঁন)।
ঘটনার পরপরই ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ এবং অপরাধীর বিষয়ে অভিযােগকারীর মৌখিক বর্ণনা অনুযায়ী কাজ শুরু করে তেজগাঁও থানা পুলিশ। সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে গ্রেফতার করা হয় অভিযুক্ত ও আইনের সাথে সংঘাতে জড়িত শিশু ১। রাশেদুল ইসলাম (১৭) কে। প্রথমে অস্বীকার করলেও পুলিশের নিবিড় জিজ্ঞাসাবাদে এক পর্যায়ে ঘটনার সাথে নিজের ও মূল অভিযুক্ত ২। মােঃ রিপন আকাশ (২৪) এর জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে সে।
ইতােমধ্যে অন্য মামলায় গ্রেফতার হওয়া মােঃ রিপন আকাশ (২৪) কে নিবিড় জিজ্ঞাসাবাদের স্বার্থে বিজ্ঞ আদালতে রিমান্ড চাওয়া হলে বিজ্ঞ আদালত ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। জিজ্ঞাসাবাদে সে ঘটনার সাথে নিজের সংশ্লিষ্টতার কথা স্বীকার করে এবং চুরি করা মােবাইল ফোনটি মাত্র ৪,০০০ (চার হাজার) টাকার বিনিময়ে কারওয়ান বাজারের চোরাই মােবাইল ক্রেতা ৩। মােঃ শফিক (২১) এর কাছে বিক্রয় করেছে মর্মে জানায়।
অভিযুক্তের বক্তব্য অনুযায়ী, কারওয়ান বাজারে অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করা হয় শফিককে এবং তার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় চোরাই মােবাইলটি। অভিযুক্ত মােঃ রিপন আকাশের নামে বিভিন্ন থানায় ৬ টি মামলা, আইনের সাথে সংঘাতে জড়িত। শিশু রাশেদের বিরুদ্ধে ৪ টি মামলা এবং চোরাই মােবাইল ক্রেতা শফিকের নামে ২ টি মামলার তথ্য পাওয়া গেছে। থানা পুলিশও বিষয়টির গুরুত্ব বিবেচনাপূর্বক অপরাধ দমন ও ন্যায় বিচার নিশ্চিতে মামলার তদন্ত কার্যক্রম দ্রুততম সময়ের মধ্যে সমাপ্ত করেছে।
মামলাটি রুজু হবার ১০ দিনের মধ্যে অর্থাৎ আজ ৩ আগস্ট, ২০২২ খ্রিঃ তারিখে মামলার তদন্ত কার্যক্রম শেষে উল্লিখিত অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বিজ্ঞ আদালতে অভিযােগপত্র প্রদান করা হয়েছে।
আজ বুধবার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী পারিশা আক্তার (২৫) এর চুরি যাওয়া মােবাইল ফোন উদ্ধার ও এ সংক্রান্তে ৩ জন অভিযুক্ত গ্রেফতারের বিষয়ে আয়ােজিত বিফ্রিং করে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন তেজগাও থানার ওসি রুবায়েত।
এসময় তিনি বলেন পারিসার মত যারা সাহসিকতার পরিচয় দেয় তারা আসলেই প্রশংসার দাবিদার। এছাড়া তিনি আরো জানান গত এক মাসে তেজগাঁও থানাধীন ৪০টি ফোন উদ্ধার করা হয়েছে। এমন ঘটনা ঘটলে ভুক্তভোগীদের থানায় মামলা করার পরামর্শ দেন তিনি।
পারিসা নিজ ফোন ফেরত পেয়ে জানান, আসলে আমার থিসিসের সমস্ত কাজ ওই ফোনে ছিল ফোন হারিয়ে অনেক কষ্টে সকল কিছু জমা দিয়েছ তবুও ফোন ফেরত পেয়েছি এজন্য প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানাই।
ছবি: লাল কাপড় পড়া মহিলার স্বর্ণলংকার ছিনতাই হয়
আজ রোববার (১৪ আগস্ট) সকাল ৯ টায় বাসাবো কদমতলা রোডের উপর থেকে এক মহিলার গলা ও কানের স্বর্ণালংকার ২ মটর সাইকেল আরোহী অভিনব কায়দায় ছিনতাই করে মূহুর্তেই চম্পট দেয়।
আমাদের প্রতিনিধি উপস্থিত সেই মহিলা ও অন্যান্যদের সাথে কথা বলে জানতে পারেন, উক্ত মহিলা বাসাবো ওয়াসা সড়কের মোড় থেকে বাজার করে পূর্ববাসাবো-কদমতলা আমান মসজিদের বিপরীত ফুটপাত ধরে যাচ্ছিলেন। হঠাৎ এক মটর সাইকেল আরোহী গাড়ি থামিয়ে মহিলাকে বলেন, আপা আমি সাভার থেকে এসেছি। আমি একটু সমস্যা পড়েছি, যদি আমাকে একটু সাহায্য করেন! পেছনে আরেক জন ব্যক্তি এসে হাতে রোমাল সদৃশ কিছু একটা মুখের কাছে এনে বলছেন, আপা আমিও তার সাথে এসেছি।
মহিলা বলেন, রুমালটি ধরার পর আমার মাথা কোন কাজ করছিল না। ওরা আমাকে গলা ও কানের গহনা খুলতে বললে আমি তা খুলে দেই। এরপর প্রায় ৫ মিনিট পর আমার সেন্স ফিরলে আমি চিল্লাচিল্লি করলে আশে পাশের মানুষ এসে ভীড় করে।
উপস্থিতি অন্যান্যদের সাথে কথা বললে তারা জানান, আমরা দূর থেকে দেখছিলাম মহিলাটি মটর সাইকেল ২ আরোহীর সাথে কথা বলছিলেন ও কান এবং গলা থেকে গহনা খুলে দিচ্ছেন যেন তারা একজন আরেকজনের পরিচিত। তাই আমরা বিষয়টি গুরুত্ব দেয়নি।
উল্লেখ্য, উপস্থিত ব্যক্তিরা আরও বলেন, বাসাবো ওয়াসা সড়কে এর আগেও কয়েকবার এরকম ছিনতায়ের ঘটনা ঘটেছে। ভদ্র মহিলার স্বামী রাজারবাগ পুলিশ লাইনে চাকুরি করেন বলে জানান এবং কদমতলা হিরাঝিলে বসবাস করেন।
ফাইল ছবি
বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন শেখ হাসিনা সরকার দুর্বল হলে তা ভারত ও আমেরিকা কারও পক্ষেই সুখকর হবে না বলে মনে করে নয়াদিল্লি। বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচন নিয়ে আমেরিকার বর্তমান ভূমিকায় ভারত যে খুশি নয়, ওয়াশিংটনকে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে সেই বার্তাও। একাধিক স্তরের বৈঠকে বাইডেন প্রশাসনকে এ কথা জানিয়েছে নয়াদিল্লি। সূত্রের বরাতে এ খবর জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার।
নয়াদিল্লির নানা কূটনৈতিক সূত্রের বরাতে আনন্দবাজারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকায় সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন হোক এটা ওয়াশিংটনের মতো ভারতও চায়। কিন্তু যেভাবে হাসিনা সরকারকে অস্থির করার জন্য আমেরিকার তরফ থেকে বিভিন্ন পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে, তা প্রতিবেশী রাষ্ট্র হিসেবে ভারত তথা দক্ষিণ এশিয়ার সার্বিক নিরাপত্তার জন্য ইতিবাচক নয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আর তিন সপ্তাহ পরেই নয়াদিল্লিতে এক মঞ্চে বসবেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার আগে ভারতের এই বার্তা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।
কূটনৈতিক মহলের বরাতে আনন্দবাজার আরও বলছে, ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মনে করছে কাবুলের পাশাপাশি ভারতের অন্য প্রতিবেশী সম্পর্কে আমেরিকার নীতিও নয়াদিল্লির জাতীয় স্বার্থের প্রশ্নে অস্বস্তি বাড়াচ্ছে। ভারতের সঙ্গে দীর্ঘতম স্থলসীমান্ত রয়েছে বাংলাদেশের। ফলে বাংলাদেশের যে কোনও প্রতিকূল পরিস্থিতি ভারতেও প্রভাব ফেলে।
সূত্রের বরাতে আনন্দবাজার বলছে, নয়াদিল্লি এ কথাই বাইডেন প্রশাসনকে জানিয়েছে যে জামায়াতকে আস্কারা দিলে একদিকে যেমন ভারতের আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাস বাড়তে পারে, তেমনই চিনের প্রভাব বাংলাদেশে অনেকটাই বেড়ে যাবে, যা কাঙ্ক্ষিত নয় ওয়াশিংটনেরও।
মনে হচ্ছে, আমেরিকা জামাতকে বরাবর রাজনৈতিক ইসলামিক সংগঠন হিসাবেই দেখানোর চেষ্টা করে। মুসলিম ব্রাদারহুডের সঙ্গে তাকে তুলনা করে আমেরিকা।
বাংলাদেশের জন্য পৃথক একটি ভিসানীতি ঘোষণা করেছে বাইডেন প্রশাসন। সূত্রের বরাতে আনন্দবাজার উল্লেখ করেছে, বিষয়টি উচিত বলে মনে করছে না নয়াদিল্লি। এই ভিসানীতির ফলে বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচন যারা বানচাল করার চেষ্টা করবে, তারা আমেরিকায় প্রবেশের অধিকার পাবে না। ভারতের কূটনৈতিক শিবির মনে করছে, আমেরিকার প্রশাসন সরাসরি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে নাক গলাতেই নিজের দেশের আইন প্রয়োগ করে বাংলাদেশের জন্য পৃথক ভিসানীতি গ্রহণ করলো।
অনন্দবাজারের প্রতিবেদন আরও বলছে, সম্প্রতি বাংলাদেশের আওয়ামী লীগের পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি দল নয়াদিল্লি গিয়ে বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব তথা দেশটির কেন্দ্রীয় সরকারের মন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করে গিয়েছেন। সেখানে তারাও বার্তা দিয়েছেন, আঞ্চলিক স্থিতি বজায় রাখার প্রশ্নে বিএনপি ও জামায়াত বিপজ্জনক। সূত্র: ইত্তেফাক