a
ফাইল ছবি: জাবি’র ছাত্রছাত্রীদের বিক্ষোভ প্রদর্শন
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের বিক্ষোভে হামলা করা হয়েছে। রোববার দিবাগত রাত পৌনে তিনটার দিকে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা এই হামলা চালায় বলে অভিযোগ করেছেন আন্দোলনকারী ছাত্ররা।
এর আগে রাত নয়টার দিকে বিভিন্ন আবাসিক হলের শিক্ষার্থীরা, ‘তুমি কে আমি কে, রাজাকার রাজাকার’, ‘চাইতে গেলাম অধিকার, হয়ে গেলাম রাজাকার’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন। পরে তাঁরা বিভিন্ন হল থেকে রাত সাড়ে ১১ টার দিকে ক্যাম্পাসের বটতলায় জড়ো হতে থাকেন। তখন বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলে দুজন আন্দোলনকারীকে অবরুদ্ধ করার অভিযোগ ওঠে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে। এই খবর জানাজানি হলে রাত সাড়ে ১২টার দিকে তাঁদের মুক্ত করার জন্য বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীরা হলের সামনে অবস্থান নেন।
এ সময় ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা-কর্মীকে নিয়ে বৈঠকে বসেন বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের প্রাধ্যক্ষ নাজমুল হাসান তালুকদার। তখনো শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন হলের সামনে ও ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করছিলেন। পরে রাত দেড়টার দিকে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়কে বিক্ষোভ মিছিল করতে থাকেন আন্দোলনকারীরা। মিছিলটি রাত সোয়া দুইটার দিকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের সামনে এলে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা বাধা দেন এবং মুখোমুখি অবস্থান নেন। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পরে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মোহাম্মদ আলমগীর কবিরসহ কয়েকজন শিক্ষক দুই পক্ষকে থামানোর চেষ্টা করেন। এ সময় ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীরা আন্দোলনকারীদের জামায়াত-শিবির আখ্যা দেন ও নারী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে গালাগাল করেন।
এক পর্যায়ে রাত পৌনে তিনটার দিকে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা চালানো হয়। হামলার একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। এতে দেখা যায় বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হল ছাত্রলীগের সভাপতি পদপ্রত্যাশী ৪৬ ব্যাচের ছাত্র প্রাচুর্যসহ বেশ কয়েকজন হামলা করছেন। হামলায় আহসান লাবিব নামের একজন আন্দোলনকারী ও একজন নিরাপত্তা কর্মকর্তা আহত হয়েছেন।
আন্দোলনকারীদের অভিযোগ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের প্রাধ্যক্ষ নাজমুল হাসান তালুকদার ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের উসকে দিয়েছেন। তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অধ্যাপক নাজমুল হাসান তালুকদার।
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের অর্থসম্পাদক ও বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের ছাত্রলীগের জ্যেষ্ঠ নেতা তৌহিদুল আলম বলেন, ‘আন্দোলনকারীরা আমাদের হলের সামনে এসে কোটা আন্দোলনের নামে মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু ও ছাত্রলীগকে অবমাননা করে স্লোগান দিচ্ছিল। তখন আমরা একটা শান্তিপূর্ণ মিছিল নিয়ে যেতে চাইলে তারা বাধা দেন এবং গালিগালাজ করেন। তাদের কোনো হামলা করিনি, যথেষ্ট সম্মান দেখিয়েছি। আমরা হলে ফিরে যাওয়ার সময় তারা আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়েছে।’
সোমবার বেলা ১১টায় সহউপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ মোস্তফা ফিরোজ বিষয়টি নিয়ে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন, এমন আশ্বাস পেয়ে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা ভোর সাড়ে চারটার দিকে নিজ নিজ হলে ফিরে যেতে থাকেন। সূত্র: প্রথম আলো
ফাইল ছবি
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, ‘দুর্নীতি হয়েছে কি না, তা সরকারের বিভিন্ন সংস্থা খুঁজে বের করতে পারে। এর সঙ্গে আমার পরিবার জড়িত নয়।’
বৃহস্পতিবার চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ইস্যুতে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলে তিনি।
চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য মন্ত্রীর ঘনিষ্ঠজনদের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত ব্যয়ে ভূমি অধিগ্রহণ নিয়ে গত কয়েকদিনে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়ে আসছে।
বিষয়টি নিয়ে আজ সন্ধ্যায় রাজধানীর হেয়ার রোডের সরকারি বাসভবনে ওই সংবাদ সম্মেলন করেছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘চাঁদপুরে আমার ক্রয় সূত্রে কোনো জমি নেই। পৈত্রিক সূত্রে থাকতে পারে। আমার কাছে যা তথ্যপ্রমাণ আছে, তা থেকে বলতে পারি, আমার বড় ভাই অধিগ্রহণের আগেই বিক্রি করে দেন।’
‘বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই জায়গায় আমার বা পরিবারের কারও জমি নেই। রাজনৈতিক কোনো সহককর্মীর জমি থাকতে পারে।’
তিনি বলেন, ‘আমার পরিবারের কেউ কোনো ধরনের দুনীতির সঙ্গে জড়িত নয়। তবে অন্য কেউ দুর্নীতি করেছে কি না, তা তদন্ত করে দেখা উচিত এবং আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।’
ছবি: মুক্তসংবাদ প্রতিদিন
সাইফুল আলম, ঢাকা: রেমিট্যান্স যোদ্ধারা দেশের স্বর্ণ সন্তান, দেশের জন্য তারা সবসময় মঙ্গল বয়ে আনেন। গত আট মাস ধরে সৌদি আরবের কারাগারে রেমিটেন্স যোদ্ধারা নীরবে দিন কাটাচ্ছে, জন মনে প্রশ্ন সরকার কি এই বিষয়টি দেখছে কিনা?
গত ৫ আগস্ট ২০২৪ শেখ হাসিনা সরকারের পতন ও ছাত্র-জনতার বিজয় উপলক্ষে সৌদি আরবে অবস্থানরত বাংলাদেশি রেমিটেন্স যোদ্ধাদের আনন্দ ও প্রীতিভোজ অনুষ্ঠান হতে পুলিশ কর্তৃক আটককৃতদের মুক্ত করতে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের অবহেলার প্রতিবাদ এবং রেমিটেন্স যোদ্ধাদের মুক্ত করতে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এর হস্তক্ষেপ কামনায় সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে ভিকটিম পরিবারের পক্ষ থেকে।
আজ ১৫-০৩-২০২৫ ইং তারিখ, রোজ শনিবার, সকাল ১০ ঘটিকায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের মাওলানা মোহাম্মদ আকরম খাঁ হলে (৩য় তলা) এই সংবাদ সম্মেলনে ভিকটিমের পরিবারের সদস্যরা তাদের দুর্দশার কথা তুলে ধরেন। পরিবারের প্রধান কর্মক্ষম ব্যক্তি সৌদি আরবের কারাগারে। আর তাই তারা মানবেতর দিন কাটাচ্ছে। অসহায় হয়ে আজ তারা সরকারের সহযোগিতা কামনা করছে।
তারা বলেন, গত ৫ আগস্ট ২০২৪ শেখ হাসিনার পতন ও ছাত্র-জনতার বিজয় উপলক্ষে সৌদি আরবে অবস্থানরত বাংলাদেশি রেমিটেন্স যোদ্ধাদের আনন্দ ও প্রীতিভোজ অনুষ্ঠান হতে পুলিশ কর্তৃক আটক হন, ১। মোঃ বাদল, পিতা: সিদ্দিকুর রহমান, গ্রাম-ইমামপুর, পো-মাহমুদপুর, থানা-মেলান্দহ, জেলা- জামালপুর। ২। ইসমাইল হোসেন, পিতা- ইব্রাহিম খলিল, গ্রাম- মোহাম্মদপুর, পো- মোহাম্মদপুর, থানা- চাটখিল, জেলা- নোয়াখালী। ৩। মোঃ কাউসার হোসেন স্বপন, পিতা- মোঃ আবুল হোসেন, সাং- লক্ষীপুর, পো-বহরিয়া বাজার, জেলা- চাঁদপুর সদর। ৪। এরশাদ, পিতা- ইসরাফিল, গ্রাম- ঘাটেশ্বরী দক্ষিণ পাড়া, ডাকঘর-বহেড়া তৈল-১৯৫০, সখিপুর, টাঙ্গাইল। ৫। জুয়েল রানা, পিতা- ফিরোজ মিয়া, গ্রাম- বড়তলা, পো- আশুগঞ্জ, থানা- আশুগঞ্জ, জেলা- ব্রাহ্মণবাড়িয়া । ৬। মোঃ শাকির হোসেন, পিতা- কবির হোসেন, গ্রাম- কড়াইল, পো- মির্জাপুর, থানা-মির্জাপুর, জেলা- টাঙ্গাইল। ৭। মোঃ হাবিবুর রহমান, পিতা- হাজী হাফেজ আলী মিঝি, গ্রাম-মহজনপুর, পো-আলগী বাজার, থানা-হাইমচর, জেলা-চাঁদপুর। ৮। মোঃ আবুল হোসেন, পিতা- মোঃ নানু মিয়া, গ্রাম-মুক্তরামপুর, পো-সলিমগঞ্জ, থানা-নবীনগর, জেলা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া। ৯। মোহাম্মদ জামিল হোসাইন, পিতা- মোঃ আবদুল মান্নান, সাং-নোয়া বাড়ি, অটেহরা, ডাকঘর- কালির হাট-৩৫০১, বরুড়া, কুমিল্লা। ১০। মোহাম্মদ ইয়াকুব, পিতা মৃত- মোঃ আক্তার, দক্ষিণ মালিভিটা, পো- দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ, আব্দুল্লাহপুর, ঢাকা। ১১। সাদ্দাম হোসাইন, পিতা- আবু তায়েব, গ্রাম- কালিকাচর, পো- কালিকাচর, থানা-সরাইল, জেলা- ব্রাহ্মণবাড়িয়া। ১২। মাসুদ গাজী, পিতা- মুনাফ গাজী, গ্রাম-মহজমপুর, পো- আলগি বাজার, থানা- হাইমচর, জেলা- চাঁদপুর।বর্তমানে তারা সৌদি আরবের আল কাসিম বুরাইদা সফর জেলে মানবেতর জীবন যাপন করছেন৷
তাদের মুক্তির দাবিতে পরিবারের পক্ষ থেকে বিভিন্নভাবে বিভিন্ন জায়গায় আবেদন, নিবেদন করা হয়েছে। কিন্তু ৮ মাস অতিবাহিত হওয়ার পরেও তাদের মুক্তির কোন সঠিক দিক নির্দেশনা পাওয়া যাচ্ছে না। তাদের বন্দী হওয়ার ফলে একদিকে বাংলাদেশ সরকার ব্যাপক পরিমাণ রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, অন্যদিকে এই ১২টি পরিবারের সদস্যরা তাদের গ্রেফতারের ফলে মানবেতর জীবন-যাপন করছে। তাদের একটাই অপরাধ ফ্যাসিবাদের পতনের পর পর বাংলাদেশের নাগরিক হওয়ার কারণে নিজেরা একত্রিত হয়ে একটি প্রীতিভোজ ও আনন্দ উৎসবের আয়োজন করেছিল। সেখানে সৌদি পুলিশ তাদেরকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরণ করেছে। সেখানকার রাষ্ট্রদূত এ ব্যাপারে তেমন কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি।
বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করা হলেও সৌদি আরবে ঘাপটি মেরে থাকা রাষ্ট্রদূত আওয়ামী দোসর হওয়ার কারণে নিরবতা পালন করছে। এই ব্যাপারে প্রধান উপদেষ্টা, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা, প্রবাসী উপদেষ্টাসহ সংশ্লিষ্টরা যদি উদ্যাগ গ্রহণ করে আমরা বিশ্বাস করি ঈদের আগেই পরিবারের কাছে তাদের মুক্তির সুখবর আসবে। আমরা ইতিমধ্যেই জেনেছি বাংলাদেশে বর্তমানে জাতিসংঘের মহাসচিব এক সংক্ষিপ্ত সফরে এসেছেন। আমাদের মাননীয় উপদেষ্টা জাতিসংঘের মহাসচিবের হস্তক্ষেপ কামনা করলেও বিষয়টি দ্রুত নিষ্পত্তি হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি ।
আজকের এই সংবাদ সম্মেলনে ভিকটিম পরিবারের স্ত্রী, সন্তান, ভাইসহ পরিবারের অন্যান্যরা উপস্থিত হয়েছেন। ঈদের আগে যদি তাদের মুক্তির ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ গ্রহণ করা না হয় তাহলে এই ভিকটিম পরিবারের সদস্যরা জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে তাদের মুক্তির দাবিতে আমরণ অনশনে কর্মসূচি নিতে বাধ্য হবে। আমরা আশা করছি আপনাদের মাধ্যমে বিষয়টি দ্রুত প্রধান উপদেষ্টাসহ সংশ্লিষ্টদের কাছে পৌছে যাবে।
সৌদি প্রবাসী ১২ জন বাংলাদেশী রেমিটেন্স যোদ্ধার পরিবারের পক্ষ থেকে মোহাম্মদ লাকিন সর্বাত্মক সহযোগিতা করেন। উক্ত অনুষ্ঠানে মূল্যবান বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান, বিশেষ অতিথি মোহাম্মদ অলিদ তালুকদার সিদ্দিক, জাতীয় জনতা ফোরামের সভাপতি। আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির নেতৃবৃন্দ, সমাজ এবং মানবাধিকার কর্মী, প্রেস ক্লাবের বিশিষ্ট সাংবাদিক বৃন্দ। এছাড়া বিভিন্ন জেলা থেকে আগত ভিক্টিমের পরিবারের সদস্যরা বক্তব্য রাখেন।