a
ফাইল ছবি । মোসলেমা পারভীন
আজীবন নিমজ্জিত
মোসলেমা পারভীন
তুমি আমার সামনে থেকে
সব সুন্দর মুছে দিতে পারো,
সরিয়ে নিতে পারো সুন্দর,
ঢেকে দিতে পারো আঁধারে,
তবু আমার দুচোখ খুঁজে নেবে সুন্দর।
সুন্দরকে দেখার যে চোখ,
যে মন ও মনন,
সে আমারই থেকে যাবে আজীবন—
অন্ধ বধির তো হয় মন,
দৃষ্টি কিংবা শ্রবণ নয়।
যে মন যে চোখ চিরকাল
খুঁজে ফেরে সুন্দর
সে আঁধারেও সুন্দরের দেখা পায়!
আঁধারের সৌন্দর্য তো
কেড়ে নেয়া যায়না!
অতল আঁধারে ডুবে দেখেছো কোনদিন?
চেয়ে দেখেছো কি কখনও, কোন সুন্দর
লুকানো সেখানে?
ভালোবাসা সুন্দর,
ভালোবেসে সুন্দরকে খুঁজে দেখেছো কখনও?
সৃষ্টি সুন্দর, ভালোবাসাই সৃষ্টি,
ভালোবাসায় সুন্দরের সৃষ্টি।
যে চোখে, যে মনে ভালোবাসা থাকেনা
সে চোখে, সে মনে সুন্দর অপসৃয়মান।
মমতার আর্দ্রতা ছাড়া
কোন সুন্দর সৃষ্ট হয়নি কোনদিন!
আমার পৃথিবী চিরকাল সুন্দর,
আমার আকাশ চিরকাল কথা কয়।
মানুষ যখন মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে
আমার আদিগন্ত আকাশ,
আমার সুষ্ময় পৃথিবী
আর্দ্রতায় স্নিগ্ধ করে রেখেছে আমাকে।
আমি আজীবন নিমজ্জমান
অন্তঃহীন সুন্দরের সমুদ্রে।
ফাইল ছবি: মুক্তা দাশ
তোমাকে খুব মনে পড়ে..!!
কুয়াশা আলগোছে সরিয়ে শিশির ঝরে , মৃতপ্রায়
লাউ গাছটায় গজানো লকলকে নতুন ডগায় ।
খাচায় বন্দী শালিকটা ডেকেই যাচ্ছে একমনে... !
ভাপা পিঠার গরম ভাপ নাক মুখ ছাপিয়ে সবার হাতে হাতে পেটে চালান হচ্ছে ম্যারাথন দৌড়ে।
ঘোমটা মাথায় উনুনে পাটকাঠি জ্বলছে দাউ দাউ...! সংসারে চাকা ঘুরছে সময়ের নিয়ম মেনে।
এলোমেলো ভাবনাগুলো এখন গুছিয়ে আনার আপ্রাণ চেষ্টা করছি...
পারছি কি?
হয়তো হ্যাঁ ! হয়তো না !!
বুমেরাং হয়ে স্মৃতিগুলো সব ফিরতি ট্রেনে শেষ স্টেশন ধরে আমাকেই।
ধ্যানমগ্ন ঋষির মতো অতীতটাকে মাটিচাপা দিচ্ছি....তুষের ছাই দিয়ে।
ধর্মের ফাঁদে নতুন ছাঁচে জীবনকে সাজানোর চেষ্টা..... বৃথাই বাল্মিকী মুনিনামা !
সেও তো এক রকমের প্রতারণা
নিজের সাথে নিজের ছলনা,
তবুও যদি পরিত্রাণ পাওয়া যায়।
তোকে মনে না করার বাহানায় আটপৌরে আমি
ক্ষণে ক্ষণে তোকেই খুঁজি!
' তুমি থেকে তুই
তুই থেকে তুমি '...!
স্পর্শে তোকে মনে রাখা যতটা সহজ
স্পর্শহীন তোকে ভুলে থাকা ততটাই কঠিন ।
তোমাকে খুব মনে পড়ে ...!!
প্রতিটি নতুন ভোরে.... নিশুতি রাতের গভীরে
খুব মনে পড়ে ।।
ফাইল ছবি
বছর তিনেক আগে পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোকে 'মৃতপ্রায়' বলে মন্তব্য করেছিলেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। ওই সময় দ্য ইকোনমিস্ট সাময়িকীকে সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, ইউরোপ নিজের নিরাপত্তার জন্য আর ন্যাটোর ওপর নির্ভর করে না। তার এ মন্তব্য নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে হইচই পড়ে গিয়েছিল।
এরপর একে একে বেশকিছু বৈশ্বিক সংকট দেখা দেয়। এর মধ্যে আছে- করোনা মহামারি, ইউক্রেন যুদ্ধ ও জ্বালানি সংকট।
বিশেষ করে এক বছর আগে ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হলে রুশ জ্বালানির ওপর যুক্তরাষ্ট্র ও মিত্রদের নিষেধাজ্ঞার কারণে ইউরোপে জ্বালানি সংকট দেখা দেয়। মহাদেশটি এ সংকট মোকাবিলায় নবায়নযোগ্য জ্বালানির দিকে দ্রুত ঝুঁকে পড়ে। কিন্তু নিজেদের নিরাপত্তার বিষয়ে মৌলিক প্রশ্নে ইউরোপ এখনো দ্বিধা-বিভক্ত।
হেলেনিক ফাউন্ডেশন ফর ইউরোপিয়ান অ্যান্ড ফরেন পলিসির পরিচালক জর্জ পাগুলাতোস আলজাজিরাকে বলেন, 'আমি মনে করি, ইউরোপের ঐক্য দুর্বল হয়ে গেছে। ফ্রান্স ও জার্মানির সঙ্গে সাবেক প্রধানমন্ত্রী মারিও দ্রাঘির ইতালি মিলে তাদের পররাষ্ট্রনীতি ঠিক করতেন। তারা ইউরোপের একতা তৈরিতে চালকের ভূমিকা পালন করেছিলেন।'
কিন্তু গত জুলাইয়ে আস্থা ভোটে হেরে যান দ্রাঘি। তার পরিবর্তে ক্ষমতায় আসেন চরম ডানপন্থি ও জর্জিয়া মেলোনি।
গত এপ্রিলের পার্লামেন্ট নির্বাচনে ফ্রান্সে ম্যাক্রোঁবিরোধীরা জয়লাভ করেন। ইউক্রেনে সামরিক সহায়তা দিতে অনীহা প্রকাশ করায় জার্মানিকে সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে।
জর্জ পাগুলাতোস মনে করেন, ইউরোপের মনোবল এর কেন্দ্র থেকে সরে মহাদেশের উত্তরপূর্বাঞ্চলে সরে গেছে। সেখানকার দেশগুলো চায় যেকোনো মূল্যে ইউক্রেন জয়ী হোক এবং রাশিয়া পরাজিত হোক।
ফিনিশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্সের রিসার্চ ফেলো মিনা অলান্দার আলজাজিরাকে বলেন, 'বাল্টিক, নর্ডিক ও মধ্য ইউরোপের দেশগুলো এখন পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষা বিষয়ে আগের চেয়ে বেশি ন্যাটোমুখী। যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য তাদের গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তা অংশীদার। ফ্রান্স ও জার্মানি এ বিষয়ে নীরব।'
গত মঙ্গলবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন পোল্যান্ডে এসে সেই দেশের প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেজ দুদাকে আশ্বস্ত করে বলেছেন, 'বৈশ্বিক শৃঙ্খলা বজায় রাখার ক্ষমতা আমেরিকার আছে।'
প্রতিবেদন অনুসারে, ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের পর থেকে পূর্ব ইউরোপের সদস্য দেশগুলোতে সেনা সংখ্যা ৪ গুণ বাড়িয়েছে। পাশাপাশি আরও ৩ লাখ সেনাকে প্রস্তুত রাখার ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে।
তবে ইউক্রেন যুদ্ধের আগে ইউরোপ নিজেদের প্রতিরক্ষা নিয়ে একতা দেখাতে পারেনি বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
গত ১৯ ফেব্রুয়ারি মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) হাইরিপ্রেজেন্টেটিভ জোসেফ বোরেল বলেছিলেন, 'যারা আমাদের হুমকি দেয় তাদের ওপর চাপ সৃষ্টির ক্ষমতা আমরা রাখি। আমরা শক্তিশালী হচ্ছি।'
তবে রাশিয়ার বিরুদ্ধে সর্বসম্মতভাবে নিষেধাজ্ঞা দিতে ইইউকে বেশ বেগ পেতে হয়েছিল। এমনকি ইউক্রেনে সামরিক সহায়তা পাঠনোর বিষয়েও এই মহাদেশীয় জোটে বিভেদ দেখা গেছে।
গত জানুয়ারিতে জরিপ সংস্থা ইউরোস্কোপিয়া জানিয়েছে, অস্ট্রিয়ায় ৬৪ শতাংশ, জার্মানির ৬০ শতাংশ, গ্রিসের ৫৪ শতাংশ, ইতালি ও স্পেনের ৫০ শতাংশ মানুষ ভূমির বিনিময়ে রাশিয়ার সঙ্গে শান্তিতে পৌঁছানোর পক্ষে মত দিয়েছেন। সূত্র: যুগান্তর