a
ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা ম্যাচের আগেই উত্তেজনা চরম আকারে পৌঁছে গেছে। বিশ্বজুড়ে ফুটবলপ্রেমীদের মাঝেই এরূপ ঘটনা ঘটে থাকে। তবে লাতিন আমেরিকার দুই দেশ থেকে ১৫ হাজার মাইল দূরের দেশ বাংলাদেশে এ দ্বৈরথ নিয়ে উন্মাদনা একটু বেশিই বলা চলে। বাগবিতণ্ডা, তর্ক ছাড়াও হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে থাকে।
বিষয়টি সম্পর্কে ভালোই অবহিত ভারতের নয়াদিল্লিতে অবস্থিত আর্জেন্টাইন দূতাবাস।
আর্জেন্টিনার দূতাবাস বাংলাদেশে নেই। তবে বাংলাদেশে যে আর্জেন্টিনার ভক্তের সংখ্যা অগণিত সে সম্পর্কে অবগত আছেন সেই দূতাবাসের কর্মকর্তারা। বাংলাদেশের আর্জেন্টাইন সমর্থকদের উন্মাদনা সম্পর্কে তারা জানেন। আর তাই আর্জেন্টাইন দূতাবাসের কর্মকর্তারা ফাইনালে আর্জেন্টিনা দলের জন্য বাংলাদেশের আকুণ্ঠ সমর্থন চেয়েছেন।
এ বিষয়ে দিল্লিস্থ আর্জেন্টাইন দূতাবাস থেকে একটি প্রেস নোট এসেছে দেশের এক গণমাধ্যমে।
সেখানে তারা লিখেছে, ‘বাংলাদেশের নাগরিকবৃন্দকে আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি যে, আর্জেন্টিনা কোপা আমেরিকার ফাইনালে উঠেছে। আমরা জানি, বাংলাদেশে অসংখ্য আর্জেন্টাইন সমর্থক আছেন। মেসি ও নেইমারের লড়াই দেখার জন্য মুখিয়ে আছেন তারা।
আর্জেন্টাইন দূতাবাসের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের আর্জেন্টাইন সমর্থকদের শুভেচ্ছা। অনুগ্রহ করে, উপভোগ করবেন দুর্দান্ত এই ফাইনাল খেলা। আমরা ফুটবল ভালোবাসি। এর উত্তেজনা ও সৌন্দর্য্যের চূড়ান্ত বিকাশে বিশ্বাসী। সারা বিশ্ববাসী এখন সুপার ক্ল্যাসিকোর ফাইনাল ম্যাচ মাঠে দেখবে।’
ফাইল ছবি
উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগে অভিষেকেই ইতিহাস গড়লো শেরিফ তিরাসপল। মলডোভার প্রথম ক্লাব হিসেবে ইউরোপের শীর্ষস্থানীয় প্রতিযোগিতায় নাম লেখায় তারা। ইউরোপের এলিট টুর্নামেন্টে রূপকথা নিয়ে হাজির হয়েছে তারা। প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়নস লিগে খেলতে এসেই শেরিফ ২-০ গোলে হারিয়ে দেয় ইউক্রেনের জায়ান্ট শাখতার দানেৎস্ককে। দ্বিতীয় ম্যাচে আরো বড় চমক নিয়ে হাজির হলো নবাগত দলটি।
মঙ্গলবার রাতে শেরিফ তিরাসপল হারিয়ে দিল টুর্নামেন্টের ইতিহাসে সবচেয়ে সফল দল ও ১৩ বারের চ্যাম্পিয়ন রিয়াল মাদ্রিদকে। তাও আবার সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে গিয়ে! মুহুর্মুহু আক্রমণ করে কোনোরকম সমতায় ফিরলেও শেষ রক্ষা হয়নি রিয়াল মাদ্রিদের। অন্তিম সময়ে ফের গোল হজম করে বসে কার্লো আনচেলত্তির দল। শেরিফ জেতে ২-১ গোলে! অবিশ্বাস্যভাবে টানা দুই জয়ে 'ডি' গ্রুপের শীর্ষে এখন শেরিফ তিরাসপল। তিন পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে নেমেছে রিয়াল মাদ্রিদ। এক পয়েন্ট নিয়ে তিন ও চারে আছে যথাক্রমে ইন্টার মিলান ও শাখতার দানেৎস্ক।
কাল রাতে গ্রুপের প্রথম ম্যাচে গোলশূন্য ড্র করে দল দুটি। তাতে দুটি দলই গ্রুপপর্ব থেকে ছিটকে যাওয়ার আশঙ্কায় পড়ল। অবশ্য রিয়াল হারলেও ম্যাচজুড়ে দাপট দেখিয়েছে তারা। ৭৫ শতাংশ বল দখলে রেখে ৩১টি শট নিয়েছে। যার ১১টিই ছিল লক্ষ্যে। বিপরীতে, গোলের উদ্দেশ্যে চারটি শট নিয়ে তিনটিই লক্ষ্যে রেখেছে শেরিফ। তাতেই বাজিমাত। স্বপ্নের জয়। শেরিফের এই জয়টিকে টুর্নামেন্টের ইতিহাসে অন্যতম সেরা অঘটন বলে বিবেচনা করা হচ্ছে। প্রতিযোগিতার চলতি আসরের প্রথম ম্যাচে ইন্টার মিলানকে হারিয়েছিল রিয়াল মাদ্রিদ। সেই ম্যাচজুড়ে একচেটিয়া রাজত্ব করেছে ইতালিয়ান ক্লাবটি।
কিন্তু সৌভাগ্যবশত জিতে যায় রিয়াল। শেরিফ ম্যাচে রিয়াল দেখল মুদ্রার উল্টো পিঠ। এবার শিকারি নয়, আনচেলত্তির দল শিকার হলো রূপকথার শেরিফের কাছে। ম্যাচের ২৫ মিনিটে সান্তিয়াগো বার্নাব্যু স্তব্ধ করে দেয় মলডোভা লিগ চ্যাম্পিয়নরা।
ইয়াসুরবেক ইয়াখশিবোয়েভের গোলে লিড নেয় শেরিফ। ফাঁকায় দাঁড়িয়ে বেশ আরাম করেই হেডে জালে বল জড়ান তিনি। সমতায় ফিরতে মরিয়া রিয়াল সর্বস্ব নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে পুঁচকে দলটির ওপর। যদিও গোলের জন্য রিয়ালকে অপেক্ষা করতে হয়েছে ৬৫ মিনিট পর্যন্ত। শেরিফের ডি-বক্সে ভিনিচিয়াস জুনিয়র ফাউল হলে ভিএআরের সহায়তা নিয়ে পেনাল্টির সিদ্ধান্ত দেন রেফারি। স্পট কিক থেকে গোল করে স্বাগতিকদের সমতায় ফেরান করিম বেনজেমা।
এই গোলেই ফরাসি স্ট্রাইকার ছাড়িয়ে গেলেন রিয়াল কিংবদন্তি রাউল গঞ্জালেসকে (৭১)। টুর্নামেন্টে বেনজেমা এখন চতুর্থ সর্বোচ্চ গোলদাতা। সমতায় ফেরা রিয়াল দ্বিতীয় গোলের জন্য আরো মরিয়া হয়ে ওঠে।
কিন্তু শেরিফ গোলরক্ষক আথানাসিয়াদিজ স্বাগকিদের হতাশা বাড়াতে থাকেন। গোলপোস্টের নিচে এদিন অতিমানবীয় পারফর্ম করেছেন তিনি। তার কারণেই গোল মিসের মহড়া বসান বেনজেমা, ভিনিচিয়াস, মডরিচরা। রিয়াল আর দ্বিতীয় গোল পায়নি। বরং ৮৯ মিনিটে ফের গোল হজম করে বসে রিয়াল। গোল করে শেরিফকে বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাসে ভাসান সেবাস্তিয়ান থিল। অতিথিরা অবশ্য ৭২ মিনিটেই দ্বিতীয় গোলটা পেতে পারতো। কিন্তু ক্রিশ্চিয়ানোর ক্রস থেকে ব্রুনো যে গোলটা করেছিলেন সেটা বাতিল হয় অফসাইডের ফাঁদে পড়ে।
২৫ বছর বয়সী শেরিফের সেই হতাশা দূর হয়েছে ম্যাচের শেষ সময়ে। নতুন মৌসুমে উড়ন্ত সূচনা করেছিল রিয়াল মাদ্রিদ। কিন্তু হঠাৎ করেই ছন্দ হারাল লস ব্ল্যাঙ্কোসরা। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে টানা দুই ম্যাচ ধরে জয়হীন থাকল আনচেলত্তির দল। আগের ম্যাচে লা লিগায় ভিয়ারিয়ালের সঙ্গে ড্র করেছিল রিয়াল। এবার তো শেরিফ রূপকথার কাছেই হার মানতে হলো তাদের। এই হারটা মাদ্রিদ জায়ান্টদের জন্য বড়সড় ধাক্কা হয়েই এলো।
ফাইল ছবি
সিলেটের ওসমানীনগরে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ নিহতের স্বামী আরশ আলী ও শাশুড়ি মিনারা বেগমকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। গত রবিবার (৯ মে) দুপুরে স্থানীয় থানায় কনে পক্ষ হত্যা মামলা দায়ের করলে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে জেলা কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয় আদালত।
ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে নিহতের বড় ভাই ইসলাম উদ্দিন শনিবার (৮ মে) রাতে নিহতের স্বামী এবং শ্বাশুড়িকে আসামি করে ওসমানীনগর থানায় মামালা দায়ের করেন। পুলিশ জানায়, গত শনিবার দুপুরে সিলেটের ওসমানীনগর উপজেলার উসমানপুর ইউনিয়নের তাহিরপুর গ্রামের মৃত ইছন আলীর বাড়ি থেকে নিহত শরিফা বেগমের (২০) মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহতের শরীরে বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের দাগ বিদ্যমান ছিল। নিহত শরিফা সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন বলে দাবি তার পরিবারের।
তবে স্বামী ও শাশুড়ির অভিযোগ ছিল, শরিফা আত্মহত্যা করেছে। কিন্তু শনিবার দুপুরে তার স্বামীর নিজ ঘরের বিছানা থেকে গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ওসমানীগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শ্যামল বণিক বলেন, ‘এ ঘটনায় নিহতের ভাই মামলা দায়ের করেন। আসামীদের মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।’
এদিকে নিহত শরিফার পারিবার থেকে জানতে পারা যায়, প্রায় ৯ মাস আগে ওসমানীনগর উপজেলার উসমানপুর ইউনিয়নের তাহিরপুর গ্রামের মৃত ইছন আলীর ছেলে আরশ আলীর সঙ্গে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার পুটিয়া গ্রামের শাকিম উল্লাহর ছোট মেয়ে শরিফার। বিয়ের অল্পকিছুদিন পর থেকেই যৌতুকসহ নানা কারণে স্বামী আরশ আলী ও শাশুড়ি মিনারা বেগম তার ওপর বিভিন্ন সময় অত্যাচার নির্যাতন শুরু করেন। বিষয়টি নিহতের পরিবার জানা সত্ত্বেও শরিফা অন্তঃসত্ত্বা হওয়ায় কারণে তার বাবা মা তাকে এসব সহ্য করে শ্বশুরবাড়িতেই থাকার কথা বলে।
পরিবারের অভিযোগ, এই রমজানে আরশ আলী শ্বশুরবাড়ি বেড়াতে যান। এ সময় ইফতার দিতে কিছুটা দেরি করার নানা কথা শোনান স্বামী। এছাড়া তাকে কেন আলাদাভাবে সাজানো থালায় ইফতার দিল না এ নিয়ে তাদের উভয়ের মাঝে তুমুল ঝগড়া হয়।
গত শুক্রবার (৭ মে) সন্ধ্যায় শরিফার বাবা তার স্বামীসহ অন্যান্য সদস্যদের জন্য ঈদের উপহার এখনো কেন নিয়া আসে নাই তা নিয়ে আবার ঝগড়া শুরু হয়। ঘটনার একপর্যায়ে শরিফাকে তার স্বামী ও শাশুড়ি মারধর করে। বিষয়টি সাথে সাথেই তার ভাইকে ফোন করে জানান শরিফা। পর সাহরির সময়ে শরিফার মোবাইল বন্ধ পান তার পরিবার। পরে যখন নতুন জামা কাপড় নিয়ে শরিফার বোন রওয়ানা হন পথিমধ্যে খবর পান শরিফা ভীষণ অসুস্থ তার এসে দেখেন তার বোন চিরতরে ঘুমিয়ে গেছে।